শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চায় বাংলাদেশ by আবুল কাশেম
২০০০ সালের ২০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন বিল ক্লিনটন। ওই সময় তার সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের সুবিধা চেয়েছিলেন বর্তমান ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাতে কোনো কাজ হয়নি। অবশ্য ক্লিনটন এ ব্যাপারে কোনো প্রতিশ্রুতিও দেননি।
পোশাক শিল্প মালিকরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এ সুবিধা পেতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লবিষ্ঠ নিয়োগ করেও সফল হননি। এক যুগ পর ক্লিনটনের স্ত্রী হিলারি ক্লিনটন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আজ বাংলাদেশ সফরে আসছেন। তাঁর সফরের পাঁচ দিন আগে ৩০ এপ্রিল হবিগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনার সামনে আবারও একই দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ বাংলাদেশের এ সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি যে বিলে আছে, সেই নিউ পার্টনারশিপ ফর ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্ট (এনপিটিডিএ)-২০০৯ এখনো পাসের কোনো উদ্যোগ নেয়নি দেশটি। বরং মার্কিন কংগ্রেসে ওঠা ওই বিলটিই তামাদি হয়ে গেছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস বা জিএসপির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্বল্পোন্নত বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত পণ্য রপ্তানির সুযোগ দিয়েছে। উন্নয়নশীল ভারতও বাংলাদেশের পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে এ সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। অথচ আফ্রিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র এ সুবিধা দিচ্ছে। ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকদের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে বছরে যে পরিমাণ ঋণ ও অনুদান দেয়, তার চেয়ে বেশি নেয় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক আদায় করে। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে যে পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় সেখানে শুল্ক বসিয়েই দেশটি বছরে আদায় করে নিচ্ছে ৬০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন পেতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির প্রতিনিধিসহ সরকার ও পোশাক শিল্প মালিকরা মার্কিন কংগ্রেসম্যান জিম ম্যাকডরমেট, সিনেটর গ্রেসলি, কটন কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনালের কার্যকরী প্রেসিডেন্ট, সিনেট ফিন্যান্স কমিটি ও ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির সিনিয়র স্টাফস, ইউএসটিআর কর্মকর্তা, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শ্রম সংগঠন দ্য আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার অ্যান্ড কংগ্রেস অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্গানাইজেশনস (এএফএল-সিআইও) নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জোরালো যুক্তি তুলে ধরা হয়। তাতেও কোনো ফল আসেনি।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, কংগ্রেসে পরপর তিনটি বিল ওঠে। সর্বশেষ বিলটি ওঠার পর গত দুই বছরে কোনো কিছু না হওয়ায় সর্বশেষ বিলটিও তামাদি হয়ে গেছে। তাই মার্কিন কংগ্রেসে এখন এ বিষয়ে আর কোনো বিল নেই। তিনি বলেন, যেহেতু হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরে আসছেন। তাই সরকারের সামনে সুযোগ রয়েছে যাতে বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত সুবিধা দিতে আবারও এ ধরনের একটি বিল কংগ্রেসে উত্থাপন করার ক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা রাখেন। ড. মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন ফোরাম অ্যাগ্রিমেন্ট (টিকফা) চুক্তি হওয়ার পথে। তাই সরকার এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করে নেওয়ার বিষয়টিও জোরালোভাবে হিলারির কাছে তুলে ধরতে পারে। তিনি বলেন, একসঙ্গে দেশের সব পণ্যের ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া গেলেও যাতে অর্ধেক পণ্যের ক্ষেত্রে অথবা সব পণ্যের শুল্কহার কমানো যায় সে বিষয়ে অনুরোধ করা যেতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরই বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজারের পরিমাণ প্রায় চার বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৯০ শতাংশই তৈরি পোশাক। এসব পোশাকের ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধাও প্রযোজ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকগুলোর বেশির ভাগেরই ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিয়ে ঢুকতে হচ্ছে। অন্যান্য পণ্যে ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ যত পণ্য রপ্তানি করে তার ৯৪ শতাংশের ওপর শুল্ক বহাল রয়েছে। বাকি ছয় শতাংশ রপ্তানি পণ্যের কিছু জিএসপি সুবিধার আওতায় রপ্তানি হচ্ছে। বাকি পণ্যের ওপর শূন্য শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক দিয়েছে ৫৯০ মিলিয়ন ডলারের মতো। বাংলাদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে এই বিপুল পরিমাণ শুল্ক প্রত্যাহার হলে দেশটির বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অনেক বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেলে এখন রপ্তানি হচ্ছে না এমন পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এনপিটিডিএ বিলে বাংলাদেশ সুবিধা পেলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আফ্রিকার দেশগুলোর রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোনো নীতিনির্ধারকের মধ্যে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার আটটি পণ্যের ওপর কোটা ব্যবস্থা রয়েছে। তামাদি হয়ে যাওয়া এনপিটিডিএ বিল অনুযায়ী ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করেছে, প্রথমবার তার মাত্র ৫০ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। এটি বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। অন্যদিকে আফ্রিকার দেশগুলোর ৯০ শতাংশ রপ্তানি পণ্যই এর আওতায় পড়ে। তাই বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলে আফ্রিকার দেশগুলোর ক্ষতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেলে আফ্রিকার বদলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের রপ্তানি বাণিজ্য সংকুচিত হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। চীন তার রপ্তানি পণ্যের ৩৭ শতাংশই বিক্রি করছে যুক্তরাষ্ট্রে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৪৮৭ কোটি ডলার। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি ব্যয় ১১৪ কোটি ডলার। আর চলতি ২০১২ সালের প্রথম দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি ৯২ কোটি ডলার। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি ব্যয় হয়েছে সাত কোটি ডলার।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস বা জিএসপির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্বল্পোন্নত বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত পণ্য রপ্তানির সুযোগ দিয়েছে। উন্নয়নশীল ভারতও বাংলাদেশের পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে এ সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। অথচ আফ্রিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র এ সুবিধা দিচ্ছে। ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকদের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে বছরে যে পরিমাণ ঋণ ও অনুদান দেয়, তার চেয়ে বেশি নেয় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক আদায় করে। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে যে পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় সেখানে শুল্ক বসিয়েই দেশটি বছরে আদায় করে নিচ্ছে ৬০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন পেতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির প্রতিনিধিসহ সরকার ও পোশাক শিল্প মালিকরা মার্কিন কংগ্রেসম্যান জিম ম্যাকডরমেট, সিনেটর গ্রেসলি, কটন কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনালের কার্যকরী প্রেসিডেন্ট, সিনেট ফিন্যান্স কমিটি ও ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির সিনিয়র স্টাফস, ইউএসটিআর কর্মকর্তা, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শ্রম সংগঠন দ্য আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার অ্যান্ড কংগ্রেস অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্গানাইজেশনস (এএফএল-সিআইও) নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জোরালো যুক্তি তুলে ধরা হয়। তাতেও কোনো ফল আসেনি।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, কংগ্রেসে পরপর তিনটি বিল ওঠে। সর্বশেষ বিলটি ওঠার পর গত দুই বছরে কোনো কিছু না হওয়ায় সর্বশেষ বিলটিও তামাদি হয়ে গেছে। তাই মার্কিন কংগ্রেসে এখন এ বিষয়ে আর কোনো বিল নেই। তিনি বলেন, যেহেতু হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরে আসছেন। তাই সরকারের সামনে সুযোগ রয়েছে যাতে বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত সুবিধা দিতে আবারও এ ধরনের একটি বিল কংগ্রেসে উত্থাপন করার ক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা রাখেন। ড. মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন ফোরাম অ্যাগ্রিমেন্ট (টিকফা) চুক্তি হওয়ার পথে। তাই সরকার এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করে নেওয়ার বিষয়টিও জোরালোভাবে হিলারির কাছে তুলে ধরতে পারে। তিনি বলেন, একসঙ্গে দেশের সব পণ্যের ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া গেলেও যাতে অর্ধেক পণ্যের ক্ষেত্রে অথবা সব পণ্যের শুল্কহার কমানো যায় সে বিষয়ে অনুরোধ করা যেতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরই বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজারের পরিমাণ প্রায় চার বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৯০ শতাংশই তৈরি পোশাক। এসব পোশাকের ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধাও প্রযোজ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকগুলোর বেশির ভাগেরই ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিয়ে ঢুকতে হচ্ছে। অন্যান্য পণ্যে ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ যত পণ্য রপ্তানি করে তার ৯৪ শতাংশের ওপর শুল্ক বহাল রয়েছে। বাকি ছয় শতাংশ রপ্তানি পণ্যের কিছু জিএসপি সুবিধার আওতায় রপ্তানি হচ্ছে। বাকি পণ্যের ওপর শূন্য শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক দিয়েছে ৫৯০ মিলিয়ন ডলারের মতো। বাংলাদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে এই বিপুল পরিমাণ শুল্ক প্রত্যাহার হলে দেশটির বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অনেক বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেলে এখন রপ্তানি হচ্ছে না এমন পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এনপিটিডিএ বিলে বাংলাদেশ সুবিধা পেলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আফ্রিকার দেশগুলোর রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোনো নীতিনির্ধারকের মধ্যে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার আটটি পণ্যের ওপর কোটা ব্যবস্থা রয়েছে। তামাদি হয়ে যাওয়া এনপিটিডিএ বিল অনুযায়ী ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করেছে, প্রথমবার তার মাত্র ৫০ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। এটি বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। অন্যদিকে আফ্রিকার দেশগুলোর ৯০ শতাংশ রপ্তানি পণ্যই এর আওতায় পড়ে। তাই বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলে আফ্রিকার দেশগুলোর ক্ষতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেলে আফ্রিকার বদলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের রপ্তানি বাণিজ্য সংকুচিত হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। চীন তার রপ্তানি পণ্যের ৩৭ শতাংশই বিক্রি করছে যুক্তরাষ্ট্রে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৪৮৭ কোটি ডলার। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি ব্যয় ১১৪ কোটি ডলার। আর চলতি ২০১২ সালের প্রথম দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি ৯২ কোটি ডলার। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি ব্যয় হয়েছে সাত কোটি ডলার।
No comments