ফ্যাশনে নান্দনিকতা by রেজা ফারুক
দেশী ফ্যাশন ভুবনে চলছে এখন শিল্পময়তার গভীর আবহ। পোশাকের জগতে ফ্যাশনেবল আবেশের ইতিবাচক এমন পরিবেশ একদিনে তৈরি হয়নি। এর পেছনে রয়েছে ফ্যাশন সচেতনতার উদ্যমী প্রয়াস। দেশের বেশকিছু খ্যাতনামা ফ্যাশন হাউস ফ্যাশনেবল ধারা সৃষ্টির ক্ষেত্রে আশির দশকের মধ্যভাগ থেকে যে শুভ পদযাত্রার সূচনা করেÑদিনে দিনে
সেই ধারায় আজ সম্পৃক্ত হয়েছে বিশাল এক প্রেক্ষাপট। বিশেষত দেশে তৈরি ফেব্রিকের মাধ্যমে বানানো ড্রেস আজ নগর জীবনের একটা অংশ হয়ে উঠেছে। এক সময় পাশ্চাত্য ফ্যাশনের ওপর যারা ছিলেন অনুরক্ত। তাদের এক বিরাট অংশ বর্তমানে দেশীয় কাপড়ে তৈরি পোশাক পরিধান করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অবশ্য এই ফ্যাশন ট্রেডের লক্ষণীয় পরিবর্তনের প্লাটফরম সৃষ্টিতে খ্যাতনামা বেশকিছু ফ্যাশন হাউস নিরন্তর কাজ করে দেশীয় ফ্যাশনের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ সৃষ্টি করেন। তাদের সেই পথ বেয়ে ফ্যাশন জগতে একটা শৈল্পিক বিপ্লবের ক্ষেত্র বিনির্মিত হয়েছে। এবং বলা চলে ঢাকায় বর্তমানে প্রায় শতাধিক ব্র্যান্ডের ফ্যাশন হাউস নিজস্বতা তথা শিল্পের স্বাক্ষর রেখে ফ্যাশনের উজ্জ্বল দিগন্তকে আরও দ্যুতিময় করে তুলতে চালিয়ে যাচ্ছে নানা সুচারু কর্মময়তা। যা বাংলার আগামীর ফ্যাশন দুনিয়াকে আরও উদ্ভাসিত করবে নান্দনিকতার নন্দিত ছোঁয়ায়।
সময়ের বিবর্তনে আজ নাগরিক জীবনে ফ্যাশনেবল পোশাকটি শুধু ব্যবহারের নিরিখেই ব্যবহৃত হয় তা কিন্তু নয়। বাঙালীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রুচিশীলতাকে এক রেখায় এনে যখন একটা ড্রেস তৈরি করা হয় তখনও স্বভাবত কারণেই সেই ড্রেসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। বিভিন্ন উৎসবের সময় দেখা যায় ফ্যাশন হাউসগুলোতে সব শ্রেণীর নারী এবং পুরুষের ভিড়। অথচ বিগত দুই দশক আগেও এমনটা লক্ষ্য করা যায়নি। তাই বলা চলে, ফ্যাশন হাউসগুলো আজ অপরিসীম আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলেই ক্রেতারা সানন্দে দেশীয় ফেব্রিকে তেরি পোশাক সংগ্রহে অফুরন্ত আগ্রহ নিয়ে আউটলেটগুলোতে সমবেত হচ্ছেন। প্রত্যক্ষভাবে ফ্যাশন ট্রেডকে এগিয়ে নিতে ফ্যাশন হাউসের কর্ণধার, ডিজাইনারদের যেমন রয়েছে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ অবদান। পাশাপাশি এই পোশাক শিল্পকে ক্লান্তিহীন সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের তাঁত শিল্প। স্বাধীনতা-উত্তর তাঁতশিল্প নিরবচ্ছিন্নভাবে মুখ্য একটা দাবি পূরণের লক্ষ্যে কাজ করতে গিয়েই এক সময় জড়িয়ে পড়েন ঢাকার উদ্যোগী ফ্যাশন ট্রেডের সঙ্গে। পরবর্তীতে ফ্যাশন হাউসের চাহিদা মতো ফেব্রিক তৈরিতে তারা মনোযোগী হয়ে ওঠেন। এক্ষেত্রে সবার আগে চলে আসে টাঙ্গাইলের তাঁত ও সিল্কের শাড়ি কথা। পাশাপাশি জামদানি শিল্পও পুনরায় হৃতগৌরব পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু করে এবং সুতি কাপড়, খাদিসহ বিভিন্ন আঙ্গিকের পোশাক তৈরিতে যেসব ফেব্রিক ব্যবহৃত হয়, তারও এক বিশাল বাজার তৈরি হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। সবচেয়ে বড় কথা হলো এসব পোশাক ও শাড়ি তৈরিতে দৈশীয় প্রযুক্তি, নিজস্ব উদ্ভাবনীবোধ এবং ফ্যাশন চিন্তা সমন্বিত হয়ে যে প্রেক্ষিত রচিত হয়েছে তারই বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায় হলো আজকের ফ্যাশন জগত। এ প্রেক্ষিতে যে বিষয়টি বিশেষ বিবেচ্য তাহলো দেশীয় শাড়ি ও ড্রেসের সহনীয় দাম। ফ্যাশন ট্রেডে বর্তমানে দেশীয় ফেব্রিক্সের শার্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, ত্রি-পিস এবং টি-শার্টের যেমন রয়েছে অসম্ভব চাহিদা, তেমনি টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়িরও রয়েছে বিপুল কদর। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন ডিজাইন ও মোটিফের শাড়ির চাহিদা সত্যিই অভূতপূর্ব। তাছাড়া টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির আবেদনটা সারাদেশের মহিলাদের কাছেই অগ্রগণ্য। যেহেতু টাঙ্গাইল শাড়ির ডিজাইনেও ফ্যাশনবোধটাকে সমুন্নত রেখে শাড়ি তৈরি হয়। তাই বিভিন্ন উৎসব ও ঋতুভিত্তিক অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়ি যেনো বিকল্পহীন।
জামদানির কথা বলতে গেলে বলা যায়, জামদানি শিল্প স্তিমিত পর্যায় থেকে বর্তমানে বেশ উদ্যম নিয়ে আবার ফ্যাশন ধারায় জায়গা করে নিয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে জামদানি শিল্পও গৌরবময় অতীতকে সঙ্গী করে নতুন মাত্রায় নিজের পথকে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর অবস্থায় উন্নীত করতে সমর্থ হবে। সর্বোপরি যে ছবিটা নগরের দৈনন্দিন জীবনে উচ্ছ্বসিত রাখার ক্ষেত্রে একটা নতুন আবেশ সৃষ্টি করেছে তাহলো আজকের দেশীয় ফেব্রিকের মনোহর ডিজাইনকৃত ফ্যাশন ট্রেড।
এই ফ্যাশন ট্রেডের মূল লক্ষ্য হলো বাঙালীয়ানার আদি ও অকৃত্রিম কনসেপ্টকে সুললিত করা। যার সামনে-পিছনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ফ্যাশন হাউস আর তাঁত শিল্পীরা। ফ্যাশনধারার অগ্রযাত্রাকে পাশে থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া। ফ্যাশনের এই বদলে যাওয়া প্রতিটি প্রহর এখন বাঙালীর মনে ফুরফুরে যে আমেজ সৃষ্টি করেছে, ওই আমেজকে শিল্পোত্তীর্ণ রঙে রাঙিয়ে দিতে এই ট্রেডের সবাই কাজ করে যাচ্ছেন এক যোগে। আর তারই প্রতিচ্ছবিটা বছরজুড়ে ফ্যাশন হাউসগুলোর দিকে দৃষ্টি রাখলেই বোঝা যায়।
বলা চলে, দেশীয় পোশাক, শাড়ি এবং অন্যান্য সব ধরনের ড্রেস এদেশের প্রতিটি ঋতুতে পছন্দমতো পরিধান করা যায়। ছয় ঋতুর এই বাংলাদেশের নগর জীবন ছাপিয়ে ফ্যাশনের তরঙ্গমালা মফস্বলের উপকূলজুড়েও তুলেছে প্রাণবন্ত উচ্ছ্বাস। যে উচ্ছ্বাসের স্পর্শে ফ্যাশনের ভুবন আজ ক্রমশ হচ্ছে সুবিস্তৃত।
ধর্মীয় এবং ঋতুভিত্তিক উৎসব ছাড়াও যেমন রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী তেমনি জীবনানন্দ দাশ থেকে শুরু করে বহু প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব আজ পোশাকের বুকে স্বমহিমায় জায়গা করে নিয়েছে। একইভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বন্ধু দিবস, মা দিবস, বাবা দিবসও ড্রেসের অবয়বে নান্দনিক আদলে উৎকীর্ণ হতে দেখা যায় অনন্য মহিমায়। সব মিলিয়ে এখন ফ্যাশন ধারায় চলছে শিল্পময়তার গহন প্রবাহ। যা এদেশের প্রতিটি ফ্যাশন সচেতন নারী ও পুরুষকে এক নিবিড় ফ্যাশন বর্ষণে রেখেছে সিক্ত করে।
মডেল : দীপা খন্দকার ও সীমানা
সময়ের বিবর্তনে আজ নাগরিক জীবনে ফ্যাশনেবল পোশাকটি শুধু ব্যবহারের নিরিখেই ব্যবহৃত হয় তা কিন্তু নয়। বাঙালীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রুচিশীলতাকে এক রেখায় এনে যখন একটা ড্রেস তৈরি করা হয় তখনও স্বভাবত কারণেই সেই ড্রেসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। বিভিন্ন উৎসবের সময় দেখা যায় ফ্যাশন হাউসগুলোতে সব শ্রেণীর নারী এবং পুরুষের ভিড়। অথচ বিগত দুই দশক আগেও এমনটা লক্ষ্য করা যায়নি। তাই বলা চলে, ফ্যাশন হাউসগুলো আজ অপরিসীম আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলেই ক্রেতারা সানন্দে দেশীয় ফেব্রিকে তেরি পোশাক সংগ্রহে অফুরন্ত আগ্রহ নিয়ে আউটলেটগুলোতে সমবেত হচ্ছেন। প্রত্যক্ষভাবে ফ্যাশন ট্রেডকে এগিয়ে নিতে ফ্যাশন হাউসের কর্ণধার, ডিজাইনারদের যেমন রয়েছে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ অবদান। পাশাপাশি এই পোশাক শিল্পকে ক্লান্তিহীন সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের তাঁত শিল্প। স্বাধীনতা-উত্তর তাঁতশিল্প নিরবচ্ছিন্নভাবে মুখ্য একটা দাবি পূরণের লক্ষ্যে কাজ করতে গিয়েই এক সময় জড়িয়ে পড়েন ঢাকার উদ্যোগী ফ্যাশন ট্রেডের সঙ্গে। পরবর্তীতে ফ্যাশন হাউসের চাহিদা মতো ফেব্রিক তৈরিতে তারা মনোযোগী হয়ে ওঠেন। এক্ষেত্রে সবার আগে চলে আসে টাঙ্গাইলের তাঁত ও সিল্কের শাড়ি কথা। পাশাপাশি জামদানি শিল্পও পুনরায় হৃতগৌরব পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু করে এবং সুতি কাপড়, খাদিসহ বিভিন্ন আঙ্গিকের পোশাক তৈরিতে যেসব ফেব্রিক ব্যবহৃত হয়, তারও এক বিশাল বাজার তৈরি হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। সবচেয়ে বড় কথা হলো এসব পোশাক ও শাড়ি তৈরিতে দৈশীয় প্রযুক্তি, নিজস্ব উদ্ভাবনীবোধ এবং ফ্যাশন চিন্তা সমন্বিত হয়ে যে প্রেক্ষিত রচিত হয়েছে তারই বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায় হলো আজকের ফ্যাশন জগত। এ প্রেক্ষিতে যে বিষয়টি বিশেষ বিবেচ্য তাহলো দেশীয় শাড়ি ও ড্রেসের সহনীয় দাম। ফ্যাশন ট্রেডে বর্তমানে দেশীয় ফেব্রিক্সের শার্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, ত্রি-পিস এবং টি-শার্টের যেমন রয়েছে অসম্ভব চাহিদা, তেমনি টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়িরও রয়েছে বিপুল কদর। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন ডিজাইন ও মোটিফের শাড়ির চাহিদা সত্যিই অভূতপূর্ব। তাছাড়া টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির আবেদনটা সারাদেশের মহিলাদের কাছেই অগ্রগণ্য। যেহেতু টাঙ্গাইল শাড়ির ডিজাইনেও ফ্যাশনবোধটাকে সমুন্নত রেখে শাড়ি তৈরি হয়। তাই বিভিন্ন উৎসব ও ঋতুভিত্তিক অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়ি যেনো বিকল্পহীন।
জামদানির কথা বলতে গেলে বলা যায়, জামদানি শিল্প স্তিমিত পর্যায় থেকে বর্তমানে বেশ উদ্যম নিয়ে আবার ফ্যাশন ধারায় জায়গা করে নিয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে জামদানি শিল্পও গৌরবময় অতীতকে সঙ্গী করে নতুন মাত্রায় নিজের পথকে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর অবস্থায় উন্নীত করতে সমর্থ হবে। সর্বোপরি যে ছবিটা নগরের দৈনন্দিন জীবনে উচ্ছ্বসিত রাখার ক্ষেত্রে একটা নতুন আবেশ সৃষ্টি করেছে তাহলো আজকের দেশীয় ফেব্রিকের মনোহর ডিজাইনকৃত ফ্যাশন ট্রেড।
এই ফ্যাশন ট্রেডের মূল লক্ষ্য হলো বাঙালীয়ানার আদি ও অকৃত্রিম কনসেপ্টকে সুললিত করা। যার সামনে-পিছনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ফ্যাশন হাউস আর তাঁত শিল্পীরা। ফ্যাশনধারার অগ্রযাত্রাকে পাশে থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া। ফ্যাশনের এই বদলে যাওয়া প্রতিটি প্রহর এখন বাঙালীর মনে ফুরফুরে যে আমেজ সৃষ্টি করেছে, ওই আমেজকে শিল্পোত্তীর্ণ রঙে রাঙিয়ে দিতে এই ট্রেডের সবাই কাজ করে যাচ্ছেন এক যোগে। আর তারই প্রতিচ্ছবিটা বছরজুড়ে ফ্যাশন হাউসগুলোর দিকে দৃষ্টি রাখলেই বোঝা যায়।
বলা চলে, দেশীয় পোশাক, শাড়ি এবং অন্যান্য সব ধরনের ড্রেস এদেশের প্রতিটি ঋতুতে পছন্দমতো পরিধান করা যায়। ছয় ঋতুর এই বাংলাদেশের নগর জীবন ছাপিয়ে ফ্যাশনের তরঙ্গমালা মফস্বলের উপকূলজুড়েও তুলেছে প্রাণবন্ত উচ্ছ্বাস। যে উচ্ছ্বাসের স্পর্শে ফ্যাশনের ভুবন আজ ক্রমশ হচ্ছে সুবিস্তৃত।
ধর্মীয় এবং ঋতুভিত্তিক উৎসব ছাড়াও যেমন রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী তেমনি জীবনানন্দ দাশ থেকে শুরু করে বহু প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব আজ পোশাকের বুকে স্বমহিমায় জায়গা করে নিয়েছে। একইভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বন্ধু দিবস, মা দিবস, বাবা দিবসও ড্রেসের অবয়বে নান্দনিক আদলে উৎকীর্ণ হতে দেখা যায় অনন্য মহিমায়। সব মিলিয়ে এখন ফ্যাশন ধারায় চলছে শিল্পময়তার গহন প্রবাহ। যা এদেশের প্রতিটি ফ্যাশন সচেতন নারী ও পুরুষকে এক নিবিড় ফ্যাশন বর্ষণে রেখেছে সিক্ত করে।
মডেল : দীপা খন্দকার ও সীমানা
No comments