‘গ্রামীণ ব্যাংক অন্য কোনোভাবে চালানো ঠিক হবে না’
গ্রামীণ ব্যাংক যেভাবে চলছে সেভাবেই এটিকে চলতে দেওয়া উচিত। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এ মত দিয়েছেন। তাঁরা গ্রামীণ ব্যাংকের অধ্যাদেশ সংশোধনীকে ‘কালো অধ্যাদেশ’ আখ্যা দিয়ে তা বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
গ্রামীণ ব্যাংক রক্ষা ও দুর্জন প্রতিরোধ কেন্দ্র ওই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক এখন যেভাবে চলছে সেভাবেই চলা উচিত। অন্য কোনোভাবে চালানো ঠিক হবে না। তিনি প্রশ্ন রাখেন, অবৈধ, অগণতান্ত্রিক উপায়ে কার স্বার্থে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ সংশোধন করা হয়েছে? কার স্বার্থে কোন উদ্দেশ্যে সরকার এ ব্যাংকটিকে নিজেদের দায়িত্বে নিতে চাইছে? সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, দুর্নীতি যেভাবে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে চলে গেছে, সেখানে গ্রামীণ ব্যাংকে কোনো দুর্নীতির ছোঁয়া লাগেনি। তাই তিনি বিশেষায়িত এই ব্যাংকটিকে তাদের নিজেদের মতো করে চলতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান আখ্যা দিয়ে এমাজউদ্দীন বলেন, অপুষ্টি ও দারিদ্র্যে জর্জরিত এ দেশকে তিনি বিশ্বের কাছে নোবেল বিজয়ীর দেশ হিসেবে পরিচিত করেছেন। গ্রামীণ ব্যাংকই বিশ্বের একমাত্র ব্যাংক, যেটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে এখন দুটি প্রধান সমস্যা—একটি হলো পদ্মা সেতু, অন্যটি গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ। এই অধ্যাদেশটি রাষ্ট্রপতি সই করার আগে সংসদে এটি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রোজিনা বেগম প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি একজন নারী যিনি দেশ পরিচালনা করছেন। এটি আমাদের জন্য গর্বের। আমরা নারীরা ব্যাংক পরিচালনা করছি, এটি নিয়ে আপনারও গর্ব হওয়া উচিত। কিন্তু আপনি আমাদের ক্ষমতা খর্ব করছেন, এতে আমরা দুঃখ পাচ্ছি।’
নিজেদের ক্ষমতা পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়ে ব্যাংকটির বর্তমান পরিচালকদের একজন তাহমিনা বেগম বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে তাঁদের অভাব অনটন দূর হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে তাঁর দুই সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে।
ভাষাসৈনিক রফিক উল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, কবি আবদুল হাই শিকদার, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নাসিমা বেগম, সালেহা বেগম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
No comments