জাতীয় স্বার্থই অগ্রাধিকার পাক-বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত জরিপ
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত থাকলেও মাত্র সাড়ে ছয় কিলোমিটার অচিহ্নিত রয়েছে। তা ছাড়া রয়েছে কিছু ছিটমহল ও অপদখলীয় ভূমি, যার জের ধরে মাঝেমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। এটি সংশ্লিষ্ট সীমান্তে বসবাসকারী দুই দেশের বাসিন্দাদের জন্য যেমন আতঙ্কের, তেমনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রেও অন্যতম অন্তরায়।
সীমান্ত-সমস্যার মূলে রয়েছে ১৯৪৭ সালের র্যাড ক্লিফের রোয়েদাদ। যে ব্যক্তি কখনো বাংলায় আসেননি, এ দেশের ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে যাঁর কোনো ধারণা ছিল না—সেই ব্যক্তিকে দিয়ে সীমানা নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করাতে গিয়ে অনেক অঘটনের জন্ম দেওয়া হয়েছে। সেটি ছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির চাল। কিন্তু বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এত দিনেও সীমান্ত-সমস্যাটির সমাধান কেন হলো না? এমনকি ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দরা চুক্তি সইয়ের ৩৬ বছর পরও সমস্যাটি ঝুলে থাকা দুর্ভাগ্যজনক। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় সীমান্ত-বিরোধের নিষ্পত্তি হবে। তার আগে আগস্টে আসছেন সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম।
এই প্রেক্ষাপটেই সিলেট সীমান্তের ১০টি স্থানে যৌথ জরিপের বিষয়টি সামনে এসেছে। সর্বশেষ ১৯৬৭ সালে যৌথ জরিপের মাধ্যমে সীমান্ত চিহ্নিত করা হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। গত বছরের ডিসেম্বরে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুন মাসের শুরুতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ জরিপকাজ শুরু হয়। কিন্তু স্থানীয় জনগণের বাধার কারণে বর্তমানে তা স্থগিত রয়েছে।
সীমান্তের দুই পাশেই অপদখলীয় ভূমি আছে। সে ক্ষেত্রে যৌথ জরিপকাজটিও দুই দেশে একযোগে হওয়া বাঞ্ছনীয়। কেবল বাংলাদেশে জরিপ হলে ভুল-বোঝাবুঝির অবকাশ আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জরিপে বিএসএফের কর্মকর্তারা থাকলেও বিজিবির কেউ থাকছেন না। এতেও তাদের মধ্যে সন্দেহ জাগা স্বাভাবিক। আমাদের ধারণা, সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করা উচিত ছিল। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যারা পুরুষানুক্রমে বসবাস করে আসছে, তাদের জমিজমা বেহাত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে ক্ষোভ দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। পররাষ্ট্রসচিব ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, যৌথ জরিপ মানে জমি হস্তান্তর করা নয়। সিলেটের জেলা প্রশাসকও সোমবার জৈন্তাপুরের মতবিনিময় সভায় বলেছেন, ভারতের হাতে জমি তুলে দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই কথাগুলো তারা জরিপকাজ শুরুর আগে বললে হয়তো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো যেত, জরিপকাজও স্থগিত করতে হতো না।
যৌথ জরিপ নিয়ে জেলা প্রশাসক আহূত জৈন্তাপুরের মতবিনিময় সভায় যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক। সীমান্ত-বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়টি দলীয় দৃষ্টিতে দেখা সমীচীন নয়। শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে যদি আমরা বিভক্তির পরিচয় দিই, তাহলে কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না। যৌথ জরিপের আগে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও বোঝাতে হবে, তাদের জমিজমা বা বাড়িঘর হারানোর আশঙ্কা নেই। আমাদের বিশ্বাস, জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে আশ্বস্ত করতে পারলে তারা এর বিরোধিতা করবে না। আমরা অবশ্যই সীমান্ত-বিরোধের অবসান চাই। তবে তা জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়।
এই প্রেক্ষাপটেই সিলেট সীমান্তের ১০টি স্থানে যৌথ জরিপের বিষয়টি সামনে এসেছে। সর্বশেষ ১৯৬৭ সালে যৌথ জরিপের মাধ্যমে সীমান্ত চিহ্নিত করা হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। গত বছরের ডিসেম্বরে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুন মাসের শুরুতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ জরিপকাজ শুরু হয়। কিন্তু স্থানীয় জনগণের বাধার কারণে বর্তমানে তা স্থগিত রয়েছে।
সীমান্তের দুই পাশেই অপদখলীয় ভূমি আছে। সে ক্ষেত্রে যৌথ জরিপকাজটিও দুই দেশে একযোগে হওয়া বাঞ্ছনীয়। কেবল বাংলাদেশে জরিপ হলে ভুল-বোঝাবুঝির অবকাশ আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জরিপে বিএসএফের কর্মকর্তারা থাকলেও বিজিবির কেউ থাকছেন না। এতেও তাদের মধ্যে সন্দেহ জাগা স্বাভাবিক। আমাদের ধারণা, সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করা উচিত ছিল। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যারা পুরুষানুক্রমে বসবাস করে আসছে, তাদের জমিজমা বেহাত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে ক্ষোভ দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। পররাষ্ট্রসচিব ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, যৌথ জরিপ মানে জমি হস্তান্তর করা নয়। সিলেটের জেলা প্রশাসকও সোমবার জৈন্তাপুরের মতবিনিময় সভায় বলেছেন, ভারতের হাতে জমি তুলে দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই কথাগুলো তারা জরিপকাজ শুরুর আগে বললে হয়তো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো যেত, জরিপকাজও স্থগিত করতে হতো না।
যৌথ জরিপ নিয়ে জেলা প্রশাসক আহূত জৈন্তাপুরের মতবিনিময় সভায় যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক। সীমান্ত-বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়টি দলীয় দৃষ্টিতে দেখা সমীচীন নয়। শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে যদি আমরা বিভক্তির পরিচয় দিই, তাহলে কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না। যৌথ জরিপের আগে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও বোঝাতে হবে, তাদের জমিজমা বা বাড়িঘর হারানোর আশঙ্কা নেই। আমাদের বিশ্বাস, জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে আশ্বস্ত করতে পারলে তারা এর বিরোধিতা করবে না। আমরা অবশ্যই সীমান্ত-বিরোধের অবসান চাই। তবে তা জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়।
No comments