কবি কাজী রোজীর জবানবন্দি-মা-ভাইসহ কবি মেহেরুননেসাকে হত্যায় নেতৃত্ব দেন কাদের মোল্লা
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতা-বিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল মঙ্গলবার জবানবন্দি দিয়েছেন কবি কাজী রোজী। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, কবি মেহেরুননেসা, তাঁর মা ও দুই ভাইকে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে হত্যা করা হয় বলে তিনি শুনেছেন।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ কাজী রোজী এই জবানবন্দি দেন। তিনি এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী।
আসামির কাঠগড়ায় কাদের মোল্লার উপস্থিতিতে কাজী রোজী জবানবন্দিতে বলেন, তিনি কবিতা লেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেন। ১৯৭০ সালে তিনি মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশনের সি ব্লকে থাকতেন। কবি মেহেরুননেসা ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী, তিনি ডি ব্লকে থাকতেন। সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে মিরপুরে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের (জামায়াতের প্রতীক) প্রার্থী ছিলেন গোলাম আযম। ইসলামী ছাত্র সংঘের (জামায়াতের তৎকালীন ছাত্র সংগঠন) প্রধান সংগঠক ছিলেন কাদের মোল্লা। তাঁর নেতৃত্বে স্থানীয় অবাঙালিরা দাঁড়িপাল্লার পক্ষে কাজ করতেন। কবি মেহেরুননেসা ও তিনি প্রায় সব সময় একসঙ্গে থাকতেন। একাত্তরে মিরপুরে অবাঙালি বিহারিরা বাঙালিদের অপমানিত ও লাঞ্ছিত করত। এ থেকে রেহাই পেতে তাঁরা একটি অ্যাকশন কমিটি গঠন করেন। তিনি ওই কমিটির সভাপতি ও মেহেরুননেসা ছিলেন সদস্য। মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় এই কমিটি সভা করত, যাতে বাঙালিরা ভালো থাকতে পারে।
জবানবন্দিতে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী বলেন, একাত্তরের ২৫ মার্চ সকালে তাঁদের অ্যাকশন কমিটি সভা করে। ওই সভায় তিনি কিছু একটা ঘটার আভাস পান। সভা শেষে বাসায় গেলে খবর পান, তাঁর বাসা তল্লাশি করা হবে ও কবি মেহেরুননেসার বাসায়ও হাঙ্গামা হবে। কারণ, শুরু থেকে তাঁরা দুজন অ্যাকশন কমিটির নারী সদস্য ছিলেন। তিনি মেহেরুননেসাকে অন্য কোথাও চলে যেতে খবর পাঠান। কিন্তু মেহেরুননেসা ছোট ভাইকে তাঁর কাছে পাঠিয়ে জানতে চান, ‘মা ও দুই ভাইকে নিয়ে আমি কোথায় যাব?’ তিনি (সাক্ষী) মেহেরুননেসার ভাইকে বলেন, ‘তুমি মেহেরকে ও তোমার মাকে বোঝাও যে বাড়ি থেকে চলে যাওয়া প্রয়োজন।’ এরপর তাঁরা (সাক্ষী ও তাঁর পরিবার) মিরপুর থেকে চলে গেলেও মেহেরুননেসারা যাননি।
কাজী রোজী বলেন, ২৭ মার্চ বিকেলে তিনি শোনেন, ওই দিন বেলা ১১টার দিকে কাদের মোল্লা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মাথায় সাদা বা লালপট্টি বেঁধে মেহেরুননেসাদের বাসায় ঢোকেন। তাঁদের মারতে এসেছে দেখে মেহেরুননেসা পবিত্র কোরআন শরিফ বুকে চেপে বাঁচতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা মেহেরুননেসাসহ পরিবারের চারজনকে জবাই করে। তিনি বলেন, ‘মেহেরুননেসার জন্য আজ অবধি কষ্ট পাই। সে আমার প্রিয় বন্ধু ছিল, কিন্তু তাঁর জন্য কিছুই করতে পারিনি।’
রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী আরও বলেন, কাদের মোল্লার নেতৃত্বে সেদিন তারা (সহযোগীরা) মেহেরুননেসার বাসায় ঢোকে। তবে কাদের মোল্লা নিজে ওই বাসায় ঢুকেছিলেন কি না, তা তিনি বলতে পারবেন না। স্বাধীনতার পর তিনি গুলজার নামের এক অবাঙালি ও এক বিহারির কাছে শোনেন, মেহেরুননেসার মাথা কেটে চুল দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর শরীর তখন কাটা মুরগির মতো ছটফট করছিল। কাদের মোল্লার সহযোগীরা, অবাঙালি ও বিহারিরা ওই কাজ করেছিল।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি দেন কাজী রোজী। পরে তাঁকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক। কবি মেহেরুননেসাকে কবে থেকে চেনেন—এ প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, ১৯৬৭ সালে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়।
পরে আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেরা ২৬ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
আসামির কাঠগড়ায় কাদের মোল্লার উপস্থিতিতে কাজী রোজী জবানবন্দিতে বলেন, তিনি কবিতা লেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেন। ১৯৭০ সালে তিনি মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশনের সি ব্লকে থাকতেন। কবি মেহেরুননেসা ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী, তিনি ডি ব্লকে থাকতেন। সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে মিরপুরে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের (জামায়াতের প্রতীক) প্রার্থী ছিলেন গোলাম আযম। ইসলামী ছাত্র সংঘের (জামায়াতের তৎকালীন ছাত্র সংগঠন) প্রধান সংগঠক ছিলেন কাদের মোল্লা। তাঁর নেতৃত্বে স্থানীয় অবাঙালিরা দাঁড়িপাল্লার পক্ষে কাজ করতেন। কবি মেহেরুননেসা ও তিনি প্রায় সব সময় একসঙ্গে থাকতেন। একাত্তরে মিরপুরে অবাঙালি বিহারিরা বাঙালিদের অপমানিত ও লাঞ্ছিত করত। এ থেকে রেহাই পেতে তাঁরা একটি অ্যাকশন কমিটি গঠন করেন। তিনি ওই কমিটির সভাপতি ও মেহেরুননেসা ছিলেন সদস্য। মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় এই কমিটি সভা করত, যাতে বাঙালিরা ভালো থাকতে পারে।
জবানবন্দিতে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী বলেন, একাত্তরের ২৫ মার্চ সকালে তাঁদের অ্যাকশন কমিটি সভা করে। ওই সভায় তিনি কিছু একটা ঘটার আভাস পান। সভা শেষে বাসায় গেলে খবর পান, তাঁর বাসা তল্লাশি করা হবে ও কবি মেহেরুননেসার বাসায়ও হাঙ্গামা হবে। কারণ, শুরু থেকে তাঁরা দুজন অ্যাকশন কমিটির নারী সদস্য ছিলেন। তিনি মেহেরুননেসাকে অন্য কোথাও চলে যেতে খবর পাঠান। কিন্তু মেহেরুননেসা ছোট ভাইকে তাঁর কাছে পাঠিয়ে জানতে চান, ‘মা ও দুই ভাইকে নিয়ে আমি কোথায় যাব?’ তিনি (সাক্ষী) মেহেরুননেসার ভাইকে বলেন, ‘তুমি মেহেরকে ও তোমার মাকে বোঝাও যে বাড়ি থেকে চলে যাওয়া প্রয়োজন।’ এরপর তাঁরা (সাক্ষী ও তাঁর পরিবার) মিরপুর থেকে চলে গেলেও মেহেরুননেসারা যাননি।
কাজী রোজী বলেন, ২৭ মার্চ বিকেলে তিনি শোনেন, ওই দিন বেলা ১১টার দিকে কাদের মোল্লা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মাথায় সাদা বা লালপট্টি বেঁধে মেহেরুননেসাদের বাসায় ঢোকেন। তাঁদের মারতে এসেছে দেখে মেহেরুননেসা পবিত্র কোরআন শরিফ বুকে চেপে বাঁচতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা মেহেরুননেসাসহ পরিবারের চারজনকে জবাই করে। তিনি বলেন, ‘মেহেরুননেসার জন্য আজ অবধি কষ্ট পাই। সে আমার প্রিয় বন্ধু ছিল, কিন্তু তাঁর জন্য কিছুই করতে পারিনি।’
রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী আরও বলেন, কাদের মোল্লার নেতৃত্বে সেদিন তারা (সহযোগীরা) মেহেরুননেসার বাসায় ঢোকে। তবে কাদের মোল্লা নিজে ওই বাসায় ঢুকেছিলেন কি না, তা তিনি বলতে পারবেন না। স্বাধীনতার পর তিনি গুলজার নামের এক অবাঙালি ও এক বিহারির কাছে শোনেন, মেহেরুননেসার মাথা কেটে চুল দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর শরীর তখন কাটা মুরগির মতো ছটফট করছিল। কাদের মোল্লার সহযোগীরা, অবাঙালি ও বিহারিরা ওই কাজ করেছিল।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি দেন কাজী রোজী। পরে তাঁকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক। কবি মেহেরুননেসাকে কবে থেকে চেনেন—এ প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, ১৯৬৭ সালে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়।
পরে আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেরা ২৬ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
No comments