স্মরণ-দ্রোহ ও তারুণ্যের কবি by আহমেদ বাসার
দশকভিত্তিক কবিতায় সত্তরের দশকে বাংলাদেশের কবিতা বিচিত্র মতি ও গতিপ্রাপ্ত হয়। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে আবির্ভূত এই সময়ে কবিদের ভাবনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়। কেউ বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার স্তবে মুখর, কেউ স্বপ্ন ও বাস্তবতার দূরত্বে হতাশ, কেউ বা ক্ষুব্ধ ও বীতশ্রদ্ধ।
এই সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের কবিতায় আবির্ভাব ঘটে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর (১৯৫৬-১৯৯১)। সপ্রতিভ মানবিক অনুভব, নিবিড় রাজনীতিচেতনা ও আবেগের সততায় তিনি সত্তরের দশকের অন্যান্য কবি থেকে স্বতন্ত্র হয়ে ওঠেন।
আজ কবির ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী।
মাত্র ৩৫ বছরের নাতিদীর্ঘ জীবনসীমায় রুদ্র রচনা করেন সাতটি অত্যুজ্জ্বল কাব্যগ্রন্থ—উপদ্রুত উপকূল (১৯৭৯), ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম (১৯৮১), মানুষের মানচিত্র (১৯৮৪), ছোবল (১৯৮৭), গল্প (১৯৮৭), দিয়েছিলে সকল আকাশ (১৯৮৮) ও মৌলিক মুখোশ (১৯৯০)। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী পরিস্থিতিকে অবলম্বন করে তিনি বিষ বিরিক্ষের বীজ নামে একটি কাব্যনাট্যও রচনা করেন। এ ছাড়া তাঁর বেশ কিছু গল্প এবং অগ্রন্থিত বহু রচনা পত্রপত্রিকা ও লিটল ম্যাগাজিনের পাতায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সংগীতের বীজও রুদ্রের রক্তে প্রোথিত ছিল। ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ তাঁর বহুল শ্রুত ও জনপ্রিয় একটি গান।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সেই কবি, জীবন যাঁর কাছে দেশলাইয়ের কাঠির মতো বারুদগন্ধী, বিস্ফোরণোন্মুখ। সময়, সমাজের প্রতিকূলতায় যিনি নতজানু নন, বরং জ্বলে ওঠেন সপ্রতিভ শিখার মতো। আত্মরমণপ্রিয় ও পৌরুষহীনদের প্রতি তাঁর ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তীব্রভাবে:
‘তোমাদের শিল্প মানে প্রতারনা, শব্দের জোচ্চুরি
তোমাদের শিল্প হলো অন্ধকারে আঁধার সন্ধান।’
জীবন ও শিল্পের দূরত্বে অবিশ্বাসী রুদ্র সমাজ ও রাজনীতিকেই করে তুলেছেন কবিতার প্রধান উপজীব্য। ‘অশুভের সঙ্গে আপসবিহীন দ্বন্দ্ব’ তাঁর রচনার মৌল প্রবণতা। এই দুর্বিনীত ও লড়াকু মনোভাব তাঁর কবিতাকে শিল্পের অধিক কিছু করে তোলে।
মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলায় আবার স্বাধীনতাবিরোধীদের অপতৎপরতা শুরু হয়। চারদিকে জেগে ওঠে হায়েনাদের পদধ্বনি, সামরিক শাসনের অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় দেশ-জাতি-সমাজ। এ সময় ক্ষুব্ধ কবির প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হয় অনবদ্য পঙিক্তমালায়:
‘আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই,
আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে
এ-দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়?
জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন।’
রুদ্রের কাব্যদর্শন ও জীবনভাবনার গতিবিধি স্পষ্ট হয়ে ওঠে উপর্যুক্ত পঙিক্তমালায়। কালের নাড়ির স্পন্দন তাঁকে অস্থির করে তোলে। তাঁর দ্রোহ-চেতনার জন্মসূত্রও এই অনুভূতিপ্রবণতা। আপসকামী মানসিকতা কখনো সমাজ বদলের অনুকূল নয়। এই অমোঘ সত্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন বলেই রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ দ্রোহী ও প্রতিবাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতায় মিছিল, রাজপথ, সভা-সমাবেশ কিংবা রাজনৈতিক বক্তৃতা ও স্লোগানের দৃশ্য ঘুরেফিরে এসেছে। তবে রুদ্র শৈল্পিক শর্তের প্রতি শৈথিল্য দেখাননি। বাস্তবতাকে তিনি শিল্পের পাল্লায় পরিমাপ করেছেন। দ্রোহ ও প্রতিবাদী চেতনার রূপায়ণে তিনি প্রকৃতির বিধি উপকরণ এবং চমকপ্রদ ও অভাবিতপূর্ব উপমা, রূপক ও চিত্রকল্পের আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁর এই শিল্পবোধের অনন্যতায় নিতান্তই বক্তব্যধর্মী উক্তি, পঙিক্ত, দাবিদাওয়া কিংবা স্লোগানও কবিতার মহিমা পেয়ে যায়, উত্তীর্ণ হয় বৃহত্তর শিল্প পরিসীমায়।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর আরেকটি সম্পদ তারুণ্য। তারুণ্যের প্রাণবন্ত, সজীব ও অফুরন্ত উদ্যম তাঁর কবিতায় যোগ করেছে নতুন মাত্রা। সব ধরনের জীর্ণ প্রথা, কুসংস্কার ও প্রতিবন্ধকতা পেছনে ফেলে রুদ্র এগিয়ে যান অন্য এক জীবন অন্বেষায়, যে জীবন যৌক্তিক অথচ স্বপ্নময়, যেখানে অবারিত মুক্ত মাঠ আর নির্মল হাওয়ার উল্লাস: ‘সেখানে অপেক্ষা কোরে আছে এক নিমগ্ন বাউল স্নিগ্ধ একতারা হাতে/ সেইখানে পাখিদের জন্যে কোন খাঁচা কেউ ভালোবেসে নির্মান করে নি/ সেখানে নদীর নাম ভালোবাসা, তরুদের খোলামেলা ডাক নাম প্রেম/ বিশ্বাস বন্ধুর মতো কাঁধে হাত রেখে হাঁটে, সেই খানে ফোটে শত ফুল।’ এই প্রেমময় পুষ্পিত জীবনযাত্রায় সমকাল বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে দ্রোহ অনিবার্য হয়ে পড়ে।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ শুধু একজন কবিতাকর্মীই নন, প্রতিবাদী মিছিল-সমাবেশে তাঁর সক্রিয় পদচারণও লক্ষ করার মতো। পঁচাত্তর-পরবর্তী প্রায় সব গণ-আন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে রুদ্র তৎপর ছিলেন। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও তিনি পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন। ‘সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট’ ও ‘জাতীয় কবিতা পরিষদ’-এর তিনি অন্যতম উদ্যোক্তা। জীবন ও শিল্প তাঁর চেতনায় এক ও অবিচ্ছিন্ন। ফলে জীবনকে তিনি শিল্প করে তুলতে চেয়েছেন কিংবা শিল্পকেই নিতে চেয়েছেন জীবনের কাছাকাছি।
কবিতার ভাষা নিয়েও রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিনি নিজস্ব বানানরীতি অনুসরণ করেছেন। বাংলা ভাষায় ‘ণ’-এর (মূর্ধন্য ণ) উচ্চারণ নেই, তাই তিনি কবিতায় ‘ণ’ ব্যবহার করেননি। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে উচ্চারণ অনুযায়ী তিনি শব্দের বানান লিপিবদ্ধ করেছেন। এ ক্ষেত্রে কারও হয়তো দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু তাঁর চিন্তার নতুনত্ব অস্বীকার করা যায় না। সর্বোপরি, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ জীবন ও শিল্পের মেলবন্ধনে যে দ্যুতিময় পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেছেন, তা তাঁকে অন্য এক উচ্চতায় অধিষ্ঠিত করেছে। জন কিটস, ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা, আবুল হাসান প্রমুখ ক্ষণজীবী কবির মতো রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহও এক উজ্জ্বল চিরতরুণ কবির প্রতিকৃতিতে বেঁচে থাকবেন শিল্পে, পাঠকের মনোলোকে।
আহমেদ বাসার
আজ কবির ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী।
মাত্র ৩৫ বছরের নাতিদীর্ঘ জীবনসীমায় রুদ্র রচনা করেন সাতটি অত্যুজ্জ্বল কাব্যগ্রন্থ—উপদ্রুত উপকূল (১৯৭৯), ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম (১৯৮১), মানুষের মানচিত্র (১৯৮৪), ছোবল (১৯৮৭), গল্প (১৯৮৭), দিয়েছিলে সকল আকাশ (১৯৮৮) ও মৌলিক মুখোশ (১৯৯০)। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী পরিস্থিতিকে অবলম্বন করে তিনি বিষ বিরিক্ষের বীজ নামে একটি কাব্যনাট্যও রচনা করেন। এ ছাড়া তাঁর বেশ কিছু গল্প এবং অগ্রন্থিত বহু রচনা পত্রপত্রিকা ও লিটল ম্যাগাজিনের পাতায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সংগীতের বীজও রুদ্রের রক্তে প্রোথিত ছিল। ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ তাঁর বহুল শ্রুত ও জনপ্রিয় একটি গান।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সেই কবি, জীবন যাঁর কাছে দেশলাইয়ের কাঠির মতো বারুদগন্ধী, বিস্ফোরণোন্মুখ। সময়, সমাজের প্রতিকূলতায় যিনি নতজানু নন, বরং জ্বলে ওঠেন সপ্রতিভ শিখার মতো। আত্মরমণপ্রিয় ও পৌরুষহীনদের প্রতি তাঁর ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তীব্রভাবে:
‘তোমাদের শিল্প মানে প্রতারনা, শব্দের জোচ্চুরি
তোমাদের শিল্প হলো অন্ধকারে আঁধার সন্ধান।’
জীবন ও শিল্পের দূরত্বে অবিশ্বাসী রুদ্র সমাজ ও রাজনীতিকেই করে তুলেছেন কবিতার প্রধান উপজীব্য। ‘অশুভের সঙ্গে আপসবিহীন দ্বন্দ্ব’ তাঁর রচনার মৌল প্রবণতা। এই দুর্বিনীত ও লড়াকু মনোভাব তাঁর কবিতাকে শিল্পের অধিক কিছু করে তোলে।
মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলায় আবার স্বাধীনতাবিরোধীদের অপতৎপরতা শুরু হয়। চারদিকে জেগে ওঠে হায়েনাদের পদধ্বনি, সামরিক শাসনের অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় দেশ-জাতি-সমাজ। এ সময় ক্ষুব্ধ কবির প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হয় অনবদ্য পঙিক্তমালায়:
‘আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই,
আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে
এ-দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়?
জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন।’
রুদ্রের কাব্যদর্শন ও জীবনভাবনার গতিবিধি স্পষ্ট হয়ে ওঠে উপর্যুক্ত পঙিক্তমালায়। কালের নাড়ির স্পন্দন তাঁকে অস্থির করে তোলে। তাঁর দ্রোহ-চেতনার জন্মসূত্রও এই অনুভূতিপ্রবণতা। আপসকামী মানসিকতা কখনো সমাজ বদলের অনুকূল নয়। এই অমোঘ সত্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন বলেই রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ দ্রোহী ও প্রতিবাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতায় মিছিল, রাজপথ, সভা-সমাবেশ কিংবা রাজনৈতিক বক্তৃতা ও স্লোগানের দৃশ্য ঘুরেফিরে এসেছে। তবে রুদ্র শৈল্পিক শর্তের প্রতি শৈথিল্য দেখাননি। বাস্তবতাকে তিনি শিল্পের পাল্লায় পরিমাপ করেছেন। দ্রোহ ও প্রতিবাদী চেতনার রূপায়ণে তিনি প্রকৃতির বিধি উপকরণ এবং চমকপ্রদ ও অভাবিতপূর্ব উপমা, রূপক ও চিত্রকল্পের আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁর এই শিল্পবোধের অনন্যতায় নিতান্তই বক্তব্যধর্মী উক্তি, পঙিক্ত, দাবিদাওয়া কিংবা স্লোগানও কবিতার মহিমা পেয়ে যায়, উত্তীর্ণ হয় বৃহত্তর শিল্প পরিসীমায়।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর আরেকটি সম্পদ তারুণ্য। তারুণ্যের প্রাণবন্ত, সজীব ও অফুরন্ত উদ্যম তাঁর কবিতায় যোগ করেছে নতুন মাত্রা। সব ধরনের জীর্ণ প্রথা, কুসংস্কার ও প্রতিবন্ধকতা পেছনে ফেলে রুদ্র এগিয়ে যান অন্য এক জীবন অন্বেষায়, যে জীবন যৌক্তিক অথচ স্বপ্নময়, যেখানে অবারিত মুক্ত মাঠ আর নির্মল হাওয়ার উল্লাস: ‘সেখানে অপেক্ষা কোরে আছে এক নিমগ্ন বাউল স্নিগ্ধ একতারা হাতে/ সেইখানে পাখিদের জন্যে কোন খাঁচা কেউ ভালোবেসে নির্মান করে নি/ সেখানে নদীর নাম ভালোবাসা, তরুদের খোলামেলা ডাক নাম প্রেম/ বিশ্বাস বন্ধুর মতো কাঁধে হাত রেখে হাঁটে, সেই খানে ফোটে শত ফুল।’ এই প্রেমময় পুষ্পিত জীবনযাত্রায় সমকাল বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে দ্রোহ অনিবার্য হয়ে পড়ে।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ শুধু একজন কবিতাকর্মীই নন, প্রতিবাদী মিছিল-সমাবেশে তাঁর সক্রিয় পদচারণও লক্ষ করার মতো। পঁচাত্তর-পরবর্তী প্রায় সব গণ-আন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে রুদ্র তৎপর ছিলেন। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও তিনি পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন। ‘সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট’ ও ‘জাতীয় কবিতা পরিষদ’-এর তিনি অন্যতম উদ্যোক্তা। জীবন ও শিল্প তাঁর চেতনায় এক ও অবিচ্ছিন্ন। ফলে জীবনকে তিনি শিল্প করে তুলতে চেয়েছেন কিংবা শিল্পকেই নিতে চেয়েছেন জীবনের কাছাকাছি।
কবিতার ভাষা নিয়েও রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিনি নিজস্ব বানানরীতি অনুসরণ করেছেন। বাংলা ভাষায় ‘ণ’-এর (মূর্ধন্য ণ) উচ্চারণ নেই, তাই তিনি কবিতায় ‘ণ’ ব্যবহার করেননি। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে উচ্চারণ অনুযায়ী তিনি শব্দের বানান লিপিবদ্ধ করেছেন। এ ক্ষেত্রে কারও হয়তো দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু তাঁর চিন্তার নতুনত্ব অস্বীকার করা যায় না। সর্বোপরি, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ জীবন ও শিল্পের মেলবন্ধনে যে দ্যুতিময় পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেছেন, তা তাঁকে অন্য এক উচ্চতায় অধিষ্ঠিত করেছে। জন কিটস, ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা, আবুল হাসান প্রমুখ ক্ষণজীবী কবির মতো রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহও এক উজ্জ্বল চিরতরুণ কবির প্রতিকৃতিতে বেঁচে থাকবেন শিল্পে, পাঠকের মনোলোকে।
আহমেদ বাসার
No comments