ঈদ যাদের কাছে আনন্দহীন-বানভাসিদের দুর্দশা মোচনে কিছু করা প্রয়োজন
সাতক্ষীরায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত। কপোতাক্ষ ও বেতনা নদী তাদের সব আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। তাদের ফসলি জমি, মাছের ঘের_সবই এখন পানির নিচে। সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের দুই পাশে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে উদ্বাস্তুর জীবন যাপন করছে হাজার হাজার পরিবার। ক্ষুধা তাদের নিত্যসঙ্গী।
তারা ভালো খাবার পাবে কোথায়? তাদের শিশুরা কোথায় পাবে নতুন জামা? তাই বন্যা ও জলাবদ্ধতার শিকার সাতক্ষীরার কয়েক শ গ্রামের মানুষের কাছে এবার ঈদের আনন্দ একেবারেই অর্থহীন। শুধু সাতক্ষীরা নয়, ইতিমধ্যে কঙ্বাজার, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও বাগেরহাটসহ উপকূলীয় জেলাগুলোর লাখ লাখ মানুষ একাধিকবার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। তদুপরি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলায় উপকূল রক্ষা বাঁধ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এখন পর্যন্ত বহু স্থানে বাঁধ মেরামত করা যায়নি। ফলে স্বাভাবিক জোয়ারেই বহু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে; এবং ক্রমেই বাড়ছে জোয়ারের পানির উচ্চতা। তাই উপকূলীয় জনজীবনে দুর্ভোগ আজ চরমে উঠেছে। এ ছাড়া সারা দেশে হাজার হাজার পরিবার এ বছর নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। তাদের যথাযথ পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে অনেক পরিবারই সর্বস্ব হারিয়ে উদ্বাস্তু-জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। তাদের জীবনেও এবারকার ঈদ বড় বেশি নিরানন্দের।
বন্যা-ঝড়-জলোচ্ছ্বাস তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই এ দেশে মানুষ বসবাস করে আসছে। ভবিষ্যতেও তা-ই করতে হবে। বরং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশকে আরো বেশি এসব দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের জনসংখ্যার যে অংশটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তাদের রক্ষার দায়িত্বটি রাষ্ট্র এবং বাকি জনগোষ্ঠীকে নিতে হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে নির্মিত বেড়িবাঁধগুলোও আমরা রক্ষা করতে পারছি না। তদুপরি দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাঁধের বাইরেও অরক্ষিত সমুদ্র-উপকূলে বহু মানুষ আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। তারা আরো বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদের রক্ষার দায়িত্বও রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। আবার উপকূলে এমন অনেক এলাকা আছে, যেখানে বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষা করা সম্ভব নয়। যেমন_কঙ্বাজারের টেকনাফসংলগ্ন শাহ পরীর দ্বীপে বাঁধ নির্মাণের বহু চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই জোয়ারের পানিতে সেই বাঁধ ভেসে গেছে। মহেশখালী-কুতুবদিয়ার মতো প্রাচীন বসতিপূর্ণ বিস্তীর্ণ এলাকা সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
উপকূলীয় জনজীবন রক্ষায় ১৯৯২ সালে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ করেছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো সরকারই সুপারিশ অনুযায়ী উপকূল রক্ষা বাঁধকে উঁচু ও মজবুত করার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উপকূলীয় এলাকায় পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজটিও খুব একটা এগোয়নি। গবাদিপশু রক্ষায় মাটির উঁচু ঢিবি তৈরির কাজটি একেবারেই উপেক্ষিত রয়ে গেছে। উপকূলীয় কৃষিরক্ষায় কেবল কথাই হচ্ছে; কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ফলে সেসব এলাকার কৃষিজীবী মানুষের জীবনে আজ হাহাকার উঠে গেছে। অনেকেই উদ্বাস্তু হয়ে বড় বড় শহরে এসে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। তাই পবিত্র ঈদুল ফিতরে সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকার হতভাগ্য এসব মানুষের জন্য সমবেদনা জানানো ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। আমরা চাই, সরকার তাদের দুর্দশা মোচনে আন্তরিক হোক; এবং তা লোকদেখানো নয়, বরং তাদের পুনর্বাসনের জন্য সত্যিকার অর্থেই কিছু করুক।
বন্যা-ঝড়-জলোচ্ছ্বাস তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই এ দেশে মানুষ বসবাস করে আসছে। ভবিষ্যতেও তা-ই করতে হবে। বরং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশকে আরো বেশি এসব দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের জনসংখ্যার যে অংশটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তাদের রক্ষার দায়িত্বটি রাষ্ট্র এবং বাকি জনগোষ্ঠীকে নিতে হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে নির্মিত বেড়িবাঁধগুলোও আমরা রক্ষা করতে পারছি না। তদুপরি দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাঁধের বাইরেও অরক্ষিত সমুদ্র-উপকূলে বহু মানুষ আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। তারা আরো বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদের রক্ষার দায়িত্বও রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। আবার উপকূলে এমন অনেক এলাকা আছে, যেখানে বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষা করা সম্ভব নয়। যেমন_কঙ্বাজারের টেকনাফসংলগ্ন শাহ পরীর দ্বীপে বাঁধ নির্মাণের বহু চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই জোয়ারের পানিতে সেই বাঁধ ভেসে গেছে। মহেশখালী-কুতুবদিয়ার মতো প্রাচীন বসতিপূর্ণ বিস্তীর্ণ এলাকা সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
উপকূলীয় জনজীবন রক্ষায় ১৯৯২ সালে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ করেছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো সরকারই সুপারিশ অনুযায়ী উপকূল রক্ষা বাঁধকে উঁচু ও মজবুত করার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উপকূলীয় এলাকায় পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজটিও খুব একটা এগোয়নি। গবাদিপশু রক্ষায় মাটির উঁচু ঢিবি তৈরির কাজটি একেবারেই উপেক্ষিত রয়ে গেছে। উপকূলীয় কৃষিরক্ষায় কেবল কথাই হচ্ছে; কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ফলে সেসব এলাকার কৃষিজীবী মানুষের জীবনে আজ হাহাকার উঠে গেছে। অনেকেই উদ্বাস্তু হয়ে বড় বড় শহরে এসে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। তাই পবিত্র ঈদুল ফিতরে সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকার হতভাগ্য এসব মানুষের জন্য সমবেদনা জানানো ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। আমরা চাই, সরকার তাদের দুর্দশা মোচনে আন্তরিক হোক; এবং তা লোকদেখানো নয়, বরং তাদের পুনর্বাসনের জন্য সত্যিকার অর্থেই কিছু করুক।
No comments