৩৩তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা- চাই আত্মবিশ্বাস
আজ শুরু হচ্ছে ৩৩তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা। এবারের পরীক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ৩১তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী ফারহানা জাহান।
আজ শুরু হচ্ছে ৩৩তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা। প্রথম দিনের পরীক্ষার সূচিতে রয়েছে গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা (সকাল) এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি (বিকেল)। এ দুটি বিষয়ে সবার প্রস্তুতি তো ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে গেছে। তবে একটি বিষয়ে আমার বলার আছে: পরীক্ষার হলে কোনো একটি অঙ্ক না মিললে তা নিয়ে সময় নষ্ট না করে অন্যগুলো আগে উত্তর দিন ও পরে ওই অঙ্ক সঠিকভাবে করার চেষ্টা করুন। আর আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে সমসাময়িক বিষয়ে যাঁদের ধারণা পরিষ্কার আছে, তাঁরা ভালো করবেন বলে আশা করি।
দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি নিয়েই সবাই বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। এখন শুধু শেষবারের মতো ঝালাই করে নেওয়ার পালা। পরীক্ষার বিষয়গুলোর মধ্যে কোনটিতে আপনি পারদর্শী, কোনটিতে দুর্বল, তা যাচাই করে নিন। এ সময় বন্ধুবান্ধবের অনেকেই বিভিন্ন সাজেশনের কথা বলবেন, যেগুলোর অনেক কিছুই হয়তো আপনার পড়া হয়নি। তাই এ নিয়ে মন খারাপ না করে বা অহেতুক সাজেশনের পেছনে না ছুটে আগের পড়া বিষয়গুলোতে একবার করে চোখ বুলিয়ে নিন।
বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে শেষ মুহূর্তের ভালো প্রস্তুতি অত্যন্ত ফলপ্রসূ। আমি অনেককেই দেখেছি, যাঁরা বাংলাদেশ বিষয়াবলি দ্বিতীয় পত্রের আগের দিন বাংলাদেশের সংবিধানের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন, তাঁরা পরীক্ষায় ভালো করেছেন। সংবিধানের পাশাপাশি সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ টপিক, এ দেশের ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, ইতিহাস, অর্থনীতি, সরকারব্যবস্থা, আর্থসামাজিক অবস্থা, শিক্ষানীতি ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ ধারণা নিয়ে নিন।
বাংলা বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে বিগত সালের পরীক্ষায় আসা ব্যাকরণ, শুদ্ধীকরণ ইত্যাদির আনুষঙ্গিক নিয়ম, প্রবাদ-প্রবচন ও বাগ্ধারা, বিভিন্ন ধরনের পত্র লেখার নিয়ম ইত্যাদি ভালো করে দেখে নিন। আপনি যদি অন্তত বিভিন্ন দরখাস্ত, মানপত্র বা চিঠি ইত্যাদি লেখার নিয়ম জানেন, যেকোনো ধরনের পত্র পরীক্ষায় আসুক না কেন, আপনি তার উত্তর দিয়ে আসতে পারবেন। নিজেকে ঝালাই করে নিতে বিগত সালে আসা কয়েকটি সারমর্ম/সারাংশ ও ভাবসম্প্রসারণের উত্তর নিজে নিজে বানিয়ে লিখে দেখতে পারেন, এতে পরীক্ষায় পড়ার বাইরে থেকে প্রশ্ন এলেও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজে থেকে উত্তর দিয়ে আসতে পারবেন। বাংলা বিষয়ে আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টপিক হলো, বাংলা সাহিত্য ও এর ইতিহাস।
এবার আসা যাক ইংরেজি বিষয়ে। ইংরেজি ব্যাকরণের বেসিক নিয়ম: ভয়েস, ন্যারেশন ইত্যাদি দেখে নিন। অনুবাদের জন্য বিগত সালের পরীক্ষায় আসা অনুবাদগুলো নিজে নিজে চর্চা করুন, এতে পরীক্ষায় পড়ার বাইরে থেকে প্রশ্ন এলেও উত্তর দিতে পারবেন সহজেই। ইংরেজি বিষয়ে ‘ফ্রি-হ্যান্ড’ লিখতে পারলে ভালো, এ জন্য যেকোনো টপিকের ওপর পরীক্ষার আগের দিন ফ্রি-হ্যান্ড লেখার চেষ্টা করুন।
পরীক্ষার পূর্বপ্রস্তুতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রস্তুতি। এবার যেহেতু দিনে দুটি করে পরীক্ষা, তাই এ বিষয়ে যত্নবান হওয়া জরুরি। বন্ধুদের মধ্যে কার প্রস্তুতি ভালো বা খারাপ, এসব নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে নিজের সবটুকু দিতে চেষ্টা করুন। কোন কোন টপিক আপনি পড়তে পারেননি, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে যা পড়েছেন, তা রিভিশন দিন।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে কেউই বিসিএস পরীক্ষা দিতে যেতে পারেন না। কেননা এ পরীক্ষার সিলেবাস অসীম। প্রস্তুতির চেয়েও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, পরীক্ষার হলে তা আপনি কীভাবে উপস্থাপন করেছেন। ধারণা থেকে হলেও সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসুন। আর বাংলা ছাড়া অন্য বিষয়গুলোর উত্তর আপনি যে ভাষায় প্রাঞ্জলভাবে লিখতে পারবেন, সে ভাষায় লিখুন। আমি ইংরেজি ছাড়া অন্য সব বিষয় বাংলায় দিয়েছি। পরীক্ষার জন্য অবশ্যই একাধিক কলম, পেনসিল ইত্যাদি সরঞ্জাম ও প্রয়োজনীয় কাগজ আগের দিন গুছিয়ে রাখুন। পরীক্ষার হলে অন্তত আধা ঘণ্টা আগে যাতে পৌঁছাতে পারেন এবং দুই পরীক্ষার মাঝখানে যেন ঠিকভাবে দুপুরের খাবার খেতে পারেন, সেদিকে বিশেষ লক্ষ রাখুন, না হলে পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে প্রস্তুতি নিতে সমস্যা হতে পারে।
‘পরীক্ষায় প্রশ্ন কঠিন আসতে পারে’ বা দিনে দুটি করে পরীক্ষা কীভাবে দেব, এসব ভেবে অহেতুক চিন্তা করার কিছু নেই। কারণ, আপনার মতো অন্য পরীক্ষার্থীরাও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন।
বিসিএস একটি স্বপ্নের নাম—এ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়। কিন্তু তাতে মনোবল না হারিয়ে, অহেতুক দুশ্চিন্তা না করে নিজেকে পড়াশোনা ও অবসর সময়ে ভালো লাগার বিষয়গুলোতে মগ্ন রাখুন, সাফল্য আপনার অজান্তেই এসে ধরা দেবে।
লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি
১৯ ডিসেম্বর
গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা (সকাল) এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি (বিকেল)
২০ ডিসেম্বর
বাংলাদেশ বিষয়াবলি ১ম পত্র (সকাল), বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২য় পত্র (বিকেল)
২৩ ডিসেম্বর
বাংলা ১ম পত্র (সকাল), সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (বিকেল)
২৪ ডিসেম্বর
ইংরেজি ১ম (সকাল) ও ইংরেজি ২য় (বিকেল)
২৬ ডিসেম্বর
বাংলা ২য় পত্র (বিকেল); এটি শুধু সাধারণ ক্যাডারের জন্য
৩০ ডিসেম্বর
মেডিকেল সায়েন্স (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র)
১১ ডিসেম্বর প্রকাশিত আসনবিন্যাস অপরিবর্তিত থাকবে।
সূত্র: পিএসসি ওয়েবসাইট www.bpsc.gov.bda
দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি নিয়েই সবাই বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। এখন শুধু শেষবারের মতো ঝালাই করে নেওয়ার পালা। পরীক্ষার বিষয়গুলোর মধ্যে কোনটিতে আপনি পারদর্শী, কোনটিতে দুর্বল, তা যাচাই করে নিন। এ সময় বন্ধুবান্ধবের অনেকেই বিভিন্ন সাজেশনের কথা বলবেন, যেগুলোর অনেক কিছুই হয়তো আপনার পড়া হয়নি। তাই এ নিয়ে মন খারাপ না করে বা অহেতুক সাজেশনের পেছনে না ছুটে আগের পড়া বিষয়গুলোতে একবার করে চোখ বুলিয়ে নিন।
বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে শেষ মুহূর্তের ভালো প্রস্তুতি অত্যন্ত ফলপ্রসূ। আমি অনেককেই দেখেছি, যাঁরা বাংলাদেশ বিষয়াবলি দ্বিতীয় পত্রের আগের দিন বাংলাদেশের সংবিধানের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন, তাঁরা পরীক্ষায় ভালো করেছেন। সংবিধানের পাশাপাশি সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ টপিক, এ দেশের ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, ইতিহাস, অর্থনীতি, সরকারব্যবস্থা, আর্থসামাজিক অবস্থা, শিক্ষানীতি ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ ধারণা নিয়ে নিন।
বাংলা বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে বিগত সালের পরীক্ষায় আসা ব্যাকরণ, শুদ্ধীকরণ ইত্যাদির আনুষঙ্গিক নিয়ম, প্রবাদ-প্রবচন ও বাগ্ধারা, বিভিন্ন ধরনের পত্র লেখার নিয়ম ইত্যাদি ভালো করে দেখে নিন। আপনি যদি অন্তত বিভিন্ন দরখাস্ত, মানপত্র বা চিঠি ইত্যাদি লেখার নিয়ম জানেন, যেকোনো ধরনের পত্র পরীক্ষায় আসুক না কেন, আপনি তার উত্তর দিয়ে আসতে পারবেন। নিজেকে ঝালাই করে নিতে বিগত সালে আসা কয়েকটি সারমর্ম/সারাংশ ও ভাবসম্প্রসারণের উত্তর নিজে নিজে বানিয়ে লিখে দেখতে পারেন, এতে পরীক্ষায় পড়ার বাইরে থেকে প্রশ্ন এলেও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজে থেকে উত্তর দিয়ে আসতে পারবেন। বাংলা বিষয়ে আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টপিক হলো, বাংলা সাহিত্য ও এর ইতিহাস।
এবার আসা যাক ইংরেজি বিষয়ে। ইংরেজি ব্যাকরণের বেসিক নিয়ম: ভয়েস, ন্যারেশন ইত্যাদি দেখে নিন। অনুবাদের জন্য বিগত সালের পরীক্ষায় আসা অনুবাদগুলো নিজে নিজে চর্চা করুন, এতে পরীক্ষায় পড়ার বাইরে থেকে প্রশ্ন এলেও উত্তর দিতে পারবেন সহজেই। ইংরেজি বিষয়ে ‘ফ্রি-হ্যান্ড’ লিখতে পারলে ভালো, এ জন্য যেকোনো টপিকের ওপর পরীক্ষার আগের দিন ফ্রি-হ্যান্ড লেখার চেষ্টা করুন।
পরীক্ষার পূর্বপ্রস্তুতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রস্তুতি। এবার যেহেতু দিনে দুটি করে পরীক্ষা, তাই এ বিষয়ে যত্নবান হওয়া জরুরি। বন্ধুদের মধ্যে কার প্রস্তুতি ভালো বা খারাপ, এসব নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে নিজের সবটুকু দিতে চেষ্টা করুন। কোন কোন টপিক আপনি পড়তে পারেননি, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে যা পড়েছেন, তা রিভিশন দিন।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে কেউই বিসিএস পরীক্ষা দিতে যেতে পারেন না। কেননা এ পরীক্ষার সিলেবাস অসীম। প্রস্তুতির চেয়েও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, পরীক্ষার হলে তা আপনি কীভাবে উপস্থাপন করেছেন। ধারণা থেকে হলেও সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসুন। আর বাংলা ছাড়া অন্য বিষয়গুলোর উত্তর আপনি যে ভাষায় প্রাঞ্জলভাবে লিখতে পারবেন, সে ভাষায় লিখুন। আমি ইংরেজি ছাড়া অন্য সব বিষয় বাংলায় দিয়েছি। পরীক্ষার জন্য অবশ্যই একাধিক কলম, পেনসিল ইত্যাদি সরঞ্জাম ও প্রয়োজনীয় কাগজ আগের দিন গুছিয়ে রাখুন। পরীক্ষার হলে অন্তত আধা ঘণ্টা আগে যাতে পৌঁছাতে পারেন এবং দুই পরীক্ষার মাঝখানে যেন ঠিকভাবে দুপুরের খাবার খেতে পারেন, সেদিকে বিশেষ লক্ষ রাখুন, না হলে পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে প্রস্তুতি নিতে সমস্যা হতে পারে।
‘পরীক্ষায় প্রশ্ন কঠিন আসতে পারে’ বা দিনে দুটি করে পরীক্ষা কীভাবে দেব, এসব ভেবে অহেতুক চিন্তা করার কিছু নেই। কারণ, আপনার মতো অন্য পরীক্ষার্থীরাও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন।
বিসিএস একটি স্বপ্নের নাম—এ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়। কিন্তু তাতে মনোবল না হারিয়ে, অহেতুক দুশ্চিন্তা না করে নিজেকে পড়াশোনা ও অবসর সময়ে ভালো লাগার বিষয়গুলোতে মগ্ন রাখুন, সাফল্য আপনার অজান্তেই এসে ধরা দেবে।
লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি
১৯ ডিসেম্বর
গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা (সকাল) এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি (বিকেল)
২০ ডিসেম্বর
বাংলাদেশ বিষয়াবলি ১ম পত্র (সকাল), বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২য় পত্র (বিকেল)
২৩ ডিসেম্বর
বাংলা ১ম পত্র (সকাল), সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (বিকেল)
২৪ ডিসেম্বর
ইংরেজি ১ম (সকাল) ও ইংরেজি ২য় (বিকেল)
২৬ ডিসেম্বর
বাংলা ২য় পত্র (বিকেল); এটি শুধু সাধারণ ক্যাডারের জন্য
৩০ ডিসেম্বর
মেডিকেল সায়েন্স (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র)
১১ ডিসেম্বর প্রকাশিত আসনবিন্যাস অপরিবর্তিত থাকবে।
সূত্র: পিএসসি ওয়েবসাইট www.bpsc.gov.bda
No comments