ভারত-বাংলাদেশ পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক-'চুক্তি বাস্তবায়িত না হলেই ভুল বোঝাবুঝি হবে'
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চুক্তিগুলো বাস্তবায়নে দেরি হলে এক ধরনের 'ভুল বোঝাবুঝি' তৈরি হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মিজারুল কায়েস। শুধু তা-ই নয়, দুই দেশের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে হওয়া চুক্তিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ভারতকে তাগিদ দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নতুন দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মিজারুল কায়েস সাংবাদিকদের বলেন, 'তিস্তা চুক্তিতে ভারত সদর্থক ভূমিকা নেবে বলে বৈঠকে আমাদের জানানো হয়েছে। আমরাও আশাবাদী, যেসব চুক্তি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেগুলো দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়িত হবে। সেগুলো দেরি হলে কিংবা না হলেই বরং দুই দেশের মধ্যে এক ধরনের ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ তৈরি হবে।'
তবে চুক্তিগুলো বাস্তবায়নে ভারতের ইতিবাচক মনোভাবের কথাও এদিন সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের দৃঢ়ভাবে জানানো হয় বলে নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের এ কূটনীতিক।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে পরামর্শক কমিটি গঠনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে বাংলাদেশের পরামর্শক কমিটির নাম প্রস্তাব করার কথা জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব। ভারত তাদের তরফে পরামর্শকদের নাম প্রস্তাব করবে। দুই দেশের পরামর্শক কমিটির মতামত অনুযায়ী টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ভারত কোনো আন্তর্জাতিক নদীর গতিপথ রুখতে চায় না। নিজেদের নদীগুলোর মধ্যেই তারা বিভিন্ন প্রকল্প করছে- এমনটাও বলছেন মিজারুল কায়েস।
অন্যদিকে ভারতের পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আকবর আলী খান সংবাদ সম্মেলনে সচিব পর্যায়ের বৈঠক 'ফলপ্রসূ' হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, 'দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিস্তা চুক্তি নিয়ে আমরা খুব দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব। সীমান্তহাটের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলেও ভারতের তরফ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়।'
এ ছাড়া সীমান্তে গুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা কামানোর জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর স্থানীয় সরকারকে কাজে লাগানো যায় কি না, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব ড. মিজারুল কায়েস ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব রঞ্জন মাথাইয়ের সভাপতিত্বে দুই দেশের সচিব পর্যায়ের এ বৈঠক একটি রুটিন বৈঠক। গত বছর জুন মাসে বাংলাদেশের সর্বশেষ পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
No comments