রমজানে নফল ইবাদতের গুরুত্ব by আ ফ ম খালিদ হোসেন
হাদিসে কুদসিতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, 'প্রত্যেক আদম সন্তানের নেক আমলের প্রতিদান দশগুণ থেকে সাতশ' গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রোজা এসবের ব্যতিক্রম। কেননা রোজা আমার জন্য এবং আমি নিজে তার প্রতিদান দেব বা আমিই তার প্রতিদান।
' রোজার কারণেই রমজান মাসের একটি নফল ইবাদত অন্য মাসের ফরজের সমান এবং একটি ফরজ ইবাদতে অন্য মাসের সত্তরটি ফরজ ইবাদতের সমান সওয়াব। নেকি বৃদ্ধি হওয়ার ভিত্তি একমাত্র আমলকারীর নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও ইখলাসের ওপর। ইখলাসের তারতম্যে সওয়াবের তারতম্য ঘটে। শুধু তা-ই নয় আল্লাহপাক চাইলে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারেন। কিন্তু রোজার সওয়াবের সীমা নেই, যা একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর নিজ কুদরতি হাতে রেখেছেন।
রমজান এমন একটি মাস যে মাসে ইবাদতের সওয়াব অনেক বেশি। সুতরাং আল্লাহর দরবারে বিনয়াবনত হয়ে কাতর কণ্ঠে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে যেন শারীরিক সুস্থতা ও মনের শুদ্ধতা নিয়ে দিনের বেলায় সিয়াম সাধনা ও রাতে তেলাওয়াতে কোরআন ও নফল ইবাদতের মাধ্যমে এই মোবারক মাসের সদ্ব্যবহার করা যায়। কারণ রমজান হলো কৃচ্ছ্রসাধন করে আখিরাতের সম্বল সংগ্রহের এক উত্তম সময়। জাগতিক ধন-সম্পদ উপার্জনে যেমন বিশেষ মৌসুম ও উপলক্ষ আছে, তেমনি রমজান মাসও সৎকর্ম ও আখিরাতের নেকি লাভের উত্তম মৌসুম। তাই বেশি করে নফল ইবাদত, নামাজ, জিকির, কোরআন তেলাওয়াত, ইস্তেগফার, দরুদ ও মোনাজাতে সময় ব্যয় করা রোজাদারের জন্য একান্ত কর্তব্য। মহানবী (সা.)-এর মতে রোজা হলো সংযম, সহমর্মিতা ও ধৈর্যের মাস। আর এসব আমলের প্রতিদান হলো জান্নাত। অতএব জান্নাত লাভের আশায় সংযম ও ধৈর্য ধারণ করে একাগ্রতার সঙ্গে আল্লাহর কাছে তওবা, ক্ষমা ও সাহায্য কামনা করতে হবে। রাসূূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। এতে ইফতারকারীর সওয়াব হ্রাস করা হবে না (সুনান তিরমিজি)।' এ প্রসঙ্গে তিনি (সা.) বলেন, রোজা ও কোরআন কিয়ামত দিবসে রোজাদার বান্দার জন্য শাফায়াত করবে। রোজা বলবে, হে আল্লাহ্! আমি এ ব্যক্তিকে দিনে খাবার ও অন্যান্য কামনা-বাসনা থেকে বিরত রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। কোরআন বলবে, হে আল্লাহ! আমি এ ব্যক্তিকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন (মুসনাদে আহমদ)। আল্লাহ তাদের সুপারিশ কবুল করে জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামত দান করবেন।
রোজাদার বান্দা রোজা অবস্থায় কোনো দোয়া করলে তা ফেরত দেওয়া হয় না; বরং তা কবুল করা হয়। মানুষের ইহকালীন জীবনে রমজান মাস পেলে পরকালীন জীবনের সম্বল সংগ্রহ করার বিরাট সুযোগ হাতে আসে। তাই এ মাসে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির প্রত্যাশায় বেশি বেশি দোয়া করা দরকার আল্লাহতায়ালার দরবারে। রমজান মাসে মানুষ মৃত্যুবরণ করলে আজাব থেকে আত্মরক্ষা ও জান্নাতপ্রাপ্তির সুযোগ হয়। কেননা মাহে রমজানে কবরের আজাব বন্ধ থাকে, রহমতের বারিধারা বর্ষিত হয়ে থাকে।
মহানবী (সা.) ছিলেন মানবহিতৈষী ও দয়ালু। রমজান মাস এলে তাঁর বদান্যতার মাত্রা বহুগুণে বেড়ে যেত; কোনো যাচনাকারীকে তিনি খালি হাতে ফেরত দিতেন না। দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষকে ভালোবাসার তাগিদ দিয়ে মহানবী (সা.) বলেন, 'হে আয়েশা! অভাবগ্রস্ত মানুষকে ফেরত দিও না। একটি খেজুরকে টুকরো টুকরো করে হলেও দান করো এবং অভাবগ্রস্তদের কাছে টানো। কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তোমাকে কাছে টানবেন।' অপর এক হাদিসে আছে. 'খেজুরের একটি টুকরো দরিদ্র মানুষকে দান করে জাহান্নামের আগুন থেকে নিষ্কৃতি লাভ করো।'
আমরা আল্লাহর নির্দেশনা ও তাঁর রাসূলের শিক্ষা ভুলে গিয়ে নানা রকম ভুল-ভ্রান্তি, ত্রুটি-বিচ্যুতি, অন্যায়-অপকর্ম, অত্যাচার-নির্যাতনে জড়িয়ে পড়ি। অজস্র গুনাহর কঠিন আবর্তে নিমজ্জিত হই। মহান আল্লাহতায়ালা পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তাই তিনি এত কিছুর পরও তার প্রিয় বান্দাদের প্রতি সদয় হয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষমার ব্যবস্থা করে রেখেছেন। পবিত্র রমজান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ক্ষমা ও মার্জনালাভের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট মাস। এই মহামহিমান্বিত মাসে ফরজের পাশাপাশি নানাবিধ নফল ইবাদতে যদি আমরা মনোযোগী হতে পারি, তাহলে আমাদের জীবন হবে সুন্দর, সফল ও অর্থবহ। আল্লাহ্র রাসূল (সা.) এ মাস সম্পর্কে বলেন, রমজান মাস সারা বছরের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম মাস, দোয়া কবুলের মাস।
drkhalid09@gmail.com
রমজান এমন একটি মাস যে মাসে ইবাদতের সওয়াব অনেক বেশি। সুতরাং আল্লাহর দরবারে বিনয়াবনত হয়ে কাতর কণ্ঠে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে যেন শারীরিক সুস্থতা ও মনের শুদ্ধতা নিয়ে দিনের বেলায় সিয়াম সাধনা ও রাতে তেলাওয়াতে কোরআন ও নফল ইবাদতের মাধ্যমে এই মোবারক মাসের সদ্ব্যবহার করা যায়। কারণ রমজান হলো কৃচ্ছ্রসাধন করে আখিরাতের সম্বল সংগ্রহের এক উত্তম সময়। জাগতিক ধন-সম্পদ উপার্জনে যেমন বিশেষ মৌসুম ও উপলক্ষ আছে, তেমনি রমজান মাসও সৎকর্ম ও আখিরাতের নেকি লাভের উত্তম মৌসুম। তাই বেশি করে নফল ইবাদত, নামাজ, জিকির, কোরআন তেলাওয়াত, ইস্তেগফার, দরুদ ও মোনাজাতে সময় ব্যয় করা রোজাদারের জন্য একান্ত কর্তব্য। মহানবী (সা.)-এর মতে রোজা হলো সংযম, সহমর্মিতা ও ধৈর্যের মাস। আর এসব আমলের প্রতিদান হলো জান্নাত। অতএব জান্নাত লাভের আশায় সংযম ও ধৈর্য ধারণ করে একাগ্রতার সঙ্গে আল্লাহর কাছে তওবা, ক্ষমা ও সাহায্য কামনা করতে হবে। রাসূূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। এতে ইফতারকারীর সওয়াব হ্রাস করা হবে না (সুনান তিরমিজি)।' এ প্রসঙ্গে তিনি (সা.) বলেন, রোজা ও কোরআন কিয়ামত দিবসে রোজাদার বান্দার জন্য শাফায়াত করবে। রোজা বলবে, হে আল্লাহ্! আমি এ ব্যক্তিকে দিনে খাবার ও অন্যান্য কামনা-বাসনা থেকে বিরত রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। কোরআন বলবে, হে আল্লাহ! আমি এ ব্যক্তিকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন (মুসনাদে আহমদ)। আল্লাহ তাদের সুপারিশ কবুল করে জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামত দান করবেন।
রোজাদার বান্দা রোজা অবস্থায় কোনো দোয়া করলে তা ফেরত দেওয়া হয় না; বরং তা কবুল করা হয়। মানুষের ইহকালীন জীবনে রমজান মাস পেলে পরকালীন জীবনের সম্বল সংগ্রহ করার বিরাট সুযোগ হাতে আসে। তাই এ মাসে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির প্রত্যাশায় বেশি বেশি দোয়া করা দরকার আল্লাহতায়ালার দরবারে। রমজান মাসে মানুষ মৃত্যুবরণ করলে আজাব থেকে আত্মরক্ষা ও জান্নাতপ্রাপ্তির সুযোগ হয়। কেননা মাহে রমজানে কবরের আজাব বন্ধ থাকে, রহমতের বারিধারা বর্ষিত হয়ে থাকে।
মহানবী (সা.) ছিলেন মানবহিতৈষী ও দয়ালু। রমজান মাস এলে তাঁর বদান্যতার মাত্রা বহুগুণে বেড়ে যেত; কোনো যাচনাকারীকে তিনি খালি হাতে ফেরত দিতেন না। দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষকে ভালোবাসার তাগিদ দিয়ে মহানবী (সা.) বলেন, 'হে আয়েশা! অভাবগ্রস্ত মানুষকে ফেরত দিও না। একটি খেজুরকে টুকরো টুকরো করে হলেও দান করো এবং অভাবগ্রস্তদের কাছে টানো। কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তোমাকে কাছে টানবেন।' অপর এক হাদিসে আছে. 'খেজুরের একটি টুকরো দরিদ্র মানুষকে দান করে জাহান্নামের আগুন থেকে নিষ্কৃতি লাভ করো।'
আমরা আল্লাহর নির্দেশনা ও তাঁর রাসূলের শিক্ষা ভুলে গিয়ে নানা রকম ভুল-ভ্রান্তি, ত্রুটি-বিচ্যুতি, অন্যায়-অপকর্ম, অত্যাচার-নির্যাতনে জড়িয়ে পড়ি। অজস্র গুনাহর কঠিন আবর্তে নিমজ্জিত হই। মহান আল্লাহতায়ালা পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তাই তিনি এত কিছুর পরও তার প্রিয় বান্দাদের প্রতি সদয় হয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষমার ব্যবস্থা করে রেখেছেন। পবিত্র রমজান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ক্ষমা ও মার্জনালাভের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট মাস। এই মহামহিমান্বিত মাসে ফরজের পাশাপাশি নানাবিধ নফল ইবাদতে যদি আমরা মনোযোগী হতে পারি, তাহলে আমাদের জীবন হবে সুন্দর, সফল ও অর্থবহ। আল্লাহ্র রাসূল (সা.) এ মাস সম্পর্কে বলেন, রমজান মাস সারা বছরের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম মাস, দোয়া কবুলের মাস।
drkhalid09@gmail.com
No comments