শেষ ওয়ানডে জিতে ধবলধোলাই এড়াল ভারত- ভারতের মান বাঁচানো জয়
শূন্যে লাফিয়ে মোহাম্মদ হাফিজের ক্যাচটা ধরেই যুবরাজ সিংয়ের ভোঁ-দৌড়। উচ্ছ্বাসের আতিশয্যে মনে হলো ভারত বুঝি বিশ্বকাপ জিতেছে। কিন্তু এটা তো আগেই ভাগ্যনির্ধারিত হয়ে যাওয়া একটি সিরিজের মৃত শেষ ম্যাচই ছিল, তাই না? তবে যাঁরা এই ম্যাচ দেখেছেন তাঁদের কাছে উদ্যাপনটাকে বাড়াবাড়ি মনে হয়নি। মাত্র ১৬৭ রান করে জিতলে আবেগ বাঁধ মানে না।
তা ছাড়া ১০ রানের এই জয়ে যে ঠেকানো গেল লজ্জার এক ইতিহাসের ফিরে আসাটাকে। কয়েক দিন আগে ইংল্যান্ডের কাছে টেস্ট সিরিজ হেরে ২৮ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছিল ভারত। কাল দিল্লিতে আবারও আরেকটি লজ্জার ইতিহাস ফিরিয়ে আনার সব জোগাড়যন্ত্র করে ফেলেছিলেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ১৬৭ রানে অলআউট। ২৯ বছর পর আবার দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হওয়ার শঙ্কায় রীতিমতো কাঁপছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু বোলিং-ফিল্ডিংয়ের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে পাকিস্তানকে গুটিয়ে দিল ১৫৭ রানে। দিল্লির কনকনে শীতের সন্ধ্যাটাকে শেষ পর্যন্ত উৎসবের উত্তাপেই উপভোগ করল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।প্রথম দুটি ম্যাচ হেরেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটা পাকিস্তানকে দিয়ে দেওয়া ভারত কাল টস জিতে নিয়েছিল ব্যাটিং। ব্যাটিং-ব্যর্থতার ধারাবাহিকতায় এরপর ওই ১৬৭। অধিনায়ক ধোনিও স্বীকার করে নিয়েছেন রানটা ছিল বেশ কম। তিন ছক্কায় ইনিংস-সর্বোচ্চ ৩৬ রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়া অধিনায়ক ম্যাচের পর বললেন সেটাই, ‘১৬০ যথেষ্ট ছিল না। আমি ছেলেদের বলেছিলাম এটা যথেষ্ট নয় ঠিকই, কিন্তু দলটা তো ভালোভাবে লড়াই করতে পারে।’ সেই লড়াইটা দারুণভাবেই করেছে ভারত। বোলাররা তাঁদের কাজটা ঠিকমতো করেছেন, তবে ভারতের ফিল্ডাররা কাল ফিরোজ শাহ কোটলায় ছিলেন অসাধারণ। ধোনিও বললেন সেটাই, ‘স্পিনাররা দারুণ কাজ করেছে, তবে আমার কাছে এই ম্যাচের সেরা আমাদের ফিল্ডাররাই।’ ভারতীয় ফিল্ডিংয়ের প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকও।
ছোট লক্ষ্যের পেছনে ছোটা পাকিস্তানিরা শুরুতেই পড়ে বিপর্যয়ে। ১৪ রানের মধ্যেই কামরান আকমল ও ইউনুস খানকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে কাঁপিয়ে দেন ভুবনেশ্বর কুমার। কিন্তু সিরিজের সেরা খেলোয়াড় নাসির জামশেদ ও অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক কক্ষপথে ঠিকই ফিরিয়ে আনেন দলকে। ৩৪ করে জামশেদ আউট হওয়ার পর মিসবাহ উমর আকমলকে নিয়ে দলকে নিয়ে যান ১১৩ রানে। এরপরই বিপর্যয়। ৩ উইকেটে ১১৩ থেকে দেখতে না-দেখতেই পাকিস্তান ৬ উইকেট ১২৫। উমর গুলকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে যখন ১৯ রানের জুটি গড়েন পরে ব্যাটিংয়ে নামা মোহাম্মদ হাফিজ, মনে হয়েছিল বোলিংয়ের সময় হাফিজের চোট পাওয়াটা হয়তো পাকিস্তানের জন্য শাপেবর। কিন্তু ১৪৪ থেকে ১৪৫—এই ১ রানের ব্যবধানে তিনটি উইকেট হারিয়ে আবার পাকিস্তান ম্যাচের লাগাম তুলে দেয় ভারতের হাতে।
ভারতের ইনিংসে যথারীতি ছিল আগের দুটি ম্যাচেরই ছায়া। শুরুতেই পাকিস্তানি দুই পেসার মোহাম্মদ ইরফান ও জুনায়েদের চেপে ধরা, এরপর স্পিনারদের বাকি কাজটুকু সারা। কালই অফ স্পিনার সাঈদ আজমল করলেন তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা বোলিংটা (৫/২৪)। ওয়েবসাইট, স্টার ক্রিকেট।
No comments