ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-ভাষাচর্চায় মহানবী (সা.)-এর আদর্শ by এ জেড এম শামসুল আলম
বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.)-কে মহান আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির জন্য কল্যাণ ও সর্বোত্তম আদর্শ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর দ্বীন প্রচারক হিসেবে তিনি ছিলেন মুসলমানদের আদর্শ। কিন্তু পিতা হিসেবে, স্বামী হিসেবে, সুরুচিশীল ও সংস্কৃতিমান মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন ধর্মমত-নির্বিশেষে সবারই আদর্শ।
তাঁর ব্যবহার, আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, কথাবার্তা, চালচলন যেকোনো রুচিশীল এবং সুন্দর জীবনযাপনে আগ্রহী ইহুদি-নাসারা, পৌত্তলিকসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় সর্বোৎকৃষ্ট আদর্শ ছিল। রাসুল (সা.)-এর সময় ইহুদি-নাসারা-পৌত্তলিক আরবরা আমাদের রাসুল (সা.)-কে রুচি, সংস্কৃতি ও সৌন্দর্যচেতনার মাপকাঠি হিসেবে ধরে নিয়েছিল। দুঃখের বিষয়, নামাজ-রোজার ব্যাপারে আমাদের 'ওলামায়ে কিরাম, ইমাম সাহেবান, ইসলামী চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা রাসুল (সা.)-এর আদর্শ মানুষের সামনে তুলে ধরতে যতটুকু সচেষ্ট, ভাষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আমাদের প্রিয় নবীকে রুচিশীল ও সংস্কৃতিমান শিক্ষিত সমাজের সামনে তুলে ধরতে ঠিক ততটুকু অমনোযোগী।
জ্ঞানের অনুপ্রেরণা : রাসুল (সা.) এমন কথা বলতেন না, যা তিনি নিজে করতেন না। কিন্তু এই সাধারণ নীতির ব্যতিক্রম ছিল একটিমাত্র ক্ষেত্রে, তা হলো সাক্ষরতা অর্জন। বদরের যুদ্ধে বন্দি প্রত্যেকটি সৈনিকের মুক্তির শর্ত এই ছিল যে তাঁরা দশজন অন্তত একজন নিরক্ষর মুসলিমকে লিখতে ও পড়তে শেখাবেন। জ্ঞান অর্জনের উৎসাহ দিয়ে যত নির্দেশ বিশ্বনবী (সা.) জারি করেছেন, দুনিয়ার অন্য কোনো ধর্মনেতা তা করেননি। কিন্তু তিনি নিজে নিরক্ষর বা উম্মি ছিলেন। এ এক রহস্য। তা-ই ছিল আল্লাহর ইচ্ছা। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষক ছিলেন আল্লাহ স্বয়ং নিজে। আল্লাহর সৃষ্টি ছিল তাঁর পাঠের উপকরণ। তিনি আল্লাহর সৃষ্টি দেখতেন, নিরীক্ষা করতেন, গভীরভাবে চিন্তা করতেন। আল্লাহ ছাড়া রাসুল (সা.)-এর অন্য কোনো শিক্ষক থাকবে, তা আল্লাহর অভিপ্রেত ছিল না। যিনি হবেন মানবতার শিক্ষক, তাঁকে হতে হবে ত্রুটিশূন্য। মানুষের মধ্যে এমন কোনো শিক্ষক হতে পারেন না, যিনি ত্রুটিহীন।
আমাদের নবী (সা.)-এর পুত্র ছিল, কন্যা ছিল, বন্ধু ছিল, সহযোগী ছিল, শত্রু ছিল। কিন্তু কোনো শিক্ষক ছিল না। রাসুল (সা.)-কে উম্মি বা নিরক্ষর রাখার হাকিকত আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন। আল্লাহ তাঁর রাসুল (সা.)-কে নিরক্ষর উম্মি নবী বলে বর্ণনা করেছেন এবং তিনি নিরক্ষর থাকুন_এটাই ছিল আল্লাহর ইচ্ছা। এই উম্মি নবীর ভাষাজ্ঞান কেমন ছিল?
যুগনায়ক : যুগের সবচেয়ে আধুনিক, প্রগতিশীল ও সমকালীন শিক্ষকশ্রেণী অপেক্ষা উন্নততর হওয়া নবীদের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহর নবীরা ছিলেন নিজ নিজ যুগের সবচেয়ে প্রগতিশীল এবং আধুনিক মানুষ। তা না হলে অন্যরা তাঁদের আদর্শকে অনুকরণীয় হিসেবে গ্রহণ করবে কেন? আল্লাহ নবীদের ওই সব গুণে বিভূষিত করেই পাঠিয়েছেন, যে গুণাবলিতে সে জামানার লোকেরা উৎকর্ষ লাভ করেছিল। হজরত দাউদ (আ.)-এর যুগে জনগণের মধ্যে গান-বাজনার চর্চা হতো খুব বেশি। ওই এলাকার লোকদের মধ্যে অভাব-অনটন ছিল না। তারা অবসর সময়ে গান-বাজনার চর্চা করত এবং সুরসাগরে আকণ্ঠ নিমগ্ন থাকত।
হজরত দাউদ (আ.)-কে আল্লাহ এমন সুন্দর কণ্ঠ ও সুমধুর সুর দিয়ে পাঠালেন যে তিনি যখন আল্লাহর কালাম পাঠ করতেন এবং লোকদের আল্লাহর পথে আহ্বান করতেন, তখন শুধু মানুষ কেন, জমিনের জীবজন্তু ভিড় জমাত, আকাশে ওড়া পাখিও নেমে আসত।
ব্যাবিলন, অ্যাসিরিয়া, লিডিয়া (ইরাক, ফিলিস্তিন, জর্দান) প্রভৃতি অঞ্চলের লোকেরা ব্যবসা-বাণিজ্য করে অত্যধিক ধনশালী হয়ে উঠেছিল। ভূমধ্যসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী এলাকায় সামুদ্রিক জাহাজ শিল্প ছিল খুবই উন্নত। আল্লাহ হজরত নুহ (আ.)-কে প্রদান করেন মানব ইতিহাসের বৃহত্তম জাহাজ তৈরির জ্ঞান।
হজরত ঈসা (আ.)-এর যুগে গ্রিক চিকিৎসাবিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্র ছিল বিশ্বে অতি উন্নত। ইউনানি বা গ্রিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রভাব শুধু সে যুগে নয়, এই বিংশ শতাব্দীতে আমাদের দেশেও অনুভূত ও সুস্পষ্ট। রোগ নিরাময় করার মাধ্যমেই ছিল সে যুগের জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষমতা। খঞ্জকে পদদান, কুষ্ঠরোগীকে নিরাময়, এমনকি মৃতকে জীবিত করার ক্ষমতা।
আরবদের ভাষণের উৎকর্ষ : রাসুলে কারিম (সা.)-এর যুগে আরবে ভাষা ও কবিতা চরম উৎকর্ষ লাভ করেছিল। আরবি ভাষায় একেকটি শব্দের যত প্রতিশব্দ আছে, বিশ্বের অন্য কোনো ভাষায় তা নেই। এক 'ঘোড়া' শব্দটিরই শোনা যায় ৯০০ প্রতিশব্দ ছিল। আরবীয়রা ছিল স্বভাবে কবি। সাবয়া মুয়াল্লাকা-কালোত্তীর্ণ হয়ে আজও শিল্পী-সাহিত্যিকদের বিস্ময় উৎপাদন করে। আরব্য উপন্যাসের কাহিনীর চেয়ে চমকপ্রদ কাহিনী বিশ্বের কোনো ভাষায় আজও সৃষ্টি হয়নি।
নবী পরিবারের লোকেরা কবি স্বভাবের ছিলেন। নবী (সা.)-এর মৃত্যুতে বিবি আয়েশা (রা.) ও বিবি ফাতেমা (রা.)-এর বিলাপ কালোত্তীর্ণ শোকগাথায় পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন কর্মচারীকে লেখা হজরত আলী (রা.)-এর একটি পত্র শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্মের স্বাক্ষর বহন করে।
বিশ্বগ্রন্থ আল-কোরআন : আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর প্রতি নাজিলকৃত গ্রন্থ আল-কোরআন শুধু ধর্মগ্রন্থ নয়, আরবি ভাষার উজ্জ্বলতম সাহিত্য। বিশ্বের আর কোনো গ্রন্থ নেই, যা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মুখস্থ করা হয়। ছন্দের মিল থাকলে ছোট ছেলেমেয়েদের পক্ষে কোনো ছড়া মুখস্থ করা যত সহজ হয়, ছন্দহীন গদ্যকাব্য মুখস্থ রাখা তত সহজ নয়। ছন্দ-মাধুর্যের জন্যই কোরআন মুখস্থ করা সহজতর হয়েছে।
আরব দেশে বহু খ্রিস্টান কোরআন তিলাওয়াত বা শ্রবণ করে দিনের কর্মসূচি শুরু করে। কারণ তাতে মানসিক প্রশান্তি আসে। আমরা কোরআন তিলাওয়াত করি ভক্তি-শ্রদ্ধাসহকারে। বহু আরব কিন্তু তা উপভোগ করে। আরবদেশে একাধিক রেডিও স্টেশন আছে, যা থেকে সুদীর্ঘ সময়ব্যাপী শুধু কোরআন তিলাওয়াতই প্রচার করা হয়। কায়রোর একটি রেডিও স্টেশন থেকে দিনরাত সব সময় শুধু কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, আর সব সময়ই কিছু না কিছু শ্রোতা তা শোনে। বাংলা সাহিত্যে কোনো কোনো কবির সংগীত খুব শ্রুতিমধুর এবং কালজয়ী। এই সংগীত যতই শ্রুতিমধুর হোক না কেন, সারাক্ষণ রেডিওতে প্রচার করা হলে শ্রোতারা শুধু বিরক্তই হবে তা নয়, রেডিও বন্ধ করে দিতে চাইবে।
সুরা আর রহমানের ছন্দ-মাধুর্যের কথা বাদই দেওয়া যাক, সুরা ফাতিহা একজন মুসলমান জীবনে কতবার পাঠ করে? কেউ কি কখনো সুরা ফাতিহা পড়ে ক্লান্ত হয়েছে? বোধ হয় না। এর কারণ শুধু যে অন্তর্নিহিত বাণী তা নয়, এতে রয়েছে কাব্যসুধা_এই অমৃতের নেশা কাটে না। এই সুরার বাংলা অনুবাদ হলে ভাবার্থ হয়তো ঠিক থাকতে পারে, কিন্তু কাব্যমাধুর্য কোথায় পাওয়া যাবে!
আল-কোরআন দুনিয়ার শুধু শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ নয়, কাব্যগ্রন্থও বটে। তা সত্ত্বেও এক শ্রেণীর আলিমের ভুল ব্যাখ্যা ও ফতোয়ার ফলে বাংলার মুসলমানরা থেকে গেছে ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি উদাসীন। কাব্যানুরাগী আরব সমাজে আবির্ভূত নবী মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন আরবের সবচেয়ে সুন্দর ও শুদ্ধভাষী। নবী কারিম (সা.) শুধু শুদ্ধ ভাষায় নয়, বরং বিশুদ্ধ ভাষায় কথা বলতেন। সারা জীবনে তিনি একটি মিথ্যা বাক্যও উচ্চারণ করেননি। আর সারা জীবনে বিশ্বনবী (সা.) একটি অশুদ্ধ শব্দ বা বাক্যও উচ্চারণ করেননি। শিশুকালেও আমাদের নবী (সা.) বিশুদ্ধ ভাষায় কথা বলতেন। তাঁর বিশুদ্ধ উচ্চারণ শুনে লোকজন আশ্চর্য ও বিমোহিত হতো। জিজ্ঞেস করত, ছেলেটি কোন পরিবারের।
আমাদের মহানবী (সা.) কথায়, আচরণে, পোশাকে পবিত্র, পরিচ্ছন্ন ও বিশুদ্ধ থাকা পছন্দ করতেন। তাঁর জামাকাপড়ে কোনো দিন কেউ কোনো দাগ দেখেনি। তাঁর পোশাক তাঁর চরিত্রের মতোই নিষ্কলুষ ছিল। তাঁর ভাষাও ছিল বিশুদ্ধ এবং উচ্চারণ ছিল সুস্পষ্ট।
মহানবী (সা.)-এর বাচনভঙ্গি : ভাষায় বিশুদ্ধতা এবং উচ্চারণে সুস্পষ্টতা ছিল নবী চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাঁর কথা এমন স্পষ্ট ছিল যে যাঁরা তাঁর কাছে বসে থাকতেন, তাঁরা তাঁর কথাগুলো শুনে মুখস্থ করতে পারতেন, লিখে নিতে পারতেন। হাদিস সেভাবেই প্রণীত হয়েছে। তিনি বলেছেন, অন্যরা শুনেছেন, হিফজ করেছেন এবং লিখেছেন।
তখনকার দিনে কাগজ-পেনসিল সহজলভ্য ছিল না। এত অসুবিধা সত্ত্বেও রাসুলে কারিম (সা.)-এর বাক্য এমনভাবে উচ্চারিত হতো বা বলা হতো, যাতে অন্যরা তা লিখে নিতে পারতেন। তিনি দ্রুত বাক্য বলতেন না। তাঁর কথা বলার ধরন এমন ছিল যে প্রতিটি বাক্য নয়, প্রতিটি অক্ষর অন্যরা বুঝতে পারতেন। আরবিতে 'আইন' আর 'হামজার' মধ্যে পার্থক্য আছে। পুরো বাক্যের মধ্যে কোন অক্ষরটা উচ্চারিত হচ্ছে, তা শ্রোতারা স্পষ্ট ধরতে পারতেন। অর্ধেক কথা মুখের ভেতরে, বাকি অর্ধেক কথা মুখের বাইরে_এভাবে মহানবী (সা.) কথা বলতেন না। কথা বলার উদ্দেশ্য অন্যের কানে তা পেঁৗছে দেওয়া। কথা বলার সময় নিম্নস্বরে কথা বলা হলে অন্যের বুঝতে কষ্ট হয়। অন্যকে কষ্ট দেওয়া অসুন্দর আচরণ ও বেয়াদবি।
ইলমুল কিরাত বা মাখরাজ আমরা কিভাবে পেলাম? আরবি ধ্বনিবিজ্ঞান অতি উন্নত। এর উৎস কী? এর উৎস হলো সুন্নাহ। কারণ রাসুল (সা.) শুদ্ধভাবে কথা বলতেন। স্পষ্ট উচ্চারণ করতেন।
ভাষণভঙ্গি : আল্লাহর হাবিব নবী কারিম (সা.)-এর ভাষণ পদ্ধতি এমন ছিল যে যত বড় মাহফিল হতো, তাঁর স্বর তত উচ্চ হতো। কথা বলার সময় তিনি স্বর তত উচ্চ করতেন, যাতে সবচেয়ে পেছনে যে বসে আছে, তার মনে হতো যে নবী কারিম (সা.) তাঁর সামনে বসে কথা বলছেন। তিনি দু-চারজনের সামনে কথা বলেছেন এবং আরাফাত ময়দানে লাখো মানুষের মধ্যেও বক্তৃতা করেছেন। তখন মাইক ছিল না। তা সত্ত্বেও তাঁর কোনো কথা বোঝেনি এমন লোক ছিল না। যেসব গুণ একটি মানুষের ব্যক্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে, তার মধ্যে রয়েছে শুদ্ধ ভাষণ ও সুস্পষ্ট উচ্চারণ।
শুদ্ধ ভাষার সুন্নাহ : আমাদের নবী (সা.) তাঁর মাতৃভাষা শুদ্ধভাবে বলতেন এবং সুস্পষ্টভাবে উচ্চারণ করতেন। মাতৃভাষা শুদ্ধভাবে বলা আমাদের নবী কারিম (সা.)-এর সুন্নত। বাঁ হাতে খেলে একটি সুন্নতের বরখেলাপ করা হলো। অনুরূপভাবে একটি অশুদ্ধ শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করলাম, সুন্নতের একটি খেলাপ করলাম। আমরা অনেকে মুখ খুললেই সঙ্গে সঙ্গে সুন্নতের বরখেলাপ শুরু করি। কেউ কেউ হয়তো বলবেন, আরবি অশুদ্ধ বলা সুন্নতের বরখেলাপ। অন্য ভাষা অশুদ্ধ বলা সুন্নতের বরখেলাপ নয়। এটা কিন্তু ভুল। আমাদের নবী (সা.) ডান হাত দিয়ে খেজুর খেয়েছেন। যদি কেউ বলে যে বাঁ হাত দিয়ে খেজুর খাওয়া সুন্নতের বরখেলাপ, কিন্তু আম আর লিচু বাঁ হাত দিয়ে খাওয়া সুন্নতের বরখেলাপ নয়, তা ভুল হবে।
শুদ্ধ ভাষণ এবং দাওয়াত : শ্রোতাদের ওপর বক্তৃতার প্রভাব অনস্বীকার্য। জনগণকে বোঝাতে হবে মাতৃভাষায়, শুদ্ধ ও সুন্দর উচ্চারণে। বড় নেতাদের একটা বড় গুণ হলো, সুন্দর বক্তৃতা দেওয়ার দক্ষতা। ভাষার ওপর দখল থাকলে বক্তব্যের প্রভাব শ্রোতার ওপর অনেক বেশি হয়। মাতৃভাষার ওপর দখল না থাকলে ভালো বক্তা হওয়া যায় না।
মাতৃভাষাচর্চার গুরুত্ব : মুসলিম জীবনে 'আলিমদের প্রভাব প্রচণ্ড এবং অত্যন্ত গভীর। আরবীয়, ইরানি, তুর্কিরা তাদের মাতৃভাষার চর্চা যতটুকু নিষ্ঠার সঙ্গে করতে পারে, আমরা আমাদের অবচেতন মনের সংস্কারের ফলে ততটুকু পারিনি।
ভারত বিভাগের পর ভাষা সমস্যা এবং ভাষা আন্দোলন এ দেশের ছাত্র, শিক্ষিত শ্রেণী ও বুদ্ধিজীবীদের যতটুকু আলোড়িত করেছে, অন্য কোনো সমস্যা বা আন্দোলন ততটুকু করেনি। কিন্তু ওলামায়ে কিরাম বিভিন্ন কারণে, বিশেষ করে ভাষা আন্দোলনের প্রতীকী দিকসমূহে শিরকি প্রবণতা লক্ষ করে ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ছিলেন উদাসীন। প্রতিক্রিয়ায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজও রয়েছে তাদের প্রতি উদাসীন।
লেখক : সাবেক সচিব ও গ্রন্থকার
No comments