সহযোগিতার যৌথ ঘোষণা টিপাইমুখ প্রশ্নে ভারত বাংলাদেশের জন্য ৰতিকর কোন পদৰেপ নেবে না ০ তিসত্মার পানি বণ্টন নিয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ে জেআরসি বৈঠক ০ ভারতে শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের অধিকার ০ ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধায় ভুটান ও নেপালের ট্রাক প্রবেশের জন্য দু'দেশ প্রয়োজনীয় চুক্তি করবে ০ বাংলাদেশকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদু্যত দিতে ভারত সম্মত
নয়াদিলস্নী, ১২ জানুয়ারি, বাসস ভারত প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে যে, প্রসত্মাবিত টিপাইমুখ বাঁধের ব্যাপারে এমন কোন পদৰেপ নেবে না যাতে বাংলাদেশের স্বার্থের ৰতি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মধ্যে বৈঠকের একদিন পর মঙ্গলবার এক যৌথ ইশতেহারে এ কথা বলা হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁর আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, টিপাইমুখ প্রকল্পের প্রশ্নে বাংলাদেশের জন্য ৰতিকর কোন পদৰেপই নেয়া হবে না।
যৌথ ইশতেহারে বলা হয়, ভারতকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের সুবিধা দেবে বাংলাদেশ, পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানকেও অনুরূপ সুবিধা দেবে।ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁর আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, টিপাইমুখ প্রকল্পের প্রশ্নে বাংলাদেশের জন্য ৰতিকর কোন পদৰেপই নেয়া হবে না।
ইশতেহারে বলা হয়, সড়ক ও রেলপথে ভারতে ও ভারত থেকে পণ্য পরিবহনের জন্য মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবহার করতে দেবে বাংলাদেশ। মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে নেপাল ও ভুটানকে সুবিধা দেবার আগ্রহের কথাও অবহিত করেছে বাংলাদেশ।
ইশতেহারে বলা হয়, ভারত বাংলাদেশকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদু্যত সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দুই দেশ তাদের আনত্মঃগ্রিড সংযোগ ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরম্নত্ব আরোপ করেছে এবং নতুন উৎস থেকে বিদু্যত উৎপাদনসহ বিদু্যত বিনিময় ও উন্নয়নে উভয় দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করবে। দু'দেশ এই উদ্দেশ্যে যৌথ প্রকল্পও স্থাপন করতে পারে।
উভয় দেশ শুল্ক ও অ-শুল্ক বাধা ও বন্দর বিধি-নিষেধ দূরীকরণের ব্যবস্থা গ্রহণে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আমদানি উৎসাহিত করতে রেল ও জলপথে কন্টেনারবাহী পণ্য পরিবহন সুবিধা দিতেও উভয় দেশ সম্মত হয়েছে।
ভারতের বাজারে সার্কভুক্ত স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে (সার্ক এলডিসিস) শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের যে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, বাংলাদেশের প্রত্যৰ স্বার্থ জড়িত এমন পণ্যের ৰেত্রে ভারতের নীতিবাচক তালিকা আইটেম হ্রাসকেও বাংলাদেশ স্বাগত জানায় এবং বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে যাতে এই তালিকা থেকে আরও আইটেম বাদ দেয়া হয়।
দুই প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তাঁরা উলেস্নখ করেন যে, উভয় দেশই নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। কারণ, সন্ত্রাসী জঙ্গী ও অপরাধীদের কোন ভৌগোলিক সীমারেখা নেই। তারা নিরাপত্তা ইসু্যতে দু'দেশের কার্যকর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরম্নত্ব আরোপ করেন।
দুই নেতা পরস্পরকে আবারও এই আশ্বাস দিয়েছেন যে, তাঁরা নিজেদের ভূখ- অপরের জন্য ৰতিকর কোন কর্মকা- চালানোর কাজে ব্যবহৃত হতে দেবেন না। সেই সঙ্গে দেশী বা বিদেশী সন্ত্রাসী-জঙ্গী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রম্নপ ও তাদের সহযোগীদের প্রশিৰণ, আশ্রয় ও অন্যান্য তৎপরতার জন্য নিজেদের ভূখ- ব্যবহারের সুযোগ না দেয়ার অঙ্গীকার করা হয়।
৫০ দফা যৌথ ইশতেহারে বলা হয়, দুই প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৪ সালের স্থলসীমানা চুক্তির আলোকে অমীমাংসিত সকল স্থলসীমানা সমস্যাগুলো সঠিকভাবে নিষ্পত্তিতে সম্মতি হয়েছেন। তাঁরা জয়েন্ট বাউন্ডারি ওয়ার্কিং গ্রম্নপের এ ব্যাপারে বৈঠক আহ্বানেও সম্মত হয়েছেন।
ইশতেহারে বলা হয়, উভয় প্রধানমন্ত্রী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সমুদ্রসীমা পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন।
তাঁরা ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে 'মৈত্রী এক্সপ্রেস' চালুকে স্বাগত জানান এবং দু'দেশের মধ্যে সড়ক ও রেল যোগাযোগ আবার চালু করার তাগিদ দেন। উভয় নেতা সম্মত হন যে প্রসত্মাবিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণে ভারতীয় অনুদান থেকে অর্থ যোগানো হবে।
শুষ্ক মৌসুমে তিসত্মার পানি প্রবাহ হ্রাস পাবার কারণে দু'দেশের জনগণেরই দুর্ভোগের বিষয়টিকে গুরম্নত্ব দিয়ে উভয় প্রধানমন্ত্রী মত ব্যক্ত করেন যে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিসত্মার পানি বণ্টন আলোচনা দ্রম্নত সম্পন্ন হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে উভয় প্রধানমন্ত্রী যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক আহ্বানের জন্য পরস্পরের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন এবং এ বৈঠক ২০১০ সালের প্রথম কোয়ার্টারের মধ্যেই আহ্বানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যৌথ নদী কমিশন ফেনী, মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী-ধরলা ও দুধকুমার নদীর সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলো নিয়েও আলোচনা করবে।
No comments