বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-বাস্তবায়নে এখন থেকেই নজর দিন

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন না হওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি স্বাভাবিক ঘটনা যেন। প্রতিবছরই এ নিয়ে সরকারের অভ্যন্তরে এবং বাইরেও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। বাস্তবতা হচ্ছে, এর যেন কোনো ব্যতিক্রম হওয়ার নয়। প্রতিবছরই প্রকল্প বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যেতেই থাকে।


সেই আলোচনা-সমালোচনাগুলোকে বিশ্লেষণ করেই শেষ পর্যন্ত সরকার এবার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর আগে গত বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যেসব বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। বাস্তবায়নের পথ সুগম করার জন্য তারা একটি রূপরেখাও প্রণয়ন করে সেই আলোকে। মনে করা যায়, সেই রূপরেখা অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে। অন্তত অর্থবছরের শুরুর মাসেই বাস্তবায়নের লক্ষণ দেখা যাওয়ায় এমনটা মনে করা হচ্ছে। তবে প্রকল্পে হাত দেয়নি এমন মন্ত্রণালয়ের সংখ্যাও কম নয়। আবার কেউ আছে ধীরগতিকে যেন তাদের বৈশিষ্ট্য বলেই ধরে নিয়েছে। আসলে এ ধরনের ধীরগতির মানসিকতার কারণেই বছর শেষে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত চলে যেতে দেখা যায়। কিংবা বছর শেষ হওয়ার মুহূর্তে তাড়াহুড়ো করে অর্থব্যয়ের দিকে নজর দেওয়া হয়। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুণগত মান ধরে রাখা সম্ভব হয় না।
তবে এ বছর কয়েকটি মন্ত্রণালয় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় তাদের কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে এবং তা উল্লেখ করার মতোই। এ ক্ষেত্রে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের নাম সবার আগে চলে আসে। এই মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার ১৪ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে বছরের শুরুতেই। এটা অবশ্যই উল্লেখ করার মতো। সামগ্রিক বিবেচনায়ও মনে হয়, অবস্থা আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক ভালো। আগে যেখানে এই সময়ের মধ্যে কাজ হতো মাত্র ২ শতাংশ, এবার তা বেড়ে গিয়ে ৪ শতাংশ হয়েছে। তার পরও অবস্থা কাঙ্ক্ষিত অর্জনকে নিশ্চিত করতে পারবে বলে মনে হয় না। কারণ এ পর্যন্ত ২৭টি মন্ত্রণালয় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির কোনো কাজ শুরুই করেনি। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির কোনো কাজ শুরু না হওয়া কতটা যৌক্তিক? এর পরিণতি যে আগের মতোই হবে, তা-ও অনুমান করা যায়। অর্থ ছাড় করানোর কথা বলে যেভাবে বসে থাকার প্রবণতা আছে, তা পরিহার করে দ্রুত কাজে হাত দিতে হবে সবাইকে। যাতে কর্মসূচির কোনোটাই বাকি না থাকে

No comments

Powered by Blogger.