তাহলে মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগবে কেন?-খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার সফলতা
সহস্র বছরজুড়ে বাংলা অঞ্চলের মানুষের প্রধান উদ্বেগ ছিল খাদ্য নিয়ে। সেই অভাব আর তার সঙ্গী উদ্বেগ এখন অনেকটা প্রশমিত। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক যখন এই সফলতাকে অভিনন্দিত করেন, তখন আমাদেরও আনন্দিতই হওয়ার কথা।
কিন্তু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা সত্ত্বেও খাদ্যাভাব দূর হয়নি। জনগণের বড় একটি অংশের পুষ্টিহীনতার কথা উল্লেখ করে এফএওর মহাপরিচালক হোসে গ্রাজিয়ানো দা সিলভা মুদ্রার অপর পিঠটাও দেখিয়েছেন। বলা বাহুল্য, সেদিকটা হতাশার।
ইতিহাসের ভয়ংকর সব দুর্ভিক্ষে লাখ লাখ বঙ্গসন্তান মৃত্যুবরণ করেছে। সর্বশেষ বড় আকারের দুর্ভিক্ষটি গত শতকের চল্লিশের দশকের ঘটনা। বাংলা সনের হিসাবে এর আগের ছিয়াত্তরের মন্বন্তরই ছিল সবচেয়েভয়াবহ। আর খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার সফলতা মাত্র এক দশকের ঘটনা। বিষয়টা জাতীয় আত্মবিশ্বাস বাড়ালেও এই সফলতার নায়কেরা পাননি এর সুফল। অনেক গ্রাম ও অগণিত কৃষক পরিবারে খাদ্যাভাব দূর হয়নি। মূলত, ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া এবং বাজারব্যবস্থার কারসাজিতেই এই দুর্গতি ঘটে চলেছে। অন্যদিকে শহুরে দরিদ্ররাও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ধাক্কায় খাদ্যতালিকা কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দরিদ্র মানুষের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে ক্রমশ মাছ-মাংস, ডিম-দুধ হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের নির্ভর করতে হচ্ছে কেবল ভাতের ওপর। দেশে এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। একদিকে কঠোর পরিশ্রম অন্যদিকে পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাদ্য না পাওয়ায় পারিবারিকভাবেই তাদের গুরুতর স্বাস্থ্যহানি ঘটছে। আয়ের বিরাট অংশটিই চলে যাচ্ছে চাল কিনতে।
অপর দিক থেকে, মাথাপিছু জমির তুলনায় বেশিসংখ্যক মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে প্রকৃতিরও ক্ষতি হচ্ছে। মাটির উর্বরতা কমা, পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাওয়া, আর্সেনিক দূষণ এবং বন জঙ্গল কেটে আবাদ করাসহ এমন কিছু প্রাকৃতিক ক্ষতি হচ্ছে, যার প্রতিকার করা প্রায় অসম্ভব। আবাসন, ইটভাটা নির্মাণ ইত্যাদির মাধ্যমেও আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, অধিক ফলনের জন্য অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের কারণে মাটি-পানির দূষণ তো ঘটছেই, জনস্বাস্থ্যও পড়ছে হুমকির মুখে। তাই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার আনন্দ প্রদীপের নিচের এই অন্ধকার দিকটিতে এখন নজর দেওয়ার সময় এসেছে।
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার সুফল দরিদ্র মানুষ যাতে পায়, সে জন্য সরকারকে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব চাষাবাদের পদ্ধতি অনুসরণ, অক্ষতিকর উচ্চফলনশীল জাতের উদ্ভাবন এবং তার প্রচলনও জরুরি। কৃষির দেশে কৃষি নিয়েচাই সুদূরপ্রসারীপরিকল্পনা।
ইতিহাসের ভয়ংকর সব দুর্ভিক্ষে লাখ লাখ বঙ্গসন্তান মৃত্যুবরণ করেছে। সর্বশেষ বড় আকারের দুর্ভিক্ষটি গত শতকের চল্লিশের দশকের ঘটনা। বাংলা সনের হিসাবে এর আগের ছিয়াত্তরের মন্বন্তরই ছিল সবচেয়েভয়াবহ। আর খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার সফলতা মাত্র এক দশকের ঘটনা। বিষয়টা জাতীয় আত্মবিশ্বাস বাড়ালেও এই সফলতার নায়কেরা পাননি এর সুফল। অনেক গ্রাম ও অগণিত কৃষক পরিবারে খাদ্যাভাব দূর হয়নি। মূলত, ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া এবং বাজারব্যবস্থার কারসাজিতেই এই দুর্গতি ঘটে চলেছে। অন্যদিকে শহুরে দরিদ্ররাও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ধাক্কায় খাদ্যতালিকা কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দরিদ্র মানুষের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে ক্রমশ মাছ-মাংস, ডিম-দুধ হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের নির্ভর করতে হচ্ছে কেবল ভাতের ওপর। দেশে এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। একদিকে কঠোর পরিশ্রম অন্যদিকে পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাদ্য না পাওয়ায় পারিবারিকভাবেই তাদের গুরুতর স্বাস্থ্যহানি ঘটছে। আয়ের বিরাট অংশটিই চলে যাচ্ছে চাল কিনতে।
অপর দিক থেকে, মাথাপিছু জমির তুলনায় বেশিসংখ্যক মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে প্রকৃতিরও ক্ষতি হচ্ছে। মাটির উর্বরতা কমা, পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাওয়া, আর্সেনিক দূষণ এবং বন জঙ্গল কেটে আবাদ করাসহ এমন কিছু প্রাকৃতিক ক্ষতি হচ্ছে, যার প্রতিকার করা প্রায় অসম্ভব। আবাসন, ইটভাটা নির্মাণ ইত্যাদির মাধ্যমেও আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, অধিক ফলনের জন্য অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের কারণে মাটি-পানির দূষণ তো ঘটছেই, জনস্বাস্থ্যও পড়ছে হুমকির মুখে। তাই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার আনন্দ প্রদীপের নিচের এই অন্ধকার দিকটিতে এখন নজর দেওয়ার সময় এসেছে।
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার সুফল দরিদ্র মানুষ যাতে পায়, সে জন্য সরকারকে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব চাষাবাদের পদ্ধতি অনুসরণ, অক্ষতিকর উচ্চফলনশীল জাতের উদ্ভাবন এবং তার প্রচলনও জরুরি। কৃষির দেশে কৃষি নিয়েচাই সুদূরপ্রসারীপরিকল্পনা।
No comments