নির্মাণব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে-পদ্মা সেতু
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বর্তমান মহাজোট সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ ও কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এ বছরই পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু ও ২০১৩ সালের মধ্যে শেষ করার কথা ঘোষণা করেছেন। এই সেতু দক্ষিণবঙ্গের মানুষের যেমন দীর্ঘদিনের চাওয়া, তেমনি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিবেচনায়ও খুবই জরুরি।
এই সেতু তৈরি হলে দেশের যোগাযোগ ও অবকাঠামোর ক্ষেত্রে এক বড় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে। সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ এখনো চলছে। এ অবস্থায় এর সম্ভাব্য নির্মাণব্যয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে যে হিসাব তুলে ধরা হয়েছে, তাতে বিভ্রান্তির সুযোগ রয়েছে। পদ্মা সেতুর দ্রুত নির্মাণ, এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখা ও জনমনে এ নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন উঠতে না পারে, সে জন্য কিছু উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছি।
প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী এই সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় ২০০৯ সালেই চারবার পরিবর্তন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, ভূতাত্ত্বিক জরিপ, মাটি পরীক্ষা বা এ ধরনের মৌলিক কাজগুলো শেষ না করে এবং সেতুর নকশা একেবারে চূড়ান্ত না হওয়ার আগে সেতু নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় নিয়ে একেকবার একেক হিসাব না দেওয়াই ভালো। কারণ, প্রাথমিক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পরই সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করা সম্ভব। এক বছরে চারবার সম্ভাব্য ব্যয় পরিবর্তন করায় ও খরচ আগের তুলনায় ৮০ কোটি ডলার বা প্রায় পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বেড়ে যাওয়ায় জনমনে এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
এ ছাড়া এখন যে নির্মাণব্যয়ের কথা বলা হচ্ছে ২৬০ কোটি ডলার বা ১৭ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা, সেটাও বিভিন্ন বিবেচনায় অস্বাভাবিক। আন্তর্জাতিকভাবে গত এক দশকে যেসব সেতু নির্মিত হয়েছে, তার কোনোটিতেই এত অর্থ খরচ হয়নি। এগুলোর মধ্যে পদ্মা সেতুর চেয়ে দীর্ঘ সেতুও রয়েছে। বাংলাদেশের মাটি ও নদীর প্রকৃতি, নদী শাসন বা পুনর্বাসন—এসব বিষয়ের বাস্তবতা হয়তো অন্য দেশের তুলনায় ভিন্ন, কিন্তু এর পরও বর্তমান বিশ্ববাজার বিবেচনায় নিয়ে পদ্মা সেতুর মতো একটি সেতু নির্মাণে কত খরচ হতে পারে, এর একটি ধারণা পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে যে সম্ভাব্য ব্যয়ের কথা বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে এটা সংগতিপূর্ণ কি না, তা অবশ্যই বিবেচনা করে দেখতে হবে।
দ্রুততার সঙ্গে এই সেতু নির্মিত হোক—এটা আমাদের সবার চাওয়া। কিন্তু এই সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশকে যে পরিমাণ ঋণ করতে হবে, তা সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। খরচ কমানো ও অর্থের অপচয় রোধ করার বিষয়টি তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীনে ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণে যেখানে ব্যয় হয়েছে ১৭০ কোটি ডলার, সেখানে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতু নির্মাণে কেন ২৬০ কোটি ডলার খরচ হবে—এই প্রশ্নের একটি যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা সেতু নির্মাণে স্বচ্ছতার স্বার্থে দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার করা জরুরি।
অতীতে বিভিন্ন বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়, সম্পদের অপচয়, অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো অভিযোগ যেন না উঠতে পারে, সে জন্য আগাম সতর্কতা নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। এ ব্যাপারে আমরা সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব ও নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী এই সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় ২০০৯ সালেই চারবার পরিবর্তন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, ভূতাত্ত্বিক জরিপ, মাটি পরীক্ষা বা এ ধরনের মৌলিক কাজগুলো শেষ না করে এবং সেতুর নকশা একেবারে চূড়ান্ত না হওয়ার আগে সেতু নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় নিয়ে একেকবার একেক হিসাব না দেওয়াই ভালো। কারণ, প্রাথমিক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পরই সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করা সম্ভব। এক বছরে চারবার সম্ভাব্য ব্যয় পরিবর্তন করায় ও খরচ আগের তুলনায় ৮০ কোটি ডলার বা প্রায় পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বেড়ে যাওয়ায় জনমনে এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
এ ছাড়া এখন যে নির্মাণব্যয়ের কথা বলা হচ্ছে ২৬০ কোটি ডলার বা ১৭ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা, সেটাও বিভিন্ন বিবেচনায় অস্বাভাবিক। আন্তর্জাতিকভাবে গত এক দশকে যেসব সেতু নির্মিত হয়েছে, তার কোনোটিতেই এত অর্থ খরচ হয়নি। এগুলোর মধ্যে পদ্মা সেতুর চেয়ে দীর্ঘ সেতুও রয়েছে। বাংলাদেশের মাটি ও নদীর প্রকৃতি, নদী শাসন বা পুনর্বাসন—এসব বিষয়ের বাস্তবতা হয়তো অন্য দেশের তুলনায় ভিন্ন, কিন্তু এর পরও বর্তমান বিশ্ববাজার বিবেচনায় নিয়ে পদ্মা সেতুর মতো একটি সেতু নির্মাণে কত খরচ হতে পারে, এর একটি ধারণা পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে যে সম্ভাব্য ব্যয়ের কথা বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে এটা সংগতিপূর্ণ কি না, তা অবশ্যই বিবেচনা করে দেখতে হবে।
দ্রুততার সঙ্গে এই সেতু নির্মিত হোক—এটা আমাদের সবার চাওয়া। কিন্তু এই সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশকে যে পরিমাণ ঋণ করতে হবে, তা সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। খরচ কমানো ও অর্থের অপচয় রোধ করার বিষয়টি তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীনে ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণে যেখানে ব্যয় হয়েছে ১৭০ কোটি ডলার, সেখানে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতু নির্মাণে কেন ২৬০ কোটি ডলার খরচ হবে—এই প্রশ্নের একটি যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা সেতু নির্মাণে স্বচ্ছতার স্বার্থে দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার করা জরুরি।
অতীতে বিভিন্ন বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়, সম্পদের অপচয়, অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো অভিযোগ যেন না উঠতে পারে, সে জন্য আগাম সতর্কতা নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। এ ব্যাপারে আমরা সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব ও নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
No comments