হারিয়ে যাচ্ছে টক বেগুন by মোকারম হোসেন
শরতের মাঝামাঝি সময় থেকেই সারা দেশে রবিশস্যের প্রস্তুতি শুরু হয়। বিচিত্র শাক-সবজি, ডাল-কাউন, সরিষা আর পেঁয়াজ-রসুনে ভরে ওঠে মাঠ। হেমন্ত-শীতের ঝকঝকে নীল আকাশের নিচে এই মাঠগুলো একেকটি সোনার টুকরোর মতো।
ভোরে শিশিরস্নাত মটরশুঁটি, খেসারি, মুগ আর কালাই ফুলের নরম পাপড়িতে মিষ্টি আলোর যে দ্যুতি ছড়ানো, তার সৌন্দর্য অসাধারণ। কিন্তু আমাদের পলিমাটির আত্মজ এই স্বর্ণ-শস্যগুলোর মধ্যে কাউন, টক বেগুনসহ বেশ কয়েকটি প্রজাতি প্রায় বিলুপ্তির পথে।
কৃষি বিভাগ, ব্যক্তিগত অনুসন্ধান, স্থানীয় পরিবেশকর্মী ও সাংবাদিকদের তথ্যমতে, বর্তমানে সারা দেশে ‘টক বেগুন’ (Lycopersicon esculentum) খুব একটা দেখা যায় না। শুধু সিলেট, চট্টগ্রাম ও উপকূলীয় কয়েকটি জেলায় সীমিত পরিমাণে চাষ হয়। কদাচ বাজারে পাওয়া যায়। নাম ‘টক বেগুন’ হলেও এগুলো মূলত টমেটোর একটি আদি জাত। এমনকি উদ্ভিদতাত্ত্বিক নামও একই। দেশের দুষপ্রাপ্য এই টক বেগুনের দেখা পেয়েছি নিউইয়র্ক বোটানিক্যাল গার্ডেনের গ্লোবাল গার্ডেন অংশে। সেখানে ঢোকার পথে একরাশ গাঁদা ও জিনিয়া ফুল, লাল টকটকে শিম, লাউয়ের মাচা, চাঁপা কলার ঝাড়, ভুট্টা আর কাকতাড়ুয়া দেখে রীতিমতো মুগ্ধ। ভেতরে দেয়াল ঘেঁষে আছে একসার টক বেগুন।
আজ থেকে অন্তত ৫০ বছর আগে দেশে যখন বর্তমান আবাদিত জাতের টমেটোর প্রচলন হয়নি, তখন টক বেগুনই ছিল একমাত্র টমেটো। খেতের আল এবং বাড়ির পতিত স্থানে রোপণ করা গাছগুলোতে ভালো ফলন হতো। মাত্র চার-পাঁচটি গাছ একটি পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারত। তবে এই টমেটো সালাদের উপযুক্ত নয়। তা ছাড়া স্বাদের দিক থেকেও অন্যান্য আবাদিত জাতের টমেটোর মতো ততটা উন্নত নয়।
ছেলেবেলায় দেখেছি, পাকা টক বেগুন কটে পেঁয়াজ কুচি, মরিচ আর সরিষার তেল দিয়ে ভর্তা বানানো হয়। এই ভর্তা দারুণ উপাদেয়। তা ছাড়া টক ও বিভিন্ন তরকারি রান্নায় টক বেগুনের ব্যাপক প্রচলন ছিল। এই বেগুন পুষ্টিমানেও অনন্য। সাধারণত পৌষ মাসের দিকে চারা রোপণ করা হয়, ফলন শুরু হয় মাস খানেক পর। গাছ, ফুল ও পাতার গড়ন সাধারণ টমেটোগাছের মতোই, কাণ্ড নিরেট কিন্তু দুর্বল ও লতানো। গাছ বড় হলে কাঠি বেঁধে রাখতে হয়। কাঁচা ফলের রং সবুজ, পাকলে হলুদ-সোনালি। টক বেগুনের গড়ন অনেকটা মার্বেলের মতো। তবে আকারে খানিকটা বড়। কাঁচা অবস্থায় দাগ-ফুটকিভরা।
সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তা হলে উন্নত গবেষণার মাধ্যমে স্বাদ পরিবর্তনসহ প্রজাতি সংরক্ষণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল বেরিয়ে আসতে পারে। এমন একটি উদ্যোগই কেবল টক বেগুনকে নিশ্চিত বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
কৃষি বিভাগ, ব্যক্তিগত অনুসন্ধান, স্থানীয় পরিবেশকর্মী ও সাংবাদিকদের তথ্যমতে, বর্তমানে সারা দেশে ‘টক বেগুন’ (Lycopersicon esculentum) খুব একটা দেখা যায় না। শুধু সিলেট, চট্টগ্রাম ও উপকূলীয় কয়েকটি জেলায় সীমিত পরিমাণে চাষ হয়। কদাচ বাজারে পাওয়া যায়। নাম ‘টক বেগুন’ হলেও এগুলো মূলত টমেটোর একটি আদি জাত। এমনকি উদ্ভিদতাত্ত্বিক নামও একই। দেশের দুষপ্রাপ্য এই টক বেগুনের দেখা পেয়েছি নিউইয়র্ক বোটানিক্যাল গার্ডেনের গ্লোবাল গার্ডেন অংশে। সেখানে ঢোকার পথে একরাশ গাঁদা ও জিনিয়া ফুল, লাল টকটকে শিম, লাউয়ের মাচা, চাঁপা কলার ঝাড়, ভুট্টা আর কাকতাড়ুয়া দেখে রীতিমতো মুগ্ধ। ভেতরে দেয়াল ঘেঁষে আছে একসার টক বেগুন।
আজ থেকে অন্তত ৫০ বছর আগে দেশে যখন বর্তমান আবাদিত জাতের টমেটোর প্রচলন হয়নি, তখন টক বেগুনই ছিল একমাত্র টমেটো। খেতের আল এবং বাড়ির পতিত স্থানে রোপণ করা গাছগুলোতে ভালো ফলন হতো। মাত্র চার-পাঁচটি গাছ একটি পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারত। তবে এই টমেটো সালাদের উপযুক্ত নয়। তা ছাড়া স্বাদের দিক থেকেও অন্যান্য আবাদিত জাতের টমেটোর মতো ততটা উন্নত নয়।
ছেলেবেলায় দেখেছি, পাকা টক বেগুন কটে পেঁয়াজ কুচি, মরিচ আর সরিষার তেল দিয়ে ভর্তা বানানো হয়। এই ভর্তা দারুণ উপাদেয়। তা ছাড়া টক ও বিভিন্ন তরকারি রান্নায় টক বেগুনের ব্যাপক প্রচলন ছিল। এই বেগুন পুষ্টিমানেও অনন্য। সাধারণত পৌষ মাসের দিকে চারা রোপণ করা হয়, ফলন শুরু হয় মাস খানেক পর। গাছ, ফুল ও পাতার গড়ন সাধারণ টমেটোগাছের মতোই, কাণ্ড নিরেট কিন্তু দুর্বল ও লতানো। গাছ বড় হলে কাঠি বেঁধে রাখতে হয়। কাঁচা ফলের রং সবুজ, পাকলে হলুদ-সোনালি। টক বেগুনের গড়ন অনেকটা মার্বেলের মতো। তবে আকারে খানিকটা বড়। কাঁচা অবস্থায় দাগ-ফুটকিভরা।
সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তা হলে উন্নত গবেষণার মাধ্যমে স্বাদ পরিবর্তনসহ প্রজাতি সংরক্ষণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল বেরিয়ে আসতে পারে। এমন একটি উদ্যোগই কেবল টক বেগুনকে নিশ্চিত বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
No comments