পবিত্র কোরআনের আলো-রাসুল কোনো প্রলোভনে পড়ে আল্লাহর পথ থেকে সরে আসতে পারেন না
১৩. ওয়ালাহূ মা ছাকানা ফিল্লাইলি ওয়ান্নাহারি ওয়াহুচ্ছামীউ'ল আ'লীম। ১৪. ক্বুল আগাইরাল্লাহি-ত্তাখিযু ওয়ালিইয়্যান ফাতি্বরি-চ্ছামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি ওয়া হুয়া ইউত্বয়ি'মু ওয়ালা- ইউত্বআ'ম; ক্বুল ইন্নী উমিরতু আন আকূনা আউওয়্যালা মান আছলামা ওয়ালা- তাকূনান্না মিনাল মুশরিকীন। ১১৫. ক্বুল ইন্নী আখাফু ইন আ'সাইতু রাব্বী আ'যা-বা ইয়াওমিন আ'যীম।
১১৬। মাইঁয়্যুসরাফ আ'নহু ইয়াওমায়িযিন ফাক্বাদ রাহিমাহূ ওয়া যালিকাল ফাওযুল মুবীন। [সুরা : আল আনয়াম, আয়াত : ১৩-১৬]
অনুবাদ : ১৩. রাত্রিকালে ও দিবাকালে যা কিছু অবস্থান করে, এর সব কিছুই আল্লাহর। তিনি সব কিছুই শোনেন ও সব কিছু জানেন।
১৪. (হে নবী) আপনি বলুন, আমি কিভাবে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর মালিক আল্লাহতায়ালাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নিজের পৃষ্ঠপোষক বানিয়ে নেব। তিনি সমগ্র সৃষ্টিজগতের আহার জোগান, তাঁকে কোনো রকম আহার জোগাতে হয় না। আপনি বলুন, আমাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে, যেন সবার আগে আমি মুসলমান হই, আর আমি যেন মুশরিকদের দলে শামিল না হই।
১৫. আপনি আরো বলুন, আমি ভয় করছি, আমি যেন আমার প্রভুর আদেশ অমান্য করে মহাপরিণাম দিবসে শাস্তির মুখোমুখি না হয়ে পড়ি।
১৬. সেদিন যাকে এই শাস্তি থেকে রেহাই দেওয়া হবে, তার ওপর আল্লাহতায়ালা নিঃসন্দেহে অনুগ্রহ করবেন। আর এটিই সুস্পষ্ট সাফল্য।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোর শানেনুজুল এ রকম_নবুয়ত লাভের পর মহানবী (সা.) মক্কায় ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন কিছুটা গোপনে। পরে যখন বিষয়টা কুরাইশ নেতাদের গোচরে আসে, তখন তারা মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন করতে থাকে এবং রাসুল (সা.)-কে এ কাজ থেকে বিরত থাকতে হুমকি দিতে থাকে। তারা প্রথমে তাঁকে ভয় দেখিয়ে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা দেখতে পেল, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজের কর্তব্য পালনে অবিচল ও অকুতোভয়। কাফেরদের হুমকিতে তিনি মোটেও বিচলিত হচ্ছেন না। এরপর কুরাইশ নেতারা তাদের কৌশল পরিবর্তন করল। তারা রাসুল (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, 'আমরা বুঝতে পারছি, দারিদ্র্য ও অভাব-অনটনই তোমাকে এ কাজে অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা কথা দিচ্ছি, তুমি যদি তোমার এই নতুন ধর্ম প্রচার থেকে বিরত থাকো, তাহলে আমরা তোমাকে অর্থ-সম্পদ দিয়ে মক্কার সেরা ধনী বানিয়ে দেব। এ ছাড়া তুমি যেকোনো ধনাঢ্য পরিবারের সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করতে চাও, আমরা তা করিয়ে দেব। শর্ত একটাই_তোমাকে এই নতুন ধর্ম প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে।' মহানবী (সা.) তখন অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে তাদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং আল্লাহর কাছে তাঁকে হেফাজতের প্রার্থনা জানান। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াতগুলো নাজিল হয়।
১৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা তাঁর প্রিয় রাসুলকে জানিয়ে দিচ্ছেন কাফেরদের প্ররোচনার জবাবে তাঁকে কী বলতে হবে। এটা শুধু তাদের বলার জন্য নয়, নিজের বিশ্বাসে ও কর্তব্যবোধে ধারণ করার জন্য যে বিষয়গুলো অধিক গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোই একত্রে তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আয়াতে প্রথমেই আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরে বলা হয়েছে, এই সত্য বাদ দিয়ে আমি কী করে মিথ্যাকে নিজের পৃষ্ঠপোষক বানিয়ে নেব? এরই মধ্য দিয়ে রাসুলকে খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে যে আমি মুসলমান এবং কোনো অবস্থাতেই আমি মুশরিকদের দলভুক্ত নই। ১৫ নম্বর আয়াতে রাসুল (সা.)-কে একজন সাধারণ মুসলমানের অবস্থানে দাঁড়িয়ে যা বলা উচিত, তা-ই বলতে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর আদেশ অমান্য করলে প্রত্যেক মানুষকে মহাপরিণাম দিবসে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। আর সেদিন যারা শাস্তি থেকে রেহাই পাবে, তারা হচ্ছে সত্যিকার মুসলমান। কাফেরদের প্রলোভন উপেক্ষা করে মুসলমানদের জন্য সত্য ও ন্যায়ের পথ রচনার প্রতিজ্ঞায় অনড় থাকতে আল্লাহতায়ালা এখানে রাসুল (সা.)-কে অভয় দিচ্ছেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১৩. রাত্রিকালে ও দিবাকালে যা কিছু অবস্থান করে, এর সব কিছুই আল্লাহর। তিনি সব কিছুই শোনেন ও সব কিছু জানেন।
১৪. (হে নবী) আপনি বলুন, আমি কিভাবে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর মালিক আল্লাহতায়ালাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নিজের পৃষ্ঠপোষক বানিয়ে নেব। তিনি সমগ্র সৃষ্টিজগতের আহার জোগান, তাঁকে কোনো রকম আহার জোগাতে হয় না। আপনি বলুন, আমাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে, যেন সবার আগে আমি মুসলমান হই, আর আমি যেন মুশরিকদের দলে শামিল না হই।
১৫. আপনি আরো বলুন, আমি ভয় করছি, আমি যেন আমার প্রভুর আদেশ অমান্য করে মহাপরিণাম দিবসে শাস্তির মুখোমুখি না হয়ে পড়ি।
১৬. সেদিন যাকে এই শাস্তি থেকে রেহাই দেওয়া হবে, তার ওপর আল্লাহতায়ালা নিঃসন্দেহে অনুগ্রহ করবেন। আর এটিই সুস্পষ্ট সাফল্য।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোর শানেনুজুল এ রকম_নবুয়ত লাভের পর মহানবী (সা.) মক্কায় ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন কিছুটা গোপনে। পরে যখন বিষয়টা কুরাইশ নেতাদের গোচরে আসে, তখন তারা মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন করতে থাকে এবং রাসুল (সা.)-কে এ কাজ থেকে বিরত থাকতে হুমকি দিতে থাকে। তারা প্রথমে তাঁকে ভয় দেখিয়ে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা দেখতে পেল, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজের কর্তব্য পালনে অবিচল ও অকুতোভয়। কাফেরদের হুমকিতে তিনি মোটেও বিচলিত হচ্ছেন না। এরপর কুরাইশ নেতারা তাদের কৌশল পরিবর্তন করল। তারা রাসুল (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, 'আমরা বুঝতে পারছি, দারিদ্র্য ও অভাব-অনটনই তোমাকে এ কাজে অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা কথা দিচ্ছি, তুমি যদি তোমার এই নতুন ধর্ম প্রচার থেকে বিরত থাকো, তাহলে আমরা তোমাকে অর্থ-সম্পদ দিয়ে মক্কার সেরা ধনী বানিয়ে দেব। এ ছাড়া তুমি যেকোনো ধনাঢ্য পরিবারের সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করতে চাও, আমরা তা করিয়ে দেব। শর্ত একটাই_তোমাকে এই নতুন ধর্ম প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে।' মহানবী (সা.) তখন অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে তাদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং আল্লাহর কাছে তাঁকে হেফাজতের প্রার্থনা জানান। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াতগুলো নাজিল হয়।
১৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা তাঁর প্রিয় রাসুলকে জানিয়ে দিচ্ছেন কাফেরদের প্ররোচনার জবাবে তাঁকে কী বলতে হবে। এটা শুধু তাদের বলার জন্য নয়, নিজের বিশ্বাসে ও কর্তব্যবোধে ধারণ করার জন্য যে বিষয়গুলো অধিক গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোই একত্রে তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আয়াতে প্রথমেই আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরে বলা হয়েছে, এই সত্য বাদ দিয়ে আমি কী করে মিথ্যাকে নিজের পৃষ্ঠপোষক বানিয়ে নেব? এরই মধ্য দিয়ে রাসুলকে খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে যে আমি মুসলমান এবং কোনো অবস্থাতেই আমি মুশরিকদের দলভুক্ত নই। ১৫ নম্বর আয়াতে রাসুল (সা.)-কে একজন সাধারণ মুসলমানের অবস্থানে দাঁড়িয়ে যা বলা উচিত, তা-ই বলতে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর আদেশ অমান্য করলে প্রত্যেক মানুষকে মহাপরিণাম দিবসে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। আর সেদিন যারা শাস্তি থেকে রেহাই পাবে, তারা হচ্ছে সত্যিকার মুসলমান। কাফেরদের প্রলোভন উপেক্ষা করে মুসলমানদের জন্য সত্য ও ন্যায়ের পথ রচনার প্রতিজ্ঞায় অনড় থাকতে আল্লাহতায়ালা এখানে রাসুল (সা.)-কে অভয় দিচ্ছেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments