সাংসদদের বাস্তবতা কি তাই?-‘ফেউয়ের মতো’ ঘুরে বেড়ানো
এক সংসদ সদস্য অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আমাদের নামের আগে মাননীয় লেখা হয়। কিন্তু আমরা এমপিরা এলাকায় গিয়ে কোনো বসার জায়গা পাই না। ফেউয়ের মতো ঘুরে বেড়াই।’ নিজ নির্বাচনী এলাকায় একজন সংসদ সদস্যকে যদি ‘ফেউয়ের মতো’ ঘুরে বেড়াতে হয় তবে বিষয়টি দুঃখজনক বটে। কিন্তু বাস্তবতা কি আসলে তাই?
একজন সংসদ সদস্য তাঁর এলাকার জনপ্রতিনিধি। এলাকার জনগণের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা বা এলাকায় যাওয়া তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, সংসদ সদস্যরা সাধারণত যখন এলাকায় যান তখন তাঁরা দামি গাড়ি হাঁকিয়ে যথেষ্ট সমভিব্যাহারেই যান। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংসদ সদস্যদের নিজ নির্বাচনী এলাকায় তাঁদের বাড়িঘর বা আবাস রয়েছে। অবশ্য এর ব্যতিক্রমও নিশ্চয়ই রয়েছে। কিন্তু একজন সংসদ সদস্যকে এলাকায় গিয়ে ফেউয়ের মতো ঘুরতে হয়, এটা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য, সেটাই হচ্ছে বড় প্রশ্ন। সংসদে জাতীয় বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সাংসদ টি আই এম ফজলে রাব্বির এই প্রসঙ্গ তোলার মূল কারণ হচ্ছে, সংসদ সদস্যদের জন্য নিজ নির্বাচনী এলাকায় অফিসের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরা। নির্বাচনী এলাকায় সংসদ সদস্যের একটি অফিস থাকলে কাজের সুবিধা হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু ৩০০ নির্বাচনী এলাকায় এ ধরনের অফিস চালানোর খরচ যদি সরকারের বহন করতে হয়, তাতে সরকারের কত টাকা খরচ হবে, তা কি ‘মাননীয়’ সংসদ সদস্য ভেবে দেখেছেন?
আমাদের দেশে জরুরি ভিত্তিতে ও এখনই করা প্রয়োজন এমন তালিকা কত দীর্ঘ হতে পারে, তা দেশের যেকোনো সচেতন নাগরিকই অনুমান করতে পারবেন। আর্থিক অসংগতির কারণে এ ধরনের অনেক কাজ করা সম্ভব হয় না। এই যখন বাস্তবতা তখন প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় সংসদ সদস্যদের জন্য অফিসের দাবি কতটুকু যৌক্তিক? বর্তমানে নিজ নির্বাচনী এলাকায় অফিস পরিচালনার জন্য প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে নয় হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। যিনি নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে ফেউয়ের মতো ঘুরে বেড়ান, তিনি এই অর্থ তবে খরচ করেন কোথায়? সংসদ সদস্যের এই বক্তব্যের পর ফ্লোর নিয়ে তাই প্রধানমন্ত্রী অফিস পরিচালনা ব্যয় নয় হাজার টাকার কথা উল্লেখ করে যথার্থ প্রশ্নই তুলেছেন, ‘তাঁরা যদি সে টাকা খরচ না করে পকেটে রেখে দেন তবে আমার কী করার আছে?’
সংসদ সদস্যদের যে সম্মানী ও ভাতা দেওয়া হয়, তা আমাদের দেশের বাস্তবতায় কোনোভাবেই কম বলা যাবে না। সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যার অপব্যবহারের নজিরও যথেষ্ট। মাসে নিয়মিত ছয় হাজার টাকা টেলিফোন ভাতা নিয়ে বিল পরিশোধ করেন না এমন সাংসদও কম নেই। যে সাংসদ এলাকায় অফিস নেই বলে আক্ষেপ করেছেন, তিনি যদি সহকর্মী সাংসদদের এ ধরনের অনৈতিক কাজগুলোর প্রতি সংসদের নজরে আনতেন, তবে তা প্রকৃত জনপ্রতিনিধিসুলভ কাজ হতো। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে ও জনগণের কল্যাণেই পুরো জীবন কাজ করে গেছেন, এমন অনেক রাজনীতিবিদ এ কাজ করেছেন ও করে যাচ্ছেন নির্বাচনী এলাকায় সরকারের দেওয়া অফিস ছাড়াই। সংসদ সদস্য হিসেবে আসল চাওয়া কোনটি, সেটা পরিষ্কার হওয়া জরুরি।
আমাদের দেশে জরুরি ভিত্তিতে ও এখনই করা প্রয়োজন এমন তালিকা কত দীর্ঘ হতে পারে, তা দেশের যেকোনো সচেতন নাগরিকই অনুমান করতে পারবেন। আর্থিক অসংগতির কারণে এ ধরনের অনেক কাজ করা সম্ভব হয় না। এই যখন বাস্তবতা তখন প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় সংসদ সদস্যদের জন্য অফিসের দাবি কতটুকু যৌক্তিক? বর্তমানে নিজ নির্বাচনী এলাকায় অফিস পরিচালনার জন্য প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে নয় হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। যিনি নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে ফেউয়ের মতো ঘুরে বেড়ান, তিনি এই অর্থ তবে খরচ করেন কোথায়? সংসদ সদস্যের এই বক্তব্যের পর ফ্লোর নিয়ে তাই প্রধানমন্ত্রী অফিস পরিচালনা ব্যয় নয় হাজার টাকার কথা উল্লেখ করে যথার্থ প্রশ্নই তুলেছেন, ‘তাঁরা যদি সে টাকা খরচ না করে পকেটে রেখে দেন তবে আমার কী করার আছে?’
সংসদ সদস্যদের যে সম্মানী ও ভাতা দেওয়া হয়, তা আমাদের দেশের বাস্তবতায় কোনোভাবেই কম বলা যাবে না। সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যার অপব্যবহারের নজিরও যথেষ্ট। মাসে নিয়মিত ছয় হাজার টাকা টেলিফোন ভাতা নিয়ে বিল পরিশোধ করেন না এমন সাংসদও কম নেই। যে সাংসদ এলাকায় অফিস নেই বলে আক্ষেপ করেছেন, তিনি যদি সহকর্মী সাংসদদের এ ধরনের অনৈতিক কাজগুলোর প্রতি সংসদের নজরে আনতেন, তবে তা প্রকৃত জনপ্রতিনিধিসুলভ কাজ হতো। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে ও জনগণের কল্যাণেই পুরো জীবন কাজ করে গেছেন, এমন অনেক রাজনীতিবিদ এ কাজ করেছেন ও করে যাচ্ছেন নির্বাচনী এলাকায় সরকারের দেওয়া অফিস ছাড়াই। সংসদ সদস্য হিসেবে আসল চাওয়া কোনটি, সেটা পরিষ্কার হওয়া জরুরি।
No comments