নেটবুক ল্যাপটপ না ট্যাবলেট! by আহমেদ হাসান
দ্রুত বদলে যাচ্ছে। কিছুদিন আগেও নোটবুক বা ল্যাপটপকে মনে করা হতো দ্বিতীয় কম্পিউটার। টেবিলে ডেস্কটপ নেই, অথচ হাতে নোটবুক আছে, এটা খুব একটা দেখা যেত না। কিন্তু এখন অনেকেই শুধু ল্যাপটপ দিয়েই কাজ করেন। একটা পুরো অফিস যে ল্যাপটপ কম্পিউটার দিয়ে চলতে পারে, এটাও আগে ভাবা যেত না।
কিন্তু বাংলাদেশে অনেক অফিস আছে, যেগুলো এখন শুধু ল্যাপটপ দিয়ে চলছে। সেটা পাঁচজনের দৌড়ঝাঁপ কাজের অফিস হোক, কী হাজারেরও বেশি ‘ফর্মাল’ কর্মীর করপোরেট অফিস হোক। এমনকি অনেক ডেটা এন্ট্রি-জাতীয় অফিস, যাদের কি-বোর্ডের বোতাম চাপাই হলো সারা দিনের কাজ, সেখানেও পুরোটা ল্যাপটপ দিয়ে চলছে। তারা ল্যাপটপের সঙ্গে আলাদা কি-বোর্ড, মাউস লাগিয়ে নিচ্ছে, কিছুদিন পর পর দরকারে এগুলো আবার বদলে নিচ্ছে। কি-বোর্ড, মাউস তো এখন বেশ সস্তা।
ভেবে দেখুন, অফিসে আগে ৭০-৮০টা ডেস্কটপ চলত, সেগুলোর সঙ্গে থাকত মনিটর, ইউপিএস ও তারের জঞ্জাল। যখন এই ডেস্কটপগুলো সরিয়ে সবার টেবিলে ছোট ছোট নোটবুক এল, তখন পরিবেশটা কতই না স্বস্তির হতে পারে!
নোটবুক মানেই ওয়াই-ফাই থাকবে, তাই ইন্টারনেট বা নেটওয়ার্কের জন্য তার এড়িয়ে চলা যায়। কিন্তু অফিসটা যদি হয় বিশেষ ধরনের কাজের জন্য, যেমন গ্রাফিকস, অডিও, ভিডিও সম্পাদনা বা ম্যাপিং—তবে এসবের জন্য ডেস্কটপে যেতে হতে পারে। কারণ, তখন বিশেষ ধরনের কার্ড বা মনিটর লাগতে পারে। প্রসেসরের গতিটাও একটা বড় বিষয়। ডেস্কটপ এসব বিশেষ ধরনের কাজের জন্য অনেক বেশি কার্যকর।
অফিসে যা-ই থাকুক, আপনার হাতে বা বাসায় কি আছে? কিছুদিন আগেও হাতে একটা ল্যাপটপ ছাড়া অন্য কিছু ছিল না। কিন্তু এখন নোটপ্যাড সে জায়গাটা নিয়ে নিচ্ছে। দখলের এই প্রক্রিয়া হচ্ছে খুবই দ্রুত। অনেকে বলেন, নোটবুক বা নোটপ্যাড মানুষের লাইফস্টাইল বদলে দিয়েছে, তা মনে হয় না। নোটবুক ও নোটপ্যাড যারা বের করেছে, তারা আসলে মানুষকে বদলায়নি, মানুষের নিজস্ব প্রবণতাগুলো আবিষ্কার করে করে এই যন্ত্রগুলোতে নিয়ে এসেছে।
এই তো গত বুধবার আমি বাসায় গুগলের একটা প্রোগ্রামে কাজ শেষ করে যখন কম্পিউটার থেকে বেরিয়ে আসছি, তখন বার্তা দেখাচ্ছে—তুমি তো এখন মোবাইলে থাকবে, তাই না? ওটা অ্যান্ড্রয়েড যন্ত্র হলে এখানে ক্লিক করো। ঠিক তা-ই করলাম। আমার হাতের গ্যালাক্সি নোট দিয়ে অফিস পর্যন্ত সেই প্রোগ্রামে কাজ করলাম।
যে যেখানেই কাজ করি না কেন, ইন্টারনেটের সঙ্গে বিশেষ সখ্য থাকতেই হবে। বাসায় নেট, হাতের ট্যাবলেটে মুঠোফোনের নেট আর অফিসে গেলে নেট তো আছেই। আপনি এখন যে যন্ত্রে যে কাজই করছেন, কাজের সংরক্ষণটা কিন্তু সেই ইন্টারনেটই। কারণ, আপনার কাজটাকে শেয়ার করতে হতেই পারে। নেটে অনেকেরই অনেক সেবা আছে, তবে গুগলের সেবাগুলো হলো সমন্বিত সেবা।যখন কোনো সভায় যাবেন, কোনো উপস্থাপনা থাকবে, তখন অ্যাপলের আইপ্যাডের তুলনা নেই। ছবি ও শব্দ দুর্দান্ত, আবার বাংলা আসে ঝকঝকে। গ্যালাক্সি প্যাডে বাংলা সমস্যা রয়েই গেছে।
আইপ্যাড কোনটা—১৬ নাকি ৩২ গিগাবাইট? এটা কোনো বড় ব্যাপার নয়। বেশির ভাগ কাজ এমন জায়গায় রাখা হচ্ছে, যেখান থেকে অনেকেই ভাগাভাগি করে নিতে পারে।
তবু গ্যালাক্সির কথা কেন বলছি? সেটা হলো সর্বজনীন সুবিধার জন্য—এখানে বিশেষ ফরম্যাট বা আইটিউনসের বাধ্যবাধকতা নেই। কাজের নেটওয়ার্ক হিসেবে গুগল-টক এখন একটা বিশাল জায়গা নিয়ে নিয়েছে। অনেক অফিস এটার অংশ হয়ে গেছে। তাই অনেকের জন্য কাজের যন্ত্রটা এখন অ্যান্ড্রয়েড-চালিত না হলে আর হবে না। তাই গ্যালাক্সি রাখতেই হয়।
আপনি যখন বাইরে, তখন হাতে গ্যালাক্সি বা আইপ্যাড আছে। কিন্তু ব্যাগে নিশ্চয় নোটবুক আছেই। অনেকে ভাবেন, নোটপ্যাড বুঝি নোটবুকের স্থান নিয়ে নেবে। তা কিন্তু নয়। কম্পিউটারে কাজ করার পুরো তৃপ্তি বা প্রাপ্তি নোটপ্যাড দিতে পারে না, তার জন্য আপনার নোটবুক লাগবেই। প্যাড আপনার নোটবুক বা ডেস্কটপের সহযোগী হতে পারে মাত্র।
কোন নোটবুক আপনার লাগবে—এটা নির্ভর করবে কোন সুবিধা বা বৈশিষ্ট্যকে আপনি গুরুত্ব দিচ্ছেন, তার ওপর। প্রসেসর কোনটা, কত বেশি সময় একটানা চলছে, মনিটর বড়, নাকি তথ্য ধারণক্ষমতা বেশি—এগুলো বাজেটের সঙ্গে মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তবে নেটবুক দিয়ে নোটবুকের কিছুটা স্বাদ নেওয়া যেতে পারে। যাঁদের কাজের মানেই হলো ই-মেইল, ফেসবুক আর কিছু লেখালেখি, তাঁদের জন্য নেটবুক কম্পিউটারই ভালো। এটা হালকা, আকারে ছোট, দামেও কম। দেখতেও দারুণ!
আর যদি আপনি প্রথম কম্পিউটার কিনতে চান, তবে কী করবেন?
যদি বিশেষ কোনো কারণ না থাকে, তবে প্রথমটা হওয়া উচিত ডেস্কটপ। একটা নির্দিষ্ট স্থানে কম্পিউটারটা থাকবে, সামনে বড় মনিটর। ছোট-বড় যে-ই ব্যবহার করুক, এটা হবে ভিন্ন এক অনুভূতি। গেম খেলার জন্য যদি চান, তার জন্য বক্সটাকে আরও উপযোগী করতে পারবেন। তবে ইউপিএস কিন্তু লাগবেই। নইলে আপনার কাজ মাঝেমধ্যে লোডশেডিংয়ের অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। কিন্তু এই ইউপিএস আবার আপনাকে অবিরত কম্পিউটার ব্যবহার করতে কোনো সাহায্য করবে না।
কম্পিউটারের বাধাহীন ব্যবহারের জন্য একমাত্র ল্যাপটপ বা নোটবুক কম্পিউটারই আপনার জন্য খুব বিশ্বস্ত হতে পারে।
আহমেদ হাসান: তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা
ভেবে দেখুন, অফিসে আগে ৭০-৮০টা ডেস্কটপ চলত, সেগুলোর সঙ্গে থাকত মনিটর, ইউপিএস ও তারের জঞ্জাল। যখন এই ডেস্কটপগুলো সরিয়ে সবার টেবিলে ছোট ছোট নোটবুক এল, তখন পরিবেশটা কতই না স্বস্তির হতে পারে!
নোটবুক মানেই ওয়াই-ফাই থাকবে, তাই ইন্টারনেট বা নেটওয়ার্কের জন্য তার এড়িয়ে চলা যায়। কিন্তু অফিসটা যদি হয় বিশেষ ধরনের কাজের জন্য, যেমন গ্রাফিকস, অডিও, ভিডিও সম্পাদনা বা ম্যাপিং—তবে এসবের জন্য ডেস্কটপে যেতে হতে পারে। কারণ, তখন বিশেষ ধরনের কার্ড বা মনিটর লাগতে পারে। প্রসেসরের গতিটাও একটা বড় বিষয়। ডেস্কটপ এসব বিশেষ ধরনের কাজের জন্য অনেক বেশি কার্যকর।
অফিসে যা-ই থাকুক, আপনার হাতে বা বাসায় কি আছে? কিছুদিন আগেও হাতে একটা ল্যাপটপ ছাড়া অন্য কিছু ছিল না। কিন্তু এখন নোটপ্যাড সে জায়গাটা নিয়ে নিচ্ছে। দখলের এই প্রক্রিয়া হচ্ছে খুবই দ্রুত। অনেকে বলেন, নোটবুক বা নোটপ্যাড মানুষের লাইফস্টাইল বদলে দিয়েছে, তা মনে হয় না। নোটবুক ও নোটপ্যাড যারা বের করেছে, তারা আসলে মানুষকে বদলায়নি, মানুষের নিজস্ব প্রবণতাগুলো আবিষ্কার করে করে এই যন্ত্রগুলোতে নিয়ে এসেছে।
এই তো গত বুধবার আমি বাসায় গুগলের একটা প্রোগ্রামে কাজ শেষ করে যখন কম্পিউটার থেকে বেরিয়ে আসছি, তখন বার্তা দেখাচ্ছে—তুমি তো এখন মোবাইলে থাকবে, তাই না? ওটা অ্যান্ড্রয়েড যন্ত্র হলে এখানে ক্লিক করো। ঠিক তা-ই করলাম। আমার হাতের গ্যালাক্সি নোট দিয়ে অফিস পর্যন্ত সেই প্রোগ্রামে কাজ করলাম।
যে যেখানেই কাজ করি না কেন, ইন্টারনেটের সঙ্গে বিশেষ সখ্য থাকতেই হবে। বাসায় নেট, হাতের ট্যাবলেটে মুঠোফোনের নেট আর অফিসে গেলে নেট তো আছেই। আপনি এখন যে যন্ত্রে যে কাজই করছেন, কাজের সংরক্ষণটা কিন্তু সেই ইন্টারনেটই। কারণ, আপনার কাজটাকে শেয়ার করতে হতেই পারে। নেটে অনেকেরই অনেক সেবা আছে, তবে গুগলের সেবাগুলো হলো সমন্বিত সেবা।যখন কোনো সভায় যাবেন, কোনো উপস্থাপনা থাকবে, তখন অ্যাপলের আইপ্যাডের তুলনা নেই। ছবি ও শব্দ দুর্দান্ত, আবার বাংলা আসে ঝকঝকে। গ্যালাক্সি প্যাডে বাংলা সমস্যা রয়েই গেছে।
আইপ্যাড কোনটা—১৬ নাকি ৩২ গিগাবাইট? এটা কোনো বড় ব্যাপার নয়। বেশির ভাগ কাজ এমন জায়গায় রাখা হচ্ছে, যেখান থেকে অনেকেই ভাগাভাগি করে নিতে পারে।
তবু গ্যালাক্সির কথা কেন বলছি? সেটা হলো সর্বজনীন সুবিধার জন্য—এখানে বিশেষ ফরম্যাট বা আইটিউনসের বাধ্যবাধকতা নেই। কাজের নেটওয়ার্ক হিসেবে গুগল-টক এখন একটা বিশাল জায়গা নিয়ে নিয়েছে। অনেক অফিস এটার অংশ হয়ে গেছে। তাই অনেকের জন্য কাজের যন্ত্রটা এখন অ্যান্ড্রয়েড-চালিত না হলে আর হবে না। তাই গ্যালাক্সি রাখতেই হয়।
আপনি যখন বাইরে, তখন হাতে গ্যালাক্সি বা আইপ্যাড আছে। কিন্তু ব্যাগে নিশ্চয় নোটবুক আছেই। অনেকে ভাবেন, নোটপ্যাড বুঝি নোটবুকের স্থান নিয়ে নেবে। তা কিন্তু নয়। কম্পিউটারে কাজ করার পুরো তৃপ্তি বা প্রাপ্তি নোটপ্যাড দিতে পারে না, তার জন্য আপনার নোটবুক লাগবেই। প্যাড আপনার নোটবুক বা ডেস্কটপের সহযোগী হতে পারে মাত্র।
কোন নোটবুক আপনার লাগবে—এটা নির্ভর করবে কোন সুবিধা বা বৈশিষ্ট্যকে আপনি গুরুত্ব দিচ্ছেন, তার ওপর। প্রসেসর কোনটা, কত বেশি সময় একটানা চলছে, মনিটর বড়, নাকি তথ্য ধারণক্ষমতা বেশি—এগুলো বাজেটের সঙ্গে মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তবে নেটবুক দিয়ে নোটবুকের কিছুটা স্বাদ নেওয়া যেতে পারে। যাঁদের কাজের মানেই হলো ই-মেইল, ফেসবুক আর কিছু লেখালেখি, তাঁদের জন্য নেটবুক কম্পিউটারই ভালো। এটা হালকা, আকারে ছোট, দামেও কম। দেখতেও দারুণ!
আর যদি আপনি প্রথম কম্পিউটার কিনতে চান, তবে কী করবেন?
যদি বিশেষ কোনো কারণ না থাকে, তবে প্রথমটা হওয়া উচিত ডেস্কটপ। একটা নির্দিষ্ট স্থানে কম্পিউটারটা থাকবে, সামনে বড় মনিটর। ছোট-বড় যে-ই ব্যবহার করুক, এটা হবে ভিন্ন এক অনুভূতি। গেম খেলার জন্য যদি চান, তার জন্য বক্সটাকে আরও উপযোগী করতে পারবেন। তবে ইউপিএস কিন্তু লাগবেই। নইলে আপনার কাজ মাঝেমধ্যে লোডশেডিংয়ের অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। কিন্তু এই ইউপিএস আবার আপনাকে অবিরত কম্পিউটার ব্যবহার করতে কোনো সাহায্য করবে না।
কম্পিউটারের বাধাহীন ব্যবহারের জন্য একমাত্র ল্যাপটপ বা নোটবুক কম্পিউটারই আপনার জন্য খুব বিশ্বস্ত হতে পারে।
আহমেদ হাসান: তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা
No comments