রসকীয়র বদলে শতকীয়-চাইলেও শতবার পড়তে পারবেন না
‘একবার না পারিলে দেখ শতবার’—কবি তো এ কথা একবার বলেই অফলাইনে চলে গেছেন। কিন্তু রহস্যময় এই দুনিয়ায় এমন অনেক কিছুই আছে, যা চাইলেও শতবার দেখা সম্ভব নয়। সেগুলোর কথা তিনি বেমালুম ভুলে বসে আছেন। যেমন, বিটিভির সংবাদ।
এই জিনিস কেউ একবার দেখতে ব্যর্থ হলে তাকে আর কোনোভাবেই তা শতবার দেখানো সম্ভব নয়। কিংবা হ্যালির ধূমকেতু—এটাই বা শতবার দেখে কী করে? ধূমকেতু তো পত্রিকার হকার নয় যে রোজ সকালে এসে দরজার নিচ দিয়ে পত্রিকা দিয়ে যাবে! হ্যালির ধূমকেতুর ভাবই আলাদা। ৭৫ বছর পরপর তিনি দেখা দেন। কদিন আগে হয়ে গেল বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ। ব্যস্ততার কারণে দেখতে পারেননি বলে ভাবছেন, কবি-থিওরি অনুযায়ী শতবার দেখে পুষিয়ে দেবেন? ভুল ভেবেছেন! ২০৬৪ সালের আগে এই জিনিস আর দেখা যাবে না। কবি-থিওরি এখানেও খুব একটা সুবিধা করতে পারল না। কবির উচিত ছিল, শতবার দেখার ব্যাপারটা নিয়ে আরেকটু চিন্তাভাবনা করা। দেশটার যে কী হবে, কবিরাও ঠিকমতো চিন্তা করেন না। শুধু কবি কেন? কেউই তো করে না। এই যে ক্রিকেটে কোনো ব্যাটসম্যান ১০০ রান করলেই সবাই কত খুশি হয়, প্রশংসা-তালি-পুরস্কার দিয়ে একেবারে তুলকালাম কাণ্ড! কিন্তু স্কুলে কারও রোল নম্বর ১০০ হলে কেউ প্রশংসা তো করেই না, বরং সব সময় ঝাড়িপট্টির ওপরে রাখে। তবে পরীক্ষায় এক শতে এক শ পেলে সবার মনে বয়ে যায় আনন্দের বন্যা, শুরু হয় মিষ্টি বিতরণ। কিন্তু সব বিষয় মিলিয়ে যদি মোট নম্বর ১০০ হয়, তাহলে আর কোনো কথা নেই। কৃতী ছাত্রের পিঠের ওপর চলবে বেতের বাড়ি, কিল-চড়-ঘুষি বিতরণ। কিন্তু এটা কি ঠিক? সব সেঞ্চুরিকে সমান মর্যাদা দিতে হবে। এই যে আজকে রস+আলোর সেঞ্চুরি হলো, এর জন্যও সবার করতালি দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো উচিত। রস+আলোর ১০০টা সংখ্যা সহ্য করা একেবারে সহজ কোনো ব্যাপার নয়। এর জন্য ব্যাপক পরিশ্রম ও ধৈর্যের প্রয়োজন। বাঙালি জাতি যে কতটা ধৈর্যশীল, তা আবারও প্রমাণিত হলো। কিন্তু টেস্ট ম্যাচে গিয়ে এই ধৈর্য কোথায় যায়, কে জানে! যাই হোক, ১০০ সংখ্যা পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের (লেখক, পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ী) অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি, আপনাদের বাংলা টিস্যুর চাহিদা মেটাতে রস+আলো আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে, যত দূর গেলে আর ফেরার পথ থাকবে না।
No comments