কেমন আছেন উত্তরাবাসী-৬-বিদেশি অপরাধীদের দৌরাত্ম্য by আপেল মাহমুদ
'কিছুদিন আগে নাইজেরিয়ার কয়েক ব্যক্তি এসে বলে, কিছু মুদ্রা দিলে তারা অনায়াসে আমাকে পাঁচ কোটি ডলার বানিয়ে দিতে পারবে। আমি বুঝতে পারি এটি প্রতারক চক্র। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানাই। পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাইজেরিয়ার দুুই নাগরিককে গ্রেপ্তার করে।
আরো কয়েকজন পালিয়ে যায়।' কালের কণ্ঠকে বলছিলেন উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা গাড়ি ব্যবসায়ী সাকিব।
উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের ৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির মালিক নাসের আহমেদ জানান, কিছুদিন আগে তিনি ওকামো নামে নাইজেরিয়ার এক ব্যক্তিকে ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে বিপাকে পড়েন। ওকামো বন্ধু-বান্ধবসহ ফ্ল্যাটে মাদক সেবন করে শেষরাত পর্যন্ত হৈচৈ করত। এরপর তিন মাসের নোটিশ দিয়ে তাকে অন্যত্র ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে বাধ্য করা হয়। উত্তরার আরো কয়েকজন ফ্ল্যাট মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা মাদক সেবন ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের কারণে বর্তমানে কোনো বিদেশিকে বাসা ভাড়া দিতে ভয় পান। কারণ প্রতারণা, মাদক ব্যবসা, ডলার জালিয়াতি থেকে শুরু করে নারী ব্যবসার মতো গুরুতর অপরাধেও অনেক বিদেশি জড়িয়ে পড়ছে। গত ৫ মার্চ উত্তরা থানার পুলিশ ১২ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর রোডের ৩২ নম্বর বাসার পঞ্চম তলা থেকে ক্যামেরুন, কঙ্গো, গিনি, মোজামি্বক ও ফ্রান্সের ১৭ নাগরিককে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় জাল ডলার, টাকা এবং কারেন্সি জালিয়াতির সরঞ্জামসহ অবৈধ মদ ও বিয়ার। উত্তরা থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত এসব বিদেশি নাগরিকের কেউই কোনো পাসপোর্ট দেখাতে পারেনি। গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করে, অবৈধভাবে তারা এ দেশে অবস্থান করে দীর্ঘদিন ধরে ডলার-পাউন্ড প্রতারণা এবং মাদক ব্যবসা করে আসছে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়।
উত্তরা থানা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ৯ নম্বর সেক্টরের রোড নম্বর-৩/বি-এর ২৯ নম্বর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে। ২০১১ সালের ২১ মে ১১ নম্বর সেক্টরে ছিনতাই ও মারামারি করার অভিযোগে নাইজেরিয়ার চার নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন হারুন অর রশিদ নামের এক ব্যক্তি। এ ছাড়া কাজী ফয়সল বাবু নামের এক ব্যবসায়ী উত্তরা থানায় করা এক মামলায় অভিযোগ করেন, মোটা অঙ্কের অর্থলাভের লোভ দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে ২০১১ সালের ২৫ নভেম্বর ক্যামেরুন ও সাউথ আফ্রিকার নাগরিক ববি, কাবা ও মাইক পাঁচ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে।
উত্তরায় বিদেশিদের একের এর এক অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় স্থ্থানীয় পুলিশও বিপাকে আছে। উত্তরা বিভাগের পুলিশ উপকমিশনার নিশারুল আরিফ বলেন, বিদেশি অপরাধীদের শনাক্ত করার জন্য পুলিশের পাশাপাশি উত্তরার ১৪টি সেক্টর কল্যাণ সমিতির নেতাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বাড়িওয়ালা কিংবা ফ্ল্যাট মালিকরা যাতে বিদেশি ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হন, সে জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিদেশিদের কাছে বেশি টাকায় ভাড়া দেওয়া যায় বলে বাড়িওয়ালারা পুলিশের কাছে তা গোপন রাখেন। তা ছাড়া অনেকে পুলিশি ঝামেলা এড়ানোর জন্যও বিদেশি ভাড়াটিয়াদের অবস্থান গোপন করে থাকেন বলে পুলিশের একটি সূত্র জানায়।
এ ব্যাপারে উত্তরা পুলিশের উপকমিশনার বলেন, সেক্টর কল্যাণ সমিতি এবং বাড়ি ও ফ্ল্যাট মালিকরা সহযোগিতা না করলে পুলিশের পক্ষে প্রতিটি বাড়ি অনুসন্ধান করে বিদেশিদের চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে কেউ থানায় অভিযোগ করতে আসার পর পুলিশ ঘটনা জানতে পারে বলে জানান উত্তরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ রেজাউল করিম। তিনি জানান, কালো চামড়ার বিদেশি নাগরিকদের কেউ কেউ ফুটবল খেলোয়াড় পরিচয়েও নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, এ রকম কেউ ধরা পড়লে ঢাকার কোনো না কোনো ফুটবল ক্লাব থেকে তদবির আসে।
এদিকে উত্তরা থানার পুলিশ তাদের এলাকায় বিদেশিদের অপরাধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিশদ পরিসংখ্যান দিতে পারেনি। তবে বিভিন্ন সময় বিদেশিদের বিরুদ্ধে উত্তরা থানায় ১৫-১৬টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান। তিনি জানান, বিদেশিদের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট দেখা এবং তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্ব পুলিশের সিটি এসবির। এ ব্যাপারে উত্তরা জোনের এসবির দারোগা মুক্তারুল ইসলাম ও মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা কোনো তথ্য জানাতে পারেননি। তাঁরা এ প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানার জন্য এসবির এসসিও (সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন) শাখায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। এসসিও শাখার এসএস (স্পেশাল সুপার) মাসুম রব্বানী বলেন, তিনি মাত্র সাত দিন আগে এ শাখায় যোগদান করেছেন। তাই এর কার্যক্রম নিয়ে বিশেষ কিছু তিনি জানেন না।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৈধ পথে বাংলাদেশে ঢুকেছেন এমন প্রায় ১২ হাজার বিদেশি নাগরিককে এখন পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের ফিরে যাওয়ার তথ্য যেমন পুলিশের ইমিগ্রেশন বিভাগে নেই, তেমনি নেই ভিসা কিংবা ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন করার তথ্য।
উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের ৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির মালিক নাসের আহমেদ জানান, কিছুদিন আগে তিনি ওকামো নামে নাইজেরিয়ার এক ব্যক্তিকে ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে বিপাকে পড়েন। ওকামো বন্ধু-বান্ধবসহ ফ্ল্যাটে মাদক সেবন করে শেষরাত পর্যন্ত হৈচৈ করত। এরপর তিন মাসের নোটিশ দিয়ে তাকে অন্যত্র ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে বাধ্য করা হয়। উত্তরার আরো কয়েকজন ফ্ল্যাট মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা মাদক সেবন ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের কারণে বর্তমানে কোনো বিদেশিকে বাসা ভাড়া দিতে ভয় পান। কারণ প্রতারণা, মাদক ব্যবসা, ডলার জালিয়াতি থেকে শুরু করে নারী ব্যবসার মতো গুরুতর অপরাধেও অনেক বিদেশি জড়িয়ে পড়ছে। গত ৫ মার্চ উত্তরা থানার পুলিশ ১২ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর রোডের ৩২ নম্বর বাসার পঞ্চম তলা থেকে ক্যামেরুন, কঙ্গো, গিনি, মোজামি্বক ও ফ্রান্সের ১৭ নাগরিককে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় জাল ডলার, টাকা এবং কারেন্সি জালিয়াতির সরঞ্জামসহ অবৈধ মদ ও বিয়ার। উত্তরা থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত এসব বিদেশি নাগরিকের কেউই কোনো পাসপোর্ট দেখাতে পারেনি। গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করে, অবৈধভাবে তারা এ দেশে অবস্থান করে দীর্ঘদিন ধরে ডলার-পাউন্ড প্রতারণা এবং মাদক ব্যবসা করে আসছে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়।
উত্তরা থানা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ৯ নম্বর সেক্টরের রোড নম্বর-৩/বি-এর ২৯ নম্বর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে। ২০১১ সালের ২১ মে ১১ নম্বর সেক্টরে ছিনতাই ও মারামারি করার অভিযোগে নাইজেরিয়ার চার নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন হারুন অর রশিদ নামের এক ব্যক্তি। এ ছাড়া কাজী ফয়সল বাবু নামের এক ব্যবসায়ী উত্তরা থানায় করা এক মামলায় অভিযোগ করেন, মোটা অঙ্কের অর্থলাভের লোভ দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে ২০১১ সালের ২৫ নভেম্বর ক্যামেরুন ও সাউথ আফ্রিকার নাগরিক ববি, কাবা ও মাইক পাঁচ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে।
উত্তরায় বিদেশিদের একের এর এক অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় স্থ্থানীয় পুলিশও বিপাকে আছে। উত্তরা বিভাগের পুলিশ উপকমিশনার নিশারুল আরিফ বলেন, বিদেশি অপরাধীদের শনাক্ত করার জন্য পুলিশের পাশাপাশি উত্তরার ১৪টি সেক্টর কল্যাণ সমিতির নেতাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বাড়িওয়ালা কিংবা ফ্ল্যাট মালিকরা যাতে বিদেশি ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হন, সে জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিদেশিদের কাছে বেশি টাকায় ভাড়া দেওয়া যায় বলে বাড়িওয়ালারা পুলিশের কাছে তা গোপন রাখেন। তা ছাড়া অনেকে পুলিশি ঝামেলা এড়ানোর জন্যও বিদেশি ভাড়াটিয়াদের অবস্থান গোপন করে থাকেন বলে পুলিশের একটি সূত্র জানায়।
এ ব্যাপারে উত্তরা পুলিশের উপকমিশনার বলেন, সেক্টর কল্যাণ সমিতি এবং বাড়ি ও ফ্ল্যাট মালিকরা সহযোগিতা না করলে পুলিশের পক্ষে প্রতিটি বাড়ি অনুসন্ধান করে বিদেশিদের চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে কেউ থানায় অভিযোগ করতে আসার পর পুলিশ ঘটনা জানতে পারে বলে জানান উত্তরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ রেজাউল করিম। তিনি জানান, কালো চামড়ার বিদেশি নাগরিকদের কেউ কেউ ফুটবল খেলোয়াড় পরিচয়েও নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, এ রকম কেউ ধরা পড়লে ঢাকার কোনো না কোনো ফুটবল ক্লাব থেকে তদবির আসে।
এদিকে উত্তরা থানার পুলিশ তাদের এলাকায় বিদেশিদের অপরাধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিশদ পরিসংখ্যান দিতে পারেনি। তবে বিভিন্ন সময় বিদেশিদের বিরুদ্ধে উত্তরা থানায় ১৫-১৬টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান। তিনি জানান, বিদেশিদের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট দেখা এবং তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্ব পুলিশের সিটি এসবির। এ ব্যাপারে উত্তরা জোনের এসবির দারোগা মুক্তারুল ইসলাম ও মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা কোনো তথ্য জানাতে পারেননি। তাঁরা এ প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানার জন্য এসবির এসসিও (সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন) শাখায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। এসসিও শাখার এসএস (স্পেশাল সুপার) মাসুম রব্বানী বলেন, তিনি মাত্র সাত দিন আগে এ শাখায় যোগদান করেছেন। তাই এর কার্যক্রম নিয়ে বিশেষ কিছু তিনি জানেন না।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৈধ পথে বাংলাদেশে ঢুকেছেন এমন প্রায় ১২ হাজার বিদেশি নাগরিককে এখন পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের ফিরে যাওয়ার তথ্য যেমন পুলিশের ইমিগ্রেশন বিভাগে নেই, তেমনি নেই ভিসা কিংবা ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন করার তথ্য।
No comments