আসন্ন বাজেট-জনগণের বোঝা বাড়াবে by আনু মুহাম্মদ
আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সামনে রেখে দেশের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি নিয়ে দুই অর্থনীতিবিদের লেখা এখানে প্রকাশ করা হলো। তাঁরা অর্থনীতির চরিত্র বিশ্লেষণের পাশাপাশি প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে কিছু সুপারিশও করেছেন।
অর্থনীতির ধারাবাহিকতায় বাজেট আসে। একটি সামগ্রিক নীতিকাঠামোর মধ্যে বাজেট এক বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব। সমাজের সৃষ্ট সম্পদ কোথা থেকে এবং কাদের কাছ থেকে আসবে, আর কোথায় বা কাদের জন্য ব্যয় হবে, তার একটি ছক উপস্থিত করা হয় বাজেটে। সব বিচারেই সরকারি সম্পদের উৎস দেশের নাগরিকেরা। তাদের ওপর কর ও ফি বসিয়ে তাদের ব্যবহূত দ্রব্যাদির ওপর আমদানি ও আবগারি শুল্ক বা ভ্যাট ধার্য করে সরকারের আয় নিশ্চিত হয়। এর ব্যয় হয় প্রথমত প্রশাসন চালানো ও রাষ্ট্রীয় অর্থে পরিচালিত বিভিন্ন খাতে (রাজস্ব ব্যয়) এবং দ্বিতীয়ত নতুন নির্মাণ বা উন্নয়নমূলক কাজে (উন্নয়ন বরাদ্দ)। ‘বিদেশি সাহায্য’ হিসেবে যে অর্থ আয় হিসেবে ধরা হয়, সেটিও শেষ বিচারে জনগণেরই টাকা। কারণ, কথিত বিদেশি সাহায্যের অর্থ জনগণের কাছ থেকে পাওয়া সম্পদ দিয়ে সুদে-আসলে পরিশোধ করা হয়। তাই জনগণের টাকায় সরকার কী ধরনের কাজ করছে, কোন কাজকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেটা দিয়েই একটি সরকারের বাজেটের চরিত্র নির্ধারিত হয়। সম্পদ কার কাছ থেকে কার কাছে যাচ্ছে, সেটাও বোঝায় বাজেট। সামগ্রিক যে নীতিকাঠামোর অধীনে তিন দশক ধরে সরকার পরিচালিত হচ্ছে, তার মূল কথা হলো: ১. জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের দায়দায়িত্ব হ্রাস, ২. মানুষকে ক্রমাগত বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া, ৩. রাষ্ট্রীয় শিল্পকারখানা, জ্বালানি-বিদ্যুৎ, শিক্ষা-চিকিৎসা এবং সাধারণ মালিকানাধীন সম্পদ যেমন—পানি, বন, খালবিল, উন্মুক্ত স্থান ক্রমান্বয়ে বাণিজ্যিক তৎপরতার জন্য ব্যক্তিমালিকানায় নিয়ে যাওয়া। একই নীতিকাঠামোর অংশ হিসেবে বিশ্বের ক্ষমতাবান অর্থনীতির প্রয়োজনে দেশীয় অর্থনীতির শুল্ক-কাঠামো, আইনকানুন ও নিয়মনীতিকে বিন্যস্ত করাও এর অন্তর্ভুক্ত। এসবের ফল হিসেবে শিক্ষা ও চিকিৎসা—দুটোই এখন ব্যয়বহুল এবং তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রবেশাধিকার সংকুচিত। একই নীতিকাঠামোয় বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত বহুজাতিক পুঁজির দখলে। আসন্ন বাজেটে এই ধারাবাহিকতাই রক্ষিত হবে।
বাজেটকে পরিচ্ছন্ন দেখানোর জন্য সম্প্রতি বাজেট প্রণয়নের আগেই তেল ও সিনএজির দাম বাড়ানো হয়েছে। তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে যখন বিশ্ববাজারে তেলের দাম পড়তির দিকে এবং যখন দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা। গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির লাগাতার যুক্তি হলো ভর্তুকি কমানো। উদ্দেশ্য, সরকারের আয়ের চিত্রটি তুলনামূলকভাবে সুদর্শন করা। কিন্তু সরকারের নিজের টাকা বলে তো কিছু নেই। সরকারের টাকা মানে জনগণের টাকা। এই অর্থে জনগণের ১০ টাকা বাঁচানোর যুক্তিতে ভর্তুকি কমানোর অভিঘাতে যদি জনগণের পকেট থেকে ৫০ টাকা সরানোর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়; তাহলে এর অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা কী? বিশেষত জ্বালানির দাম যত বাড়ে, তার গুণিতক প্রভাবে এবং পরিবহন-ব্যবসায়ীদের দাপটে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঘটে অনেক গুণ বেশি। গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে এখন যে ভর্তুকি দেওয়া হয়, সেই ভর্তুকির গন্তব্য জনগণ নয়, জনগণের টাকায় ভর্তুকি দেওয়া হয় বিদেশি কোম্পানির মুনাফা নিশ্চিত করতে। এ খাতে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি প্রতিবছর দিতে হচ্ছে। আবার সেই ভর্তুকি হ্রাস করে ‘ফিস্কেল ব্যালান্স’ ভালো দেখানোর জন্য গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি জনগণের ওপর বোঝা হয়ে আসে।
গত বাজেটে জ্বালানি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু জ্বালানি খাত তো বটেই, শিক্ষা-কৃষি-চিকিৎসাসহ সব খাতেই বরাদ্দ বেশি দেখানো মানেই উন্নয়নমুখিতা নয়। বর্ধিত বরাদ্দ কার স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে? জ্বালানি খাতে বর্ধিত বরাদ্দ দেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অনেক বেশি দামে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন। যেখানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ দেড় টাকায় পাওয়া সম্ভব, সেখানে ১০ টাকা দরে পর্যন্ত বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি করা হয়েছে। দামের এই পার্থক্যের কারণে প্রতিবছর প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার চাপ জনগণের ওপর পড়ে। রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের যন্ত্র আমদানির নামে ওভার ইনভয়েস (বেশি দাম দেখানো) করতে গিয়ে কত হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়েছে, তার হিসাব সরকারের কাছে দাবি করতে পারি। দেশে যখন বিদ্যুতের সংকট চলছে, তখন শুল্ক-সুবিধার সুবাদে এসি যন্ত্র আমদানিও বেড়েছে। একটি ছোট মাপের এসি যে বিদ্যুৎ টানে, তা দিয়ে ৫০টি পরিবার একটি করে ফ্যান ব্যবহার করতে পারত। কিন্তু সরকারের নীতিকাঠামো অধিক দামে বিদ্যুৎ ক্রয়ের ব্যবস্থা করেছে আর শুল্ককাঠামো অধিক বিদ্যুৎ ভোগকারী এসির চাহিদা বাড়িয়েছে।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এ বছরও কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। এ কর্মসূচির স্লথতা বা ব্যর্থতার মূল কারণ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ধরনের মধ্যেই নিহিত। এর সঙ্গে জনস্বার্থের প্রয়োজনের থেকে বেশি জড়িত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন অর্থনৈতিক শক্তির লবি। দেশি-বিদেশি স্বার্থগোষ্ঠীর স্বার্থে যেহেতু অধিকাংশ প্রকল্প প্রণীত হয়, সে জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের চেয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধারটাই মূল লক্ষ্য থাকে। সে জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমদানিকারকের স্বার্থ অনুযায়ী মেশিন আমদানি হয়, আমলার স্বার্থ অনুযায়ী বিদেশ সফর হয়, কনসালট্যান্টের স্বার্থ অনুযায়ী কনসালট্যান্সি হয়, কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ হয় না। এখন জুন মাসের কাছাকাছি এসে আমরা বিভিন্ন বরাদ্দ দ্রুত খরচের অস্থিরতা দেখি। এই অস্থিরতা থেকে তৈরি হয় অনেক অপচয় ও দুর্নীতি। বাজেটে পরস্পরবিরোধী অনেক কথা শুনি। একদিকে শুনি সম্পদের অভাব, অন্যদিকে সম্পদ ব্যবহারের ব্যর্থতা ঘটায় অপচয় ও দুর্নীতি।
গত প্রায় এক দশকে বাজেট প্রণীত হয়েছে পিআরএসপির অধীনে। বাংলাদেশের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাদ দিয়ে কেন পিআরএসপি গ্রহণ করা হয়েছিল, তার ব্যাখ্যা সরকার দেয়নি। দুই পর্বে পিআরএসপি গ্রহণ করার পর তার ফলাফলের কোনো পর্যালোচনা ছাড়াই আবারও পরিকল্পনা দলিল গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী পিআরএসপি গ্রহণ করা হয়েছিল। আর এবারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সাবেক কনসালট্যান্টদের দ্বারা গঠিত একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে। সুতরাং গত এক দশকে যে নীতিকাঠামোর অধীনে পিআরএসপির আওতায় বাজেট প্রণীত হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতাতেই এ বছরের বাজেট প্রণীত হচ্ছে।
ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ এখন চারটি বিপদের মধ্যে আছে—যানজট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ এবং চাঁদাবাজি-দখল-সন্ত্রাস। এগুলোর সমাধান কঠিন নয়। বাংলাদেশের মানুষ অনেক বড় সংকট মোকাবিলা করে টিকে থাকতে সক্ষম। সমস্যা হয় সরকারি নীতি ও বাজেটে, যেখানে সমাধানের বদলে সমস্যা আরও গভীর করা হয়। দেখা যাক, অর্থমন্ত্রী এখন অর্থনীতিকে কোন দিকে নিয়ে যান।
আনু মুহাম্মদ: অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
বাজেটকে পরিচ্ছন্ন দেখানোর জন্য সম্প্রতি বাজেট প্রণয়নের আগেই তেল ও সিনএজির দাম বাড়ানো হয়েছে। তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে যখন বিশ্ববাজারে তেলের দাম পড়তির দিকে এবং যখন দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা। গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির লাগাতার যুক্তি হলো ভর্তুকি কমানো। উদ্দেশ্য, সরকারের আয়ের চিত্রটি তুলনামূলকভাবে সুদর্শন করা। কিন্তু সরকারের নিজের টাকা বলে তো কিছু নেই। সরকারের টাকা মানে জনগণের টাকা। এই অর্থে জনগণের ১০ টাকা বাঁচানোর যুক্তিতে ভর্তুকি কমানোর অভিঘাতে যদি জনগণের পকেট থেকে ৫০ টাকা সরানোর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়; তাহলে এর অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা কী? বিশেষত জ্বালানির দাম যত বাড়ে, তার গুণিতক প্রভাবে এবং পরিবহন-ব্যবসায়ীদের দাপটে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঘটে অনেক গুণ বেশি। গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে এখন যে ভর্তুকি দেওয়া হয়, সেই ভর্তুকির গন্তব্য জনগণ নয়, জনগণের টাকায় ভর্তুকি দেওয়া হয় বিদেশি কোম্পানির মুনাফা নিশ্চিত করতে। এ খাতে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি প্রতিবছর দিতে হচ্ছে। আবার সেই ভর্তুকি হ্রাস করে ‘ফিস্কেল ব্যালান্স’ ভালো দেখানোর জন্য গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি জনগণের ওপর বোঝা হয়ে আসে।
গত বাজেটে জ্বালানি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু জ্বালানি খাত তো বটেই, শিক্ষা-কৃষি-চিকিৎসাসহ সব খাতেই বরাদ্দ বেশি দেখানো মানেই উন্নয়নমুখিতা নয়। বর্ধিত বরাদ্দ কার স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে? জ্বালানি খাতে বর্ধিত বরাদ্দ দেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অনেক বেশি দামে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন। যেখানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ দেড় টাকায় পাওয়া সম্ভব, সেখানে ১০ টাকা দরে পর্যন্ত বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি করা হয়েছে। দামের এই পার্থক্যের কারণে প্রতিবছর প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার চাপ জনগণের ওপর পড়ে। রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের যন্ত্র আমদানির নামে ওভার ইনভয়েস (বেশি দাম দেখানো) করতে গিয়ে কত হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়েছে, তার হিসাব সরকারের কাছে দাবি করতে পারি। দেশে যখন বিদ্যুতের সংকট চলছে, তখন শুল্ক-সুবিধার সুবাদে এসি যন্ত্র আমদানিও বেড়েছে। একটি ছোট মাপের এসি যে বিদ্যুৎ টানে, তা দিয়ে ৫০টি পরিবার একটি করে ফ্যান ব্যবহার করতে পারত। কিন্তু সরকারের নীতিকাঠামো অধিক দামে বিদ্যুৎ ক্রয়ের ব্যবস্থা করেছে আর শুল্ককাঠামো অধিক বিদ্যুৎ ভোগকারী এসির চাহিদা বাড়িয়েছে।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এ বছরও কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। এ কর্মসূচির স্লথতা বা ব্যর্থতার মূল কারণ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ধরনের মধ্যেই নিহিত। এর সঙ্গে জনস্বার্থের প্রয়োজনের থেকে বেশি জড়িত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন অর্থনৈতিক শক্তির লবি। দেশি-বিদেশি স্বার্থগোষ্ঠীর স্বার্থে যেহেতু অধিকাংশ প্রকল্প প্রণীত হয়, সে জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের চেয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধারটাই মূল লক্ষ্য থাকে। সে জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমদানিকারকের স্বার্থ অনুযায়ী মেশিন আমদানি হয়, আমলার স্বার্থ অনুযায়ী বিদেশ সফর হয়, কনসালট্যান্টের স্বার্থ অনুযায়ী কনসালট্যান্সি হয়, কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ হয় না। এখন জুন মাসের কাছাকাছি এসে আমরা বিভিন্ন বরাদ্দ দ্রুত খরচের অস্থিরতা দেখি। এই অস্থিরতা থেকে তৈরি হয় অনেক অপচয় ও দুর্নীতি। বাজেটে পরস্পরবিরোধী অনেক কথা শুনি। একদিকে শুনি সম্পদের অভাব, অন্যদিকে সম্পদ ব্যবহারের ব্যর্থতা ঘটায় অপচয় ও দুর্নীতি।
গত প্রায় এক দশকে বাজেট প্রণীত হয়েছে পিআরএসপির অধীনে। বাংলাদেশের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাদ দিয়ে কেন পিআরএসপি গ্রহণ করা হয়েছিল, তার ব্যাখ্যা সরকার দেয়নি। দুই পর্বে পিআরএসপি গ্রহণ করার পর তার ফলাফলের কোনো পর্যালোচনা ছাড়াই আবারও পরিকল্পনা দলিল গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী পিআরএসপি গ্রহণ করা হয়েছিল। আর এবারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সাবেক কনসালট্যান্টদের দ্বারা গঠিত একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে। সুতরাং গত এক দশকে যে নীতিকাঠামোর অধীনে পিআরএসপির আওতায় বাজেট প্রণীত হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতাতেই এ বছরের বাজেট প্রণীত হচ্ছে।
ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ এখন চারটি বিপদের মধ্যে আছে—যানজট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ এবং চাঁদাবাজি-দখল-সন্ত্রাস। এগুলোর সমাধান কঠিন নয়। বাংলাদেশের মানুষ অনেক বড় সংকট মোকাবিলা করে টিকে থাকতে সক্ষম। সমস্যা হয় সরকারি নীতি ও বাজেটে, যেখানে সমাধানের বদলে সমস্যা আরও গভীর করা হয়। দেখা যাক, অর্থমন্ত্রী এখন অর্থনীতিকে কোন দিকে নিয়ে যান।
আনু মুহাম্মদ: অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments