সালাম :আমাদের স্বকীয়তা by মাওলানা শিব্বীর আহমদ
ইসলামপূর্ব যুগে আরবের লোকেরা পরস্পর দেখা-সাক্ষাতে বলত_ 'হাইয়াকাল্লাহ' বা আল্লাহ তোমাকে বাঁচিয়ে রাখুন কিংবা 'আনআমা সাবাহান' বা শুভ সকাল জাতীয় শব্দ। কোনো কোনো এলাকায় প্রচলন ছিল সম্মানিত ব্যক্তিদের মাথানত করে সম্মান জানানোর রীতি।
কিন্তু ইসলাম আমাদের দিয়েছে এক অভূতপূর্ব অভিবাদন রীতি, যেমনটি কোনো ধর্মে কিংবা কোনো দেশে প্রচলিত ছিল না। মানের বিচারেও তা অন্য সবকিছু থেকে শ্রেষ্ঠ। ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে_ দুই মুসলমান যখন একত্রে মিলিত হয় তখন যেন একে অন্যকে সালাম দেয় অর্থাৎ একজন বলবে, আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ_ তোমার ওপর শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক; অপরজন বলবে, ওয়াআলাইকুমুস সালামু ওয়ারাহমাতুল্লাহ_ তোমার ওপরও শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। এভাবে স্থানকালের বন্ধন থেকে মুক্ত করে একে অন্যের জন্য আল্লাহর রহমত ও শান্তির জন্য প্রার্থনা_ এর চেয়ে উত্তম শুভেচ্ছা আর কী হতে পারে! এ সালাম আমাদের অহংকার, আমাদের স্বকীয়তা।
হাদিস শরিফে এ সালামের অনেক ফজিলত ও গুরুত্বের কথা বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন মানুষ তাঁর দিকে ছুটে গেল। তারা বলাবলি করতে লাগল, রাসূলুল্লাহ (সা.) চলে এসেছেন। তাঁকে দেখার জন্য মানুষের ভিড়ের মাঝে আমিও গেলাম (বর্ণনাকারী সাহাবী তখনও মুসলমান হননি, বরং ইহুদি ছিলেন)। তিনি বলেন, আমি যখন তাঁর চেহারা দেখে তাঁকে চিনতে পারলাম, তখনি বুঝতে পারলাম যে এ চেহারা কোনো মিথ্যুকের চেহারা নয়। সেদিন আমি তাঁকে প্রথম যে কথাটি বলতে শুনেছি তা হলো_ হে মানুষেরা! তোমরা সালামের বিস্তার ঘটাও, অসহায়দের খাবার দাও, আত্মীয়তা সম্পর্ক রক্ষা করো এবং যখন অন্য মানুষ ঘুমিয়ে থাকে তখন নামাজ পড়ো, তাহলে তোমরা শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে যেতে পারবে। [তিরমিযী শরিফ, হাদিস নং ২৪৮৫]
হাদিসটির প্রেক্ষাপট ও উপস্থাপন আমাদের সামনে সালামের গুরুত্ব দিবালোকের মতো স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রিয় জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করে এসে মানুষদের প্রথম উপদেশ দিচ্ছেন_ তোমরা সালামের অধিক প্রচলন করো। ওই হাদিসে এরপর উলি্লখিত বিষয়গুলোও ইসলামের দৃষ্টিতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। অসহায়কে সহায়তা ও আহার দান করা, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখা, গভীর রাতে নামাজে মনোনিবেশ করা_ প্রত্যেকটির জন্যই কোরআন ও হাদিস শরিফে এসেছে নানাবিধ উপকারিতা, ফজিলত ও গুরুত্বের কথা। বিষয়গুলোতে যারা গুরুত্ব দেবে না তাদের জন্য কঠিন হুশিয়ারিও উচ্চারিত হয়েছে। এতসব সত্ত্বেও ওই হাদিসে সালামের কথা বলা হয়েছে সবার আগে।
আরেকটি হাদিস হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা ইমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর তোমাদের ইমান ততক্ষণ পূর্ণ হবে না, যতক্ষণ না তোমরা একে অন্যকে ভালোবাস। আমি কি তোমাদের এমন একটি আমলের কথা বলব, যখন তোমরা তা করবে, তখন একে অন্যকে ভালোবাসবে। তোমরা তোমাদের মাঝে সালামের প্রচলন ঘটাও। [মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ২০৩]
আমরা আমাদের বাস্তব জীবনেও এ সত্যটি উপলব্ধি করি_ যাদের মাঝে অধিক পরিমাণে পরস্পর সালাম বিনিময় হয়, তাদের মধ্যকার সম্প্রীতি-ভালোবাসাও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। গড়ে ওঠে এক চমৎকার অন্তরঙ্গতা। পারস্পরিক ঘৃণা-বিদ্বেষ থেকে থাকলে তাও দূর হতে থাকে। অপরিচিত কেউও কাউকে যখন সালাম দেয়, তখনও এক অপার্থিব শান্তি ও নিরাপত্তা অনুভূত হয়। তাই যদি পুরো সমাজে এ সালাম ব্যাপকতা লাভ করতে পারে, তাহলে পুরো সমাজটিই হয়ে উঠতে পারে এক নিরাপদ শান্তিময় ও আদর্শ সমাজ।
হাদিস শরিফে এ সালামের অনেক ফজিলত ও গুরুত্বের কথা বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন মানুষ তাঁর দিকে ছুটে গেল। তারা বলাবলি করতে লাগল, রাসূলুল্লাহ (সা.) চলে এসেছেন। তাঁকে দেখার জন্য মানুষের ভিড়ের মাঝে আমিও গেলাম (বর্ণনাকারী সাহাবী তখনও মুসলমান হননি, বরং ইহুদি ছিলেন)। তিনি বলেন, আমি যখন তাঁর চেহারা দেখে তাঁকে চিনতে পারলাম, তখনি বুঝতে পারলাম যে এ চেহারা কোনো মিথ্যুকের চেহারা নয়। সেদিন আমি তাঁকে প্রথম যে কথাটি বলতে শুনেছি তা হলো_ হে মানুষেরা! তোমরা সালামের বিস্তার ঘটাও, অসহায়দের খাবার দাও, আত্মীয়তা সম্পর্ক রক্ষা করো এবং যখন অন্য মানুষ ঘুমিয়ে থাকে তখন নামাজ পড়ো, তাহলে তোমরা শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে যেতে পারবে। [তিরমিযী শরিফ, হাদিস নং ২৪৮৫]
হাদিসটির প্রেক্ষাপট ও উপস্থাপন আমাদের সামনে সালামের গুরুত্ব দিবালোকের মতো স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রিয় জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করে এসে মানুষদের প্রথম উপদেশ দিচ্ছেন_ তোমরা সালামের অধিক প্রচলন করো। ওই হাদিসে এরপর উলি্লখিত বিষয়গুলোও ইসলামের দৃষ্টিতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। অসহায়কে সহায়তা ও আহার দান করা, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখা, গভীর রাতে নামাজে মনোনিবেশ করা_ প্রত্যেকটির জন্যই কোরআন ও হাদিস শরিফে এসেছে নানাবিধ উপকারিতা, ফজিলত ও গুরুত্বের কথা। বিষয়গুলোতে যারা গুরুত্ব দেবে না তাদের জন্য কঠিন হুশিয়ারিও উচ্চারিত হয়েছে। এতসব সত্ত্বেও ওই হাদিসে সালামের কথা বলা হয়েছে সবার আগে।
আরেকটি হাদিস হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা ইমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর তোমাদের ইমান ততক্ষণ পূর্ণ হবে না, যতক্ষণ না তোমরা একে অন্যকে ভালোবাস। আমি কি তোমাদের এমন একটি আমলের কথা বলব, যখন তোমরা তা করবে, তখন একে অন্যকে ভালোবাসবে। তোমরা তোমাদের মাঝে সালামের প্রচলন ঘটাও। [মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ২০৩]
আমরা আমাদের বাস্তব জীবনেও এ সত্যটি উপলব্ধি করি_ যাদের মাঝে অধিক পরিমাণে পরস্পর সালাম বিনিময় হয়, তাদের মধ্যকার সম্প্রীতি-ভালোবাসাও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। গড়ে ওঠে এক চমৎকার অন্তরঙ্গতা। পারস্পরিক ঘৃণা-বিদ্বেষ থেকে থাকলে তাও দূর হতে থাকে। অপরিচিত কেউও কাউকে যখন সালাম দেয়, তখনও এক অপার্থিব শান্তি ও নিরাপত্তা অনুভূত হয়। তাই যদি পুরো সমাজে এ সালাম ব্যাপকতা লাভ করতে পারে, তাহলে পুরো সমাজটিই হয়ে উঠতে পারে এক নিরাপদ শান্তিময় ও আদর্শ সমাজ।
No comments