হায় নিধিরাম! by জয় প্রকাশ
নিধিরামের বিপদ আর কাটে না। একটা বিপদ কাটিয়ে ওঠে তো আরেকটা বিপদ এসে ঘিরে ধরে। একবার এক মহিলাকে হঠাৎ রাস্তায় মাথা ঘুরে পড়ে যেতে দেখে হাসপাতালে নিয়ে গেল নিধিরাম। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে মুচকি হেসে জানালেন, সুখবর মি. নিধিরাম, আপনি বাবা হতে চলেছেন। নিধিরাম তো অবাক।
সে প্রতিবাদ করে জানাল, এই বাচ্চার বাবা সে নয়। ব্যাপারটা থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়াল। শেষমেশ মেডিকেল বোর্ড হলো এবং প্রমাণ হলো, এই বাচ্চার বাবা নিধিরাম না। কিন্তু পাশাপাশি মেডিকেল বোর্ড জানিয়ে দিল, পরীক্ষায় ধরা পড়েছে নিধিরাম কোনো দিন বাবা হতে পারবে না। এবার নিধিরাম অবাক নয়, বিমর্ষ। গেল অন্য ডাক্তারদের কাছে। এই যাত্রায়ও নিধিরাম বেঁচে গেল। ডাক্তাররা বললেন, আগের রিপোর্ট ভুল। কারণ নিধিরাম অবশ্যই মা হওয়ার যোগ্যতা রাখে। এবার নিধিরামের মাথা নষ্ট হওয়ার জোগাড়। সে পুরুষ হয়ে বাচ্চার মা হবে কী করে? কোথাও একটা ঝামেলা হচ্ছে। বহু দৌড়ঝাঁপ শেষে নিধিরাম জানতে পারল, আবারও সে একটা ভুলের শিকার হয়েছে। আসলে অন্য এক মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট ভুল করে নিধিরামের নামে লেখা হয়ে গেছে। অবশেষে বিয়ে না করেই বাবা এবং নারী না হয়েও মা হওয়ার বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেল নিধিরাম। নানা ঘটনায় বিপর্যস্ত নিধিরাম যখন সব ঝামেলা শেষে বাড়ি ফিরছিল, তখন পুলিশ তাকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে গেল। অভিযোগ, এক লোক সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যাওয়ার আগে শুধু একটি নামই উচ্চারণ করেছিল। সেই নামটা হলো ‘নিধিরাম’। বেচারা নিধিরামকে বিনা দোষে থানা-হাজতে যেতে হলো এবং সারা রাত সেখানে থাকার পর সকালে সে মুক্তি পেল। মুক্তির আনন্দে নিধিরাম যখন হাসতে হাসতে বাইরে এসে জিজ্ঞেস করল কীভাবে সে এই বিপদ থেকে মুক্তি পেল, তখন বাইরে অপেক্ষমাণ আত্মীয়স্বজনেরা জানাল, নিহত লোকটি নিধিরামেরই বাবা। মারা যাওয়ার আগে একবার ছেলেকে দেখতে চেয়ে নামটা উচ্চারণ করেছিলেন। এটা প্রমাণ হওয়ায় পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। মুক্তির আনন্দ ভুলে গেল নিধিরাম। বাবার মৃত্যুসংবাদ শুনে বুকটা হু হু করে উঠল। বিপদ থেকে বেঁচে গিয়ে নিধিরাম এবার বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ল।
[গল্পটি কোনো সংগৃহীত গল্প নয়। এই নিধিরামের মধ্যে কি আপনি বারবার এ দেশের জনগণের প্রতিচ্ছবি দেখতে পান?]
[গল্পটি কোনো সংগৃহীত গল্প নয়। এই নিধিরামের মধ্যে কি আপনি বারবার এ দেশের জনগণের প্রতিচ্ছবি দেখতে পান?]
No comments