আড়িয়ল বিল-নিজভূমে বাস্তুহারা করবেন না by এস এম মুজিবুর রহমান
২১ জানুয়ারি শুক্রবার আমার গ্রাম বিক্রমপুরের আলমপুর ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামে যাই আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য। যেখানেই গেছি, স্বজনদের একটিই প্রশ্ন, আড়িয়ল বিলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করাটা কি এতই জরুরি? সারা দেশের রাস্তাঘাটের অবস্থা যেখানে ভালো নয়, বিক্রমপুরের ওপর দিয়ে যাওয়া ঢাকা-মাওয়া
মহাসড়কটিতে যেখানে খোয়া বিছানো এবড়োখেবড়ো, সেখানে সরকারি হিসাবে ৫০ হাজার কোটি টাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির মহাপরিকল্পনা যথেষ্ট চিন্তাভাবনার দাবি রাখে। কারণ প্রায় ১০ লাখ মানুষের প্রতিদিনের জীবন-জীবিকায় আড়িয়ল বিল যে ভূমিকা রেখে চলছে, তা কারও মুহূর্তের সিদ্ধান্তে না হয়ে যাওয়ার মতো তুচ্ছ কিছু নয়। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান-বুদ্ধিমতে, আড়িয়ল বিলকে বিমানবন্দর করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিচের বিষয়গুলো ভাবতে হবে হূদয় দিয়ে নয়, মগজ দিয়ে।
কৃষিজমি: প্রতিবছর প্রায় ২ শতাংশ আবাদি জমি কমে যাচ্ছে আবাসন, নদীভাঙন ইত্যাদি কারণে। এক দিকে যদি ধরে নিই ২ শতাংশ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার, তবে এটা বোঝার জন্য বড় মাপের মগজের দরকার হয় না যে আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশে আবাদি জমির পরিমাণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে! আন্দাজের ভারটি আমি ছেড়ে দিচ্ছি সরকারের নীতিনির্ধারকদের হাতে। তবে আন্দাজ শুরু করার আগে ২৫ হাজার একর আবাদি জমি এখনই বাদ দেবেন আপনাদের হিসাব থেকে! মনে রাখবেন, এলাকাটির ৮০ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত আড়িয়ল বিলের কৃষির ওপর। এই মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগে দয়া করে ভাববেন, প্রায় আট লাখ মানুষের জীবন-জীবিকার ভার কে নেবেন।
মৎস্যসম্পদ: আড়িয়ল বিলে রয়েছে অসংখ্য মাছ চাষের পুকুর, যেগুলোকে স্থানীয় ভাষায় ডাঙা বলা হয়। দুই লক্ষাধিক মানুষ সরাসরি এই মাছ উৎপাদন, বিপণন ও ধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত। এলাকার ভূমিহীন মানুষের আয়ের একমাত্র উৎস হলো এই আড়িয়ল বিলের মাছ। শুধু এলাকারই নয়, উত্তরবঙ্গের শত শত মানুষ এই বিলে মাছ উৎপাদন, মাছ ধরা ও মাছ-বিপণনের সঙ্গে জড়িত। ঢাকা তথা আশপাশের জেলায় আড়িয়ল বিলের মাছ সরবরাহ হচ্ছে বছরব্যাপী। ঢাকার বাজারগুলোতে যত মাছের সমাগম হয়, এর ৮০ শতাংশ জোগান দেয় এই আড়িয়ল বিল। স্বর্ণগর্ভা এই বিলকে রক্ষা করা জাতীয় কর্তব্য।
সামাজিক অর্থনীতি: আড়িয়ল বিল বিক্রমপুরের জনগণের সামাজিক অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে যুগ যুগ ধরে। বংশপরম্পরায় ভাগাভাগির কারণে বড় আকারের ভূস্বামীর সংখ্যা অতটা বড় নয় এখানে। যদি ধরে নিই ২০ শতাংশ মানুষের যথেষ্ট জমি রয়েছে প্রয়োজনের তুলনায়, ৫০ শতাংশের রয়েছে মোটামুটি চলার মতো জমি, আর ৩০ শতাংশ মানুষ হয় ভূমিহীন অথবা যৎসামান্য ভূমির মালিক। শেষের এই ৩০ শতাংশ মানুষ বর্গাচাষ আর খেতমজুরির সুবাদে বেঁচে আছে কোনো রকমে। প্রস্তাবিত বিমানবন্দরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গেই কর্মহীন ও রোজগারহীন হয়ে পড়বে বিশাল এই জনগোষ্ঠী। এত মানুষের বেঁচে থাকার দায়ভার সরকার নেবে কি? যদি না নেয়, তবে কর্মহীন এত মানুষ কোথায় দাঁড়াবে?
সামাজিক বিপর্যয়: প্রায় ১০০ বছর আগে রবীন্দ্রনাথের ‘দুই বিঘা জমি’র উপেন ছিল একজন। সরকারি জবরদখলের সুবাদে আড়িয়ল বিলের আশপাশের গ্রামগুলোতে নিঃস্ব হবে হাজার হাজার উপেন। সহায়-সম্বলহীন এসব মানুষ দেখবে তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল বিঘেখানি জমি চলে গেছে সরকারি দখলে। যেসব মানুষ বছর দুই আগে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এই বিক্রমপুর এলাকায় জয়ের মালা এনে দিয়েছে, তাঁর সরকারের হাতেই কি মানুষগুলো নিজ দেশে হবে পরবাসী, বাস্তুহারা? সরকারের নীতিনির্ধারকদের হাতেই ছেড়ে দিচ্ছি এই প্রশ্নের উত্তরের ভার।
ভূমিদস্যুদের কালো হাত: শোনা যাচ্ছে এরই মধ্যে দেশের ভূমিদস্যুদের অনেকেই ভিড় জমাচ্ছে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের চারপাশে। ২৫ হাজার একর জমির ভাগ ছাড়াও আশপাশের গ্রামগুলোতে তাদের কালো হাতের থাবার আভাস পাচ্ছে স্থানীয় জনগণ। চিহ্নিত ওই সব ভূমিদস্যুর দালালেরা এরই মধ্যে গ্রামগঞ্জের অভাবী মানুষকে লোভ দেখাতে শুরু করেছে টাকার থলি হাতে নিয়ে। শুনেছি, কোথাও কোথাও দুই কাঠা জমি কিনে বড় বড় সাইনবোর্ড টাঙাতে শুরু করেছে ভূমিদস্যুদের স্থানীয় দালালেরা। আড়িয়ল বিলের আশপাশের জায়গাজমির দাম বেড়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষ কেউ কেউ জমি বেচতে শুরু করছে, তাৎক্ষণিক কিছু পাওয়ার আশায়। নিজ দেশে পরবাসী হতে শুরু করছে অনেকেই।
ভীতসন্ত্রস্ত ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী: বিমানবন্দর স্থাপনের খবর ও জমি অধিগ্রহণের পাঁয়তারা স্থানীয় জনগণকে ভীতসন্ত্রস্ত ও ক্ষুব্ধ করেছে। ২১ জানুয়ারি শ্রীনগরে হয়ে গেল বিশাল জনসভা। স্থানীয় হাজার দশেক নারী-পুরুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমিও শামিল হয়েছিলাম। পরিবেশ আন্দোলনের জাতীয় নেতা, বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান, সদস্য এবং সর্বোপরি সাধারণ মানুষের উপস্থিতির সেই অসাধারণ এই জনসভাটিতে ভীতসন্ত্রস্ত মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখেছি। নিজের বসতবাটি ও চাষের জমিটুকু হারানোর ভয়ে ভীত মানুষগুলো সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে, ‘আমাদের নিজভূমে বাস্তুহারা বানাবেন না।’
বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার বিমানবন্দরের এই মহাপরিকল্পনার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে বলে আশা করি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ, এর সঙ্গে আন্তজেলা যোগাযোগের উন্নয়ন ও বর্তমান অবকাঠামোর পরিবর্ধনের মাধ্যমে একে অত্যাধুনিক বিমানবন্দরে রূপান্তর করে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো সম্ভব।
পরিশেষে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের রাজনীতি করেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আড়িয়ল বিলের আশপাশের ১০ লক্ষাধিক খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের কথা তিনি ভাববেন নিশ্চয়ই। প্রয়াত বন্ধু ও লেখক আহমদ ছফা একবার আক্ষেপ করে লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন জিতে তখন কয়েকজন নেতা-নেত্রী জিতেন, আর আওয়ামী লীগ হেরে গেলে সারা দেশ হেরে যায়।’ তাঁর প্রবাদপ্রমাণ কথাটি মিথ্যে প্রমাণিত হোক—আমি সেটাই কামনা করি। বিক্রমপুরের এই এলাকার ভয়ার্ত-সন্ত্রস্ত মানুষগুলো ফুঁসছে; তাদের ক্ষোভ বিক্ষোভে পরিণত হলে এলাকার আওয়ামী লীগের জন্য রাজনৈতিক বিপর্যয় হতে পারে—এটা বুঝতে না পারলে দেশের প্রধানতম দলটি সম্পর্কে আহমদ ছফার অমোঘ বাক্যটি সত্য প্রমাণিত হতে পারে।
ড. এস এম মুজিবুর রহমান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ও বর্তমানে ওমানের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান।
কৃষিজমি: প্রতিবছর প্রায় ২ শতাংশ আবাদি জমি কমে যাচ্ছে আবাসন, নদীভাঙন ইত্যাদি কারণে। এক দিকে যদি ধরে নিই ২ শতাংশ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার, তবে এটা বোঝার জন্য বড় মাপের মগজের দরকার হয় না যে আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশে আবাদি জমির পরিমাণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে! আন্দাজের ভারটি আমি ছেড়ে দিচ্ছি সরকারের নীতিনির্ধারকদের হাতে। তবে আন্দাজ শুরু করার আগে ২৫ হাজার একর আবাদি জমি এখনই বাদ দেবেন আপনাদের হিসাব থেকে! মনে রাখবেন, এলাকাটির ৮০ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত আড়িয়ল বিলের কৃষির ওপর। এই মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগে দয়া করে ভাববেন, প্রায় আট লাখ মানুষের জীবন-জীবিকার ভার কে নেবেন।
মৎস্যসম্পদ: আড়িয়ল বিলে রয়েছে অসংখ্য মাছ চাষের পুকুর, যেগুলোকে স্থানীয় ভাষায় ডাঙা বলা হয়। দুই লক্ষাধিক মানুষ সরাসরি এই মাছ উৎপাদন, বিপণন ও ধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত। এলাকার ভূমিহীন মানুষের আয়ের একমাত্র উৎস হলো এই আড়িয়ল বিলের মাছ। শুধু এলাকারই নয়, উত্তরবঙ্গের শত শত মানুষ এই বিলে মাছ উৎপাদন, মাছ ধরা ও মাছ-বিপণনের সঙ্গে জড়িত। ঢাকা তথা আশপাশের জেলায় আড়িয়ল বিলের মাছ সরবরাহ হচ্ছে বছরব্যাপী। ঢাকার বাজারগুলোতে যত মাছের সমাগম হয়, এর ৮০ শতাংশ জোগান দেয় এই আড়িয়ল বিল। স্বর্ণগর্ভা এই বিলকে রক্ষা করা জাতীয় কর্তব্য।
সামাজিক অর্থনীতি: আড়িয়ল বিল বিক্রমপুরের জনগণের সামাজিক অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে যুগ যুগ ধরে। বংশপরম্পরায় ভাগাভাগির কারণে বড় আকারের ভূস্বামীর সংখ্যা অতটা বড় নয় এখানে। যদি ধরে নিই ২০ শতাংশ মানুষের যথেষ্ট জমি রয়েছে প্রয়োজনের তুলনায়, ৫০ শতাংশের রয়েছে মোটামুটি চলার মতো জমি, আর ৩০ শতাংশ মানুষ হয় ভূমিহীন অথবা যৎসামান্য ভূমির মালিক। শেষের এই ৩০ শতাংশ মানুষ বর্গাচাষ আর খেতমজুরির সুবাদে বেঁচে আছে কোনো রকমে। প্রস্তাবিত বিমানবন্দরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গেই কর্মহীন ও রোজগারহীন হয়ে পড়বে বিশাল এই জনগোষ্ঠী। এত মানুষের বেঁচে থাকার দায়ভার সরকার নেবে কি? যদি না নেয়, তবে কর্মহীন এত মানুষ কোথায় দাঁড়াবে?
সামাজিক বিপর্যয়: প্রায় ১০০ বছর আগে রবীন্দ্রনাথের ‘দুই বিঘা জমি’র উপেন ছিল একজন। সরকারি জবরদখলের সুবাদে আড়িয়ল বিলের আশপাশের গ্রামগুলোতে নিঃস্ব হবে হাজার হাজার উপেন। সহায়-সম্বলহীন এসব মানুষ দেখবে তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল বিঘেখানি জমি চলে গেছে সরকারি দখলে। যেসব মানুষ বছর দুই আগে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এই বিক্রমপুর এলাকায় জয়ের মালা এনে দিয়েছে, তাঁর সরকারের হাতেই কি মানুষগুলো নিজ দেশে হবে পরবাসী, বাস্তুহারা? সরকারের নীতিনির্ধারকদের হাতেই ছেড়ে দিচ্ছি এই প্রশ্নের উত্তরের ভার।
ভূমিদস্যুদের কালো হাত: শোনা যাচ্ছে এরই মধ্যে দেশের ভূমিদস্যুদের অনেকেই ভিড় জমাচ্ছে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের চারপাশে। ২৫ হাজার একর জমির ভাগ ছাড়াও আশপাশের গ্রামগুলোতে তাদের কালো হাতের থাবার আভাস পাচ্ছে স্থানীয় জনগণ। চিহ্নিত ওই সব ভূমিদস্যুর দালালেরা এরই মধ্যে গ্রামগঞ্জের অভাবী মানুষকে লোভ দেখাতে শুরু করেছে টাকার থলি হাতে নিয়ে। শুনেছি, কোথাও কোথাও দুই কাঠা জমি কিনে বড় বড় সাইনবোর্ড টাঙাতে শুরু করেছে ভূমিদস্যুদের স্থানীয় দালালেরা। আড়িয়ল বিলের আশপাশের জায়গাজমির দাম বেড়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষ কেউ কেউ জমি বেচতে শুরু করছে, তাৎক্ষণিক কিছু পাওয়ার আশায়। নিজ দেশে পরবাসী হতে শুরু করছে অনেকেই।
ভীতসন্ত্রস্ত ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী: বিমানবন্দর স্থাপনের খবর ও জমি অধিগ্রহণের পাঁয়তারা স্থানীয় জনগণকে ভীতসন্ত্রস্ত ও ক্ষুব্ধ করেছে। ২১ জানুয়ারি শ্রীনগরে হয়ে গেল বিশাল জনসভা। স্থানীয় হাজার দশেক নারী-পুরুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমিও শামিল হয়েছিলাম। পরিবেশ আন্দোলনের জাতীয় নেতা, বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান, সদস্য এবং সর্বোপরি সাধারণ মানুষের উপস্থিতির সেই অসাধারণ এই জনসভাটিতে ভীতসন্ত্রস্ত মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখেছি। নিজের বসতবাটি ও চাষের জমিটুকু হারানোর ভয়ে ভীত মানুষগুলো সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে, ‘আমাদের নিজভূমে বাস্তুহারা বানাবেন না।’
বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার বিমানবন্দরের এই মহাপরিকল্পনার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে বলে আশা করি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ, এর সঙ্গে আন্তজেলা যোগাযোগের উন্নয়ন ও বর্তমান অবকাঠামোর পরিবর্ধনের মাধ্যমে একে অত্যাধুনিক বিমানবন্দরে রূপান্তর করে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো সম্ভব।
পরিশেষে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের রাজনীতি করেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আড়িয়ল বিলের আশপাশের ১০ লক্ষাধিক খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের কথা তিনি ভাববেন নিশ্চয়ই। প্রয়াত বন্ধু ও লেখক আহমদ ছফা একবার আক্ষেপ করে লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন জিতে তখন কয়েকজন নেতা-নেত্রী জিতেন, আর আওয়ামী লীগ হেরে গেলে সারা দেশ হেরে যায়।’ তাঁর প্রবাদপ্রমাণ কথাটি মিথ্যে প্রমাণিত হোক—আমি সেটাই কামনা করি। বিক্রমপুরের এই এলাকার ভয়ার্ত-সন্ত্রস্ত মানুষগুলো ফুঁসছে; তাদের ক্ষোভ বিক্ষোভে পরিণত হলে এলাকার আওয়ামী লীগের জন্য রাজনৈতিক বিপর্যয় হতে পারে—এটা বুঝতে না পারলে দেশের প্রধানতম দলটি সম্পর্কে আহমদ ছফার অমোঘ বাক্যটি সত্য প্রমাণিত হতে পারে।
ড. এস এম মুজিবুর রহমান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ও বর্তমানে ওমানের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান।
No comments