গাফিলতিতেই হুমায়ূনের মৃত্যু?
হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু নিয়ে নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। আর এসব প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম।
প্রশ্ন এখন সবার মুখে হুমায়ূন আহমেদ কি শুধু অর্থাভাবে স্লোয়ান মেমোরিয়াল ক্যাটারিং ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে পারেননি? তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন কেন? কেন তাকে বেলভ্যু হাসপাতালে ভর্তি করা হলো? বিশ্বখ্যাত স্লোয়ান ক্যান্সার হাসপাতাল কার নিদের্শে ছাড়া হলো? যেখানে কেমোথেরাপি নেওয়া হলো সেখানে তা অব্যাহত রাখা হলো না কেন? কেন অপারেশন করা হলো না ক্যান্সার চিকিৎসায় শত ভাগ নিশ্চয়তা প্রদানকারী সার্জনের মাধ্যমে? অর্থ সংকটের কথা কেন আগে জানানো হলো না? হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু এবং অন্যান্য খরচ নিয়ে শাওন ও মাজহারুল ইসলাম কেন মিথ্যার আশ্রয় নিলেন? কী তাদের স্বার্থ? ১২ জুন বেলভ্যু হাসপাতালে প্রথম অস্ত্রোপচারের আটদিন পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসার পর হুমায়ূন আহমেদকে কেন প্লাস্টিকের চেয়ারে বসানো হয়েছিল? সেই চেয়ার থেকে তিনি কীভাবে পড়ে গেলেন, প্রচণ্ড আঘাত পেলেন, সেলাই খুলে গেল এবং ইনফেকশন হলো? কার অবহেলা, উদাসীনতা ছিল? চেয়ার থেকে পড়ে যাবার একদিন পর কেন তাকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হলো? চেয়ার থেকে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তো প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিলেন? কেন তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া হলো না? তিনি চেয়ার থেকে পড়ে গিয়েছিলেন ২০ জুন কিন্তু তাকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হয় ২১ জুন, কিন্তু কেন? জ্যামাইকা হাসপাতালেই বা শাওন গেলেন না কেন? মাজহার কেন হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে ঐ হাসপাতালে গেলেন? অবস্থা বেগতিক দেখে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে হুমায়ূন আহমেদকে বেলভ্যু হাসপাতালে নেওয়া হয় কেন? হুমায়ূন আহমেদের চেয়ার থেকে পড়ার বিষয়টিও শাওন-মাজহার কেন লুকানোর চেষ্টা করেছেন?
হুমায়ূনের অবস্থা সম্পর্কে মিডিয়াকে যেভাবে প্রকৃত তথ্য দেননি শাওন ও মাজহারুল, ঠিক একইভাবে বাসায় চেয়ার থেকে পড়ে যাবার কথাও ডাক্তারের কাছে লুকানো হয়েছে। ডাক্তার পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ক্যান্সারে হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু হয়নি। তাহলে কীভাবে মৃত্যু হলো হুমায়ূন আহমেদের?
চারিদিকে এসব প্রশ্ন মানুষের মুখে মুখে কিন্তু কোনো উত্তর নেই।
অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন হুমায়ূনের মৃত্যু রহস্য বের করতে হলে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। উত্তর আমেরিকায় বাংলা ভাষার সর্বাধিক প্রচারিত ‘ঠিকানা’ পত্রিকায় (বুধবার বাজারে এসেছে) লিড স্টোরি হিসেবে প্রকাশিত সংবাদে এসব প্রশ্নের অবতারণা করা হয়েছে।
এর আগে প্রকাশিত আরেকটি বাংলা পত্রিকার তথ্যে বলা হয়েছে, ১২ জুন বেলভ্যু হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর সন্ধ্যায় একটি পার্টি করা হয়। সেখানে সব ধরনের গোশতসহ পানীয় ছিল। ক্যান্সার অপারেশন হওয়া একজন রোগীকে এসব পরিবেশন করা সঠিক হয়েছে কিনা সে প্রশ্ন প্রবাসীদের।
পত্রিকাটি আরও লিখেছে, চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আঘাত পেলেও তার স্ত্রী এবং মাজহারুল ইসলাম কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরদিন প্রচণ্ড ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠেন হুমায়ূন। অবস্থা বেগতিক দেখে শাওন ফোন করেন নিউইয়র্কের মুক্তধারার বিশ্বজিৎ সাহাকে। তার কাছ থেকে হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসকের নম্বর নেন। পত্রিকাটি উল্লেখ করেছে, ``বিস্ময়কর বিষয় হলো, শাওন ও মাজহারের কাছে জরুরি প্রয়োজনের জন্য ফোন নম্বরটিও ছিল না হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসকের।``
চিকিৎসা চলা অবস্থায় গত সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লেখকের ভাড়া করা বাসায় যান এবং চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের অফার দেন। কিন্তু লেখক তা নাকচ করেন। তার অর্থের অভাব নেই বলে। শেখ হাসিনা ১০ হাজার ডলারের একটি চেক দিয়েছিলেন জোর করে। সেটিও নাকি পরবর্তী সময়ে ফেরত দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন হুমায়ূন-পরিবারের ঘনিষ্ঠ প্রবাসী লেখক গাজী আবুল কাশেম। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেনও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন যে, অর্থ সংকটে হুমায়ূনের চিকিৎসা বিশ্ববিখ্যাত স্লোয়ান মেমোরিয়াল ক্যাটারিং হাসপাতালে অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়নি।
ঠিকানায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, ``এদিকে গত ১৭ জুলাই, মঙ্গলবার। ১৮ জুলাই ঠিকানা প্রকাশিত হবে। অফিসে পাঠকদের ফোন আসছিল। তারা জানতে চাচ্ছিলেন বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি, নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও জনপ্রিয় নাট্যকার, দুই বাংলার জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের শারীরিক অবস্থা কী? ঠিকানা অফিস থেকে বার বার ফোন করা হচ্ছিল হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে। তিনি ফোনের কোনো উত্তর দেননি।ঠিকানার এ রিপোর্টকে ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর সংবাদ বলে ঢাকার শীর্ষ সংবাদপত্র এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তারা বিবৃতি দেন। সেই বিবৃতিতে তারা বলেছেন, হুমায়ূন আহমেদের অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে, তবে সংকট এখনো কাটেনি। লাইফ সাপোর্ট দিয়ে যে তাকে রাখা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। কিন্তু বাস্তবে কী দেখা গেল। ঠিকানার রিপোর্টই সত্যি হলো।``
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেন হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু সম্পর্কে বলেন, ``আমরা যখন হাসপাতালে পৌঁছি তখন নিউইয়র্ক টাইম ১৯ জুলাই দুপুর ১২টা ১০ মিনিট। ভেন্টিলেশনে ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি ব্যথায় প্রচণ্ড কোঁকাচ্ছিলেন। ডা. মিলার ব্যথা কমানোর জন্য কড়া ডোজের ওষুধ দিয়েছেন কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। ডাক্তারকে খুব চিন্তিত দেখা গেল। বার বার দেহের রক্তচাপ পরীক্ষা করছিলেন। চোখ রাখছিলেন মনিটরের উপর। ডাক্তার বললেন, ‘রক্তচাপ ১২০/৭০ এর উপরে রাখাই হলো আসল চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি রক্তচাপ দ্রুত নেমে যাচ্ছে। ৬০ থেকে ৫০, ৫০ থেকে ৪০, ৪০ থেকে ৩০- এক সময় দেখলাম মনিটরের রক্তচাপের রেখাটি লম্বা একটানা রেখায় পরিণত হলো। আমরা বুঝলাম সব শেষ, আমাদের প্রিয় লেখক দেশের গর্ব আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। ড. মিলার বললেন, ‘সরি।’ ডাক্তার মৃত্যুর সময় লিখেছিলেন ১টা ২২ মিনিট।``
হুমায়ূনের অবস্থা সম্পর্কে মিডিয়াকে যেভাবে প্রকৃত তথ্য দেননি শাওন ও মাজহারুল, ঠিক একইভাবে বাসায় চেয়ার থেকে পড়ে যাবার কথাও ডাক্তারের কাছে লুকানো হয়েছে। ডাক্তার পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ক্যান্সারে হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু হয়নি। তাহলে কীভাবে মৃত্যু হলো হুমায়ূন আহমেদের?
চারিদিকে এসব প্রশ্ন মানুষের মুখে মুখে কিন্তু কোনো উত্তর নেই।
অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন হুমায়ূনের মৃত্যু রহস্য বের করতে হলে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। উত্তর আমেরিকায় বাংলা ভাষার সর্বাধিক প্রচারিত ‘ঠিকানা’ পত্রিকায় (বুধবার বাজারে এসেছে) লিড স্টোরি হিসেবে প্রকাশিত সংবাদে এসব প্রশ্নের অবতারণা করা হয়েছে।
এর আগে প্রকাশিত আরেকটি বাংলা পত্রিকার তথ্যে বলা হয়েছে, ১২ জুন বেলভ্যু হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর সন্ধ্যায় একটি পার্টি করা হয়। সেখানে সব ধরনের গোশতসহ পানীয় ছিল। ক্যান্সার অপারেশন হওয়া একজন রোগীকে এসব পরিবেশন করা সঠিক হয়েছে কিনা সে প্রশ্ন প্রবাসীদের।
পত্রিকাটি আরও লিখেছে, চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আঘাত পেলেও তার স্ত্রী এবং মাজহারুল ইসলাম কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরদিন প্রচণ্ড ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠেন হুমায়ূন। অবস্থা বেগতিক দেখে শাওন ফোন করেন নিউইয়র্কের মুক্তধারার বিশ্বজিৎ সাহাকে। তার কাছ থেকে হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসকের নম্বর নেন। পত্রিকাটি উল্লেখ করেছে, ``বিস্ময়কর বিষয় হলো, শাওন ও মাজহারের কাছে জরুরি প্রয়োজনের জন্য ফোন নম্বরটিও ছিল না হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসকের।``
চিকিৎসা চলা অবস্থায় গত সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লেখকের ভাড়া করা বাসায় যান এবং চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের অফার দেন। কিন্তু লেখক তা নাকচ করেন। তার অর্থের অভাব নেই বলে। শেখ হাসিনা ১০ হাজার ডলারের একটি চেক দিয়েছিলেন জোর করে। সেটিও নাকি পরবর্তী সময়ে ফেরত দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন হুমায়ূন-পরিবারের ঘনিষ্ঠ প্রবাসী লেখক গাজী আবুল কাশেম। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেনও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন যে, অর্থ সংকটে হুমায়ূনের চিকিৎসা বিশ্ববিখ্যাত স্লোয়ান মেমোরিয়াল ক্যাটারিং হাসপাতালে অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়নি।
ঠিকানায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, ``এদিকে গত ১৭ জুলাই, মঙ্গলবার। ১৮ জুলাই ঠিকানা প্রকাশিত হবে। অফিসে পাঠকদের ফোন আসছিল। তারা জানতে চাচ্ছিলেন বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি, নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও জনপ্রিয় নাট্যকার, দুই বাংলার জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের শারীরিক অবস্থা কী? ঠিকানা অফিস থেকে বার বার ফোন করা হচ্ছিল হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে। তিনি ফোনের কোনো উত্তর দেননি।ঠিকানার এ রিপোর্টকে ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর সংবাদ বলে ঢাকার শীর্ষ সংবাদপত্র এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তারা বিবৃতি দেন। সেই বিবৃতিতে তারা বলেছেন, হুমায়ূন আহমেদের অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে, তবে সংকট এখনো কাটেনি। লাইফ সাপোর্ট দিয়ে যে তাকে রাখা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। কিন্তু বাস্তবে কী দেখা গেল। ঠিকানার রিপোর্টই সত্যি হলো।``
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেন হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু সম্পর্কে বলেন, ``আমরা যখন হাসপাতালে পৌঁছি তখন নিউইয়র্ক টাইম ১৯ জুলাই দুপুর ১২টা ১০ মিনিট। ভেন্টিলেশনে ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি ব্যথায় প্রচণ্ড কোঁকাচ্ছিলেন। ডা. মিলার ব্যথা কমানোর জন্য কড়া ডোজের ওষুধ দিয়েছেন কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। ডাক্তারকে খুব চিন্তিত দেখা গেল। বার বার দেহের রক্তচাপ পরীক্ষা করছিলেন। চোখ রাখছিলেন মনিটরের উপর। ডাক্তার বললেন, ‘রক্তচাপ ১২০/৭০ এর উপরে রাখাই হলো আসল চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি রক্তচাপ দ্রুত নেমে যাচ্ছে। ৬০ থেকে ৫০, ৫০ থেকে ৪০, ৪০ থেকে ৩০- এক সময় দেখলাম মনিটরের রক্তচাপের রেখাটি লম্বা একটানা রেখায় পরিণত হলো। আমরা বুঝলাম সব শেষ, আমাদের প্রিয় লেখক দেশের গর্ব আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। ড. মিলার বললেন, ‘সরি।’ ডাক্তার মৃত্যুর সময় লিখেছিলেন ১টা ২২ মিনিট।``
No comments