বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি by মোরসালিন মিজান
বলাই যায়, সড়ক দুর্ঘটনা এখন নিত্যদিনের। এ থেকে মুক্তির যেন কোন পথ নেই। আর তাই সারাদেশে চলছে নীরব এ হত্যাকা-। রাজধানী ঢাকার চিত্রটিও এক। বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির শহরে কয়েক দিন পর পরই ঘটছে এমন মর্মন্তুদ ঘটনা।
সর্বশেষ মঙ্গলবার নিজের ক্যাম্পাস এলাকা শাহবাগে প্রাণ হারায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র তৌহিদুজ্জামান। এরপর যা হওয়ার তাই হয়েছে। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা রাস্তায় নেমে গাড়ি ভেঙ্গেছে। অকাতরে ভাংচুর করেও প্রিয় বন্ধুটিকে তাঁরা ফিরে পাননি। ফিরে পাওয়া সম্ভবও নয়। ব্যস্ততম শাহবাগ মোড়ে এর আগেও বহুবার ঘটেছে এমন ঘটনা। সামান্য একটি ফুটওভার ব্রিজ বা আন্ডারপাসের অভাবে ঘটেই যাচ্ছে এমন ঘটনা। অথচ কোন উদ্যোগ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থীসহ মোট ১০ জন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। ’৯১ সালের ২৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মির্জা গালিব, লিটন ও মিজান নিহত হন। ওই ঘটনায় এক পথশিশুও নিহত হয়। এর আগে একই বছরের ২০ জুন ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের সামনে মাহবুবুর রহমান নামের এক ছাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। ’৯২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন আরবী বিভাগের ছাত্র মোঃ আব্দুর রশিদ আনসারী। ’৯৬ সালের ১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। ২০০৫ সালের ২৮ মে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শাম্মী আক্তার হ্যাপী। এরপর থেকে শাহবাগে আন্ডারপাস নির্মাণের দাবি তোলেন ছাত্ররা। জানা যায়, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ২০০৫ সালের ১২ জুন সিটি কর্পোরেশনকে একটি চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তেমন কোন কাজ হয়নি। ফলে পরবর্তী বছর ৯ মে একই স্থানে বাসচাপায় নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র মোবারক হোসেন। এ সময় আন্ডারপাস নির্মাণের দাবি আরও জোরদার হয়। আন্দোলনে নামেন ছাত্ররা। আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দারসহ ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিয়ে নগরভবনে ডিসিসির মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করেন। কিন্তু সে আলোচনা টেবিলেই আটকে থাকে। ২০০৯ সালের ২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক পরিমল কুমার শাহার স্ত্রী অনিমা রানী শাহা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। এ অবস্থায় ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আন্ডারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মেট্রো রেল চালুর প্রকল্প হাতে নেয়। কিন্তু নানা জটিলতায় সে কাজও আর এগোয়নি। তবে অব্যাহত আছে সড়ক দুর্ঘটনা। প্রাণের এমন বিনাশ কেউ মেনে নিতে পারে না। গত দুই-তিন দিন রাজপথে মিছিল অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা। অবশ্য কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পর বর্তমানে তারা কিছুটা শান্ত।
তবে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তিইচ্ছুদের আন্দোলন এখনও চলছে। পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তির দাবি তাঁদের। আগে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তিতে পরীক্ষা হলেও কিছু দিন আগে জানানো হয়, এবার থেকে আর ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে না। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জিপিএ’র ভিত্তিতেই এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের পরপরই ঢাকার রাজপথে আন্দোলন শুরু করে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। মেডিক্যাল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মঞ্চ ব্যানারে এখনও কর্মসূচী চালাচ্ছে তারা। এ দাবিতে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে জটিলতা অবসানের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক আলোচনাসভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ তেমন ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ভর্তির স্বপ্ন নিয়ে আছে। আমি আশা করছি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা বাস্তবতা বিবেচনা করে ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা করবেন।
তবে সকল আলোচনাকে ছাড়িয়ে গেছে পদ্মা সেতু। অনেক দিনের পুরনো আলোচনা হলেও গত দুই-এক দিনে এ আলোচনা ব্যাপক মোড় পরিবর্তন করেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। কিন্তু অনিশ্চয়তা দেখা দেয় গত বছরের সেপ্টেম্বরে। এ প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়। পরে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারকে কয়েকটি শর্ত দেয় বিশ্ব ব্যাংক। তা পালন হয়নি জানিয়ে গত জুনে অর্থায়ন বাতিল করে তারা। তবে অর্থায়ন বাতিলের পর এ ইস্যুতে ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসাইনও ছুটিতে যান। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ইন্টিগ্রিটি এ্যাডভাইজর মসিউর রহমানও যে কোন সময় পদত্যাগ করতে পারেন বলে ধারণা পাওয়া গেছে। এই যখন অবস্থা তখন বৃহস্পতিবার পদ্মা সেতু হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রকল্পের অন্যতম অংশীদার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক হুয়ান মিরান্ডা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতু হবে। তবে অর্থমন্ত্রী শুধু হবে আর বলেননি। বলেছেন, হবেই। এরপর একে খুশির খবর বলতেই হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থীসহ মোট ১০ জন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। ’৯১ সালের ২৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মির্জা গালিব, লিটন ও মিজান নিহত হন। ওই ঘটনায় এক পথশিশুও নিহত হয়। এর আগে একই বছরের ২০ জুন ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের সামনে মাহবুবুর রহমান নামের এক ছাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। ’৯২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন আরবী বিভাগের ছাত্র মোঃ আব্দুর রশিদ আনসারী। ’৯৬ সালের ১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। ২০০৫ সালের ২৮ মে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শাম্মী আক্তার হ্যাপী। এরপর থেকে শাহবাগে আন্ডারপাস নির্মাণের দাবি তোলেন ছাত্ররা। জানা যায়, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ২০০৫ সালের ১২ জুন সিটি কর্পোরেশনকে একটি চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তেমন কোন কাজ হয়নি। ফলে পরবর্তী বছর ৯ মে একই স্থানে বাসচাপায় নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র মোবারক হোসেন। এ সময় আন্ডারপাস নির্মাণের দাবি আরও জোরদার হয়। আন্দোলনে নামেন ছাত্ররা। আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দারসহ ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিয়ে নগরভবনে ডিসিসির মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করেন। কিন্তু সে আলোচনা টেবিলেই আটকে থাকে। ২০০৯ সালের ২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক পরিমল কুমার শাহার স্ত্রী অনিমা রানী শাহা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। এ অবস্থায় ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আন্ডারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মেট্রো রেল চালুর প্রকল্প হাতে নেয়। কিন্তু নানা জটিলতায় সে কাজও আর এগোয়নি। তবে অব্যাহত আছে সড়ক দুর্ঘটনা। প্রাণের এমন বিনাশ কেউ মেনে নিতে পারে না। গত দুই-তিন দিন রাজপথে মিছিল অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা। অবশ্য কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পর বর্তমানে তারা কিছুটা শান্ত।
তবে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তিইচ্ছুদের আন্দোলন এখনও চলছে। পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তির দাবি তাঁদের। আগে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তিতে পরীক্ষা হলেও কিছু দিন আগে জানানো হয়, এবার থেকে আর ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে না। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জিপিএ’র ভিত্তিতেই এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের পরপরই ঢাকার রাজপথে আন্দোলন শুরু করে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। মেডিক্যাল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মঞ্চ ব্যানারে এখনও কর্মসূচী চালাচ্ছে তারা। এ দাবিতে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে জটিলতা অবসানের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক আলোচনাসভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ তেমন ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ভর্তির স্বপ্ন নিয়ে আছে। আমি আশা করছি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা বাস্তবতা বিবেচনা করে ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা করবেন।
তবে সকল আলোচনাকে ছাড়িয়ে গেছে পদ্মা সেতু। অনেক দিনের পুরনো আলোচনা হলেও গত দুই-এক দিনে এ আলোচনা ব্যাপক মোড় পরিবর্তন করেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। কিন্তু অনিশ্চয়তা দেখা দেয় গত বছরের সেপ্টেম্বরে। এ প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়। পরে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারকে কয়েকটি শর্ত দেয় বিশ্ব ব্যাংক। তা পালন হয়নি জানিয়ে গত জুনে অর্থায়ন বাতিল করে তারা। তবে অর্থায়ন বাতিলের পর এ ইস্যুতে ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসাইনও ছুটিতে যান। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ইন্টিগ্রিটি এ্যাডভাইজর মসিউর রহমানও যে কোন সময় পদত্যাগ করতে পারেন বলে ধারণা পাওয়া গেছে। এই যখন অবস্থা তখন বৃহস্পতিবার পদ্মা সেতু হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রকল্পের অন্যতম অংশীদার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক হুয়ান মিরান্ডা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতু হবে। তবে অর্থমন্ত্রী শুধু হবে আর বলেননি। বলেছেন, হবেই। এরপর একে খুশির খবর বলতেই হবে।
No comments