বিপর্যয়ের আরেকটি সপ্তাহ গেল
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মাত্র পাঁচ কার্যদিবসে সাধারণ মূল্যসূচক ১৪ শতাংশ বা ৬৪১ পয়েন্ট কমে গেছে। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৮৫৫ পয়েন্ট। একই সঙ্গে লেনদেনও কমে গেছে। সপ্তাহজুড়ে ব্যাপক দরপতনের কারণে এমনটি ঘটেছে।
টানা এই দরপতনে ঢাকার বাজারের সাধারণ মূল্যসূচক নেমে এসেছে চার হাজার পয়েন্টের নিচে। গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইর সাধারণ সূচক কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন হাজার ৮৪৬ পয়েন্টে।
এর মধ্য দিয়ে বিপর্যয়ের আরেকটি সপ্তাহ পার করল দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহের আগেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সূচকের মনস্তাত্ত্বিক সীমা ছিল চার হাজার পয়েন্ট। কিন্তু গত সপ্তাহে সূচকের সেই সীমাও ভেঙে গেছে। পাশাপাশি ডিএসইতে শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও কমে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২৮-এ। গত সাড়ে সাত বছরের মধ্যে এটি সর্বনিম্ন।
বাজারের ধারাবাহিক দরপতনের ঘটনায় গত সপ্তাহে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুজন বিনিয়োগকারীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। দুই পরিবারেরই দাবি, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে দুজনই বিপুল পরিমাণ লোকসান দিয়েছেন।
টানা দরপতন ও তা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে গত সপ্তাহে বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।
গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হলেও শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার মতো সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপের কথা জানাতে পারেনি এসইসি।
বৈঠক শেষে এসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান জানান, বাজারের বর্তমান অবস্থার জন্য তাঁরা তিনটি প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করেছেন। সেগুলো হলো: গুজব, আস্থা ও তারল্যসংকট। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাজারের বর্তমান অবস্থা যেমন এক দিনে তৈরি হয়নি, তেমনি এক দিনেই এই অবস্থার উত্তরণ সম্ভব নয়।’
এসইসির ওই বৈঠককে ঘিরে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে দুদিন মূল্যসূচকের বড় ধরনের উত্থান-পতনের ঘটনা ঘটে। বৈঠকের খবরে সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক ১০৩ পয়েন্ট বাড়লেও পরের দিনই তা ১৩২ পয়েন্টেরও বেশি কমে যায়। এর পরের দুদিনও বাজারে দরপতন ঘটে। ফলে ওই বৈঠকের খবরে সূচকের যতটা উত্থান ঘটেছিল, তারও বেশি পতন ঘটেছে।
যোগাযোগ করা হলে পুঁজিবাজার-বিশ্লেষক ও বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির বিজনেস স্কুলের শিক্ষক মোহাম্মদ মূসা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যারা বাজার নিয়ে পর্যালোচনা করি, তাদের কাছে এখন পুরো বিষয়টি হয়ে গেছে, “অল্প শোকে কাতর আর অধিক শোকে পাথর” প্রবাদটির মতো। বাজারকে যাঁরা প্রভাবিত করতে পারেন, তাঁদের কেউ কেউ হয়তো চাইছেন বাজার আরও কমুক। কারণ, তাঁদের শেয়ার কিনতে হবে। আমাদের মতো বাজারে যখন কারসাজি চলতে থাকে তখন আসলে শেয়ারবাজারের মৌলিক কোনো কাঠামো বা সূত্র কাজ করে না।’
মূসা আরও বলেন, ‘এখনো বাজারে শক্তিশালী একটি পক্ষ সক্রিয়। যারা তাদের প্রয়োজনে সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থাকে কাজে লাগাচ্ছে। আর বাজারে যখন কারসাজি চলমান থাকে তখন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বলার মতো কিছুই থাকে না।’
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসই ডিএসইতে মূল্যসূচক কমেছে। সপ্তাহজুড়ে ঢাকার বাজারে লেনদেন হওয়া ২৭৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র পাঁচটির। তার বিপরীতে দাম কমেছে ২৬১টির। সেই হিসাবে সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৯১ শতাংশেরই দরপতন হয়েছে।
শেয়ারের দামের সঙ্গে সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় এক হাজার ১৫২ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে এর পরিমাণ ছিল প্রায় এক হাজার ২০৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে লেনদেন কমেছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা বা সাড়ে ৪ শতাংশ।
গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন কমে দাঁড়িয়েছে ২৩০ কোটিতে। আগের সপ্তাহে যার পরিমাণ ছিল ২৪১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন ১১ কোটি টাকা কমে গেছে।
চট্টগ্রামের বাজারে সার্বিক মূল্যসূচক প্রায় পৌনে ৭ শতাংশ কমে নেমে এসেছে ১১ হাজার ৩৫৩ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২০৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৯২টিরই দাম কমেছে, বেড়েছে মাত্র ১১টির আর অপরিবর্তিত ছিল তিনটির দাম। পুরো সপ্তাহে চট্টগ্রামের বাজারে প্রায় ১৮৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
এর মধ্য দিয়ে বিপর্যয়ের আরেকটি সপ্তাহ পার করল দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহের আগেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সূচকের মনস্তাত্ত্বিক সীমা ছিল চার হাজার পয়েন্ট। কিন্তু গত সপ্তাহে সূচকের সেই সীমাও ভেঙে গেছে। পাশাপাশি ডিএসইতে শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও কমে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২৮-এ। গত সাড়ে সাত বছরের মধ্যে এটি সর্বনিম্ন।
বাজারের ধারাবাহিক দরপতনের ঘটনায় গত সপ্তাহে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুজন বিনিয়োগকারীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। দুই পরিবারেরই দাবি, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে দুজনই বিপুল পরিমাণ লোকসান দিয়েছেন।
টানা দরপতন ও তা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে গত সপ্তাহে বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।
গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হলেও শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার মতো সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপের কথা জানাতে পারেনি এসইসি।
বৈঠক শেষে এসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান জানান, বাজারের বর্তমান অবস্থার জন্য তাঁরা তিনটি প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করেছেন। সেগুলো হলো: গুজব, আস্থা ও তারল্যসংকট। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাজারের বর্তমান অবস্থা যেমন এক দিনে তৈরি হয়নি, তেমনি এক দিনেই এই অবস্থার উত্তরণ সম্ভব নয়।’
এসইসির ওই বৈঠককে ঘিরে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে দুদিন মূল্যসূচকের বড় ধরনের উত্থান-পতনের ঘটনা ঘটে। বৈঠকের খবরে সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক ১০৩ পয়েন্ট বাড়লেও পরের দিনই তা ১৩২ পয়েন্টেরও বেশি কমে যায়। এর পরের দুদিনও বাজারে দরপতন ঘটে। ফলে ওই বৈঠকের খবরে সূচকের যতটা উত্থান ঘটেছিল, তারও বেশি পতন ঘটেছে।
যোগাযোগ করা হলে পুঁজিবাজার-বিশ্লেষক ও বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির বিজনেস স্কুলের শিক্ষক মোহাম্মদ মূসা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যারা বাজার নিয়ে পর্যালোচনা করি, তাদের কাছে এখন পুরো বিষয়টি হয়ে গেছে, “অল্প শোকে কাতর আর অধিক শোকে পাথর” প্রবাদটির মতো। বাজারকে যাঁরা প্রভাবিত করতে পারেন, তাঁদের কেউ কেউ হয়তো চাইছেন বাজার আরও কমুক। কারণ, তাঁদের শেয়ার কিনতে হবে। আমাদের মতো বাজারে যখন কারসাজি চলতে থাকে তখন আসলে শেয়ারবাজারের মৌলিক কোনো কাঠামো বা সূত্র কাজ করে না।’
মূসা আরও বলেন, ‘এখনো বাজারে শক্তিশালী একটি পক্ষ সক্রিয়। যারা তাদের প্রয়োজনে সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থাকে কাজে লাগাচ্ছে। আর বাজারে যখন কারসাজি চলমান থাকে তখন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বলার মতো কিছুই থাকে না।’
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসই ডিএসইতে মূল্যসূচক কমেছে। সপ্তাহজুড়ে ঢাকার বাজারে লেনদেন হওয়া ২৭৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র পাঁচটির। তার বিপরীতে দাম কমেছে ২৬১টির। সেই হিসাবে সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৯১ শতাংশেরই দরপতন হয়েছে।
শেয়ারের দামের সঙ্গে সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় এক হাজার ১৫২ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে এর পরিমাণ ছিল প্রায় এক হাজার ২০৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে লেনদেন কমেছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা বা সাড়ে ৪ শতাংশ।
গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন কমে দাঁড়িয়েছে ২৩০ কোটিতে। আগের সপ্তাহে যার পরিমাণ ছিল ২৪১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন ১১ কোটি টাকা কমে গেছে।
চট্টগ্রামের বাজারে সার্বিক মূল্যসূচক প্রায় পৌনে ৭ শতাংশ কমে নেমে এসেছে ১১ হাজার ৩৫৩ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২০৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৯২টিরই দাম কমেছে, বেড়েছে মাত্র ১১টির আর অপরিবর্তিত ছিল তিনটির দাম। পুরো সপ্তাহে চট্টগ্রামের বাজারে প্রায় ১৮৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
No comments