গ্লোবাল এক্সচেঞ্জ ফর লিডারশিপ ইনিশিয়েটিভস- সাধারণের অসাধারণ কাজ by অঞ্জলি সরকার
পৃথিবীর ৩৭টি দেশের ৮৩ জন মানুষ। ভিন্ন তাদের আচার-আচরণ, ভাষা, সংস্কৃতি, চিন্তাচেতনা। কিন্তু সবারই আছে সহজাত নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আর নিজেদের স্বপ্নগুলোকে সফল করে তোলার দৃঢ় প্রত্যয়। এই অমিত সম্ভাবনাময় মানুষদের নিয়ে ‘গ্লোবাল এক্সচেঞ্জ ফর লিডারশিপ ইনিশিয়েটিভস’-এর (গেইলি) উদ্যোগে গত ৭ থেকে ১৯ জুলাই
পর্যন্ত হংকংয়ে (চীন) অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গেইলি ফেলোশিপ প্রোগ্রাম ও গেইলি সম্মেলন ২০১২।
গেইলি মূলত একটি হংকংভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা; যা বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের জন্য কাজ করে।
দুই সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা কিংবা জাপানের মতো উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি এসেছিল ফিলিস্তিন, মঙ্গোলিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, ভুটান আর নেপালের প্রতিনিধিরাও। এশিয়া থেকে ৫৫ জন, ইউরোপের ১২ জন, উত্তর আমেরিকার সাতজন, আফ্রিকার পাঁচজন, দক্ষিণ আমেরিকার তিনজন এবং অস্ট্রেলিয়ার একজন—সব মিলিয়ে যেন জাতিসংঘের এক ক্ষুদ্র সংস্করণে পরিণত হয়েছিল এই সম্মেলন।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শুধু জাতিগত বৈচিত্র্যই নয়, বয়স, পেশা আর অভিজ্ঞতার বৈচিত্র্যও ছিল চোখে পড়ার মতো। সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করা ২৪ বছর বয়সী তরুণ প্রকৌশলী সন্তোষ এসেছেন নেপাল থেকে, পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে এখন নেপালি তরুণদের জন্য গড়ে তুলছেন ‘স্মাইল’ নামে একটি এনজিও। ৩০ বছর বয়সী অ্যাথেনা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করে কাজ করছেন অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে। গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট, চায়নিজ বংশোদ্ভূত ইয়ং চুয়ান লিং এসেছেন মালয়েশিয়া থেকে। ৩৫ বছর বয়সী শুই মিংউয়ে এসেছেন চীন থেকে, তিনি সাংহাই এনার্জি সেভিং লিমিটেড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। ৩৭ বছর বয়সী ম্যারিয়ানের জন্ম আফ্রিকার সুরিনামে। তিনি এখন ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামের ব্যবসায় কৌশল বিষয়ের প্রভাষক। আবার যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন অস্ট্রিয়ান নাগরিক হার্বার্ট। সম্প্রতি ৬১তম জন্মদিন পালন করেন তিনি! তবে বয়সের ব্যবধান যতই হোক, দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সবাই মিলে পাশাপাশি থাকার ফলে ৮৩ জন ফেলো, আয়োজক ও স্বেচ্ছাসেবক মিলে গেইলি ২০১২ এখন প্রায় ১০০ জনের একটি পরিবারের নাম।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল চারটি: গ্লোবাল সিটিজেনশিপ, ভলান্টিয়ারিজম, সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ (সামাজিক উদ্যোগ) ও মানবতা। এই চারটি বিষয়কে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহব্যাপী চলে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ ও আলোচনা। অংশগ্রহণকারী ফেলোদের মধ্য থেকেই নির্বাচিত ব্যক্তিরা এসব ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন অন্যদের জন্য। এ ছাড়া আনুষ্ঠানিক বক্তৃতা ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা—দুভাবেই প্রত্যেকে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা, চিন্তা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শেয়ার করে অন্যদের সঙ্গে। জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার বিনিময়ে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে এক সপ্তাহের ফেলোশিপ প্রোগ্রামের প্রতিটি মুহূর্ত। দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রধান অংশ ছিল তিন দিনব্যাপী সবার জন্য উন্মুক্ত ‘গেইলি সম্মেলন ২০১২’, যেখানে ফেলোদের মধ্য থেকে বাছাই করা কয়েকজন বক্তৃতা, আলোচনা ও ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন। এ ছাড়া ছিল বিভিন্ন দেশের ফেলোদের নিজস্ব ঐতিহ্য তুলে ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন। হংকংয়ের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশায় কর্মরত অনেকেই এই সম্মেলনে দর্শক হিসেবে উপস্থিত হয়।
সম্মেলনের শেষ দিনে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ১৩ জন ফেলোকে নিয়ে ‘অর্ডিনারি পিপল, এক্সট্রা-অর্ডিনারি এক্সপেরিয়েন্সেস’ শিরোনামে এক বিশেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তাঁরা তাঁদের চমক জাগানো অভিজ্ঞতা ও ভাবনা তুলে ধরেন সবার সামনে। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিনিধি অঞ্জলি সরকারও ছিলেন এই ১৩ জনের মধ্যে একজন।
আনুষ্ঠানিক ব্যস্ততার এখানেই সমাপ্তি, বাকি কয়েক দিন ছিল সমুদ্রসৈকত, ডিজনিল্যান্ড, ওশানপার্ক আর শপিংমলে ঘুরে বেড়ানো। অদ্ভুত সব খাবারের স্বাদ নেওয়া, আড্ডা, গল্প, গান আর নির্ভেজাল আনন্দের অসংখ্য মুহূর্ত—যা কখনো ভোলার নয়।
গেইলি মূলত একটি হংকংভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা; যা বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের জন্য কাজ করে।
দুই সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা কিংবা জাপানের মতো উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি এসেছিল ফিলিস্তিন, মঙ্গোলিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, ভুটান আর নেপালের প্রতিনিধিরাও। এশিয়া থেকে ৫৫ জন, ইউরোপের ১২ জন, উত্তর আমেরিকার সাতজন, আফ্রিকার পাঁচজন, দক্ষিণ আমেরিকার তিনজন এবং অস্ট্রেলিয়ার একজন—সব মিলিয়ে যেন জাতিসংঘের এক ক্ষুদ্র সংস্করণে পরিণত হয়েছিল এই সম্মেলন।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শুধু জাতিগত বৈচিত্র্যই নয়, বয়স, পেশা আর অভিজ্ঞতার বৈচিত্র্যও ছিল চোখে পড়ার মতো। সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করা ২৪ বছর বয়সী তরুণ প্রকৌশলী সন্তোষ এসেছেন নেপাল থেকে, পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে এখন নেপালি তরুণদের জন্য গড়ে তুলছেন ‘স্মাইল’ নামে একটি এনজিও। ৩০ বছর বয়সী অ্যাথেনা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করে কাজ করছেন অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে। গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট, চায়নিজ বংশোদ্ভূত ইয়ং চুয়ান লিং এসেছেন মালয়েশিয়া থেকে। ৩৫ বছর বয়সী শুই মিংউয়ে এসেছেন চীন থেকে, তিনি সাংহাই এনার্জি সেভিং লিমিটেড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। ৩৭ বছর বয়সী ম্যারিয়ানের জন্ম আফ্রিকার সুরিনামে। তিনি এখন ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামের ব্যবসায় কৌশল বিষয়ের প্রভাষক। আবার যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন অস্ট্রিয়ান নাগরিক হার্বার্ট। সম্প্রতি ৬১তম জন্মদিন পালন করেন তিনি! তবে বয়সের ব্যবধান যতই হোক, দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সবাই মিলে পাশাপাশি থাকার ফলে ৮৩ জন ফেলো, আয়োজক ও স্বেচ্ছাসেবক মিলে গেইলি ২০১২ এখন প্রায় ১০০ জনের একটি পরিবারের নাম।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল চারটি: গ্লোবাল সিটিজেনশিপ, ভলান্টিয়ারিজম, সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ (সামাজিক উদ্যোগ) ও মানবতা। এই চারটি বিষয়কে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহব্যাপী চলে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ ও আলোচনা। অংশগ্রহণকারী ফেলোদের মধ্য থেকেই নির্বাচিত ব্যক্তিরা এসব ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন অন্যদের জন্য। এ ছাড়া আনুষ্ঠানিক বক্তৃতা ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা—দুভাবেই প্রত্যেকে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা, চিন্তা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শেয়ার করে অন্যদের সঙ্গে। জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার বিনিময়ে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে এক সপ্তাহের ফেলোশিপ প্রোগ্রামের প্রতিটি মুহূর্ত। দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রধান অংশ ছিল তিন দিনব্যাপী সবার জন্য উন্মুক্ত ‘গেইলি সম্মেলন ২০১২’, যেখানে ফেলোদের মধ্য থেকে বাছাই করা কয়েকজন বক্তৃতা, আলোচনা ও ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন। এ ছাড়া ছিল বিভিন্ন দেশের ফেলোদের নিজস্ব ঐতিহ্য তুলে ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন। হংকংয়ের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশায় কর্মরত অনেকেই এই সম্মেলনে দর্শক হিসেবে উপস্থিত হয়।
সম্মেলনের শেষ দিনে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ১৩ জন ফেলোকে নিয়ে ‘অর্ডিনারি পিপল, এক্সট্রা-অর্ডিনারি এক্সপেরিয়েন্সেস’ শিরোনামে এক বিশেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তাঁরা তাঁদের চমক জাগানো অভিজ্ঞতা ও ভাবনা তুলে ধরেন সবার সামনে। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিনিধি অঞ্জলি সরকারও ছিলেন এই ১৩ জনের মধ্যে একজন।
আনুষ্ঠানিক ব্যস্ততার এখানেই সমাপ্তি, বাকি কয়েক দিন ছিল সমুদ্রসৈকত, ডিজনিল্যান্ড, ওশানপার্ক আর শপিংমলে ঘুরে বেড়ানো। অদ্ভুত সব খাবারের স্বাদ নেওয়া, আড্ডা, গল্প, গান আর নির্ভেজাল আনন্দের অসংখ্য মুহূর্ত—যা কখনো ভোলার নয়।
No comments