প্রিমিয়ার ব্যাংক না পারিবারিক ব্যাংক!
অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার অন্ত নেই বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডে। এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও ব্যাংকটি বিশেষ ছাড় পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক অনিয়ম বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এলেও বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ডা. এইচ বি এম ইকবাল। জানা গেছে, তাঁর স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়মের কারণেই ব্যাংকটি পর্যায়ক্রমে ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে। ফলে ঝুঁকিতে পড়তে পারে ব্যাংকটির গ্রাহক-আমানত। খবর বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের একাধিক সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রিমিয়ার ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন থেকেও এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১১ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটি কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল ২৭ কোটি তিন লাখ ১৯ হাজার ৩০০ টাকা। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে প্রিমিয়ার ব্যাংকের মুনাফা কমে গেছে। এ সময়ে ব্যাংকটি মুনাফা করেছে মাত্র ১১ কোটি ৫৯ লাখ ৮৪ হাজার ২০৬ টাকা। উল্লেখিত সময়ে ব্যাংকের নিট মুনাফা কমেছে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ওপরে; যেখানে অধিকাংশ ব্যাংক তাদের মুনাফা বাড়িয়েছে।
এদিকে প্রিমিয়ার ব্যাংকের একটি ঊর্ধ্বতন সূত্র বাংলানিউজকে জানিয়েছে, ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কারণে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। প্রতিটি ক্ষেত্রে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেন তাঁরা। ফলে ব্যাংকটির মুনাফা কমে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, নিজের মতো করে ব্যাংক পরিচালনা করতে ডা. এইচ বি এম ইকবাল কয়েক দফা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। পরিচালনা পর্ষদে তাঁরই পরিবারের আরো তিন সদস্যকে রাখা হয়েছে। তাঁরা হলেন, মইন ইকবাল, নওরীন ইকবাল ও মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল।
তথ্য মতে, ব্যাংক পরিচালনায় অনিয়ম করে দাপ্তরিক স্বচ্ছতা রাখতে অভিনব কৌশল নিয়েছেন ডা. এইচ বি এম ইকবাল। ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান করে রেখেছেন ছেলে মইন ইকবালকে। এতে করে অডিট কমিটিকেও অন্ধকারে রাখা সম্ভব হচ্ছে সহজেই।
জানতে চাইলে ব্যাংকর একজন পরিচালক বাংলানিউজকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডা. এইচ বি এম ইকবাল ব্যাংকটি নিয়ে বলা যায় যা খুশি করে যাচ্ছেন। ইচ্ছামতো নিজের প্রয়োজনে ব্যাংকটি ব্যবহার করছেন। সাধারণ মানুষের আমানত নিয়ে নিয়ম-নীতি না মেনে ঋণ দিচ্ছেন। নিজের এবং নিজের কাছের লোকদের ঋণ দিতেই যেন এ ব্যাংক। তিনি আরো বলেন, 'নানা কারণে কিছু বলতে পারছি না। আবার বের হয়েও যেতে পারছি না।'
জানা গেছে, শুধু ব্যাংক পরিচালনা এবং ঋণ বিতরণে অনিয়ম করে না প্রিমিয়ার ব্যাংক; বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা এবং প্রজ্ঞাপনও অনেক সময় যথাযথ পরিপালন করে না তারা।
সূত্র বলছে, ব্যাংকের কর্মী নিয়োগ নিয়েও স্বেচ্ছাচারিতা করেন চেয়ারম্যান। অনেক ক্ষেত্রে অনিয়ম করে নিজের এবং আত্মীয়স্বজনের লোক নিয়োগ দিয়ে দিচ্ছেন। ফলে ব্যাংকটি মেধাবী অফিসার পাচ্ছে না। এতে নিকট ভবিষ্যতে ব্যাংকটি পরিচালনায় আরো সংকট তৈরি হবে।
এদিকে সর্বশেষ ২০১১ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে বেশি মুনাফা দেখায় ব্যাংকটি। সেখানে তারা ৬২ কোটি টাকা নিট মুনাফা দেখায়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, প্রদর্শিত অর্থ থেকে ব্যাংকটি প্রায় চার কোটি টাকা কম মুনাফা করেছে। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক আরো সাতটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ খুঁজে পায়।
আরো অভিযোগ : প্রিমিয়ার ব্যাংক তাদের ২০০৯ সালের হিসাবে মোট ৬১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বা ১.৮৫ শতাংশ খেলাপি ঋণ রয়েছে বলে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শকদল বিশেষ পরিদর্শনে ব্যাংকটির মোট ৪৩৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বা ১৩.১৬ শতাংশ ঋণকে খেলাপি হিসেবে শ্রেণীকরণ করার প্রমাণ পায়।
খেলাপি ঋণকে ভালো মানের দেখানোর কারণে ব্যাংকটিকে নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) পরিমাণও কম রাখতে হয়েছে। আর এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ঘাটতি সঞ্চিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
এসব ঋণকে ভালো মানের দেখানোর কারণে তা থেকে সুদ-আয়কে ব্যাংকের মুনাফায় নেওয়া হয়েছে। এরই ভিত্তিতে ২০০৯ সালে ব্যাংকটি ৩০ শতাংশ হারে বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে দায়ী করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে এবং এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্যদিকে পর্ষদে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগের সুপারিশও করা হয়। কিন্তু এর কোনোটিই করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ব্যাপারে প্রিমিয়ার ব্যাক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের একাধিক সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রিমিয়ার ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন থেকেও এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১১ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটি কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল ২৭ কোটি তিন লাখ ১৯ হাজার ৩০০ টাকা। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে প্রিমিয়ার ব্যাংকের মুনাফা কমে গেছে। এ সময়ে ব্যাংকটি মুনাফা করেছে মাত্র ১১ কোটি ৫৯ লাখ ৮৪ হাজার ২০৬ টাকা। উল্লেখিত সময়ে ব্যাংকের নিট মুনাফা কমেছে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ওপরে; যেখানে অধিকাংশ ব্যাংক তাদের মুনাফা বাড়িয়েছে।
এদিকে প্রিমিয়ার ব্যাংকের একটি ঊর্ধ্বতন সূত্র বাংলানিউজকে জানিয়েছে, ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কারণে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। প্রতিটি ক্ষেত্রে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেন তাঁরা। ফলে ব্যাংকটির মুনাফা কমে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, নিজের মতো করে ব্যাংক পরিচালনা করতে ডা. এইচ বি এম ইকবাল কয়েক দফা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। পরিচালনা পর্ষদে তাঁরই পরিবারের আরো তিন সদস্যকে রাখা হয়েছে। তাঁরা হলেন, মইন ইকবাল, নওরীন ইকবাল ও মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল।
তথ্য মতে, ব্যাংক পরিচালনায় অনিয়ম করে দাপ্তরিক স্বচ্ছতা রাখতে অভিনব কৌশল নিয়েছেন ডা. এইচ বি এম ইকবাল। ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান করে রেখেছেন ছেলে মইন ইকবালকে। এতে করে অডিট কমিটিকেও অন্ধকারে রাখা সম্ভব হচ্ছে সহজেই।
জানতে চাইলে ব্যাংকর একজন পরিচালক বাংলানিউজকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডা. এইচ বি এম ইকবাল ব্যাংকটি নিয়ে বলা যায় যা খুশি করে যাচ্ছেন। ইচ্ছামতো নিজের প্রয়োজনে ব্যাংকটি ব্যবহার করছেন। সাধারণ মানুষের আমানত নিয়ে নিয়ম-নীতি না মেনে ঋণ দিচ্ছেন। নিজের এবং নিজের কাছের লোকদের ঋণ দিতেই যেন এ ব্যাংক। তিনি আরো বলেন, 'নানা কারণে কিছু বলতে পারছি না। আবার বের হয়েও যেতে পারছি না।'
জানা গেছে, শুধু ব্যাংক পরিচালনা এবং ঋণ বিতরণে অনিয়ম করে না প্রিমিয়ার ব্যাংক; বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা এবং প্রজ্ঞাপনও অনেক সময় যথাযথ পরিপালন করে না তারা।
সূত্র বলছে, ব্যাংকের কর্মী নিয়োগ নিয়েও স্বেচ্ছাচারিতা করেন চেয়ারম্যান। অনেক ক্ষেত্রে অনিয়ম করে নিজের এবং আত্মীয়স্বজনের লোক নিয়োগ দিয়ে দিচ্ছেন। ফলে ব্যাংকটি মেধাবী অফিসার পাচ্ছে না। এতে নিকট ভবিষ্যতে ব্যাংকটি পরিচালনায় আরো সংকট তৈরি হবে।
এদিকে সর্বশেষ ২০১১ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে বেশি মুনাফা দেখায় ব্যাংকটি। সেখানে তারা ৬২ কোটি টাকা নিট মুনাফা দেখায়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, প্রদর্শিত অর্থ থেকে ব্যাংকটি প্রায় চার কোটি টাকা কম মুনাফা করেছে। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক আরো সাতটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ খুঁজে পায়।
আরো অভিযোগ : প্রিমিয়ার ব্যাংক তাদের ২০০৯ সালের হিসাবে মোট ৬১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বা ১.৮৫ শতাংশ খেলাপি ঋণ রয়েছে বলে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শকদল বিশেষ পরিদর্শনে ব্যাংকটির মোট ৪৩৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বা ১৩.১৬ শতাংশ ঋণকে খেলাপি হিসেবে শ্রেণীকরণ করার প্রমাণ পায়।
খেলাপি ঋণকে ভালো মানের দেখানোর কারণে ব্যাংকটিকে নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) পরিমাণও কম রাখতে হয়েছে। আর এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ঘাটতি সঞ্চিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
এসব ঋণকে ভালো মানের দেখানোর কারণে তা থেকে সুদ-আয়কে ব্যাংকের মুনাফায় নেওয়া হয়েছে। এরই ভিত্তিতে ২০০৯ সালে ব্যাংকটি ৩০ শতাংশ হারে বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে দায়ী করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে এবং এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্যদিকে পর্ষদে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগের সুপারিশও করা হয়। কিন্তু এর কোনোটিই করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ব্যাপারে প্রিমিয়ার ব্যাক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
No comments