যা নিয়ে আছি

অধ্যাপক মহাম্মদ দানীউল হক, ভাষাবিজ্ঞানী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ে বাংলা ভাষায় রচিত তাঁর বই ভাষাবিজ্ঞানের কথা, ভাষাবিজ্ঞানের সুক্ষ্মতর প্রসঙ্গ, বাংলা ভাষা সাহিত্যে উল্লেখ্য এসব বই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত।


তার পরও পড়েছি
উপন্যাস পড়ার খুব বেশি সময় হয় না, আমার বিষয় অর্থাৎ ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন বই-পুস্তক ও জার্নাল পড়তে পড়তেই সময় যায়। তবু এসবের মধ্যেই পুরোনো কিছু উপন্যাস আবার পড়ছি, পথের পাঁচালী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৌকাডুবী, কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুক্ষুধা, শওকত আলীর প্রদোষে প্রাকৃতজন এগুলো।

ভাটিয়ালি গান
গান আমার খুব প্রিয়। প্রায়ই গান শুনি। নজরুলের সুরপ্রধান গান সবচেয়ে ভালো লাগে। এ ছাড়া রবীন্দ্রসংগীত ও ভাটিয়ালি গান ভালো লাগে। আব্বাসউদ্দিন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, ফেরদৌসী রহমান—তাঁদের গান আনন্দ ও সন্তোষের উৎস।

ভালো মানের ছবি আর হয় না
আমাদের সময়কার চিত্রপরিচালক খান আতাউর রহমান, জহির রাহয়ান—তাঁদের বেশ কিছু ভালো ছবি খুব মনে পড়ে। বাংলা সিনেমার মধ্যে দ্বীপ জ্বেলে যাই, কাচের দেয়াল ও সারেং বউ-এর মতো ভালো মানের ছবি তো আজকাল আর হয় না। ইংরেজি সিনেমার মধ্যে যৌবনকালে বেশ টেনেছিল দ্য ট্রেন সিনেমাটা। ইউরোপের যুদ্ধের সময় একটি ট্রেনে করে বেশ কিছু দুর্লভ পেইন্টিংস নিয়ে যাচ্ছিল দখলদার বাহিনী, সেই ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছিল এটি। এ ছাড়া ট্র্যাপ নামক ছবিটা (অলিভার রিড ও টুর্সিংগাম অভিনীত) বেশ ভালো লেগেছিল। আমেরিকানদের নির্মিত ওয়ার অ্যান্ড পিস, তারাস বুলবা—এ রকম সিনেমাও ভালো লেগেছিল।

নাটক ও নাট্যগুরু
নাটকের প্রতি আমার আগ্রহ বরাবরই। ছাত্রাবস্থায় রেডিও ও মঞ্চনাটকের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম ভীষণভাবে অভিনয় করেছি, নির্দেশনা দিয়েছি। আমার শিক্ষক মমতাজউদ্দীন আহমদ আমার নাট্যগুরু। স্বাধীনতার সংগ্রাম নামক ইতিহাস সৃষ্টিকারী নাটকটির চেয়ে সফল নাটক চট্টগ্রামে হয়নি। আমার অভিনীত সবচেয়ে প্রিয় নাটক এটি। এটি রচনা ও পরিচালনা করেছিলেন মমতাজ স্যার। এ ছাড়া আ ন ম বজলুর রশীদের রচিত উত্তর ফাল্গুনী, মমতাজউদ্দীন আহমদের হঠাৎ নবাব, আলাউদ্দিন আল আজাদের মরক্কোর জাদুকর—এসব আমার অভিনয়-খ্যাতি-প্রদায়ী নাটক। কলকাতায় দেখা পাগলা ঘোড়া নাটকের কথা খুব মনে পড়ে।

চট্টগ্রামে বারবার যেতে চাই
বাংলাদেশের দুটো জায়গায় আমি বারবার যেতে চাই। একটা হলো চট্টগ্রাম—এখানে আমার জীবনের প্রায় অর্ধেকটা সময় কেটেছে। আরেকটি জায়গা খুবই মনোরম এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর; সেটা বান্দরবান। হাওয়াইতে আমি পড়ালেখা করেছি। ভারতের হায়দরাবাদ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, কাশ্মীরের কিছু অংশ, যেটা পাকিস্তানে পড়েছে, এসব জায়গা ঘুরতে বেশ ভালো লেগেছে।

ইতিবাচক পরিবর্তন হবে
বাংলাদেশে নতুন প্রজন্মের বেশ কিছু ছেলেমেয়ে আছে, যারা মেধাবী এবং তারা নিজেদের কাজের প্রতি একাগ্র। এই প্রজন্ম যখন রাষ্ট্রের সর্বস্তরে যাবে, তখন এ দেশে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
সাক্ষাৎকার: মেহেদী হাসান

No comments

Powered by Blogger.