চট্টগ্রাম বন্দরকে সচল রাখতে হবে-দুর্নীতিবাজদের পদায়ন

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে যত অভিযোগই আনা হোক না কেন, সে সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় যে গতিশীলতা এসেছিল তা সবাই স্বীকার করবেন। শুধু তা-ই নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বন্দরে শ্রমিক সংগঠনগুলোর দৌরাত্ম্যও অনেকাংশে কমে গিয়েছিল।


আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও। বলার অপেক্ষা রাখে না, জনগণ এর সুফলও পেয়েছিল। গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে বন্দর ব্যবস্থাপনা অধিকতর দক্ষ, গতিশীল ও দুর্নীতিমুক্ত হবে সেটাই প্রত্যাশিত ছিল।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাস্তবে তা হয়নি। কেন হয়নি সে প্রশ্নের উত্তর বন্দরের কর্তাব্যক্তিরাই ভালো দিতে পারবেন। বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত চারজন কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ চার কর্মকর্তাই দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে তিনজন সত্য ও জবাবদিহিতা (ট্রুথ) কমিশনের কাছে দুর্নীতির দায় স্বীকার করে জরিমানাও দিয়েছিলেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়া এবং তাঁদের কাজকর্ম নজরদারি করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছে। কিন্তু তারা সেসবে আমল না দিয়ে উল্লিখিত কর্মকর্তাদের বেছে বেছে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছে। কেবল তা-ই নয়, সরকারি খরচে তাঁদের বিদেশভ্রমণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে খোঁড়া যুক্তি দেখিয়েছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। মন্ত্রণালয়ের চিঠি সম্পর্কে তিনি বলেছেন, সবাইকে দিয়ে সব কাজ হয় না। এর মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কি বোঝাতে চাইছেন উল্লিখিত চারজন ছাড়া সেখানে আর কোনো যোগ্য কর্মকর্তা নেই?
অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দিয়ে বন্দরকে যেমন গতিশীল করা যাবে না, তেমনি বন্দর ব্যবহারকারীদের স্বার্থও রক্ষিত হবে না। অতএব গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো থেকে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সরিয়ে সত্ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের পদায়ন করা জরুরি। এর পাশাপাশি বন্দরে শ্রমিক সংগঠনগুলো যাতে দাবি-দাওয়া আদায়ের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়েও কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.