হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশঃ প্রশ্নবিদ্ধ শাওন
দেশের জননন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এসব তথ্যে তার মৃত্যু জন্য হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সিদ্ধান্তহীনতা, অবহেলা আর অযত্নকে দায়ি করা হয়েছে।
নিউইয়র্কে হুমায়ুন আহমেদের চিকিৎসা সেবা, সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান এবং তাঁর চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে মিডিয়া, দায়িত্বপ্রাপ্ত কূটনৈতিক ও আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে কঠোরভাবে বিচ্ছিন্ন রাখার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহজনক প্রশ্ন উঠেছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত নতুন শতাব্দির সাপ্তাহিক ‘এখন সময়’।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এখন সময়-এর চলতি সংখ্যা ‘প্রশ্নের তীরে বিদ্ধ শাওন’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, হুমায়ুন আহমেদের অসুস্থতার সময়ে শাওনের পরিবারের কিছু কর্মকাণ্ডের সমালোচনার তীর্যক ঢেউ বইছে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে।
সে সঙ্গে হুমায়ুন আহমেদের চিকিৎসা এবং হাসপাতাল পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কিনা, এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বলে দাবি করেছে পত্রিকাটি।
এখন সময় লিখেছে, ‘২৯ জুন হুমায়ুন আহমেদকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করার পরেরদিন (৩০ জুন) শাওনের মা তহুরা আলী দু’নাতিকে নিয়ে লং আইল্যান্ডের একটি পার্কে বগুড়া জেলাবাসী আয়োজিত ভুলকাভাতে (বনভোজন) অংশ নেন। এদিন শাওন হাসপাতালে প্রায় ১০ ঘন্টা অনুপস্থিত ছিলেন। এক সময় হুমায়ুন আহমেদ জেগে উঠে শাওনকে খুঁজতে থাকেন। তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। এক সময় তাঁর সামনে বসা জামাল আবেদীন খোকা (সম্পর্কে বায়রা) কে একটা চিরকুট লিখে হুমায়ুন আহমেদ জানান যে, তিনি কথা বলতে পারছেন না।’
যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বহুল প্রচারিত এই সাপ্তাহিকটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৫ জুলাই নিউইয়র্কে শবেবরাত পালিত হয়। এদিন রাতে শাওনের ওজোপার্কের বাসায় আনন্দ ফূর্তির বিশেষ আসর জমে বলে জানা গেছে।
১৯ জুলাই হুমায়ুন আহমেদ মারা যাবার দিন শাওনের বাসায় কেউ কোরান পাঠ করেনি বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
হুমায়ুন আহমেদের লাশ গোসল করানো সময়ও ফিউনারেল হোমে লোকজন তেমন ছিল না। লাশ গোসল করান জামাল আবেদীন খোকা। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্থানীয একজন সাংবাদিক তাকে সহযোগিতা করেন।
হুমায়ুন আহমেদের লাশ দেশে পাঠাতে বিলম্ব হয় শাওনের বিজনেস ক্লাস এয়ারটিকেট দাবিপূরণের কারণে। এ সব নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী হিসাবে শাওনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে উল্লেখ করে পত্রিকাটি।
এখন সময়ে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়, বিশ্বখ্যাত ক্যান্সার হাসপাতাল নিউইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোয়ন কেটারিং সেন্টার হাসপাতালে ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। ১২টি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছিল তার শরীরে। এরপর চিকিৎসকেরা তার বৃহদান্ত্রে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই বিশেয়ায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল ছেড়ে অপারেশনের জন্য কেন সাধারণ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর সেই প্রশ্নও সামনে এসেছে।
বিশেয়ায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল ছেড়ে অপারেশনের জন্য হুমায়ূন আহমেদকে কেন সাধারণ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল এই প্রশ্নের জবাবে প্রথম দিকে তার চিকিৎসা তদরকিতে নিয়োজিত নিউইয়র্কের পুস্তুক বিক্রেতা ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মুক্তধারার কর্ণধার বিশ্বজিৎ সাহা জানান, অর্থ সাশ্রয়ের জন্য পরিবারের সদস্যরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
বিশ্বজিৎ সাহা আরও বলেন, মেমোরিয়াল স্লোয়ন কেটারিং সেন্টারে ক্যান্সারের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। এ ব্যাপারে বিশ্বজিৎ সাহা আর কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে বিশ্বজিৎ সাহার এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রবাসী বলেন, যতই ব্যয়বহুল হোক, চিকিৎসায় প্রয়োজনে তাঁর পরিবার দেশবাসীর কাছে সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারতো।
একটি সূত্র জানায়, হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসায় ত্রুটি ছিল, যা প্রথম অস্ত্রোপচারের ১০ দিনের মাথায় ধরা পড়ে। গত ১২ জুন বেলভ্যু হাসপাতালে প্রথম অস্ত্রোপচারের পর ১৯ জুন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। জরুরিভাবে তাকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন এখন সময়’কে বলেন, জ্যামাইকা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে হুমায়ূন আহমেদের অপারেশনে ত্রুটি আছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে হুমায়ূন আহমেদ মজা করে বলেছিলেন যে তিনি মামলা ঠুকে দেবেন। ড. মোমেন এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘জ্যামাইকা হাসপাতালে গেলে কেউ আর ফিরে আসেন না। আপনি তো ফিরে এসেছেন।’
হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় বার জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি এবং অপারেশন হওয়া প্রসঙ্গে একটি সূত্রের উদৃতি দিয়ে পত্রিকাটি জানিয়েছে, প্রথম অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে ফিরেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। কিন্তু ৭ দিন পর বাসার চেয়ার থেকে অসাবধনাবশতঃ পড়ে যান হুমায়ূন আহমেদ। এরপর প্রচ- ব্যাথা অনুভব করেন তিনি। জরুরিভাবে তাকে নেওয়া হয়েছিল জ্যামাইকা হাসপাতালে। কিন্তু অপারেশনে ত্রুটি আছে একথা বলে জ্যামাইকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরবর্তী চিকিৎসা না দিয়ে আগের হাসপাতালে স্থানান্তর করে।
অথচ চিকিৎসকের কাছে মেহের আফরোজ শাওন কখনো বলেননি তার স্বামী চেয়ার থেকে পড়ে গিয়েছিলেন এবং অপারেশনের ক্ষত স্থানে আঘাত পেয়েছিলেন। চিকিৎসকের কাছে কোনো কথা গোপন করতে নেই।
বেলভিউ হাসপাতালে অপারেশনের পর নিউইয়র্কের জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশন এবং কন্সুলেট থেকে নিয়মিত যোগাযোগ করা হত হাসপাতালে। স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেনসহ স্থায়ী মিশনের কেউ না কেউ প্রায় প্রতিদিনই হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসার খোঁজ নিতেন।
বিশেয়ায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল ছেড়ে অপারেশনের জন্য হুমায়ূন আহমেদকে কেন সাধারণ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল এ প্রশ্নের জবাবে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এ বিষয়টি একান্তই পরিবারের সিদ্ধান্তে হয়েছে। এ ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হলেও তিনি বলেন, মেমোরিয়াল স্লোয়ন কেটারিং সেন্টার ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য সর্বোত্তম ও বিশ্বখ্যাত। তার পরিচিত অনেক রোগী দীর্ঘদিন ধরে এখানে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ আছেন বলে জানান তিনি।
বেলভিউ হাসপাতালে দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচারের পর থেকে হুমাযূন আহমেদের চিকিৎসা নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করতে চাননি তার স্ত্রী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন এবং চিকিৎসা তদারকিতে নিয়োজিত অন্যপ্রকাশের কর্ণধার মাযহারুল ইসলাম।
হুমায়ূন আহমেদ যেদিন মারা যান এর কয়েকঘণ্টা আগে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তারা দাবি করেন যে হুমায়ূন আহমেদ ভালো আছেন এবং তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। এ সব কারণেও শাওন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন।
এছাড়াও জননন্দিত লেখক হুমায়ুন আহমেদ নুহাশ পল্লীকে কবরস্থান বানাতে নিষেধ করেছেন-এমন কথা ভিডিও ফুটেজে থাকলেও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী অভিনেত্রী এবং কণ্ঠশিল্পী মেহের আফরোজ শাওনরে বক্তব্য ছিল মৃত্যুর দুদিন আগে হুমায়ুন আহমেদ বলেছেন, তাঁকে (হুমায়ুন আহমেদকে) যেন নুহাশ পল্লীতে কবর দেয়া হয়।
এ নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের পরিবার (মা, ভাইবোন ও প্রথম স্ত্রীর সন্তান) এবং শাওনের পরিবারের মধ্যে শীতল লড়াইয়ের এক পর্যায়ে শাওনের সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন হয়।
আর এই ঘটনার মধ্য দিয়ে হুমায়ুন আহমেদের পরিবারের সঙ্গে শাওনের মত বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। হুমায়ুন-শাওনের অসম বিয়ে হুমায়ুনের পরিবারের কাছে সমর্থনযোগ্য ছিল না।
শাওন কেন হুমায়ুনের পরিবারের আকাঙ্খাকে উপেক্ষা করে নুহাশ পল্লীতে তাঁর শবদেহ সমাধি করলেন-এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলে দাবি করেছে পত্রিকাটি।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এখন সময়-এর চলতি সংখ্যা ‘প্রশ্নের তীরে বিদ্ধ শাওন’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, হুমায়ুন আহমেদের অসুস্থতার সময়ে শাওনের পরিবারের কিছু কর্মকাণ্ডের সমালোচনার তীর্যক ঢেউ বইছে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে।
সে সঙ্গে হুমায়ুন আহমেদের চিকিৎসা এবং হাসপাতাল পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কিনা, এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বলে দাবি করেছে পত্রিকাটি।
এখন সময় লিখেছে, ‘২৯ জুন হুমায়ুন আহমেদকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করার পরেরদিন (৩০ জুন) শাওনের মা তহুরা আলী দু’নাতিকে নিয়ে লং আইল্যান্ডের একটি পার্কে বগুড়া জেলাবাসী আয়োজিত ভুলকাভাতে (বনভোজন) অংশ নেন। এদিন শাওন হাসপাতালে প্রায় ১০ ঘন্টা অনুপস্থিত ছিলেন। এক সময় হুমায়ুন আহমেদ জেগে উঠে শাওনকে খুঁজতে থাকেন। তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। এক সময় তাঁর সামনে বসা জামাল আবেদীন খোকা (সম্পর্কে বায়রা) কে একটা চিরকুট লিখে হুমায়ুন আহমেদ জানান যে, তিনি কথা বলতে পারছেন না।’
যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বহুল প্রচারিত এই সাপ্তাহিকটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৫ জুলাই নিউইয়র্কে শবেবরাত পালিত হয়। এদিন রাতে শাওনের ওজোপার্কের বাসায় আনন্দ ফূর্তির বিশেষ আসর জমে বলে জানা গেছে।
১৯ জুলাই হুমায়ুন আহমেদ মারা যাবার দিন শাওনের বাসায় কেউ কোরান পাঠ করেনি বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
হুমায়ুন আহমেদের লাশ গোসল করানো সময়ও ফিউনারেল হোমে লোকজন তেমন ছিল না। লাশ গোসল করান জামাল আবেদীন খোকা। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্থানীয একজন সাংবাদিক তাকে সহযোগিতা করেন।
হুমায়ুন আহমেদের লাশ দেশে পাঠাতে বিলম্ব হয় শাওনের বিজনেস ক্লাস এয়ারটিকেট দাবিপূরণের কারণে। এ সব নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী হিসাবে শাওনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে উল্লেখ করে পত্রিকাটি।
এখন সময়ে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়, বিশ্বখ্যাত ক্যান্সার হাসপাতাল নিউইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোয়ন কেটারিং সেন্টার হাসপাতালে ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। ১২টি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছিল তার শরীরে। এরপর চিকিৎসকেরা তার বৃহদান্ত্রে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই বিশেয়ায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল ছেড়ে অপারেশনের জন্য কেন সাধারণ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর সেই প্রশ্নও সামনে এসেছে।
বিশেয়ায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল ছেড়ে অপারেশনের জন্য হুমায়ূন আহমেদকে কেন সাধারণ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল এই প্রশ্নের জবাবে প্রথম দিকে তার চিকিৎসা তদরকিতে নিয়োজিত নিউইয়র্কের পুস্তুক বিক্রেতা ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মুক্তধারার কর্ণধার বিশ্বজিৎ সাহা জানান, অর্থ সাশ্রয়ের জন্য পরিবারের সদস্যরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
বিশ্বজিৎ সাহা আরও বলেন, মেমোরিয়াল স্লোয়ন কেটারিং সেন্টারে ক্যান্সারের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। এ ব্যাপারে বিশ্বজিৎ সাহা আর কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে বিশ্বজিৎ সাহার এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রবাসী বলেন, যতই ব্যয়বহুল হোক, চিকিৎসায় প্রয়োজনে তাঁর পরিবার দেশবাসীর কাছে সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারতো।
একটি সূত্র জানায়, হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসায় ত্রুটি ছিল, যা প্রথম অস্ত্রোপচারের ১০ দিনের মাথায় ধরা পড়ে। গত ১২ জুন বেলভ্যু হাসপাতালে প্রথম অস্ত্রোপচারের পর ১৯ জুন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। জরুরিভাবে তাকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন এখন সময়’কে বলেন, জ্যামাইকা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে হুমায়ূন আহমেদের অপারেশনে ত্রুটি আছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে হুমায়ূন আহমেদ মজা করে বলেছিলেন যে তিনি মামলা ঠুকে দেবেন। ড. মোমেন এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘জ্যামাইকা হাসপাতালে গেলে কেউ আর ফিরে আসেন না। আপনি তো ফিরে এসেছেন।’
হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় বার জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি এবং অপারেশন হওয়া প্রসঙ্গে একটি সূত্রের উদৃতি দিয়ে পত্রিকাটি জানিয়েছে, প্রথম অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে ফিরেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। কিন্তু ৭ দিন পর বাসার চেয়ার থেকে অসাবধনাবশতঃ পড়ে যান হুমায়ূন আহমেদ। এরপর প্রচ- ব্যাথা অনুভব করেন তিনি। জরুরিভাবে তাকে নেওয়া হয়েছিল জ্যামাইকা হাসপাতালে। কিন্তু অপারেশনে ত্রুটি আছে একথা বলে জ্যামাইকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরবর্তী চিকিৎসা না দিয়ে আগের হাসপাতালে স্থানান্তর করে।
অথচ চিকিৎসকের কাছে মেহের আফরোজ শাওন কখনো বলেননি তার স্বামী চেয়ার থেকে পড়ে গিয়েছিলেন এবং অপারেশনের ক্ষত স্থানে আঘাত পেয়েছিলেন। চিকিৎসকের কাছে কোনো কথা গোপন করতে নেই।
বেলভিউ হাসপাতালে অপারেশনের পর নিউইয়র্কের জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশন এবং কন্সুলেট থেকে নিয়মিত যোগাযোগ করা হত হাসপাতালে। স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেনসহ স্থায়ী মিশনের কেউ না কেউ প্রায় প্রতিদিনই হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসার খোঁজ নিতেন।
বিশেয়ায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল ছেড়ে অপারেশনের জন্য হুমায়ূন আহমেদকে কেন সাধারণ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল এ প্রশ্নের জবাবে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এ বিষয়টি একান্তই পরিবারের সিদ্ধান্তে হয়েছে। এ ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হলেও তিনি বলেন, মেমোরিয়াল স্লোয়ন কেটারিং সেন্টার ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য সর্বোত্তম ও বিশ্বখ্যাত। তার পরিচিত অনেক রোগী দীর্ঘদিন ধরে এখানে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ আছেন বলে জানান তিনি।
বেলভিউ হাসপাতালে দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচারের পর থেকে হুমাযূন আহমেদের চিকিৎসা নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করতে চাননি তার স্ত্রী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন এবং চিকিৎসা তদারকিতে নিয়োজিত অন্যপ্রকাশের কর্ণধার মাযহারুল ইসলাম।
হুমায়ূন আহমেদ যেদিন মারা যান এর কয়েকঘণ্টা আগে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তারা দাবি করেন যে হুমায়ূন আহমেদ ভালো আছেন এবং তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। এ সব কারণেও শাওন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন।
এছাড়াও জননন্দিত লেখক হুমায়ুন আহমেদ নুহাশ পল্লীকে কবরস্থান বানাতে নিষেধ করেছেন-এমন কথা ভিডিও ফুটেজে থাকলেও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী অভিনেত্রী এবং কণ্ঠশিল্পী মেহের আফরোজ শাওনরে বক্তব্য ছিল মৃত্যুর দুদিন আগে হুমায়ুন আহমেদ বলেছেন, তাঁকে (হুমায়ুন আহমেদকে) যেন নুহাশ পল্লীতে কবর দেয়া হয়।
এ নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের পরিবার (মা, ভাইবোন ও প্রথম স্ত্রীর সন্তান) এবং শাওনের পরিবারের মধ্যে শীতল লড়াইয়ের এক পর্যায়ে শাওনের সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন হয়।
আর এই ঘটনার মধ্য দিয়ে হুমায়ুন আহমেদের পরিবারের সঙ্গে শাওনের মত বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। হুমায়ুন-শাওনের অসম বিয়ে হুমায়ুনের পরিবারের কাছে সমর্থনযোগ্য ছিল না।
শাওন কেন হুমায়ুনের পরিবারের আকাঙ্খাকে উপেক্ষা করে নুহাশ পল্লীতে তাঁর শবদেহ সমাধি করলেন-এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলে দাবি করেছে পত্রিকাটি।
No comments