জামায়াত নিষিদ্ধ করার দাবিতে- শান্তিপূর্ণ হরতাল
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ, রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ, দ্রুত যুদ্ধাপরাধের বিচার শেষ ও রায় কার্যকর করাসহ সাত দফা দাবিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে।
সহিংসতামুক্ত এই কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। রাজধানী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি। নগরী ছিল রিকশার দখলে। কয়েকটি সড়কে মিনিবাস চলাচল করেছে। তবে মতিঝিল, পুরানা পল্টন মোড়, মহাখালী, গাবতলী, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, আজিমপুর মোড়, জিগাতলা, ঢাকা কলেজসহ বিভিন্ন সড়কের ওপর পিকেটিং হওয়ায় যানবাহন চলাচল কম ছিল। পুরানা পল্টন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় খণ্ড খণ্ড মিছিল করে নেতা-কর্মীরা।
হরতালকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে কয়েকটি গার্মেন্ট কারখানায় হামলার খবর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিল সারা দেশে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানগুলো বন্ধ ছিল। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। যাত্রী কম নিয়ে সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে লঞ্চ।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট ও তাদের শরিক দল জামায়াতে ইসলামীর হরতালের আগে এবং হরতালের সময় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলেও এদিন তেমন কিছুই হয়নি। বরং পল্টন, শাহবাগ, মিরপুরসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে দলীয় ও জাতীয় পতাকা হাতে এবং বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে, গান গেয়ে পিকেটিং করে হরতালকারী দলগুলোর কর্মীরা। কয়েকটি স্থানে বাঁশ ফেলে যানবাহন বিকল্প সড়কে ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ।
হরতাল 'শান্তিপূর্ণ' হওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধন্যবাদ : ঢাকাসহ সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করায় সিপিবি, বাসদ,
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও বাম মোর্চার নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার রমনায় ইউবিএল ক্রসিংয়ে একটি লেগুনার কাচ ভাঙার ঘটনা ছাড়া সারা দেশে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। গোটা দেশে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তারা হরতাল পালন করেছে। এ জন্য তাদের কোথাও বাধা দেওয়া হয়নি।
বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসাত্মক হরতাল পালনকারীদের 'এ হরতাল থেকে শিক্ষা নেওয়ার' পরামর্শ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হরতাল একটি ব্যতিক্রমী কর্মসূচি। এ ধরনের কর্মসূচি যাতে জনগণের জীবনে বিরূপ অবস্থার সৃষ্টি না করে সে জন্য পুলিশ বাহিনী কাজ করেছে। কোথাও কোথাও গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়াকে পুলিশের এ কাজেরই অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। পুলিশের বিরুদ্ধে হরতালে যানবাহন আটকে দেওয়া ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, 'এ ধরনের ঘটনা কোথায় ঘটেছে, তা আমাদের জানা নেই। অন্য সময় বিরোধী দলের হরতালে পুলিশ বাধা দিলেও এ হরতালে 'অন্য ভূমিকার' কারণ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করেছে। এ জন্যই তাদের কোথাও বাধা দেওয়া হয়নি। হরতালের সময় তারা দুটি স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে বসে পড়েছিল।
সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি : হরতাল সফল দাবি করে সিপিবি-বাসদ ও বাম মোর্চার নেতারা বলেছেন, কর্মসূচি চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন জোটের ২০ নেতা-কর্মী। ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। বাস্তবতা হলো ঢাকার বাইরে হরতাল পালনে পুলিশ, র্যাবসহ ছাত্রলীগ বাধা সৃষ্টি করলেও রাজধানীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান সিপিবি, বাসদ ও বাম মোর্চার নেতারা। হরতাল শেষে দাবি আদায়ে পৃথক পৃথকভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সিপিবি, বাসদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টিসহ বাম মোর্চা। আগামী ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিছিল সমাবেশ, ১ জানুয়ারি সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দিবস পালনসহ ৩-৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে জাগরণ অভিযান চলবে। ২৬টি জনসভা, ৫১টি সমাবেশ ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পথ সভা করা হবে। এ ছাড়া হরতাল সমর্থনকারী পৃথক বাম জোট গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার পক্ষ থেকে ২৪ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামসহ অন্তত ১০ জেলায় হরতাল সমর্থকদের ওপর হামলাসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই জোটের নেতারা।
হরতাল সফল করতে সিপিবি ও বাসদকর্মীদের ভোর থেকেই দলীয় ও জাতীয় পতাকা নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে খণ্ড খণ্ড মিছিল ও সমাবেশ করতে দেখা যায়। গণসংগীত পরিবেশন করে রাজনৈতিক কর্মীসহ বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে রাস্তার ওপর অবস্থান নেয় পিকেটাররা।
সকাল ৬টার দিকে পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং তোপখানা রোডে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে দুটি মিছিল বের হয়। কাছাকাছি সময়ে বাসদের একটি মিছিলও পল্টন, দৈনিক বাংলা ও প্রেসক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের কর্মীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদী গান, সমাবেশ ও মিছিল করে। তারা যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। তবে কোনো ভাঙচুর হয়নি। রূপসী বাংলা হোটেলের সামনেও পিকেটিং হয়েছে। হরতালের সমর্থনে দৈনিক বাংলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত রাস্তার একপাশে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
হরতাল চলাকালে পুরানা পল্টনে রাস্তার ওপর সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন সিপিবি, বাসদ ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা-কর্মীরা। সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, বর্তমান সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বজলুর রশিদ ফিরোজ, সাজ্জাদ জহির চন্দন, রাজেকুজ্জামান রতন, আবু জাফর আহমেদ, লক্ষ্মী চক্রবর্তী প্রমুখ এখানে বক্তব্য দেন। পল্টন মোড়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশ ও মিছিলে নেতৃত্ব দেন। হরতাল শেষে সিপিবি কার্যালয়ে আয়োজিত বাম জোটের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতারা কর্মসূচি সফল করায় দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, 'আমাদের হরতালের প্রতিবাদে ধর্মীয় উগ্রপন্থী ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে ২০ জানুয়ারি হরতাল ডাকা হয়েছে। সিপিবি ও বাসদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে- তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী মালিকপক্ষ, সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দেওয়া, গার্মেন্টসহ সব শিল্প-কারখানায় আইন অনুযায়ী নিরাপত্তা, শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার ও ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা এবং বিদ্যুৎ বিল, গাড়িভাড়াসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো ও বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ করা।
হরতালকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে কয়েকটি গার্মেন্ট কারখানায় হামলার খবর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিল সারা দেশে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানগুলো বন্ধ ছিল। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। যাত্রী কম নিয়ে সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে লঞ্চ।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট ও তাদের শরিক দল জামায়াতে ইসলামীর হরতালের আগে এবং হরতালের সময় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলেও এদিন তেমন কিছুই হয়নি। বরং পল্টন, শাহবাগ, মিরপুরসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে দলীয় ও জাতীয় পতাকা হাতে এবং বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে, গান গেয়ে পিকেটিং করে হরতালকারী দলগুলোর কর্মীরা। কয়েকটি স্থানে বাঁশ ফেলে যানবাহন বিকল্প সড়কে ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ।
হরতাল 'শান্তিপূর্ণ' হওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধন্যবাদ : ঢাকাসহ সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করায় সিপিবি, বাসদ,
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও বাম মোর্চার নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার রমনায় ইউবিএল ক্রসিংয়ে একটি লেগুনার কাচ ভাঙার ঘটনা ছাড়া সারা দেশে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। গোটা দেশে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তারা হরতাল পালন করেছে। এ জন্য তাদের কোথাও বাধা দেওয়া হয়নি।
বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসাত্মক হরতাল পালনকারীদের 'এ হরতাল থেকে শিক্ষা নেওয়ার' পরামর্শ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হরতাল একটি ব্যতিক্রমী কর্মসূচি। এ ধরনের কর্মসূচি যাতে জনগণের জীবনে বিরূপ অবস্থার সৃষ্টি না করে সে জন্য পুলিশ বাহিনী কাজ করেছে। কোথাও কোথাও গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়াকে পুলিশের এ কাজেরই অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। পুলিশের বিরুদ্ধে হরতালে যানবাহন আটকে দেওয়া ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, 'এ ধরনের ঘটনা কোথায় ঘটেছে, তা আমাদের জানা নেই। অন্য সময় বিরোধী দলের হরতালে পুলিশ বাধা দিলেও এ হরতালে 'অন্য ভূমিকার' কারণ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করেছে। এ জন্যই তাদের কোথাও বাধা দেওয়া হয়নি। হরতালের সময় তারা দুটি স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে বসে পড়েছিল।
সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি : হরতাল সফল দাবি করে সিপিবি-বাসদ ও বাম মোর্চার নেতারা বলেছেন, কর্মসূচি চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন জোটের ২০ নেতা-কর্মী। ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। বাস্তবতা হলো ঢাকার বাইরে হরতাল পালনে পুলিশ, র্যাবসহ ছাত্রলীগ বাধা সৃষ্টি করলেও রাজধানীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান সিপিবি, বাসদ ও বাম মোর্চার নেতারা। হরতাল শেষে দাবি আদায়ে পৃথক পৃথকভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সিপিবি, বাসদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টিসহ বাম মোর্চা। আগামী ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিছিল সমাবেশ, ১ জানুয়ারি সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দিবস পালনসহ ৩-৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে জাগরণ অভিযান চলবে। ২৬টি জনসভা, ৫১টি সমাবেশ ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পথ সভা করা হবে। এ ছাড়া হরতাল সমর্থনকারী পৃথক বাম জোট গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার পক্ষ থেকে ২৪ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামসহ অন্তত ১০ জেলায় হরতাল সমর্থকদের ওপর হামলাসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই জোটের নেতারা।
হরতাল সফল করতে সিপিবি ও বাসদকর্মীদের ভোর থেকেই দলীয় ও জাতীয় পতাকা নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে খণ্ড খণ্ড মিছিল ও সমাবেশ করতে দেখা যায়। গণসংগীত পরিবেশন করে রাজনৈতিক কর্মীসহ বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে রাস্তার ওপর অবস্থান নেয় পিকেটাররা।
সকাল ৬টার দিকে পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং তোপখানা রোডে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে দুটি মিছিল বের হয়। কাছাকাছি সময়ে বাসদের একটি মিছিলও পল্টন, দৈনিক বাংলা ও প্রেসক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের কর্মীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদী গান, সমাবেশ ও মিছিল করে। তারা যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। তবে কোনো ভাঙচুর হয়নি। রূপসী বাংলা হোটেলের সামনেও পিকেটিং হয়েছে। হরতালের সমর্থনে দৈনিক বাংলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত রাস্তার একপাশে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
হরতাল চলাকালে পুরানা পল্টনে রাস্তার ওপর সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন সিপিবি, বাসদ ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা-কর্মীরা। সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, বর্তমান সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বজলুর রশিদ ফিরোজ, সাজ্জাদ জহির চন্দন, রাজেকুজ্জামান রতন, আবু জাফর আহমেদ, লক্ষ্মী চক্রবর্তী প্রমুখ এখানে বক্তব্য দেন। পল্টন মোড়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশ ও মিছিলে নেতৃত্ব দেন। হরতাল শেষে সিপিবি কার্যালয়ে আয়োজিত বাম জোটের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতারা কর্মসূচি সফল করায় দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, 'আমাদের হরতালের প্রতিবাদে ধর্মীয় উগ্রপন্থী ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে ২০ জানুয়ারি হরতাল ডাকা হয়েছে। সিপিবি ও বাসদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে- তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী মালিকপক্ষ, সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দেওয়া, গার্মেন্টসহ সব শিল্প-কারখানায় আইন অনুযায়ী নিরাপত্তা, শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার ও ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা এবং বিদ্যুৎ বিল, গাড়িভাড়াসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো ও বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ করা।
No comments