হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা দুঃখজনক-দশ লাখ টাকার ওষুধ ফেলে দেওয়া!

যে দেশে বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষ রোগে আক্রান্ত হলে ওষুধ কিনতে পারে না, সেই দেশে ১০ লাখ টাকা মূল্যের ওষুধ ফেলে দিতে হচ্ছে—এটা দুর্ভাগ্যজনক খবর। জাতীয় হূদেরাগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দামি ওষুধসহ অনেক ওষুধ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের না দিয়ে গুদামে ফেলে রেখেছিল।


রুগ্ণ-পীড়িত মানবতার প্রতি এ রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবাধর্মী জাতীয় প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সংবেদনশীলতার অভাব ও দায়িত্বহীনতা যারপরনাই দুঃখজনক।
হাসপাতালের পরিচালক আবুল হোসেইন খান বলেছেন, যেসব রোগী হাসপাতালটির বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে যায়, তাদের ওষুধ দেওয়া হলে যেসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসারত থাকে, তাদের ওষুধসংকট হতে পারে—এই আশঙ্কা থেকে তাঁরা বহির্বিভাগের রোগীদের ওষুধ দেন না। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভর্তি রোগীদেরও প্রয়োজনমতো ওষুধ দেওয়া হয় না। তাদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনতে হয়। অর্থাৎ বহির্বিভাগ-অন্তর্বিভাগনির্বিশেষে রোগীদের ওষুধ না দিয়ে গুদামে ফেলে রেখে ১০ লাখ টাকার ওষুধ নষ্ট করা হয়েছে। এটা স্পষ্টতই দায়-দায়িত্বহীনতা ও চরম অব্যবস্থাপনার ফল। হাসপাতালের অনেক চিকিৎসকও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলেছেন।
জাতীয় হূদেরাগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল জনসেবার এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। অনেক ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি বিনা মূল্যে এই প্রতিষ্ঠানকে বিপুল পরিমাণ ওষুধ দান করে থাকে। যে ওষুধগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেল বলে এখন ফেলে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যেও অনেক ওষুধ রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি বিনা মূল্যে দান করেছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, ওষুধগুলো দরিদ্র রোগীদের সেবায় কাজে লাগানো হবে। কিন্তু যখন কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় ও দায়িত্ববোধের অভাবে ওষুধগুলো কোনো কাজেই লাগল না, তখন ওই সব অষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বদান্যতাকেও অসম্মান করা হলো।
এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে হলে কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। যাঁদের অবহেলায় ওষুধগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধগুলো যেন কেউ ব্যবহার না করতে পারে বা চোরাই পথে বিক্রি হয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করতে এগুলো নষ্ট করে ফেলা হোক।

No comments

Powered by Blogger.