না.গঞ্জে ২৫ হাজার কারখানা স্থবির by দিলীপ কুমার মণ্ডল
গতকাল সোমবার সকাল ৯টা। কর্মচঞ্চল একটি দিনের সূচনালগ্ন। স্বভাবতই শিল্পাঞ্চলে একটা ব্যস্ততা চোখে পড়ার কথা। কিন্তু না। রাজধানীর অদূরে নারায়ণগঞ্জের শিল্পাঞ্চল ফতুল্লা যেন ঝিমুচ্ছে। ভোলাইল এলাকার পোশাক শিল্প-কারখানা মিনার গ্রুপের শ্রমিক রোকসানা অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে বসে গল্পে মেতে উঠেছেন।
যে সময়টায় পুরোদমে কাজে মনোনিবেশ করার কথা, সে সময়ে এভাবে অলস সময় কাটানোর কারণ জিজ্ঞেস করতেই তাঁর উত্তর, 'কী আর করব, কারেন (কারেন্ট) নাই মেশিন বন্ধ; তাই প্যাঁচাল পাইরাই সময় পার করতাছি। কহন আহে তারও কোনো ঠিক ঠিকানা নাই।' শ্রমিক আলেয়া পাশ থেকে বললেন, 'সকাল থেইক্যা বিকাল পর্যন্ত কয়বার যে কারেন যায় তার ইয়ত্তা নাই। মাঝখান থেইক্যা আমাগো লোকসান।'
কারখানার উৎপাদনভিত্তিক শ্রমিক ফারুক (৩৫) কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কারেন নাই, কাজ নাই। আমরা মালও কম বানাইতে পারি। ফলে পিস রেটও কম পাই।' বললেন, 'একবার গেলে কম করে অইলেও এক ঘণ্টার আগে আহে না।' জানালেন, বিদ্যুৎ না থাকার ভোগান্তি নিয়ে অনেক শ্রমিকের মনেই ক্ষোভ আর জ্বালা। যেকোনো সময় আন্দোলনে নামতে পারেন তাঁরা। সৃষ্টি হতে পারে রাজশাহীর কানসাট বা শনির আখড়ার মতো গণ-অসন্তোষ।
মিনার গ্রুপের মালিক মঞ্জুরুল হক জানান, লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ইদানীং এত বেড়েছে, যার কারণে উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সঠিক সময়ে মাল শিপমেন্টের জন্য সঠিক সময়ে পাঠাতে পারছেন না। অন্যদিকে গ্যাস জেনারেটরও সারা দিন বন্ধ থাকছে। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যেখানে আমাদের গ্যাসের চাপ ১০ পিএসআই প্রয়োজন, সেখানে দিনে পাচ্ছি মাত্র এক পিএসআই। এই চাপে জেনারেটরে বিদ্যুৎ উৎপাদন অসম্ভব।'
দুপুর পৌনে ১টা। পঞ্চবটি এলাকার এমদাদিয়া রি-রোলিং মিলসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল মেশিন বন্ধ। কারণ একটাই, বিদ্যুৎ নেই। আর এ সুযোগে শ্রমিকদের কেউ কেউ সামনের দোকানে চা খেতে বসে গেছেন। কেউবা দুপুরের খাওয়ার পর্ব সেরে নিচ্ছেন। মিলের ভেতরে পা রাখতেই উৎসুক কয়েকজন শ্রমিক এগিয়ে এলেন। বিদ্যুতের অবস্থা জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, 'দেহেন স্যার, এর মধ্যেই তিনবার বিদ্যুৎ গেছে। সকাল সোয়া ৭টায় একবার, ৯টায় একবার এবং একটু আগে দুপুর দেড়টায় গেছে। এখনো আসে নাই।'
এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাসাদুল আলম মাসুদের সঙ্গে। তিনি জানান, দিনে পাঁচ-ছয়বার বিদ্যুৎ ফল্ট করার কারণে উৎপাদন ৭০ শতাংশ ব্যাহত হচ্ছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্যাস সংকট। তিনি জানান, রড শিল্পের সঙ্গে সিমেন্ট, ইট, বালু এবং পাথর শিল্প সম্পৃক্ত। রি-রোলিং মিলসে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট শিল্প-কারখানার সঙ্গে প্রায় এক কোটি লোক হুমকির মুখে পড়েছে। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো সরকার আবার এই 'না-থাকা' বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে মাসাদুল আলম বলেন, 'তাঁরা নেত্রীকে কী বোঝাচ্ছেন, তা বুঝতে পারছি না। কেননা ১৯৯৬ সালে যখন তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উপাদন ছিল, তখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি আমাদের।' কুইক রেন্টালের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'এগুলোও কোনো অবদান রাখতে পারছে না।'
বিদ্যুতের অভাবে সংকটে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের প্রায় ২৫ হাজার শিল্প-কারখানা। এসবের মধ্যে অন্যতম হলো আটা, ময়দা, গম, লবণ, বেকারি, কেমিক্যাল, সুতা, পাওয়ারলুম, পাট, হোসিয়ারি, গার্মেন্ট, জাহাজ, সিমেন্ট, বিদ্যুৎ, রি-রোলিং, চুনাপাথর, ইট, ওষুধ ও তেল ডিপো।
ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরী, আদমজী ইপিজেড, কাঁচপুর, রূপগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে দেড় হাজারের বেশি গার্মেন্ট কারখানা। এ ছাড়া শহরের নয়ামাটি, উকিলপাড়া, টানবাজার, দেওভোগ এলাকায় রয়েছে তিন হাজারের মতো হোসিয়ারি শিল্প। নিতাইগঞ্জ এলাকা গম, আটা, লবণ, ময়দা, চিনি ব্যবসার জন্য প্রসিদ্ধ। টানবাজার এলাকায় রয়েছে সুতা ও কেমিক্যাল শিল্প। সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা এলাকায় গড়ে উঠেছে রি-রোলিং ও চুনাপাথর শিল্প। রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলায় রয়েছে সহস্রাধিক জামদানি ও পাওয়ারলুম কারখানা। এ ছাড়া বন্দর ও সোনারগাঁ উপজেলায় রয়েছে জাহাজ শিল্প। এসব কারখানায় কর্মরত ২০ লক্ষাধিক শ্রমিক।
উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় মালিকরা তো বটেই, উৎপাদনভিত্তিক শ্রমিকরাও পড়েছেন অস্তিত্ব সংকটে। দেখা দিয়েছে হতাশা। বারবার শিপমেন্টের তারিখ বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন কারখানার মালিকরা।
বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহজালাল জানান, পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে শুভ হালখাতা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন মালিক ও শ্রমিকরা। হোসিয়ারি শিল্পগুলোতে গরমের এ মুহূর্তে স্যান্ডো গেঞ্জি ও আন্ডারওয়্যার উৎপাদনের চাপ প্রবল। কিন্তু লোডশেডিং উৎপাদনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে মালিকরা তো বটেই, উৎপাদনভিত্তিক শ্রমিকরাও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান ডিপিডিসি সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৩০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের সরবরাহ মিলছে মাত্র অর্ধেক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ, পাগলা, মদনগঞ্জ, হরিপুর ও সোনারগাঁয়ে গত তিন বছরে যে কয়টি কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে, এর বেশির ভাগই অকেজো হয়ে আছে। দক্ষ অপারেটরের অভাব ও ত্রুটিপূর্ণ মেশিনের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ডিপিডিসি ফতুল্লা অঞ্চলের ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) প্রকৌশলী আবদুল হামিদ অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে জানান, গ্রামাঞ্চলে সেচ প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় শহরে কম বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে হলে পিডিবিকে সচল ও শক্তিশালী করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান কালের কণ্ঠকে বলেন, বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে নারায়ণগঞ্জের শিল্প-কারখানায় গড়ে ৪০ শতাংশ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুতের বিকল্প জেনারেটর চালাতে গিয়েও মালিকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কেননা গ্যাস সংকটের পাশাপাশি ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের দাম আকাশচুম্বী।
বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে শিল্প-কারখানায় মালিক-শ্রমিক অসন্তোষের আশঙ্কা করে সেলিম ওসমান বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এর সমাধান করতে না পারলে শ্রমিক অসন্তোষ বিস্ফোরণের আকার ধারণ করতে পারে।
কারখানার উৎপাদনভিত্তিক শ্রমিক ফারুক (৩৫) কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কারেন নাই, কাজ নাই। আমরা মালও কম বানাইতে পারি। ফলে পিস রেটও কম পাই।' বললেন, 'একবার গেলে কম করে অইলেও এক ঘণ্টার আগে আহে না।' জানালেন, বিদ্যুৎ না থাকার ভোগান্তি নিয়ে অনেক শ্রমিকের মনেই ক্ষোভ আর জ্বালা। যেকোনো সময় আন্দোলনে নামতে পারেন তাঁরা। সৃষ্টি হতে পারে রাজশাহীর কানসাট বা শনির আখড়ার মতো গণ-অসন্তোষ।
মিনার গ্রুপের মালিক মঞ্জুরুল হক জানান, লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ইদানীং এত বেড়েছে, যার কারণে উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সঠিক সময়ে মাল শিপমেন্টের জন্য সঠিক সময়ে পাঠাতে পারছেন না। অন্যদিকে গ্যাস জেনারেটরও সারা দিন বন্ধ থাকছে। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যেখানে আমাদের গ্যাসের চাপ ১০ পিএসআই প্রয়োজন, সেখানে দিনে পাচ্ছি মাত্র এক পিএসআই। এই চাপে জেনারেটরে বিদ্যুৎ উৎপাদন অসম্ভব।'
দুপুর পৌনে ১টা। পঞ্চবটি এলাকার এমদাদিয়া রি-রোলিং মিলসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল মেশিন বন্ধ। কারণ একটাই, বিদ্যুৎ নেই। আর এ সুযোগে শ্রমিকদের কেউ কেউ সামনের দোকানে চা খেতে বসে গেছেন। কেউবা দুপুরের খাওয়ার পর্ব সেরে নিচ্ছেন। মিলের ভেতরে পা রাখতেই উৎসুক কয়েকজন শ্রমিক এগিয়ে এলেন। বিদ্যুতের অবস্থা জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, 'দেহেন স্যার, এর মধ্যেই তিনবার বিদ্যুৎ গেছে। সকাল সোয়া ৭টায় একবার, ৯টায় একবার এবং একটু আগে দুপুর দেড়টায় গেছে। এখনো আসে নাই।'
এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাসাদুল আলম মাসুদের সঙ্গে। তিনি জানান, দিনে পাঁচ-ছয়বার বিদ্যুৎ ফল্ট করার কারণে উৎপাদন ৭০ শতাংশ ব্যাহত হচ্ছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্যাস সংকট। তিনি জানান, রড শিল্পের সঙ্গে সিমেন্ট, ইট, বালু এবং পাথর শিল্প সম্পৃক্ত। রি-রোলিং মিলসে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট শিল্প-কারখানার সঙ্গে প্রায় এক কোটি লোক হুমকির মুখে পড়েছে। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো সরকার আবার এই 'না-থাকা' বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে মাসাদুল আলম বলেন, 'তাঁরা নেত্রীকে কী বোঝাচ্ছেন, তা বুঝতে পারছি না। কেননা ১৯৯৬ সালে যখন তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উপাদন ছিল, তখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি আমাদের।' কুইক রেন্টালের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'এগুলোও কোনো অবদান রাখতে পারছে না।'
বিদ্যুতের অভাবে সংকটে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের প্রায় ২৫ হাজার শিল্প-কারখানা। এসবের মধ্যে অন্যতম হলো আটা, ময়দা, গম, লবণ, বেকারি, কেমিক্যাল, সুতা, পাওয়ারলুম, পাট, হোসিয়ারি, গার্মেন্ট, জাহাজ, সিমেন্ট, বিদ্যুৎ, রি-রোলিং, চুনাপাথর, ইট, ওষুধ ও তেল ডিপো।
ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরী, আদমজী ইপিজেড, কাঁচপুর, রূপগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে দেড় হাজারের বেশি গার্মেন্ট কারখানা। এ ছাড়া শহরের নয়ামাটি, উকিলপাড়া, টানবাজার, দেওভোগ এলাকায় রয়েছে তিন হাজারের মতো হোসিয়ারি শিল্প। নিতাইগঞ্জ এলাকা গম, আটা, লবণ, ময়দা, চিনি ব্যবসার জন্য প্রসিদ্ধ। টানবাজার এলাকায় রয়েছে সুতা ও কেমিক্যাল শিল্প। সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা এলাকায় গড়ে উঠেছে রি-রোলিং ও চুনাপাথর শিল্প। রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলায় রয়েছে সহস্রাধিক জামদানি ও পাওয়ারলুম কারখানা। এ ছাড়া বন্দর ও সোনারগাঁ উপজেলায় রয়েছে জাহাজ শিল্প। এসব কারখানায় কর্মরত ২০ লক্ষাধিক শ্রমিক।
উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় মালিকরা তো বটেই, উৎপাদনভিত্তিক শ্রমিকরাও পড়েছেন অস্তিত্ব সংকটে। দেখা দিয়েছে হতাশা। বারবার শিপমেন্টের তারিখ বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন কারখানার মালিকরা।
বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহজালাল জানান, পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে শুভ হালখাতা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন মালিক ও শ্রমিকরা। হোসিয়ারি শিল্পগুলোতে গরমের এ মুহূর্তে স্যান্ডো গেঞ্জি ও আন্ডারওয়্যার উৎপাদনের চাপ প্রবল। কিন্তু লোডশেডিং উৎপাদনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে মালিকরা তো বটেই, উৎপাদনভিত্তিক শ্রমিকরাও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান ডিপিডিসি সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৩০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের সরবরাহ মিলছে মাত্র অর্ধেক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ, পাগলা, মদনগঞ্জ, হরিপুর ও সোনারগাঁয়ে গত তিন বছরে যে কয়টি কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে, এর বেশির ভাগই অকেজো হয়ে আছে। দক্ষ অপারেটরের অভাব ও ত্রুটিপূর্ণ মেশিনের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ডিপিডিসি ফতুল্লা অঞ্চলের ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) প্রকৌশলী আবদুল হামিদ অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে জানান, গ্রামাঞ্চলে সেচ প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় শহরে কম বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে হলে পিডিবিকে সচল ও শক্তিশালী করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান কালের কণ্ঠকে বলেন, বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে নারায়ণগঞ্জের শিল্প-কারখানায় গড়ে ৪০ শতাংশ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুতের বিকল্প জেনারেটর চালাতে গিয়েও মালিকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কেননা গ্যাস সংকটের পাশাপাশি ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের দাম আকাশচুম্বী।
বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে শিল্প-কারখানায় মালিক-শ্রমিক অসন্তোষের আশঙ্কা করে সেলিম ওসমান বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এর সমাধান করতে না পারলে শ্রমিক অসন্তোষ বিস্ফোরণের আকার ধারণ করতে পারে।
No comments