গার্হস্থ্য শ্রম নিয়ে বিতর্ক by আবুল হোসাইন
গার্হস্থ্য শ্রম নিয়ে বিতর্ক আজকের নয়, অনেক পুরনো নারীদের অসংখ্য কাজ বিশেষ করে গৃহস্থালি কাজ এবং শিশু লালন-পালন করতে হয়। অধিকাংশ সমাজে গৃহস্থালি কাজের কোন মজুরি নেই, ব্যক্তিগতভাবে করে এবং নারীরাই করে। নারীরা প্রাধানত এ দায়িত্ব পালন করে এই পরিবারের শারীরিক এবং মানসিক চাহিদা মিটায়।
মার্কসবাদীদের মতে পরিবারে যে কাজ হয় তার টংব াধষঁব (ব্যবহারিক মূল্য) আছে বীপযধহমব াধষঁব (বিনিময় মূল্য) নেই। পরিবারের মধ্যকার এ অর্থনীতিকে বুঝতে হলে ঋধসরষু ধং ধ সড়ফব ড়ভ চৎড়ফঁপঃরড়হ বুঝতে হবে এবং পরিবারের সে বৈশিষ্ট্য বুঝতে হলে সনাতনী বাজার অর্থনীতির ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে যেখানে নারী এবং পুরুষ পরিষ্কার ভূমিকা পালন করে। তাই গৃহস্থালি শ্রম বললে তার সঙ্গে গৃহের শ্রম এবং বাজার ও কারখানার শ্রমের সঙ্গে তুলনা বুঝায়।
আমাদের সমাজ-সংসারে গৃহশ্রমিকের আবির্ভাব ঘটেছে কবে তার সঠিক তথ্য কারো জানা নেই। সম্ভবত ভারতবর্ষে আদিকাল থেকে নারীরা গৃহকর্মে নিয়োজিত ছিল। আজকের যারা গৃহশ্রমিক-আদিতে তাদের স্বরূপ ছিল দাসীবৃত্তি। দাসীবৃত্তি প্রাচীন ভারতের একটি আদি পেশা। বাঙালী নারীর আদি কর্মক্ষেত্র সংসার। কর্মপরিধির বিস্তার ঘরকন্না থেকে কৃষিক্ষেত্রে। গৃহিণী তার আদি পরিচয় কিন্তু তা পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি কখনও। মাতৃতান্ত্রিক সমাজে সামাজিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে গৃহশ্রমের গুরুত্বপূর্ণও অবদানের স্বীকৃতি ছিল। পারিবারিক ও গৃহস্থালির কাজ ছিল নারীর নিয়ন্ত্রণাধীন। পুরুষের কাজের মতো তা শ্রম হিসেবে স্বীকৃত হতো। পিতৃতান্ত্রিক পারিবারিক ব্যবস্থার উদ্ভব হলে গৃহশ্রমের পারিবারিক ও গৃহস্থালির কাজ ছিল নারীর নিয়ন্ত্রণাধীন। পুরুষের কাজের মতো তা শ্রম হিসেবে স্বীকৃত হতো। পিতৃতান্ত্রিক পারিবারিক ব্যবস্থার নারীর স্বাভাবিক দায়িত্ব হিসেবে চিহ্নিত হয়, শ্রম হিসেবে নয়। বিশ শতকের অর্থনীতিতেও গৃহশ্রমের স্বীকৃতি মেলেনি।
গৃহশ্রমে নিয়োজিত নারীদের বালা হয় গৃহিণী। আজও বাংলাদেশে গৃহিণী পেশার মর্যাদা পায়নি মূল্যায়িত হয়নি নারীর গৃহকেন্দ্রিক কর্মকা-। গৃহকর্মের এই অবমূল্যায়নের নারীকে চিহ্নিত করে রেখেছে বেকার নিষ্ক্রিয়রূপে। ঘরকন্না, গৃহবধূ, গৃহিণী ঘরনী ইত্যাদি নামে আখ্যায়িত করে তাদের বাইরে খারা হয়েছে রাষ্ট্রের মোট শ্রমশক্তি থেকে। গৃহের অসংখ্য কাজ ছাড়াও চাষাবাদ ও শস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি নারীর প্রাকৃতিক কাজ হিসেবেই গণ্য করা হয়। প্রতিনিয়ত কুটির শিল্পজাত জিনিসপত্র তৈরি করে, ঢেঁকিতে ধান ভেনেও গৃহিণী কোন মজুরিযোগ্য কাজের স্বীকৃতি পাননি। অথচ একই কাজ নতুন প্রযুক্তি দিয়ে জীবিকার কারখানায় করা হলে তার সঙ্গে জড়িতদের মজুরিযোগ্য শ্রমিক বলে গণ্য করা হয়। লিঙ্গীয় কারণে মজুরি বৈষম্যের শিকার হন গৃহশ্রমিকরা। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে গৃহশ্রমিকের অন্যের বাড়িতে অর্থের বিনিময়ে রান্নাবান্না, কাপড় ধোয়া ঘরমোছা, বাজার করা, বাচ্চাদের লালনপালন ও স্কুলে আনা-নেয়াসহ যাবতীয় সাংসারিক কাজ করে থাকেন। এসব কাজের মজুরি কখনও অর্থে, কখনও পেটে ভাতে। বাড়ি, মেস হোস্টেল কিংবা খাবার তৈরির কারখানার কাজের ধরন ভিন্ন। সে কারণে এসব কাজের মজুরিও ভিন্ন। গৃহশ্রমিক হিসেবে যেমন রয়েছে তাদের কিছু ন্যায্য অধিকার, তেমনি রয়েছে মানবিক মর্যাদা। কিন্তু আমাদের সমাজে এ পেশাকে কখনই মর্যাদা দৃষ্টিতে দেখা হয়নি। অধীনস্থ বলে প্রায় ক্ষেত্রেই তাদের স্বাধীনতাকে করা হয় অস্বীকার। তাই গৃহশ্রমিকের কাজের স্বীকৃতি অর্জনের জন্য সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটাতে হবে, দিতে হবে আইনী স্বীকৃতি।
২০০৪ সালের সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট শ্রমশক্তি ৪৪.৩ মিলিয়ন, যার মধ্যে নারী ৯.৮ মিলিয়ন। এপর এত পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট নারী শ্রমিকের ৮৩%ভাগ গৃহশ্রমিক, ১০% ভাগ আত্মকর্মসংস্থান নিয়োজিত ৪%ভাগ বেতনভোগী, ৩% ভাগ দিনমজুর। উক্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায় নারী শ্রমিকের সিংহভাগ গৃহকর্মে নিয়োজিত। এই বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবীকে এখনও পর্যন্ত শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি এই শ্রমজীবী নারীরা নামমাত্র বেতনে কাজ করে জীবিকা চালায়। এই ব্যাপক নারী শ্রমকে অর্থনৈতিক কর্মকা- হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও অর্থমূল্যে জাতীয় আয় হিসেবে দেখানো হয় না। গৃহস্থালি শ্রম বললে মূলত পরিবার এবং ব্যক্তিগত জীবনের কথা বুঝায় যেখানে ব্যক্তি পরিবারের সদস্য হিসেবে বড় হয় শ্রম বাজারের জন্য। গৃহস্থালি কাজে নারীরা পুরুষকে ব্যক্তিগত জীবনে সেবা প্রদান করে যাকে ৎবধষ ড়িৎশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় না। গৃহস্থালি কাজের জাতীয় আয়ে গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও উড়সবংঃরপ ঘধঃরড়হধষ চৎড়ফঁপঃ-এ হিসেব করা হয় না এবং এ কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অনেক নারী ডধমব ভড়ৎ যড়ঁংবড়িৎশ গৃহস্থালি কাজের মজুরি দাবি করে। লিঙ্গভিত্তিক শ্রম বিভাজনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্য হচ্ছে যে নারীর দু’ধরনের কাজে বোঝায় সম্মুখীন হতে হয় যার একটি এচ্ছে অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজ এবং অন্যটি হচ্ছে মজুরিভিত্তিক কাজ। তাদের এ গৃহস্থালি কাজের বোঝা বাইরের কর্মক্ষেত্রে তাদের শোষণের প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দেয়। নারীদের এ সমস্যা সব সময় দেখা গেছে তবে উনবিংশ শতাব্দী থেকে ইউরোপে গৃহশ্রমের শ্রেণীভেদ রয়েছে। ঐড়ঁংবরিভব এর ধারণা থেকে একজন বিবাহিত নারীর গৃহস্থালি কাজ প্রধান কাজ এবং বইরের মজুরিত্তিক কাজ গৌণ কাজ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে ইংরেজ ভিক্টোরির যুগ থেকে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ও অবস্থাকে নিম্ন শ্রেণীর আদর্শ হিসেবে গণ্য করে কিন্তু অর্থনৈতিক দীনতার কারণে তাদের ঘরে দুটো মজুরি (স্বামী এবং স্ত্রী) আনা অত্যাবশ্যক হয়ে দেখা দেয় আর এখন ঘরেতে আয় অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দেয় তখনই বাসার কাজের গুরুত্ব বাইরের কাজের থেকে কমে যায়। উধারফড়ভভ ধহফ ঐধষষ দেখানোর চেষ্টা করেন যে, কিভাবে উনবিংশ শতাব্দীর গোড়াতে বার্মিংহামে পুরুষ উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাদের স্ত্রীদের অবৈতনিক শ্রমের ব্যবহার করেছে। পরবর্তীতে ব্যবসার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে নতু দালান-কোঠা এবং উপশহরে বাড়ি নির্মাণের পর স্ত্রীদের সে ভূমিকা হ্রাস পায় এবং তারা পূর্ণ ঐড়ঁংবরিভব হিসেবে কাজ শুরু করে। ৭০ এক দশকে পূঁজিবাদী বিশ্বে ঐড়ঁংবরিভব এবং ঈরষফবধৎব এর রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে গৃহশ্রম দিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ঝ.ঔধসবং এবং গ.উধষষধ এড়ংঃধ এর রচনা থেকে মূলত এ বিতর্ক শুরু হয় যারা দলীয় সামাজিক পুঁজি ব্যবহার করেন। তাঁরা তাদের সে লেখায় শুধু মজুরি শ্রম সম্পর্কে আলোচনা করেননি, মজুরিবিহীন শ্রম সম্পর্কেও আলোচনা করেন। ঝ.ঔধসবং এবং গ.উধষষধ এড়ংঃধ দু’জনে যুক্তি দেখান যে মজুরিবিহীনরা মজুরি পাওয়া উচিত এবং গৃহস্থালি কাজের জন্য মজুরি দাবি করা উচিত। এভাবে চাইলে উচ্চতর পুঁজিবাদের অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব আরও ঘনীভূত হবে।
আমাদের সমাজ-সংসারে গৃহশ্রমিকের আবির্ভাব ঘটেছে কবে তার সঠিক তথ্য কারো জানা নেই। সম্ভবত ভারতবর্ষে আদিকাল থেকে নারীরা গৃহকর্মে নিয়োজিত ছিল। আজকের যারা গৃহশ্রমিক-আদিতে তাদের স্বরূপ ছিল দাসীবৃত্তি। দাসীবৃত্তি প্রাচীন ভারতের একটি আদি পেশা। বাঙালী নারীর আদি কর্মক্ষেত্র সংসার। কর্মপরিধির বিস্তার ঘরকন্না থেকে কৃষিক্ষেত্রে। গৃহিণী তার আদি পরিচয় কিন্তু তা পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি কখনও। মাতৃতান্ত্রিক সমাজে সামাজিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে গৃহশ্রমের গুরুত্বপূর্ণও অবদানের স্বীকৃতি ছিল। পারিবারিক ও গৃহস্থালির কাজ ছিল নারীর নিয়ন্ত্রণাধীন। পুরুষের কাজের মতো তা শ্রম হিসেবে স্বীকৃত হতো। পিতৃতান্ত্রিক পারিবারিক ব্যবস্থার উদ্ভব হলে গৃহশ্রমের পারিবারিক ও গৃহস্থালির কাজ ছিল নারীর নিয়ন্ত্রণাধীন। পুরুষের কাজের মতো তা শ্রম হিসেবে স্বীকৃত হতো। পিতৃতান্ত্রিক পারিবারিক ব্যবস্থার নারীর স্বাভাবিক দায়িত্ব হিসেবে চিহ্নিত হয়, শ্রম হিসেবে নয়। বিশ শতকের অর্থনীতিতেও গৃহশ্রমের স্বীকৃতি মেলেনি।
গৃহশ্রমে নিয়োজিত নারীদের বালা হয় গৃহিণী। আজও বাংলাদেশে গৃহিণী পেশার মর্যাদা পায়নি মূল্যায়িত হয়নি নারীর গৃহকেন্দ্রিক কর্মকা-। গৃহকর্মের এই অবমূল্যায়নের নারীকে চিহ্নিত করে রেখেছে বেকার নিষ্ক্রিয়রূপে। ঘরকন্না, গৃহবধূ, গৃহিণী ঘরনী ইত্যাদি নামে আখ্যায়িত করে তাদের বাইরে খারা হয়েছে রাষ্ট্রের মোট শ্রমশক্তি থেকে। গৃহের অসংখ্য কাজ ছাড়াও চাষাবাদ ও শস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি নারীর প্রাকৃতিক কাজ হিসেবেই গণ্য করা হয়। প্রতিনিয়ত কুটির শিল্পজাত জিনিসপত্র তৈরি করে, ঢেঁকিতে ধান ভেনেও গৃহিণী কোন মজুরিযোগ্য কাজের স্বীকৃতি পাননি। অথচ একই কাজ নতুন প্রযুক্তি দিয়ে জীবিকার কারখানায় করা হলে তার সঙ্গে জড়িতদের মজুরিযোগ্য শ্রমিক বলে গণ্য করা হয়। লিঙ্গীয় কারণে মজুরি বৈষম্যের শিকার হন গৃহশ্রমিকরা। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে গৃহশ্রমিকের অন্যের বাড়িতে অর্থের বিনিময়ে রান্নাবান্না, কাপড় ধোয়া ঘরমোছা, বাজার করা, বাচ্চাদের লালনপালন ও স্কুলে আনা-নেয়াসহ যাবতীয় সাংসারিক কাজ করে থাকেন। এসব কাজের মজুরি কখনও অর্থে, কখনও পেটে ভাতে। বাড়ি, মেস হোস্টেল কিংবা খাবার তৈরির কারখানার কাজের ধরন ভিন্ন। সে কারণে এসব কাজের মজুরিও ভিন্ন। গৃহশ্রমিক হিসেবে যেমন রয়েছে তাদের কিছু ন্যায্য অধিকার, তেমনি রয়েছে মানবিক মর্যাদা। কিন্তু আমাদের সমাজে এ পেশাকে কখনই মর্যাদা দৃষ্টিতে দেখা হয়নি। অধীনস্থ বলে প্রায় ক্ষেত্রেই তাদের স্বাধীনতাকে করা হয় অস্বীকার। তাই গৃহশ্রমিকের কাজের স্বীকৃতি অর্জনের জন্য সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটাতে হবে, দিতে হবে আইনী স্বীকৃতি।
২০০৪ সালের সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট শ্রমশক্তি ৪৪.৩ মিলিয়ন, যার মধ্যে নারী ৯.৮ মিলিয়ন। এপর এত পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট নারী শ্রমিকের ৮৩%ভাগ গৃহশ্রমিক, ১০% ভাগ আত্মকর্মসংস্থান নিয়োজিত ৪%ভাগ বেতনভোগী, ৩% ভাগ দিনমজুর। উক্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায় নারী শ্রমিকের সিংহভাগ গৃহকর্মে নিয়োজিত। এই বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবীকে এখনও পর্যন্ত শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি এই শ্রমজীবী নারীরা নামমাত্র বেতনে কাজ করে জীবিকা চালায়। এই ব্যাপক নারী শ্রমকে অর্থনৈতিক কর্মকা- হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও অর্থমূল্যে জাতীয় আয় হিসেবে দেখানো হয় না। গৃহস্থালি শ্রম বললে মূলত পরিবার এবং ব্যক্তিগত জীবনের কথা বুঝায় যেখানে ব্যক্তি পরিবারের সদস্য হিসেবে বড় হয় শ্রম বাজারের জন্য। গৃহস্থালি কাজে নারীরা পুরুষকে ব্যক্তিগত জীবনে সেবা প্রদান করে যাকে ৎবধষ ড়িৎশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় না। গৃহস্থালি কাজের জাতীয় আয়ে গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও উড়সবংঃরপ ঘধঃরড়হধষ চৎড়ফঁপঃ-এ হিসেব করা হয় না এবং এ কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অনেক নারী ডধমব ভড়ৎ যড়ঁংবড়িৎশ গৃহস্থালি কাজের মজুরি দাবি করে। লিঙ্গভিত্তিক শ্রম বিভাজনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্য হচ্ছে যে নারীর দু’ধরনের কাজে বোঝায় সম্মুখীন হতে হয় যার একটি এচ্ছে অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজ এবং অন্যটি হচ্ছে মজুরিভিত্তিক কাজ। তাদের এ গৃহস্থালি কাজের বোঝা বাইরের কর্মক্ষেত্রে তাদের শোষণের প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দেয়। নারীদের এ সমস্যা সব সময় দেখা গেছে তবে উনবিংশ শতাব্দী থেকে ইউরোপে গৃহশ্রমের শ্রেণীভেদ রয়েছে। ঐড়ঁংবরিভব এর ধারণা থেকে একজন বিবাহিত নারীর গৃহস্থালি কাজ প্রধান কাজ এবং বইরের মজুরিত্তিক কাজ গৌণ কাজ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে ইংরেজ ভিক্টোরির যুগ থেকে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ও অবস্থাকে নিম্ন শ্রেণীর আদর্শ হিসেবে গণ্য করে কিন্তু অর্থনৈতিক দীনতার কারণে তাদের ঘরে দুটো মজুরি (স্বামী এবং স্ত্রী) আনা অত্যাবশ্যক হয়ে দেখা দেয় আর এখন ঘরেতে আয় অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দেয় তখনই বাসার কাজের গুরুত্ব বাইরের কাজের থেকে কমে যায়। উধারফড়ভভ ধহফ ঐধষষ দেখানোর চেষ্টা করেন যে, কিভাবে উনবিংশ শতাব্দীর গোড়াতে বার্মিংহামে পুরুষ উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাদের স্ত্রীদের অবৈতনিক শ্রমের ব্যবহার করেছে। পরবর্তীতে ব্যবসার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে নতু দালান-কোঠা এবং উপশহরে বাড়ি নির্মাণের পর স্ত্রীদের সে ভূমিকা হ্রাস পায় এবং তারা পূর্ণ ঐড়ঁংবরিভব হিসেবে কাজ শুরু করে। ৭০ এক দশকে পূঁজিবাদী বিশ্বে ঐড়ঁংবরিভব এবং ঈরষফবধৎব এর রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে গৃহশ্রম দিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ঝ.ঔধসবং এবং গ.উধষষধ এড়ংঃধ এর রচনা থেকে মূলত এ বিতর্ক শুরু হয় যারা দলীয় সামাজিক পুঁজি ব্যবহার করেন। তাঁরা তাদের সে লেখায় শুধু মজুরি শ্রম সম্পর্কে আলোচনা করেননি, মজুরিবিহীন শ্রম সম্পর্কেও আলোচনা করেন। ঝ.ঔধসবং এবং গ.উধষষধ এড়ংঃধ দু’জনে যুক্তি দেখান যে মজুরিবিহীনরা মজুরি পাওয়া উচিত এবং গৃহস্থালি কাজের জন্য মজুরি দাবি করা উচিত। এভাবে চাইলে উচ্চতর পুঁজিবাদের অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব আরও ঘনীভূত হবে।
No comments