বাংলানিউজকে শিক্ষামন্ত্রীঃ শিক্ষার উন্নয়নে সহজ বিকল্প নেই by সাবিবর আহমদ
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘‘এই প্রথম দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী ও গুণগত পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে, যা ছিলো সবচেয়ে কঠিন এবং বড় চ্যালেঞ্জ। জাতির জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সহজ কোনো বিকল্প নেই।”
বুধবার সকালে সিলেট সার্কিট হাউসে বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার যুগ যুগ পরেও দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনার কোনো সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা বা শিক্ষানীতি ছিলো না। শিক্ষার্থীরা বই পেতো না, ফলাফল বের হতে মাসের পর মাস যেত কিন্তু এখন সে অবস্থা পাল্টেছে। এসব পরিবর্তন আনা ছিলো সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, “আগে দেশে মার্চ এপ্রিলের দিকে প্রাথমিকের ৪০ ভাগ ছাত্রছাত্রী নতুন পাঠ্যবই পেতো, অন্যরা পেতো পুরাতন বই। তাও সবাই পেতো না। কোমলমতি শিশু কিশোররে পড়ানো হতো মিথ্যা ও বিকৃতি ইতিহাস। ভালোভাবে ক্লাস শুরু হতো দুই তিন মাস পর। আমরা সে অবস্থার পরিবর্তন এনেছি।”
নূরুল ইসলাম নাহিদ আরও যোগ করেন, “এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ ছিলো না। ফল বের হতে তিন-সাড়ে তিন মাস চলে যেত। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ছিলো অবহেলার শিকার। ভর্তি বাণিজ্য, কোচিং, অনিয়ম, দুর্নীতি স্বজনপ্রীতির কালো থাবায় নিমজ্জিত ছিলো পুরো শিক্ষাব্যবস্থা।’’
তিনি বলেন, এসব সকল স্তরে এখন ঐতিহাসিক, যুগান্তকারী ও গুণগত পরিবর্তন এসেছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “১৯৬২ সালের প্রথম শিক্ষা আন্দোলনের মিছিলে আমিও ছিলাম। স্বাধীনতার এতো বছর পরে হলেও দেশের সকল দল, আলেম উলামা, শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে স্থায়ী শিক্ষানীতি করা হয়েছে।”
শিক্ষা একটি ডায়নামিক বিষয় উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, “প্রতিনিয়ত দেশ-জাতি, সমাজ, জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিশ্ব পরিবেশ পরিবর্তিত হচ্ছে। শিক্ষানীতি কোনো ধর্মগ্রন্ত্র নয়। তাই প্রয়োজনে প্রণীত শিক্ষানীতিতেও পরিবর্তন আনা যাবে। ভুল ত্রুটি ধরা পড়লে তা সংশোধন করা হবে।”
“কোনো দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি নয় জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে শিক্ষানীতি প্রণিত হওয়ায় সবাই এটিকে গ্রহণ করেছেন,” মত মন্ত্রীর।
তিনি বলেন, “আনন্দের বিষয় এই যে দেশে প্রথম কোনো শিক্ষানীতি ঘোষণার পর তার বিরুদ্ধে কোনো মিছিল, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ হয়নি।”
‘‘এমনকি প্রধান বিরোধীদল বিএনপি’র সাবেক শিক্ষামন্ত্রী, দু’জন তাত্বিক শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য,বিশিষ্ট আলেমওলামাগণ অনুমোদিত শিক্ষানীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
এসময় বাংলানিউজের কাছে আরেকটি সময়োপযোগী পরিবর্তনের কথা জানিয়ে নূরুল ইসলাম নাহিত বলেন, “আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে যে সব পাঠ্যপুস্তক পড়ানো হচ্ছে তা লেখা হয়েছে ১৭ বছর আগে ১৯৯৫ সালের কারিকুলাম অনুসারে। কিন্তু তার পরবর্তী সময়ে জ্ঞান বিজ্ঞান বিশেষ করে প্রযুক্তির জগতে অভাবনীয় বিপ্লব ঘটে গেছে। এর প্রতিফলণ পাঠ্যপুস্তকে নেই। সেটা নিশ্চিত করতে আমরা এখন নতুন কারিকুলাম তৈরি করেছি।”
মন্ত্রী জানান, ৫৫০ জন শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, গবেষক প্রায় দু’বছর ধরে কাজ করে নতুন যুযোপযোগী কারিকুলাম প্রস্তুত করে তার ভিত্তিতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তৈরি করেছেন। নতুন কারিকুলাম অনুসারে ১১১ টি বই লেখা হয়েছে। ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারিতে ৩ কোটি ৬৮ হাজার ৮৬ হাজার ১৭২ জন ছাত্রছাত্রীর সকলের হাতে নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী প্রায় ২৭ কোটি নতুন বই তুলে দেওয়া হবে।
বর্তমান সরকারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ই-বুক প্রবর্তন, এ কথা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে ইলেক্ট্রনিক পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহ ও ব্যবহার করা সম্ভব।”
দেশে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি প্রতিযোগিতাও বাড়ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান সমান নয়। এরকম প্রতিযোগিতা সারা বিশ্বেই আছে।”
তিনি জানান, ৩৪ টি পাবলিক ও ৬২ টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশে উচ্চ শিক্ষা চলছে। এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ লাখ ৯০ হাজার ২০০ এবং প্রাইভেটে ২ লক্ষ ৮০ হাজার ৮২২ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে।
দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন কারিগরি শিক্ষা খুবই প্রয়োজন মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘মাত্র ১ ভাগ ছাত্রছাত্রী পড়তো কারিগরি শিক্ষায়। কিন্তু এখন আমাদের লক্ষ্য হলো কমপক্ষে ৫০ ভাগ ছেলে মেয়েকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।’’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যক্রমের বিলম্বিত প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, “বিগত জোট সরকারের আমলে গভীর সংকট সৃষ্টি করে কলেজ শিক্ষা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিলো। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে বড় ধরণের সংস্কারমূলক পদক্ষেপের উদ্যাগ নেওয়া হচ্ছে।’’
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও জানান, প্রতি বিভাগে একটি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যালয় স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী ও খুলনায় প্রাথমিকভাবে ঘর ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
নূরুল ইসলাম নাহিদ আরও যোগ করেন, “এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ ছিলো না। ফল বের হতে তিন-সাড়ে তিন মাস চলে যেত। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ছিলো অবহেলার শিকার। ভর্তি বাণিজ্য, কোচিং, অনিয়ম, দুর্নীতি স্বজনপ্রীতির কালো থাবায় নিমজ্জিত ছিলো পুরো শিক্ষাব্যবস্থা।’’
তিনি বলেন, এসব সকল স্তরে এখন ঐতিহাসিক, যুগান্তকারী ও গুণগত পরিবর্তন এসেছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “১৯৬২ সালের প্রথম শিক্ষা আন্দোলনের মিছিলে আমিও ছিলাম। স্বাধীনতার এতো বছর পরে হলেও দেশের সকল দল, আলেম উলামা, শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে স্থায়ী শিক্ষানীতি করা হয়েছে।”
শিক্ষা একটি ডায়নামিক বিষয় উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, “প্রতিনিয়ত দেশ-জাতি, সমাজ, জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিশ্ব পরিবেশ পরিবর্তিত হচ্ছে। শিক্ষানীতি কোনো ধর্মগ্রন্ত্র নয়। তাই প্রয়োজনে প্রণীত শিক্ষানীতিতেও পরিবর্তন আনা যাবে। ভুল ত্রুটি ধরা পড়লে তা সংশোধন করা হবে।”
“কোনো দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি নয় জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে শিক্ষানীতি প্রণিত হওয়ায় সবাই এটিকে গ্রহণ করেছেন,” মত মন্ত্রীর।
তিনি বলেন, “আনন্দের বিষয় এই যে দেশে প্রথম কোনো শিক্ষানীতি ঘোষণার পর তার বিরুদ্ধে কোনো মিছিল, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ হয়নি।”
‘‘এমনকি প্রধান বিরোধীদল বিএনপি’র সাবেক শিক্ষামন্ত্রী, দু’জন তাত্বিক শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য,বিশিষ্ট আলেমওলামাগণ অনুমোদিত শিক্ষানীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
এসময় বাংলানিউজের কাছে আরেকটি সময়োপযোগী পরিবর্তনের কথা জানিয়ে নূরুল ইসলাম নাহিত বলেন, “আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে যে সব পাঠ্যপুস্তক পড়ানো হচ্ছে তা লেখা হয়েছে ১৭ বছর আগে ১৯৯৫ সালের কারিকুলাম অনুসারে। কিন্তু তার পরবর্তী সময়ে জ্ঞান বিজ্ঞান বিশেষ করে প্রযুক্তির জগতে অভাবনীয় বিপ্লব ঘটে গেছে। এর প্রতিফলণ পাঠ্যপুস্তকে নেই। সেটা নিশ্চিত করতে আমরা এখন নতুন কারিকুলাম তৈরি করেছি।”
মন্ত্রী জানান, ৫৫০ জন শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, গবেষক প্রায় দু’বছর ধরে কাজ করে নতুন যুযোপযোগী কারিকুলাম প্রস্তুত করে তার ভিত্তিতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তৈরি করেছেন। নতুন কারিকুলাম অনুসারে ১১১ টি বই লেখা হয়েছে। ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারিতে ৩ কোটি ৬৮ হাজার ৮৬ হাজার ১৭২ জন ছাত্রছাত্রীর সকলের হাতে নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী প্রায় ২৭ কোটি নতুন বই তুলে দেওয়া হবে।
বর্তমান সরকারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ই-বুক প্রবর্তন, এ কথা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে ইলেক্ট্রনিক পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহ ও ব্যবহার করা সম্ভব।”
দেশে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি প্রতিযোগিতাও বাড়ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান সমান নয়। এরকম প্রতিযোগিতা সারা বিশ্বেই আছে।”
তিনি জানান, ৩৪ টি পাবলিক ও ৬২ টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশে উচ্চ শিক্ষা চলছে। এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ লাখ ৯০ হাজার ২০০ এবং প্রাইভেটে ২ লক্ষ ৮০ হাজার ৮২২ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে।
দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন কারিগরি শিক্ষা খুবই প্রয়োজন মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘মাত্র ১ ভাগ ছাত্রছাত্রী পড়তো কারিগরি শিক্ষায়। কিন্তু এখন আমাদের লক্ষ্য হলো কমপক্ষে ৫০ ভাগ ছেলে মেয়েকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।’’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যক্রমের বিলম্বিত প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, “বিগত জোট সরকারের আমলে গভীর সংকট সৃষ্টি করে কলেজ শিক্ষা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিলো। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে বড় ধরণের সংস্কারমূলক পদক্ষেপের উদ্যাগ নেওয়া হচ্ছে।’’
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও জানান, প্রতি বিভাগে একটি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যালয় স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী ও খুলনায় প্রাথমিকভাবে ঘর ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
No comments