বিপাকে ৩৫০০ হজযাত্রী

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক হজযাত্রী পবিত্র হজব্রত পালন করার জন্য সৌদি আরব যান। সাধারণত সরকারী এবং বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীরা হজ পালন করে থাকেন। প্রতিবছরই অনেক হজযাত্রীকে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।


বিশেষ করে বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় যাঁরা হজে যান তাঁদের অনেককেই নানা রকম ঝক্কি-ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয়।
হজব্রত পালন করতে গিয়ে প্রতারণা ও ভোগান্তির শিকার হতে হবে, এটা কোন কাজের কথা হতে পারে না। বার বার অনেক প্রতারক এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও তাদের তৎপরতা থেমে নেই। প্রতিবছরই হজযাত্রীদের নিয়ে অনেক হজ এজেন্সি নানা রকম প্রতারণামূলক কর্মকা- করে থাকে। এ বছর নতুন কোন সঙ্কট তাদের নিয়ে সৃষ্টি হোক এটা কখনও কাম্য হতে পারে না। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে এবারও যেন এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা এড়ানো গেল না। পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে সৌদি আরব তাদের দেশে অনিয়মের বিভিন্ন অভিযোগে বাংলাদেশের ১২ হজ এজেন্সির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আর এতে করে এবার প্রায় সাড়ে তিন হাজার হজযাত্রীর হজ পালন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় এদেরকে সরকারীভাবে হজে পাঠানোর প্রস্তাব দিলে ১২ এজেন্সি তা মেনে না নেয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
জানা গেছে, এবার হজে পাঠানোর জন্য তিন হাজার ৪৫৫ জনের কাছ থেকে প্রায় ১০৫ কোটি টাকা নিয়েছে এই এজেন্সিগুলো। কিন্তু গত রবিবার পর্যন্ত এদের সৌদি আরবে যাওয়ার ব্যাপারে সৌদি সরকারের কাছ থেকে কোন ধরনের সবুজ সঙ্কেত বাংলাদেশ পায়নি।
হজের মতো একটি বিষয় নিয়ে প্রতিবছরই কিছু এজেন্সি প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে, এটা হতে পারে না। কিছু চিহ্নিত হজ এজেন্সির কার্যক্রম বিতর্কিত হলেও কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় না সেটা বোধগম্য নয়। এসব হজ এজেন্সি টুপাইস কামিয়ে নেয় আর চরম বিপাকে পড়তে হয় হজযাত্রীদের। টাকা জমা দিয়েও হজ করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে। সাড়ে তিন হাজার হজযাত্রীকে সরকারী ব্যবস্থাপনায় হজে পাঠানোর প্রস্তাব দেয়া হলেও নিষিদ্ধ এজেন্সিগুলো কেন তা মানছে না সেটি বোধগম্য নয়। হয়ত এতে তাদের বাণিজ্য কমে যাবে এ কারণেই হজযাত্রীদের জিম্মি করে হলেও তারা বাণিজ্য করে যাবে। এ ধরনের এজেন্সির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কোন বিকল্প নেই। এদের কারণে শুধু যে হজযাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তা-ই নয়; দেশের ভাবমূর্তিও দারুণভাবে ক্ষুন্ন হয়। সৌদি আরব এবং বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে ভাতৃপ্রতিম সম্পর্ক। এ অবস্থায় কিছু মানুষের লোভের কারণে দেশের সম্মান জলাঞ্জলি যাবে, এটা হতে পারে না। এছাড়া প্রতিবছরই সুনির্দিষ্ট সময়ে হজ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সৌদি সরকার এ সংক্রান্ত নিয়ম কানুনগুলো আগেই জানিয়ে দেয়। কিছুসংখ্যক হজ এজেন্সি এরপরও কেন তা মেনে চলে না এবং মানুষজনকে বিপদে ফেলে সেটা ভেবে দেখার বিষয়। আসলে এ ব্যাপারে দায়ীদের কঠোর শাস্তির কোন বিকল্প নেই। আর বিপাকে পড়া হজযাত্রীরা যাতে নির্বিঘেœ পবিত্র হজব্রত পালন করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.