বিদেশী ব্র্যান্ড আর অভিজাত পোশাক ॥ ক্রেতার ভিড়, যেন বিনোদন কেন্দ্র -বসুন্ধরা শপিংমলে ঈদের কেনাকাটা by মোরসালিন মিজান
ঢাকার পান্থপথে ১৩ বিঘার বেশি জমির ওপর গড়ে উঠেছে বসুন্ধরা সিটি শপিংমল। ১৯ তলা বিশিষ্ট শপিংমলের ৭ তলা পর্যন্ত বিপণিবিতান। ৮ তলায় ফুড কোর্ট, সিনেমা হল ও থিমপার্ক। সব মিলিয়ে বিশাল আয়োজন। সঙ্গত কারণে সারা বছরই এখানে ভিড় লেগে থাকে মানুষের। তবে ঈদ উপলক্ষে সে ভিড় বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে যায়।
এবারও তাই হয়েছে। মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, অগণিত মানুষ। বিভিন্ন পথ দিয়ে শ্রোতের মতো মার্কেটে ঢুকছে। লিফট, চলন্ত সিঁড়ি সবখানে গায়ে গা লাগার মতো অবস্থা। এ ফ্লোর ও ফ্লোর ঘুরে পছন্দের পোশাক খুঁজছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। দেশের সর্ববৃহৎ এ মার্কেটে অভিজাত ক্রেতার সংখ্যা বেশি। সাধারণ অংশটিও আছে যথেষ্ট পরিমাণে। সকলেই ব্যস্ত ঈদের কেনাকাটায়।
বসুন্ধরা মার্কেটের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এখানে বিশ্বের নাম করা বহু ব্র্যান্ডের শোরুম আছে। আর্টিস্টি, এক্সটেসি, ক্যাটস আই, ম্যানজ ক্লাব, ইনফিনিটি ইত্যাদি ব্র্যান্ডের বিশাল বিশাল শোরুম। সব আলোঝলমলে। ভেতরটা চমৎকার করে সাজানো। বাইরে নামী দামী মডেলদের ছবি। বিচিত্র অঙ্গভঙ্গি তাদের। এসব অঙ্গভঙ্গি তরুণ-তরুণীদের একটি অংশকে দারুন মুগ্ধ করে রেখেছে। শোরুমগুলো ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ পোশাক বাঙালীর শরীর ও সাধারণ পছন্দের সঙ্গে যায় না। বরং পোশাকের দাম কত ওপরে উঠতে পারে তার একটা ইঙ্গিত দেয়। তবে ব্র্যান্ড প্রীতির কারণে উচ্চবিত্তরা এখান থেকেই কিনছেন বেশি।
তবে ভারতীয় সিরিয়ালে দেখানো শাড়ি থ্রী-পিস, শেরওয়ানী কেনার ক্রেতা বরাবরই বেশি। হরেক রকমের জড়ি, পুতি, পাথর ইত্যাদি বসানো নেট কাপড় মূলত টেলিভিশন স্ক্রিনে ভাল দেখায়। কিন্তু বাস্তবে এগুলো শরীরকে আরাম দেয় না। টেকে কম। এর পরও প্রচুর বিক্রি হচ্ছে ছাম্মাক ছাল্লো, চিকনি চামেলি, বডিগার্ড, দাবাং, পাগলু, জলপরী, ডোরেমন, এ্যাংরি বার্ড, এক থা টাইগার নামের পোশাক। সবই ভারতীয় সিনেমা ও এগুলোর নায়ক-নায়িকাদের নাম ধারণ করে বাংলাদেশে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক পোশাকের নাম রেখেছেন দেশীয় আমদানিকারক ও দোকানিরা। সবই ছল। সবই ক্রেতা ধরার কৌশল। এ ব্যাপারে আমদানিকারক আমিন আহমেদের বক্তব্যÑ ভারতীয় পোশাকের চাহিদা বেশি। সারা বছরই বিক্রি হয়। আর ঈদ যেহেতু বড় উৎসব তাই একটু গর্জিয়াস ড্রেস চান ক্রেতা। তাঁদের কথা ভেবেই এসব পোশাক আনি আমরা। তবে তিনি স্বীকার করেন, এসব পোশাকের মান প্রায়শই ভাল হয় না। শুধু সিরিয়ালে দেখে, সিনেমায় দেখে এগুলো কিনতে আসেন ক্রেতা। এসবের বাইরে দেশীয় পোশাকেরও বহু দোকান আছে বসুন্ধরায়। বিশেষ করে ‘দেশী দশ’-এ গেলে মন ভরে যায়। এখানে বাংলাদেশের দশটি বিখ্যাত ফ্যাশন হাউসের শোরুম। প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার বর্গফুট নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছেন তারা। প্রবর্তনা, নিপুণ, কে ক্র্যাফট, অঞ্জনস, বিবিয়ানা, সাদা কালো, নগরদোলা, রঙ, দেশাল ও বাংলার মেলা এখানে পাশাপাশি। সব বুটিক হাউসে দেশীয় সুতি তাঁত কাপড়ে তৈরি পোশাক। ঐতিহ্য আর আধুনিকতাকে চমৎকারভাবে সুই সুতোয় গেঁথেছেন উদ্যোক্তারা। ক্রেতাও প্রচুর। অপেক্ষাকৃত উন্নত রুচির ক্রেতারা বেশি ভিড় জমাচ্ছেন এখানে। কে ক্র্যাফটের ম্যানেজার আমানুল্লাহ খান জানান, এবার সুতি, এ্যান্ডি, আদ্দি ভয়েল ও জয় সিল্কের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। পোশাকের দামও সহনীয়। বিক্রি নিয়েও সন্তুষ্ট বলে জানান তিনি।
তবে এত কিছুর পরও ফুডকোর্টের জন্য বিশেষ বিখ্যাত বসুন্ধরা সিটি শপিংমল। ৮ তলার প্রায় পুরোটাতেই খাবারের দোকান। অন্য সময় হরেক রকমের রান্না, ফার্স্টফুড থাকে। এখন পুরোটা জুড়ে ইফতার আয়োজন। কেনাকাটা করার সময় তাই ইফতার কোথায় হবে তা নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হয় না। জায়গা খুঁজতে হয় না। কিছুটা সময় হাতে থাকতেই ৮ তলায় এসে টেবিলে বসে পড়ছেন সকলে। ইফতার শেষ করে ফের শুরু করছেন কেনাকাটা।
মঙ্গলবার বসুন্ধরায় কেনাকাটা করতে এসেছিলেন মিরপুরের ব্যবসায়ী এম ইদ্রিস আলী। পরিবারের চার সদস্য ছিল তাঁর সঙ্গে। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে সবার জন্য ঈদের পোশাক চাই। তো কেনা হলো? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেনার আসলে শেষ নেই। একটা শেষ হচ্ছে তো আর একটা কিনতে হচ্ছে। এভাবে কয়েক ঘণ্টা পার করে দিলাম। আশা করছি আজই শেষ হয়ে যাবে। বাসাবো থেকে ভাইয়ের সঙ্গে এসেছিলেন দুই বোন ইমা ও রীমা। তাঁরা জানালেন, নিজেদের জন্য কেনা শেষ। তবে অনেক গিফট কেনার আছে। সে জন্য মার্কেটে এসেছেন। ইতোমধ্যে ৩০ হাজার টাকার মতো কেনাকাটা করেছেন বলে জানান তাঁরা। তবে মার্কেটের প্রতি ফ্লোরেই দেখা যায় ঝাঁকে ঝাঁকে তরুণ। কেনা যতটা না ঘোরাঘুরি তার চেয়ে বেশি। আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির ছাত্র আবীর মজার তথ্য দিলেন। বললেন, আমরা শপিং অন্য মার্কেট থেকে সেরেছি। এখানে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাটা ভাল জমে। পরিবেশটা মজার। সে জন্যই আসা। এভাবে নানা রকমের মানুষের আনাগোনায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে চারপাশ। শুধু বিপণিবিতান নয়, যেন একটি বিনোদন কেন্দ্র বসুন্ধরা শপিং মল।
বসুন্ধরা মার্কেটের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এখানে বিশ্বের নাম করা বহু ব্র্যান্ডের শোরুম আছে। আর্টিস্টি, এক্সটেসি, ক্যাটস আই, ম্যানজ ক্লাব, ইনফিনিটি ইত্যাদি ব্র্যান্ডের বিশাল বিশাল শোরুম। সব আলোঝলমলে। ভেতরটা চমৎকার করে সাজানো। বাইরে নামী দামী মডেলদের ছবি। বিচিত্র অঙ্গভঙ্গি তাদের। এসব অঙ্গভঙ্গি তরুণ-তরুণীদের একটি অংশকে দারুন মুগ্ধ করে রেখেছে। শোরুমগুলো ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ পোশাক বাঙালীর শরীর ও সাধারণ পছন্দের সঙ্গে যায় না। বরং পোশাকের দাম কত ওপরে উঠতে পারে তার একটা ইঙ্গিত দেয়। তবে ব্র্যান্ড প্রীতির কারণে উচ্চবিত্তরা এখান থেকেই কিনছেন বেশি।
তবে ভারতীয় সিরিয়ালে দেখানো শাড়ি থ্রী-পিস, শেরওয়ানী কেনার ক্রেতা বরাবরই বেশি। হরেক রকমের জড়ি, পুতি, পাথর ইত্যাদি বসানো নেট কাপড় মূলত টেলিভিশন স্ক্রিনে ভাল দেখায়। কিন্তু বাস্তবে এগুলো শরীরকে আরাম দেয় না। টেকে কম। এর পরও প্রচুর বিক্রি হচ্ছে ছাম্মাক ছাল্লো, চিকনি চামেলি, বডিগার্ড, দাবাং, পাগলু, জলপরী, ডোরেমন, এ্যাংরি বার্ড, এক থা টাইগার নামের পোশাক। সবই ভারতীয় সিনেমা ও এগুলোর নায়ক-নায়িকাদের নাম ধারণ করে বাংলাদেশে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক পোশাকের নাম রেখেছেন দেশীয় আমদানিকারক ও দোকানিরা। সবই ছল। সবই ক্রেতা ধরার কৌশল। এ ব্যাপারে আমদানিকারক আমিন আহমেদের বক্তব্যÑ ভারতীয় পোশাকের চাহিদা বেশি। সারা বছরই বিক্রি হয়। আর ঈদ যেহেতু বড় উৎসব তাই একটু গর্জিয়াস ড্রেস চান ক্রেতা। তাঁদের কথা ভেবেই এসব পোশাক আনি আমরা। তবে তিনি স্বীকার করেন, এসব পোশাকের মান প্রায়শই ভাল হয় না। শুধু সিরিয়ালে দেখে, সিনেমায় দেখে এগুলো কিনতে আসেন ক্রেতা। এসবের বাইরে দেশীয় পোশাকেরও বহু দোকান আছে বসুন্ধরায়। বিশেষ করে ‘দেশী দশ’-এ গেলে মন ভরে যায়। এখানে বাংলাদেশের দশটি বিখ্যাত ফ্যাশন হাউসের শোরুম। প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার বর্গফুট নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছেন তারা। প্রবর্তনা, নিপুণ, কে ক্র্যাফট, অঞ্জনস, বিবিয়ানা, সাদা কালো, নগরদোলা, রঙ, দেশাল ও বাংলার মেলা এখানে পাশাপাশি। সব বুটিক হাউসে দেশীয় সুতি তাঁত কাপড়ে তৈরি পোশাক। ঐতিহ্য আর আধুনিকতাকে চমৎকারভাবে সুই সুতোয় গেঁথেছেন উদ্যোক্তারা। ক্রেতাও প্রচুর। অপেক্ষাকৃত উন্নত রুচির ক্রেতারা বেশি ভিড় জমাচ্ছেন এখানে। কে ক্র্যাফটের ম্যানেজার আমানুল্লাহ খান জানান, এবার সুতি, এ্যান্ডি, আদ্দি ভয়েল ও জয় সিল্কের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। পোশাকের দামও সহনীয়। বিক্রি নিয়েও সন্তুষ্ট বলে জানান তিনি।
তবে এত কিছুর পরও ফুডকোর্টের জন্য বিশেষ বিখ্যাত বসুন্ধরা সিটি শপিংমল। ৮ তলার প্রায় পুরোটাতেই খাবারের দোকান। অন্য সময় হরেক রকমের রান্না, ফার্স্টফুড থাকে। এখন পুরোটা জুড়ে ইফতার আয়োজন। কেনাকাটা করার সময় তাই ইফতার কোথায় হবে তা নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হয় না। জায়গা খুঁজতে হয় না। কিছুটা সময় হাতে থাকতেই ৮ তলায় এসে টেবিলে বসে পড়ছেন সকলে। ইফতার শেষ করে ফের শুরু করছেন কেনাকাটা।
মঙ্গলবার বসুন্ধরায় কেনাকাটা করতে এসেছিলেন মিরপুরের ব্যবসায়ী এম ইদ্রিস আলী। পরিবারের চার সদস্য ছিল তাঁর সঙ্গে। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে সবার জন্য ঈদের পোশাক চাই। তো কেনা হলো? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেনার আসলে শেষ নেই। একটা শেষ হচ্ছে তো আর একটা কিনতে হচ্ছে। এভাবে কয়েক ঘণ্টা পার করে দিলাম। আশা করছি আজই শেষ হয়ে যাবে। বাসাবো থেকে ভাইয়ের সঙ্গে এসেছিলেন দুই বোন ইমা ও রীমা। তাঁরা জানালেন, নিজেদের জন্য কেনা শেষ। তবে অনেক গিফট কেনার আছে। সে জন্য মার্কেটে এসেছেন। ইতোমধ্যে ৩০ হাজার টাকার মতো কেনাকাটা করেছেন বলে জানান তাঁরা। তবে মার্কেটের প্রতি ফ্লোরেই দেখা যায় ঝাঁকে ঝাঁকে তরুণ। কেনা যতটা না ঘোরাঘুরি তার চেয়ে বেশি। আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির ছাত্র আবীর মজার তথ্য দিলেন। বললেন, আমরা শপিং অন্য মার্কেট থেকে সেরেছি। এখানে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাটা ভাল জমে। পরিবেশটা মজার। সে জন্যই আসা। এভাবে নানা রকমের মানুষের আনাগোনায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে চারপাশ। শুধু বিপণিবিতান নয়, যেন একটি বিনোদন কেন্দ্র বসুন্ধরা শপিং মল।
No comments