কর্মস্থলে বর্বরতার সব চিহ্ন মুছে ফেলা চাই-এখনো গেল না আঁধার
সভ্যতার চলাচল মহাসড়কের মতো। যারা প্রান্তবাসী, অনেক সময় সভ্যতার মহাসড়কে তারা উঠতেই পারে না। পৃথিবী থেকে দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়েছে কয়েক শতাব্দী আগে। অথচ এখনো রাজধানীর পাশের আশুলিয়ায় দাসপ্রথা যেন টিকে আছে। গত বৃহস্পতিবারের প্রথম আলোতে শেকল বাঁধা ৩০ শ্রমিকের আলোকচিত্রটিই তার প্রমাণ।
মজুরির বিনিময়ে কাজ করানোর কথা বলে তাঁদের পশুর মতো বেঁধে রেখে কাজ করানো হতো। এক দিন দুই দিন নয়, দিনের পর দিন অমানুষিক বর্বরতা সহ্য করে যেতে হতো তাঁদের।
আশুলিয়ার একতা ব্রিকস কোম্পানিকে প্রাচীন গ্রিস ও রোমের দাসশিবিরের সঙ্গে তুলনা করা চলে। আরও মিল পাওয়া যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে কুখ্যাত নাৎসি দাসশিবিরের সঙ্গে। কী ভয়ংকর ব্যাপার, দালালের মাধ্যমে এভাবে শ্রমিক কেনাবেচাও চলে এই বাংলাদেশে! কিন্তু যে শ্রমিকদের সেখানে ভোর চারটায় শেকল পরিয়ে কাজে নামানো হতো, প্রতিবাদ করলে দেওয়া হতো তাতানো লোহার ছেঁকা কিংবা ছেড়ে দেওয়া হতো রাক্ষুসে মাছভর্তি পুকুরে, যাঁদের দেওয়া হতো না বাঁচার মতো খাদ্য, ঘুমানোর সামান্য জায়গা, যাঁদের সঙ্গে পথের কুকুরের থেকেও খারাপ আচরণ করা হতো; তাঁরা কারা? তাঁরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। কিন্তু কেবল খেটে খাওয়া গরিব বলেই কেউ তা এত দিন খেয়াল করেনি। কেবল দরিদ্র বলেই ওই ইটভাটার মালিকদের পক্ষেও সম্ভব হয়েছে স্থানীয় থানা-পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে বা বশ করে এই অনাচার চালানো।
ঘটনাটি নিশ্চয়ই বিচ্ছিন্ন। সব শ্রমজীবীকে নিশ্চয়ই এমন মানবেতর জঘন্য জীবন পেতে হয় না। কিন্তু এ কথাও সত্যি, বাংলাদেশের আনাচ-কানাচে, রাজধানীসহ বড় বড় নগরে, এমনকি গ্রামে ও প্রান্তে এ রকম নির্দয় শ্রমশোষণ চলছে। চলছে মানুষের ওপর মানুষের প্রভুত্ব। আশুলিয়ার শ্রমিকদের পায়ের শেকল দেখা যায়, কিন্তু যে শ্রমিকদের পায়ে শেকল নেই, তাঁরাও কি মুক্ত? তাঁদেরও কি করতে হয় না শ্রমদাসত্ব? সরকার ও স্বেচ্ছাসেবক সংস্থার উন্নয়নের ডামাডোল এঁদের দিনবদল ঘটাতে পারেনি।
শ্রম আইন রয়েছে, রয়েছে শ্রম আদালত, রয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অজস্র কর্মিবাহিনী। এ ঘটনায় তাদের সবার টনক নড়া দরকার। পুলিশ বা র্যাব কবে খবর জানাবে, তার জন্য অপেক্ষা না করে তাদের উচিত স্বউদ্যোগে কর্ম পরিবেশ ও শ্রমিকবান্ধব মজুরি নিশ্চিতের জন্য কাজ করা। আশুলিয়ার ওই ইটভাটার মালিকসহ শ্রমিকদের নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তাই জরুরি। একই রকম জরুরি শ্রমজীবীদের জন্য মানুষের মতো জীবন, সম্মান ও মজুরির নিশ্চয়তা বিধান করা। নইলে সভ্যতার গর্ব গরলই ভেল বলে গণ্য হবে।
আশুলিয়ার একতা ব্রিকস কোম্পানিকে প্রাচীন গ্রিস ও রোমের দাসশিবিরের সঙ্গে তুলনা করা চলে। আরও মিল পাওয়া যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে কুখ্যাত নাৎসি দাসশিবিরের সঙ্গে। কী ভয়ংকর ব্যাপার, দালালের মাধ্যমে এভাবে শ্রমিক কেনাবেচাও চলে এই বাংলাদেশে! কিন্তু যে শ্রমিকদের সেখানে ভোর চারটায় শেকল পরিয়ে কাজে নামানো হতো, প্রতিবাদ করলে দেওয়া হতো তাতানো লোহার ছেঁকা কিংবা ছেড়ে দেওয়া হতো রাক্ষুসে মাছভর্তি পুকুরে, যাঁদের দেওয়া হতো না বাঁচার মতো খাদ্য, ঘুমানোর সামান্য জায়গা, যাঁদের সঙ্গে পথের কুকুরের থেকেও খারাপ আচরণ করা হতো; তাঁরা কারা? তাঁরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। কিন্তু কেবল খেটে খাওয়া গরিব বলেই কেউ তা এত দিন খেয়াল করেনি। কেবল দরিদ্র বলেই ওই ইটভাটার মালিকদের পক্ষেও সম্ভব হয়েছে স্থানীয় থানা-পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে বা বশ করে এই অনাচার চালানো।
ঘটনাটি নিশ্চয়ই বিচ্ছিন্ন। সব শ্রমজীবীকে নিশ্চয়ই এমন মানবেতর জঘন্য জীবন পেতে হয় না। কিন্তু এ কথাও সত্যি, বাংলাদেশের আনাচ-কানাচে, রাজধানীসহ বড় বড় নগরে, এমনকি গ্রামে ও প্রান্তে এ রকম নির্দয় শ্রমশোষণ চলছে। চলছে মানুষের ওপর মানুষের প্রভুত্ব। আশুলিয়ার শ্রমিকদের পায়ের শেকল দেখা যায়, কিন্তু যে শ্রমিকদের পায়ে শেকল নেই, তাঁরাও কি মুক্ত? তাঁদেরও কি করতে হয় না শ্রমদাসত্ব? সরকার ও স্বেচ্ছাসেবক সংস্থার উন্নয়নের ডামাডোল এঁদের দিনবদল ঘটাতে পারেনি।
শ্রম আইন রয়েছে, রয়েছে শ্রম আদালত, রয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অজস্র কর্মিবাহিনী। এ ঘটনায় তাদের সবার টনক নড়া দরকার। পুলিশ বা র্যাব কবে খবর জানাবে, তার জন্য অপেক্ষা না করে তাদের উচিত স্বউদ্যোগে কর্ম পরিবেশ ও শ্রমিকবান্ধব মজুরি নিশ্চিতের জন্য কাজ করা। আশুলিয়ার ওই ইটভাটার মালিকসহ শ্রমিকদের নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তাই জরুরি। একই রকম জরুরি শ্রমজীবীদের জন্য মানুষের মতো জীবন, সম্মান ও মজুরির নিশ্চয়তা বিধান করা। নইলে সভ্যতার গর্ব গরলই ভেল বলে গণ্য হবে।
No comments