অজুহাত নয়, দৃশ্যমান পরিবর্তন কাম্য-স্থবির রেল প্রকল্প
বহুদিন হলো, রেল খাতের পুনরুজ্জীবনের আহাজারি শোনা গেলেও কোনো সুসংবাদ নেই। সর্বশেষ, রেল খাতের বিকাশে নেওয়া প্রকল্পগুলোর স্থবিরতার খবর প্রকাশিত হয়েছে গত বৃহস্পতিবারের প্রথম আলোয়। রেল খাত যেন যোগাযোগ-রাজ্যের দুয়োরানি, যার ভাগ্যে জোটে কেবলই অবহেলা।
কেবল গত বিএনপি সরকারের আমলে গৃহীত প্রকল্পগুলোই নয়, এই সরকারের দুই বছরে নেওয়া ৩১টি প্রকল্পের ২১টিই এখনো শুরু হয়নি। একের পর এক প্রকল্প অনুমোদন করা হলেও টাকার বন্দোবস্ত হয়নি। এমনকি ভারতীয় ঋণে নেওয়া প্রকল্পগুলোও থমকে আছে। চুক্তি মোতাবেক পণ্য কেনায় ভারতীয় ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও দুবার দরপত্র আহ্বান করার পরও কোনো ভারতীয় ঠিকাদার মেলেনি। আবার যেখানে অর্থ বরাদ্দ আছে, সেখানে দীর্ঘসূত্রতায় বাস্তবায়নকাজ স্থবির। কিন্তু সুদের টাকা ঠিকই গুনতে হচ্ছে, পাশাপাশি বাড়ছে বাস্তবায়ন-ব্যয়। যোগাযোগমন্ত্রীর তরফে বিদেশি ঋণের বেলায় প্রক্রিয়াগত অসুবিধার যুক্তি হাজির করা হলেও, এই বিপুল ব্যর্থতার সাপেক্ষে তাকে খোঁড়া যুক্তিই বলতে হয়। সরকারি সিদ্ধান্তহীনতার কারণে রেলওয়ে ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর প্রকল্পও অনিশ্চিত।
সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, অর্থের সংস্থান না করে প্রকল্প অনুমোদন, প্রক্রিয়াগত দীর্ঘসূত্রতা, কর্মকর্তাদের অদক্ষতা, দাতাদের কঠিন শর্ত, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ, অনিয়ম-দুর্নীতি ও লোকবলের সংকটই রেলের অবিকাশের কারণ। কারণ যখন জানা, তখন দশক চলে গেলেও প্রতিকার না হওয়ার কারণ কী? সরকারের উচিত ভেতরের বাধা চিহ্নিত করে তা অপসারণ করা। রেল বিষয়ে পুরোনো গীত আমরা আর শুনতে চাই না।
একটা সময় ছিল যখন বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকার পরামর্শে ক্রমশ রেল খাতকে সংকুচিত করা হচ্ছিল। নব্বইয়ের দশক থেকে এডিবির পরামর্শে তিনবার রেলওয়ের সংস্কার হয়েছে। এতে রেলপথ কমেছে, চলেছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। রেলওয়েকে প্রথমে করা হয় রেলওয়ে বোর্ড, পরে করা হয় রেলওয়ে অথরিটি। অথচ রেলওয়ের কর্মকর্তারা রেলওয়ের সাফল্যের জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার দাবি করে আসছেন। কিন্তু যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আমলাদের আগ্রহ একে তাঁদের কর্তৃত্বের অধীনে রাখতে। এখন হাওয়া ঘুরছে বলে মনে হচ্ছে। সরকার ও উন্নয়ন-সহযোগীদের সবাই স্বীকার করছে, উন্নয়নের স্বার্থে রেলের বিকল্প নেই। কিন্তু শুকনো কথায় চিড়া ভিজছে না, দৃশ্যমান উদ্যোগও আসছে না। রেল পড়ে থাকছে স্থবিরতার বিষাক্ত চক্রে এবং এর ভুক্তভোগী হচ্ছে দেশের মানুষ, অর্থনীতি ও সার্বিক উন্নয়ন।
দ্রুত নতুন মন্ত্রণালয় গঠন, নতুন বিনিয়োগ ও গতিশীল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রেল খাতের পুনরুজ্জীবন ঘটানো এখন জাতীয় স্বার্থেই প্রয়োজন। এ বিষয়ে আর কোনো অজুহাত মানার মতো নয়।
সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, অর্থের সংস্থান না করে প্রকল্প অনুমোদন, প্রক্রিয়াগত দীর্ঘসূত্রতা, কর্মকর্তাদের অদক্ষতা, দাতাদের কঠিন শর্ত, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ, অনিয়ম-দুর্নীতি ও লোকবলের সংকটই রেলের অবিকাশের কারণ। কারণ যখন জানা, তখন দশক চলে গেলেও প্রতিকার না হওয়ার কারণ কী? সরকারের উচিত ভেতরের বাধা চিহ্নিত করে তা অপসারণ করা। রেল বিষয়ে পুরোনো গীত আমরা আর শুনতে চাই না।
একটা সময় ছিল যখন বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকার পরামর্শে ক্রমশ রেল খাতকে সংকুচিত করা হচ্ছিল। নব্বইয়ের দশক থেকে এডিবির পরামর্শে তিনবার রেলওয়ের সংস্কার হয়েছে। এতে রেলপথ কমেছে, চলেছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। রেলওয়েকে প্রথমে করা হয় রেলওয়ে বোর্ড, পরে করা হয় রেলওয়ে অথরিটি। অথচ রেলওয়ের কর্মকর্তারা রেলওয়ের সাফল্যের জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার দাবি করে আসছেন। কিন্তু যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আমলাদের আগ্রহ একে তাঁদের কর্তৃত্বের অধীনে রাখতে। এখন হাওয়া ঘুরছে বলে মনে হচ্ছে। সরকার ও উন্নয়ন-সহযোগীদের সবাই স্বীকার করছে, উন্নয়নের স্বার্থে রেলের বিকল্প নেই। কিন্তু শুকনো কথায় চিড়া ভিজছে না, দৃশ্যমান উদ্যোগও আসছে না। রেল পড়ে থাকছে স্থবিরতার বিষাক্ত চক্রে এবং এর ভুক্তভোগী হচ্ছে দেশের মানুষ, অর্থনীতি ও সার্বিক উন্নয়ন।
দ্রুত নতুন মন্ত্রণালয় গঠন, নতুন বিনিয়োগ ও গতিশীল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রেল খাতের পুনরুজ্জীবন ঘটানো এখন জাতীয় স্বার্থেই প্রয়োজন। এ বিষয়ে আর কোনো অজুহাত মানার মতো নয়।
No comments