সাদাকালো-ওসামা হত্যাকাণ্ড ও তার প্রতিক্রিয়া by আহমদ রফিক

ওসামা বিন লাদেন। ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠন 'আল-কায়েদা'র প্রতিষ্ঠাতা। ওয়াশিংটনের একদা মিত্র, পরবর্তী সময়ের শত্রু ওসামার উত্থান ও পতন ওই ওয়াশিংটনের হাতেই। উত্থানের নেপথ্যে পাকিস্তান। পাকিস্তানের জন্ম হিংসার রক্তস্রোতে, হয়তো তাই অবাক হওয়ার নয় যে জন্মলগ্ন থেকেই আধিপত্যবাদী পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার গাঁটছড়া বাঁধা,


মার্কিন স্বার্থের সব চুক্তির সে সদস্য। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা এবং এখানে ইসলামী জঙ্গিবাদের উত্থান দেখে মনে হয়, বাংলাদেশ কি তার পাকিস্তানি অতীত ও রাজনীতির ঐতিহ্য পুরোপুরি মুছে ফেলতে পারেনি?
শুরুটা আফগানিস্তানে সোভিয়েত সেনার উপস্থিতি সরিয়ে সেখানে তাদের সমর্থক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র তার মূল পরিকল্পনায় ইঙ্গ-মার্কিন পরাশক্তি, সঙ্গে চীন। আর এ কাজে আফগানিস্তান-সংলগ্ন পাকিস্তানকে সর্বাংশে ব্যবহার_অর্থ, অস্ত্র, প্রশিক্ষণ সরবরাহের মূল হোতা ওয়াশিংটন। পাকিস্তানি মাদ্রাসাছাত্র ও অন্য অনেকে হয়ে ওঠে অস্ত্রধারী তালেবান। রাব্বানি, হেকমতিয়ার থেকে একাধিক ইসলামী রাজনৈতিক সংগঠনের সাহায্য সেই সঙ্গে যুদ্ধবাজ উজবেক নেতা, সবাই জোট বাঁধে কাবুল থেকে মার্কসবাদী সরকারের পতন ঘটাতে। আর তখনই মোল্লা ওমর ও ধনকুবের ওসামা বিন লাদেনের রণাঙ্গনে আবির্ভাব। ওসামার অর্থে, বুদ্ধিতে গড়ে ওঠে জঙ্গিবাদী সংগঠন আল-কায়েদা। যথারীতি আফগানিস্তান দখলের কাজ সম্পন্ন, তালেবানি রাজত্ব কায়েম। কিন্তু সমস্যা বাধে মধ্যপ্রাচ্য ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমবিরোধী ও ইহুদি তোষণনীতির কারণে। বিশেষ করে ফিলিস্তিন এলাকা ও লেবাননে ইহুদি আগ্রাসনের নগ্ন সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি ওসামা বিন লাদেনের পক্ষে। মিত্র হয়ে ওঠে শত্রু। এখানেই ওসামার সঙ্গে রাব্বানি-হেকমতিয়ারদের সঙ্গে নীতিগত পার্থক্য। শেষোক্তদের এমনকি মোল্লা ওমরেরও একমাত্র লক্ষ্য ছিল ক্ষমতা দখল।
ওসামাকে বুঝতে অতি সংক্ষিপ্ত এ প্রেক্ষাপটের তাৎপর্য বুঝতে হবে। ওসামা নীতিগতভাবে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের কতটা সমর্থক, তা নিয়েও প্রশ্ন ও জটিলতা রয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি সংঘটিত অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিকার ছিল ওসামার মূল লক্ষ্য। সরাসরি যুদ্ধে পরাজিত করা যাবে না, তাই পরোক্ষ-আঘাত সন্ত্রাসী তৎপরতার মাধ্যমে। কিন্তু এ পদ্ধতি যে সঠিক নয়, তা তত্ত্বগতভাবে এবং নিজের প্রাণ দিয়ে ওসামাকে প্রমাণ করতে হলো।
এ সত্য কখনোই অস্বীকার করা যাবে না যে আফগান ঘটনাবলি ইঙ্গ-মার্কিন রাজনীতির হাত ধরে বিশ্বে বিশেষ ধরনের ইসলামী জঙ্গিবাদের উত্থান ও বিস্তার ঘটিয়েছে। বিশ্ব রাজনীতির চরিত্র পাল্টে দিয়েছে, তাতে নতুনমাত্রা যোগ করেছে। সে মাত্রা পারস্পরিক হিংসা ও হিংস্রতার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশের অন্যায় ইরাক অভিযান ওসামার সহিংস নীতির ভিত যুক্তিগ্রাহ্য করে তুলেছে। করেছে গাজা এলাকায় বছরের পর বছর ইসরায়েলি অভিযান এবং সেই সঙ্গে শান্তিচুক্তির বাস্তবায়নে অস্বীকৃতি_আর এসব কিছুতেই অন্ধ মার্কিন সমর্থন, সেখানে শ্বেতাঙ্গ বুশ বা কৃষ্ণাঙ্গ ওবামার মধ্যে কোনো ফারাক নেই।
নৈতিকতার যুক্তিসংগত বিচারে যুক্তিবাদী মানুষ মাত্রের বোঝা উচিত যে টুইন টাওয়ার ধসের অমানবিক ঘটনার মতো বিষয়াদির দায় ওসামা ও তার স্রষ্টা উভয়ের। কেন জানি এ সত্যটা অনেকে মানতে চান না। সবাই সামনের সত্যটাই দেখেন, পেছনের সত্যটাকে এড়িয়ে যান, বুঝতে চান না। আফগান ঘটনাবলির পরিণাম ও প্রতিক্রিয়া এবং মার্কিন আধিপত্যবাদী বিদেশনীতির গুরুত্ব ও তাৎপর্য ভেবে দেখলে অস্বীকার করা যাবে না যে এ জন্যই বিশ্বে সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদের উত্থান, যা অবিশ্বাস্য প্রক্রিয়ায় বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশে নেতিবাচক রাজনৈতিক-সামাজিক প্রভাব ফেলেছে।
আশ্চর্য যে বাংলাদেশেরও রাজনীতি ও সমাজে এর প্রভাব পড়েছে, সেক্যুলার গণতন্ত্রী দেশটিতে ধর্মীয় রাজনীতির উত্থান ঘটেছে। সমাজে ধর্মীয় রক্ষণশীলতার মাত্রা বেড়েছে। বোরকা-হিজাব থেকে ইসলামিয়ানার প্রকাশ অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়েছে_২০ বছর আগেকার পরিস্থিতির ঠিক বিপরীত। এমনকি এসব সামাজিক রক্ষণশীলতার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তিতর্কও শোনা যায়, যা আগে দেখা যায়নি। এ নতুন দ্বন্দ্বের সহসা অবসান ঘটবে বলে মনে হয় না।
ইতিমধ্যে দিন কয়েক আগে মার্কিন বিশেষ কমান্ডো বাহিনীর ঝটিকা অভিযানে অ্যাবোটাবাদে পাকিস্তানি মিলিটারি একাডেমীর কাছেই একটি বাড়িতে বসবাসরত ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু। এ ঘটনা অনেক বিস্ময়, প্রশ্ন ও জটিলতার জন্ম দিয়েছে। বিস্ময়ের তুলনায় প্রশ্ন অনেক বেশি। বহু প্রচারিত অভিযোগ নতুন করে উঠেছে, পাকিস্তানি সহায়তায় এমন সুরক্ষিত স্থানে ওসামার বসবাস কিভাবে সম্ভব হলো?
আর সে সন্দেহের বশেই ওসামা হত্যার মার্কিনি পরিকল্পনা এবং অভিযান সম্পর্কে পাকিস্তানি শাসকদের অন্ধকারে রেখে কাজ হাসিল করেছে মার্কিন বাহিনী। স্বভাবতই প্রশ্ন : একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে বিদেশি বাহিনী কিভাবে স্থানীয় শাসকদের অগোচরে ব্যক্তিবিশেষকে হত্যার অভিযান চালাতে পারে, হোক না সে বিদেশি শক্তির কাছে 'মোস্ট ওয়ান্টেড'। যে রাষ্ট্র নীতিগতভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার-মানবাধিকারের কথা বলে, সে রাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী স্থানীয় শাসকদের অগোচরে বিনা অনুমতিতে একটি হত্যাকাণ্ড চালাতে পারে বা চালানোর অধিকার রাখে?
প্রশ্নটা পাকিস্তানে উঠেছে, যেমন শাসকশ্রেণীর মধ্যে তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যে। ওসামা প্রশ্নে পাকিস্তান যেমন অভিযুক্ত, তেমনি হতে পারে অভিযোগকারীও। কিন্তু শাসকদের সাহস নেই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারদাতার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলে, বরং তাকে নিজের পক্ষে সাফাই গাইতে হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যেও প্রশ্ন থাকছে, অভিযুক্ত যে হোক, যেমন হোক, নিরস্ত্র অবস্থায় তাকে তার স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে হত্যা করা নীতি ও নৈতিকতাবিরোধী, বিশেষ করে যেখানে তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার সুযোগ ছিল। কেন তা করা হয়নি। কারণ বিচারের ওপর ভরসা রাখতে পারেনি মার্কিন প্রশাসন। তাই হত্যা করতে হয়েছে ওসামাকে। একেবারে ভিন্ন চরিত্রের ঘটনায় এমনি ধারা হত্যাকাণ্ডের শিকার বিপ্লবী চে গুয়েভারা। তুলনীয় নয়, তবু তুলনা এসেছে মার্কিনি ন্যায়নীতিবিরোধী অগণতান্ত্রিকতা ও অনাচারের প্রশ্নে। এ অন্যায়ের কারণেই ওসামা-হত্যাকাণ্ডে পশ্চিমা বিশ্ব যত উল্লসিতই হোক, তৃতীয় বিশ্বে এ বিষয়ে ঘটেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ওসামার পক্ষে-বিপক্ষে এবং অনেকটা নিরপেক্ষ বিন্দুতে দাঁড়ানো মতামতের মধ্য দিয়ে।
আল-কায়েদা ও জঙ্গি গোষ্ঠীর বাইরে যারা ওসামার পক্ষে তারা তাঁর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরোধী, কিন্তু তাদের আপত্তি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় না নিয়ে হত্যার কারণে। বিশ্ব বিধানমাফিক তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেওয়ার কারণে। এটা নিঃসন্দেহে মানবাধিকার লঙ্ঘন। সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক এমন কথাই বলেছেন। একই কথা কিছুটা কড়া ভাষায় বলেছেন কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। বলেছেন যুক্তিগাহ্য ভাষায় নোয়াম চমস্কি।
আশ্চর্য যে বাংলাদেশে এ হত্যাকাণ্ডবিষয়ক ছোট্ট মতামত জরিপেও সামান্যসংখ্যক মানুষ ওসামা হত্যাকাণ্ডের পক্ষে। সংখ্যাগুরু অংশ ওসামা হত্যাকাণ্ডের বিরোধী, তারা তাঁকে বিচার করার পক্ষে। অতিসামান্য সংখ্যকের মতে, এ হত্যাকাণ্ডের জন্য 'আমেরিকারও বিচার হওয়া উচিত' (কালের কণ্ঠ)। আসলে সন্ত্রাসী হোক বা যেকোনো অপরাধীই হোক, নিরস্ত্র অবস্থায় হত্যা করার জন্য অনেকের হিসাবে ঘটনা ওসামার পক্ষে গেছে। সাধারণ মানুষের বড়সড় অংশ গণতান্ত্রিক বিচার ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী। সে হিসেবে তাদের মতামতের প্রকাশ।
প্রসঙ্গত, আরেকটি বিষয় এ কয়েক দিনে অনেকের আলোচনায় উঠে এসেছে অর্থাৎ ওসামার মৃত্যুর পর আল-কায়েদা কতটা দুর্বল হবে, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কতটা কমবে ইত্যাদি নিয়ে। এর মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। আমার ধারণা, যে সংগঠনটির আগাগোড়া ওসামার পরিকল্পনা ও তাঁর তৈরি কাঠামোর ওপর প্রতিষ্ঠিত, সে ক্ষেত্রে তাঁর অনুপস্থিতিতে তা দুর্বল হতে বাধ্য। সেখানে যোগ্যতর নেতৃত্বের অভাব এর কারণ। অন্য কারণ অর্থনৈতিক।
তবে এ কথাও সত্য যে ওসামার মৃত্যুতে এ সংগঠন একেবারে ভেঙে পড়বে না। বরং একশ্রেণীর মুসলমানের মধ্যে মার্কিন-বিদ্বেষ বৃদ্ধি পাবে। সে প্রতিক্রিয়া কাজে লাগাতে চেষ্টা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী আরব রাষ্ট্রগুলো অথবা ইরান। তবে এ প্রসঙ্গেও আফগানিস্তান ইস্যুই প্রধান হয়ে থাকবে। পরিস্থিতি অনেকটা নির্ভর করবে পাকিস্তান, এরপর কী ভূমিকা নেবে তার ওপর। কারণ এ কথা ঠিক যে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ এখন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে অনেকাংশে ওয়াশিংটন-বিরোধী হয়ে উঠেছে, এ ধারা বাড়বে বৈ কমবে না।
এর জন্য যেমন দায়ী যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশনীতি, ইসরায়েল-ভজানীতি, তেমনি পাকিস্তানি শাসকদের যুক্তরাষ্ট্র-ভজানীতি। দেশটির সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন ঘটানোর মূল গায়েন তো পারভেজ মোশাররফ থেকে শুরু করে পাকিস্তানি শাসক শ্রেণী, আমলা ও সেনাবাহিনীর শীর্ষ একাংশ। এ ক্ষেত্রে অর্থলোভ বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশপ্রেম সেখানে শূন্য। ব্যতিক্রম অতিসামান্য।
পাকিস্তানের শিক্ষিত বিত্তবান ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী রাজনীতিক ও সেনাবাহিনী নিজ স্বার্থে আত্মবিক্রয়ের ঐহিত্য ঠেকাতে পারেনি। যেমন একাত্তর-পূর্ব সময়ে, তেমনি পরবর্তীকালে। বরং দিন দিন তা আরো বেড়েছে। এবং তা এমন পর্যায়ে পেঁৗছেছে যে যেকোনো নিরপেক্ষ রাজনীতিসচেতন মানুষের মনে হবে, দেশটা শাসন করছে ওয়াশিংটন, বিশেষ করে পাকিস্তানের মাটিতে উপস্থিত মার্কিন সামরিক বাহিনী। মার্কিন-বিদ্বেষ যেমন ছিল ওসামার শক্তি, তেমনি পাকিস্তানিদের ক্রমবর্ধমান মার্কিন-বিদ্বেষ একসময় পরিবর্তনক্ষম শক্তির উত্থান ঘটাতে পারে। জীবিত বিন লাদেনের চেয়ে মৃত বিন লাদেন অধিকতর শক্তিমান হয়ে উঠতে পারে বলে যাদের ধারণা, তাদের সঙ্গে আমি একমত নই। এ জন্য যে ওসামা বিন লাদেন প্রকৃতপক্ষে জনসাধারণের সামনে এমন কোনো মতাদর্শ তুলে ধরতে পারেনি, যা স্বপ্ন দেখা মানুষকে আকর্ষণ করতে পারে। মানবিক বোধের মানুষকে কাছে টানতে পারে।
সবশেষের কথা_ওসামার মৃত্যুতে ধর্মনির্ভর সন্ত্রাসী শক্তি নির্মূল হবে না, বরং এর নানা শাখা ক্রমাগত গজিয়ে উঠতে থাকবে। বর্তমান বিশ্বে বিরাজমান সন্ত্রাসবাদের বিলুপ্ত ঘটানোর একমাত্র সঠিক উপায় যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই রয়েছে। আর তা হচ্ছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন সুস্থ, মানবিক বিদেশনীতি, ফিলিস্তিন সমস্যার যুক্তিসংগত সমাধান এবং আধিপত্যবাদী আগ্রাসী নীতি বর্জন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সে পথে হাঁটবে বলে মনে হয় না।
তাদের প্রতিটি বিদেশনীতিবিষয়ক পদক্ষেপ তেমন প্রমাণই তুলে ধরে। ওসামা হত্যাকাণ্ড তার সর্বশেষ উদাহরণ। নোয়াম চমস্কিও তাই বলেছেন যে এ হত্যাকাণ্ডে আন্তর্জাতিক আইনের প্রাথমিক বিধিবিধান মানা হয়নি। তাঁর মতে, ওসামাকে আটক করার কোনো সুযোগ না নিয়ে তাঁকে সরাসরি খুন করাই হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইনের প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা দেখানো হয়নি। তাই বলতে হয়, এ ঘটনায় ওয়াশিংটনের খুনি-মানসিকতা এবং আইনের প্রতি চরম অশ্রদ্ধাই প্রকাশ পেয়েছে।
আমরা ওসামার সমর্থক নই বলেই আলোচনা শেষ করি চমস্কির একটুখানি উক্তি উদ্ধার করে : 'ইরাকি কমান্ডোরা যদি জর্জ বুশের বাড়িতে নেমে তাঁকে হত্যা করে লাশ আটলান্টিকে ভাসিয়ে দিত, তাহলে কেমন হতো আমাদের প্রতিক্রিয়া'? বলতে হয় লাখ কথার এক কথা। সবশেষে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য_রাজতন্ত্রের বিরোধী ওসামা মিসর, তিউনিসিয়ার স্বৈরশাসকদের উৎখাতের আহ্বান জানিয়ে গণজাগরণের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন এক অডিও বার্তায়।
লেখক : ভাষা সংগ্রামী, কবি, গবেষক ও প্রাবন্ধিক

No comments

Powered by Blogger.