নার্সারি একই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষা ও লাভজনক ব্যবসা by আল-আমিন হক
যখন-তখন বৃষ্টি দেখলেই বোঝা যায় এখন বর্ষাকাল চলছে। আর এই বর্ষাকালটাই হচ্ছে গাছ লাগানোর মোক্ষম সময়।তাই গ্রাম-শহর নির্বিশেষে সর্বত্রই নার্সারিগুলোতে এখন প্রচুর গাছের চারা বিক্রি হচ্ছে। সারা দেশে বর্তমানে ১২ হাজারেরও বেশি নার্সারি রয়েছে। তবে গাছের চারার যে চাহিদা, তাতে এই সংখ্যা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করা হয়।
এই অবস্থায় আপনি নেমে যেতে পারেন স্বল্প পুঁজির এই সম্ভাবনাময় ব্যবসায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (বিএডিসি) খাদ্যশস্য শাখার উপপরিচালক এস এম ইবাদুর রহমান জানান, অল্প বিনিয়োগ করে নার্সারি করে ভালো আয় করা সম্ভব। দেশের নার্সারি খাতের উন্নয়নের জন্য সরকার ‘সমন্বিত মানসম্পন্ন উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্প’ হাতে নিয়েছে। দেশি-বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠানও কাজ করে যাচ্ছে এই খাতের উন্নয়নে। ফলে এ খাতে বিনিয়োগের সুযোগও বাড়ছে। একজন সফল নার্সারি মালিক হতে চাইলে যে কেউই স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করতে পারেন। তবে তাঁকে অবশ্যই উদ্যোগী ও পরিশ্রমী হতে হবে।
যেভাবে শুরু করতে হবে: নার্সারি ব্যবসা করতে চাইলে ভাবতে হবে এমন একটি স্থানের কথা, যেখানে বর্ষাকালেও পানি ওঠে না। ‘সমন্বিত মানসম্পন্ন উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্পে’র পরিচালক এস এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে একটি নার্সারি দিতে গেলে এক হেক্টর বা দুই একর জমি হলে ভালো হয়।’ তবে এর চেয়ে কম জমি নিয়েও নার্সারি করা সম্ভব বলে মনে করেন নার্সারি ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট অনেকেই। নার্সারি আইন ২০১০ অনুযায়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন করে নিতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া নার্সারি করা যাবে না। দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি গাছের চারা উৎপাদনের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। গাছের চারায় নিয়মিত পানি দেওয়ার সুব্যবস্থা থাকতে হবে। বীজ থেকে চারা উৎপাদনের জন্য ভালো বীজ এবং গ্রাফটিং, কাটিং কিংবা লেয়ারিং করার জন্য ভালো মাতৃগাছ বেছে নিতে হবে। এম এম কামরুজ্জামান আরও জানান, গ্রাফটিং নির্ভর করে মাতৃগাছের ওপরে। নার্সারিতে মাতৃগাছটি রাখলে ওখান থেকেই যে গুটি করা হয়েছে, এমন বিশ্বাস জন্মে ক্রেতার মনে। তাই নার্সারিতে পর্যাপ্ত মাতৃগাছ রাখা দরকার।
মূলধন: নার্সারি যদি নিজের জমিতে করা হয়, সে ক্ষেত্রে মূলধন কম হলেই চলে। অনেকেই ভাড়া জমিতে নার্সারি করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে জমির জামানত বাবদ টাকা দিতেই মূলধনের একটা বড় অংশ চলে যায়। সরকারের হর্টিকালচার বিভাগের প্রধান রহিম বলেন, লাখ তিনেক টাকা হলেই নিজস্ব জমিতে নার্সারি করা সম্ভব।
প্রশিক্ষণ জরুরি: সমন্বিত মানসম্পন্ন উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এস এম কামরুজ্জামান বলেন, এ ক্ষেত্রে অবশ্যই হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। গ্রাফটিং, কাটিং ইত্যাদি বিষয় জানতে অবশ্যই বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকা দরকার।
কোথায় পাবেন প্রশিক্ষণ: নার্সারি ব্যবসায়ে নামার লক্ষ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ব্র্যাক, প্রশিকা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধীনে সারা বছর গ্রাফটিং, কাটিং, লেয়ারিং, ফলগাছ ব্যবস্থাপনা, ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সারা দেশের ৪৬টি হর্টিকালচার সেন্টারেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বাড়ির ছাদেও নার্সারি: হয়তো অনেকটা শখের বশেই বাড়ির ছাদে নার্সারি করেছেন, কিন্তু পরে ওটাই হয়তো আয়ের প্রধান উৎস হয়ে গেছে। এমনটি জানালেন নার্সারি-সংশ্লিষ্ট অনেকেই। দেড় হাজার কিংবা তার চেয়ে বেশি বর্গফুটের জায়গায় একটা পূর্ণাঙ্গ নার্সারি করা সম্ভব। এস এম কামরুজ্জামান বলেন, এ ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য নাও থাকতে পারে। তবে সেখান থেকেও ভালো আয় করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। রাজধানীতে এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা বাড়ির ছাদে নার্সারি করে ভালো আয় করছেন।
আয়: সংশ্লিষ্ট অনেকেই জানান, ভালোভাবে পরিচর্যা করা হলে একটি মানসম্মত নার্সারি থেকে প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার কিংবা তারও বেশি টাকা আয় করা সম্ভব। একই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষায়ও অবদান রাখা যায়। আর এ জন্যই নার্সারি ইতিমধ্যে একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ নার্সারি মালিক সমিতি: নার্সারি মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নার্সারি মালিক সমিতি। এই সমিতির সদস্য হতে হলে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং টিন সার্টিফিকেটধারী হতে হবে। এর সদস্যপদ পেতে হলে ১০০ টাকা দিয়ে আবেদনপত্র নিতে হবে। বিভিন্ন তথ্য যাচাইয়ের পর তারা আপনাকে সমিতির সদস্য করবে। বাংলাদেশ নার্সারি মালিক সমিতির ঠিকানা: বাসা-৪৯৭, রোড-৩৩, নিউ ডিওএইচএস, মহাখালী, ঢাকা, টেলিফোন: ৮৮৫৬৮৯৪, মোবাইল: ০১৭১১-৫৩২৩০৮, ফ্যাক্স: ৮৮০-২-৮১৫২৮১।
যেভাবে শুরু করতে হবে: নার্সারি ব্যবসা করতে চাইলে ভাবতে হবে এমন একটি স্থানের কথা, যেখানে বর্ষাকালেও পানি ওঠে না। ‘সমন্বিত মানসম্পন্ন উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্পে’র পরিচালক এস এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে একটি নার্সারি দিতে গেলে এক হেক্টর বা দুই একর জমি হলে ভালো হয়।’ তবে এর চেয়ে কম জমি নিয়েও নার্সারি করা সম্ভব বলে মনে করেন নার্সারি ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট অনেকেই। নার্সারি আইন ২০১০ অনুযায়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন করে নিতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া নার্সারি করা যাবে না। দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি গাছের চারা উৎপাদনের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। গাছের চারায় নিয়মিত পানি দেওয়ার সুব্যবস্থা থাকতে হবে। বীজ থেকে চারা উৎপাদনের জন্য ভালো বীজ এবং গ্রাফটিং, কাটিং কিংবা লেয়ারিং করার জন্য ভালো মাতৃগাছ বেছে নিতে হবে। এম এম কামরুজ্জামান আরও জানান, গ্রাফটিং নির্ভর করে মাতৃগাছের ওপরে। নার্সারিতে মাতৃগাছটি রাখলে ওখান থেকেই যে গুটি করা হয়েছে, এমন বিশ্বাস জন্মে ক্রেতার মনে। তাই নার্সারিতে পর্যাপ্ত মাতৃগাছ রাখা দরকার।
মূলধন: নার্সারি যদি নিজের জমিতে করা হয়, সে ক্ষেত্রে মূলধন কম হলেই চলে। অনেকেই ভাড়া জমিতে নার্সারি করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে জমির জামানত বাবদ টাকা দিতেই মূলধনের একটা বড় অংশ চলে যায়। সরকারের হর্টিকালচার বিভাগের প্রধান রহিম বলেন, লাখ তিনেক টাকা হলেই নিজস্ব জমিতে নার্সারি করা সম্ভব।
প্রশিক্ষণ জরুরি: সমন্বিত মানসম্পন্ন উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এস এম কামরুজ্জামান বলেন, এ ক্ষেত্রে অবশ্যই হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। গ্রাফটিং, কাটিং ইত্যাদি বিষয় জানতে অবশ্যই বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকা দরকার।
কোথায় পাবেন প্রশিক্ষণ: নার্সারি ব্যবসায়ে নামার লক্ষ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ব্র্যাক, প্রশিকা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধীনে সারা বছর গ্রাফটিং, কাটিং, লেয়ারিং, ফলগাছ ব্যবস্থাপনা, ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সারা দেশের ৪৬টি হর্টিকালচার সেন্টারেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বাড়ির ছাদেও নার্সারি: হয়তো অনেকটা শখের বশেই বাড়ির ছাদে নার্সারি করেছেন, কিন্তু পরে ওটাই হয়তো আয়ের প্রধান উৎস হয়ে গেছে। এমনটি জানালেন নার্সারি-সংশ্লিষ্ট অনেকেই। দেড় হাজার কিংবা তার চেয়ে বেশি বর্গফুটের জায়গায় একটা পূর্ণাঙ্গ নার্সারি করা সম্ভব। এস এম কামরুজ্জামান বলেন, এ ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য নাও থাকতে পারে। তবে সেখান থেকেও ভালো আয় করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। রাজধানীতে এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা বাড়ির ছাদে নার্সারি করে ভালো আয় করছেন।
আয়: সংশ্লিষ্ট অনেকেই জানান, ভালোভাবে পরিচর্যা করা হলে একটি মানসম্মত নার্সারি থেকে প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার কিংবা তারও বেশি টাকা আয় করা সম্ভব। একই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষায়ও অবদান রাখা যায়। আর এ জন্যই নার্সারি ইতিমধ্যে একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ নার্সারি মালিক সমিতি: নার্সারি মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নার্সারি মালিক সমিতি। এই সমিতির সদস্য হতে হলে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং টিন সার্টিফিকেটধারী হতে হবে। এর সদস্যপদ পেতে হলে ১০০ টাকা দিয়ে আবেদনপত্র নিতে হবে। বিভিন্ন তথ্য যাচাইয়ের পর তারা আপনাকে সমিতির সদস্য করবে। বাংলাদেশ নার্সারি মালিক সমিতির ঠিকানা: বাসা-৪৯৭, রোড-৩৩, নিউ ডিওএইচএস, মহাখালী, ঢাকা, টেলিফোন: ৮৮৫৬৮৯৪, মোবাইল: ০১৭১১-৫৩২৩০৮, ফ্যাক্স: ৮৮০-২-৮১৫২৮১।
No comments