একসঙ্গে ইফতার ওরা ক্ষণিকের জন্য ভুলে যায় দুঃখবোধ- রমজানুল মোবারক by শাহীন রহমান
এতিমখানার শিশুদের পারিবারিক দুঃখবোধ ভুলিয়ে দিচ্ছে ইফতার। বাবা-মা হারিয়ে যারা এতিমখানায় থাকে তাদের ইফতারের সময় হলেই এক সঙ্গে বসে ইফতার করতে হয়। ক্ষণিকের জন্য হলেও তারা অসহায় ও নিঃস্ব এ কথাটি ভুলে যায়। ঢাকার বিভিন্ন এতিমখানায় প্রতিদিন এতিমরা এভাবে সবাইকে নিয়ে ইফতারি করে থাকে।
ভুলে যান তাদের মধ্যেকার দুঃখবোধ ও পারিবারিক শোক।
ঢাকা শতাব্দী প্রাচীন এতিমখানা স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা। ১৯০৯ সালে স্যার সলিমুল্লাহ স্থাপন করেন এ এতিমখানাটি। বর্তমানে এ এতিমখানায় ২৫৭ ছেলেমেয়ে রয়েছে। যাদের বয়স ৭ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ১৪২ জন রয়েছে ছেলে। বাকি ১১৫ মেয়ে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাবা মা হারা অসহায় নিঃস্ব এ এতিমরা এখানে থেকে লেখাপড়া করে। এতিমখানার পক্ষ থেকে এসব ছেলেমেয়েদের যাবতীয় খরচ বহন করা হয়। রোজার সময় এসব এতিমদের জন্য থাকে বাড়তি আয়োজন। সরেজমিনে এতিমখানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এতিমদের বেশিরভাগই রোজা রাখে। ইফতারিও তারা একসঙ্গে করে থাকে। ইফতারে তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
রোজায় এতিমখানার পক্ষ থেকে এতিমদের জন্য রয়েছে আলাদা বাজেট। তাছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এতিমদের জন্য ইফতারসামগ্রী ও খাবার পাঠিয়ে থাকে। স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিম খানার স্টোরকিপার আলমগীর হোসেন জানান, এতিমদের জন্য ইফতারিতে থাকে নানা আয়োজন। এতিমখানার পক্ষ থেকেই এ আয়োজন করা হয়ে থাকে। এতিমদের জন্য ইফতারি আয়োজনের মধ্যে রয়েছে মুড়ি, বুট, পেঁয়াজু, আলুরচপ, বেগুনি, সিঙ্গারা, কলা, জিলাপি, শরবতসহ বিভিন্ন আইটেম। ইফতারের সময় হলেই তারা এক হয়ে ইফতারিতে বসে যায়। এ ছাড়া রাতে খাবার ও সেহ্্রিও তারা একসঙ্গে করে থাকে। ফলে তাদের মধ্যে যে দুঃখবোধ থাকে তা ক্ষণিকের জন্য হলেও ভুলে যায়।
বাবা-মা হারানো সমাজের নিঃস্ব, বিপন্ন, অসহায় ছেলেমেয়েরাই মূলত এতিমখানায় থাকে। একসঙ্গে পড়াশোনা করে। শিশু শ্রেণী থেকে এইচএসসি পর্যন্ত বিনা খরচে এতিমদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করে থাকে এতিখানা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে এতিমখানার নিজস্ব স্কুলে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ছেলেদের জন্য রয়েছে পড়াশোনার ব্যবস্থা। আর মেয়েদের জন্য রয়েছে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়ার ব্যবস্থা। এরপর এতিমদের ভর্তি করে দেয়া হয় পাশের ফরিদউদ্দিন সিদ্দিকী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখান থেকে এসএসসি পাসের পর এতিমরা তাদের ইচ্ছেমতো যে কোন কলেজে ভর্তি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের পড়াশোনার খরচ এতিমখানা কর্তৃপক্ষই বহন করে থাকে।
রোজার ইফতারি ছাড়া ঈদ উদযাপনের জন্য এতিমদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এতিমখানার আবাশিক শিক্ষক মোঃ মাহমুদুল এহসান জনকণ্ঠকে বলেন, প্রত্যেক এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য এতিমখানার পক্ষ থেকে ঈদ উপলক্ষে পোশাক বানিয়ে দেয়া হয়। এর বাইদের অনেককে এসব ছেলেমেয়েদের জন্য পোশাক বানিয়ে দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ঈদে কেউ কেউ দুতিন সেট পোশাক পেয়ে থাকে। প্রত্যেকেই এতিমখানায় ঈদ উৎযাপন করে থাকে। তবে কেউ এর বাইরে বা নিজের বাড়িতে ঈদ পালনের ইচ্ছা পোষণ করলে তাকে ছুটির ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ঈদের দিন এতিমদের জন্য বিশেষ খাবার পরিবেশনসহ বিনোদনের নানা আয়োজন করা হয়ে থাকে।
এতিমখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সমাজের বিভিন্ন লোকের অনুদান, সাহায্য ও জাকাতের ওপর চলে এ এতিমখানা। এ ছাড়া সরকারীভাবেও এতিমদের জন্য প্রতিমাসে বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে। তারা জানায় এ এতিমখানার ১৪০ জন ছেলেমেয়ে খরচ বহন করে থাকে সরকার। বাকিদের খরচ চালানো হয় বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের দেয়া অনুদানের টাকায়। জানা গেছে রমজানে অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এ এতিমখানায় জাকাত ফিতরা দিয়ে থাকে। এ অনুদান থেকেই এতিমদের লেখাপড়া, পোশাক আশাক, খাওয়াদাওয়ার খরচ বহন করা হয়। এ জন্য এতিমদের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয়া হয় না। এইচএসসি পাসের আগ পর্যন্ত তাদের জন্য এ খচর বহন করা হয়। এইচএসসি পাস করে গেলে অনেকে বাড়িতে চলে যায়। আবার অনেকে চাকরি নিয়ে চলে যায়। তবে যাদের যাওয়ার কোন জায়গা থাকে না তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে আরও কিছুদিন ফ্রি থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, যাদের পিতা মারা গেছে তারাই কেবল আইন অনুযায়ী এতিম হিসেবে গণ্য হয়। তাদেরই কেবল এতিম হিসেবে এতিমখানায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। তবে যে শিশুদের পিতা মাতা কেউ নেই তাদের ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হয়ে থাকে। যেসব শিশুদের শুধু মা মারা গেছে কিন্তু পিতা এখনও জীবিত আছে তাদের এতিমখানায় ভর্তি করা হয় না। স্টোরকিপার আলমগীর হোসেন আরও জানায়, এতিম হিসেবে যেসব শিশুদের এখানে ভর্তি করা হয় প্রথম দিকে তাদের লালনপালনে কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। হঠাৎ অচেনা অদেখা পরিবেশে থাকতে চায় না। তবে কিছুদিন পরে সব ঠিক হয়ে যায়। কারণ এখানে তাদের মাতৃস্নেহে লালনপালন করার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এ জন্য একজন মাদার ও একজন মহিলা কর্মকর্তা রয়েছে। যখন এসব শিশু একটু বড় হয়ে যায় তখন অন্যদের সঙ্গে সহজে মিশে যায়।
ঢাকা শতাব্দী প্রাচীন এতিমখানা স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা। ১৯০৯ সালে স্যার সলিমুল্লাহ স্থাপন করেন এ এতিমখানাটি। বর্তমানে এ এতিমখানায় ২৫৭ ছেলেমেয়ে রয়েছে। যাদের বয়স ৭ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ১৪২ জন রয়েছে ছেলে। বাকি ১১৫ মেয়ে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাবা মা হারা অসহায় নিঃস্ব এ এতিমরা এখানে থেকে লেখাপড়া করে। এতিমখানার পক্ষ থেকে এসব ছেলেমেয়েদের যাবতীয় খরচ বহন করা হয়। রোজার সময় এসব এতিমদের জন্য থাকে বাড়তি আয়োজন। সরেজমিনে এতিমখানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এতিমদের বেশিরভাগই রোজা রাখে। ইফতারিও তারা একসঙ্গে করে থাকে। ইফতারে তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
রোজায় এতিমখানার পক্ষ থেকে এতিমদের জন্য রয়েছে আলাদা বাজেট। তাছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এতিমদের জন্য ইফতারসামগ্রী ও খাবার পাঠিয়ে থাকে। স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিম খানার স্টোরকিপার আলমগীর হোসেন জানান, এতিমদের জন্য ইফতারিতে থাকে নানা আয়োজন। এতিমখানার পক্ষ থেকেই এ আয়োজন করা হয়ে থাকে। এতিমদের জন্য ইফতারি আয়োজনের মধ্যে রয়েছে মুড়ি, বুট, পেঁয়াজু, আলুরচপ, বেগুনি, সিঙ্গারা, কলা, জিলাপি, শরবতসহ বিভিন্ন আইটেম। ইফতারের সময় হলেই তারা এক হয়ে ইফতারিতে বসে যায়। এ ছাড়া রাতে খাবার ও সেহ্্রিও তারা একসঙ্গে করে থাকে। ফলে তাদের মধ্যে যে দুঃখবোধ থাকে তা ক্ষণিকের জন্য হলেও ভুলে যায়।
বাবা-মা হারানো সমাজের নিঃস্ব, বিপন্ন, অসহায় ছেলেমেয়েরাই মূলত এতিমখানায় থাকে। একসঙ্গে পড়াশোনা করে। শিশু শ্রেণী থেকে এইচএসসি পর্যন্ত বিনা খরচে এতিমদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করে থাকে এতিখানা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে এতিমখানার নিজস্ব স্কুলে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ছেলেদের জন্য রয়েছে পড়াশোনার ব্যবস্থা। আর মেয়েদের জন্য রয়েছে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়ার ব্যবস্থা। এরপর এতিমদের ভর্তি করে দেয়া হয় পাশের ফরিদউদ্দিন সিদ্দিকী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখান থেকে এসএসসি পাসের পর এতিমরা তাদের ইচ্ছেমতো যে কোন কলেজে ভর্তি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের পড়াশোনার খরচ এতিমখানা কর্তৃপক্ষই বহন করে থাকে।
রোজার ইফতারি ছাড়া ঈদ উদযাপনের জন্য এতিমদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এতিমখানার আবাশিক শিক্ষক মোঃ মাহমুদুল এহসান জনকণ্ঠকে বলেন, প্রত্যেক এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য এতিমখানার পক্ষ থেকে ঈদ উপলক্ষে পোশাক বানিয়ে দেয়া হয়। এর বাইদের অনেককে এসব ছেলেমেয়েদের জন্য পোশাক বানিয়ে দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ঈদে কেউ কেউ দুতিন সেট পোশাক পেয়ে থাকে। প্রত্যেকেই এতিমখানায় ঈদ উৎযাপন করে থাকে। তবে কেউ এর বাইরে বা নিজের বাড়িতে ঈদ পালনের ইচ্ছা পোষণ করলে তাকে ছুটির ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ঈদের দিন এতিমদের জন্য বিশেষ খাবার পরিবেশনসহ বিনোদনের নানা আয়োজন করা হয়ে থাকে।
এতিমখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সমাজের বিভিন্ন লোকের অনুদান, সাহায্য ও জাকাতের ওপর চলে এ এতিমখানা। এ ছাড়া সরকারীভাবেও এতিমদের জন্য প্রতিমাসে বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে। তারা জানায় এ এতিমখানার ১৪০ জন ছেলেমেয়ে খরচ বহন করে থাকে সরকার। বাকিদের খরচ চালানো হয় বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের দেয়া অনুদানের টাকায়। জানা গেছে রমজানে অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এ এতিমখানায় জাকাত ফিতরা দিয়ে থাকে। এ অনুদান থেকেই এতিমদের লেখাপড়া, পোশাক আশাক, খাওয়াদাওয়ার খরচ বহন করা হয়। এ জন্য এতিমদের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয়া হয় না। এইচএসসি পাসের আগ পর্যন্ত তাদের জন্য এ খচর বহন করা হয়। এইচএসসি পাস করে গেলে অনেকে বাড়িতে চলে যায়। আবার অনেকে চাকরি নিয়ে চলে যায়। তবে যাদের যাওয়ার কোন জায়গা থাকে না তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে আরও কিছুদিন ফ্রি থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, যাদের পিতা মারা গেছে তারাই কেবল আইন অনুযায়ী এতিম হিসেবে গণ্য হয়। তাদেরই কেবল এতিম হিসেবে এতিমখানায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। তবে যে শিশুদের পিতা মাতা কেউ নেই তাদের ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হয়ে থাকে। যেসব শিশুদের শুধু মা মারা গেছে কিন্তু পিতা এখনও জীবিত আছে তাদের এতিমখানায় ভর্তি করা হয় না। স্টোরকিপার আলমগীর হোসেন আরও জানায়, এতিম হিসেবে যেসব শিশুদের এখানে ভর্তি করা হয় প্রথম দিকে তাদের লালনপালনে কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। হঠাৎ অচেনা অদেখা পরিবেশে থাকতে চায় না। তবে কিছুদিন পরে সব ঠিক হয়ে যায়। কারণ এখানে তাদের মাতৃস্নেহে লালনপালন করার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এ জন্য একজন মাদার ও একজন মহিলা কর্মকর্তা রয়েছে। যখন এসব শিশু একটু বড় হয়ে যায় তখন অন্যদের সঙ্গে সহজে মিশে যায়।
No comments