রিকশা-চাঁদাবাজির আওতায় সবই!
কয়েক বছর আগেও ঢাকার রাস্তার আবশ্যিক অনুষঙ্গ ছিল রিকশা। অলিগলি তো বটেই, রাজপথেও রিকশা ছিল অন্যতম বাহন। কিন্তু রাস্তায় গাড়ির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে বড় রাস্তাগুলো থেকে রিকশা হারিয়ে গেছে। কিন্তু অলিগলি, ছোট রাস্তায় রিকশারই রাজত্ব। কাগজে-কলমে ৭০ হাজার হলেও প্রকৃত সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ।
হিসাবের বাইরের এই বিপুলসংখ্যক রিকশা যে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে তা নয়। এগুলোর হিসাবও আছে। বাহারি নামের নানা সংগঠন এ রিকশাগুলোকে রাস্তায় চলার অনুমতি দেয়। রীতিমতো সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতোই সেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা। অনুমোদন দেওয়ার কর্তৃত্ব যাদের থাকার কথা নয় তাদের অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় না। কারণ, অর্থযোগ। শুধু অনুমোদনের ক্ষেত্রেই নয়, রাস্তায় নামার পর রিকশাগুলোকে গুনতে হয় চাঁদা। ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মতে, রিকশাপ্রতি ১০ টাকা করে আদায় করা হলেও ১০ লাখ রিকশা থেকে দৈনিক এক কোটি টাকা যায় চাঁদাবাজদের পকেটে। প্রশ্ন হলো, চাঁদাবাজরা কি ১০ টাকা নিয়েই ক্ষান্ত হয়? হয়তো আরও বেশি টাকাই যায় তাদের হাতে। রিকশাঅলারা চাপে পড়েন, বাড়তি আদায় করেন যাত্রীদের কাছ থেকে। সম্প্রতি ঢাকা শহরে রিকশা ভাড়া যে হারে বেড়েছে তাকে স্বাভাবিক বলার উপায় নেই। শহরের কোনো রাস্তাতেই ভাড়া নির্ধারণের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই রিকশাচালকরা যখন যেমন পারছেন আদায় করছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া অনুপাতে কম নয়। রিকশা ভাড়ার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনা দরকার। ঢাকার রাস্তায় রিকশা জনপ্রিয় বাহন। রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন লাখ লাখ মানুষ। বাহনটি দূষণ ছড়ায় না, জ্বালানিও খরচ হয় না এতে। ফলে এর সুব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিলে সুফল মিলবে। এ জন্য শহরের রিকশাকে বৈধ অনুমোদন ও পরিসংখ্যানের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে এবং রিকশা ভাড়ার ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলাও দূর করতে হবে।
No comments