কর্তৃপক্ষ ভাবছে কী?-সম্ভাবনা ও অর্জনের গুম
ইদানীং মানুষের ঘুম হোক আর না হোক, দেশে মাঝে মাঝে মানুষ গুম হচ্ছে। গুমের প্রতিবাদে একটি দল নিয়মিত হরতাল ডাকছে। শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে সেসব হরতাল। আহ্া! কী শান্তি! কী শান্তি! কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিজেদের ঘুমকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করলেও গুমকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না।
অথচ এই গুম দেশের জন্য বয়ে আনতে পারে ব্যাপক পরিচিতি এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি। গুম করার এই অসামান্য প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে আমরা অর্জন করতে পারি বিপুলসংখ্যক বৈদেশিক মুদ্রা। দুর্নীতিকে আমরা যেমন শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছি, একটু চেষ্টা করলে গুমকেও আমরা শিল্পে উন্নীত করতে পারব। নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মানুষকে গুম করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু দক্ষ গুমশিল্পীর অভাবে অনেক দেশই ইচ্ছামতো গুম করতে পারে না। চাইলেই কাউকে গুম করতে পারি একমাত্র আমরাই। তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশের ইলিশ, জামদানির মতো দক্ষ গুমশিল্পীদের চাহিদা বেশি হবে—এটাই স্বাভাবিক। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আমরা যদি বিশ্বব্যাপী গুম করা শুরু করি, কোনো দেশ আমাদের কাছে পাত্তাই পাবে না। যেমন, আমাদের দেশের গুমশিল্পীদের কাছে আবেদন আসতে পারে—‘উজবেকিস্তান সরকারের বিনীত নিবেদন এই যে আমাদের এক নেতা খুব বাড়াবাড়ি করছে, তাকে অবিলম্বে গুম করা দরকার। এ জন্য উজবেক সরকার আপনাদের সহায়তা আশা করছে।’ দূর-দূরান্ত থেকে যেভাবে অতিথি পাখি আসে, ঠিক সেভাবে বাংলাদেশি গুমশিল্পীদের কাছেও এমন আরও কত আবেদন যে আসবে, তার কোনো হিসাবই নেই। তাই আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রক্ষা এবং লোকাল গুমশিল্পীদের সুষম বণ্টনের জন্য প্রথমেই দরকার একটি গুম ইনস্টিটিউট। প্রতিদিন কী পরিমাণ গুম হচ্ছে, প্রতি জেলায় আরও কয়টি গুম দরকার, কী কী করলে আরও ভালোভাবে গুম করা সম্ভব, কে কাকে গুম করবে, পেমেন্ট কত হবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা এবং সে পর্যালোচনাকে বাস্তব রূপ দেওয়াই এই ইনস্টিটিউটের কাজ। অল্প কদিনের মধ্যেই গুমের জগতে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠবে বাংলাদেশ। গুম করা শেখানোর জন্য গড়ে উঠবে প্রচুর প্রশিক্ষণকেন্দ্র বা কোচিং সেন্টার। ‘কীভাবে গুম করবেন’ বা ‘গুমের সহজ কলাকৌশল’ টাইপের প্রচুর বই লেখা হবে। সব মিলিয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাববে।
বি.দ্র.: এতক্ষণ যে লেখাটি পড়লেন তা ছাপা হওয়ার কথা ছিল না। গুম নিয়ে লেখা প্রকৃত রসকীয়টি কীভাবে যেন গুম হয়ে গেছে। কে বা কারা এই গুম করেছে তা এখনো বের করা সম্ভব হয়নি।
বি.দ্র.: এতক্ষণ যে লেখাটি পড়লেন তা ছাপা হওয়ার কথা ছিল না। গুম নিয়ে লেখা প্রকৃত রসকীয়টি কীভাবে যেন গুম হয়ে গেছে। কে বা কারা এই গুম করেছে তা এখনো বের করা সম্ভব হয়নি।
No comments