একটির মালিক যুবলীগের নেতা, আরেকটি বন্ধুর-হাকালুকি হাওরে ইটভাটা! by উজ্জ্বল মেহেদী ও জুয়েল খান
সিলেটের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন হাকালুকি হাওরে অবৈধভাবে দুটি ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জের ঘিলাছড়ায় চিমনিহীন ভাটা দুটির একটির মালিক উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি আবদুল মছব্বির। অপর ভাটাটির মালিক মছব্বিরের বন্ধু হুমায়ূন কবীর। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, জমিগুলোতে গত বোরো মৌসুমেও ধান চাষ হয়েছে। এবার হঠাৎ ইটভাটা করা হলো। ফসলি জমি থেকে মাটি তুলে ভাটাগুলোতে ইট বানানো হচ্ছে। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ
দিয়ে। যুবলীগের নেতা আবদুল মছব্বির দাবি করেন, তাঁর মালিকানাধীন জমিতে ফসল না হওয়ায় কৃষি বিভাগকে জানিয়ে ইটভাটা করছেন। এতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়নি। ইটভাটাটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা এখনো ব্যবসায়িকভাবে করা হয়নি। টেস্ট (পরীক্ষামূলক) করার জন্য কিছু ইট তৈরি করে নিজের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।’
যুবলীগের নেতার দাবি ভিত্তিহীন উল্লেখ করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. আখেরুর রহমান বলেন, ‘ইটভাটা দিতে হলে প্রথমে স্থানীয় কৃষি কার্যালয় থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। আমরা ছাড়পত্র দেওয়ার আগে তদন্ত করে দেখি, যেখানে ইটভাটা হবে সেখানে ধানি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কি না। হাকালুকি হাওর ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়াভুক্ত (ইসিএ)। এখানে ইটভাটার ছাড়পত্র দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’
ফেঞ্চুগঞ্জের ইউএনও মুহাম্মদ লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাকালুকিতে ইটভাটা আছে জানতাম না। হাওরটি ইসিএভুক্ত হওয়ায় এ রকম ইটভাটা করার কোনো সুযোগ নেই। সরেজমিনে তদন্ত করে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হাকালুকির পশ্চিমাংশের বোরো জমিতে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়ায় একটি ইটভাটা গড়ে তুলেছেন যুবলীগের নেতা। এর দক্ষিণে আধা কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে গড়ে উঠেছে আরেকটি। অপর ইটভাটার মালিক হুমায়ূন কবীর ঘিলাছড়ারই বাসিন্দা। মছব্বিরের ব্যবসায়িক বন্ধু হিসেবে এলাকায় তিনি পরিচিত। হুমায়ূন স্বীকার করেন, বন্ধু মছব্বিরের দেখাদেখি তিনিও চার একর জমিতে ইটভাটা করেছেন। অনুমোদন বা ছাড়পত্র মছব্বিরই তাঁকে জোগাড় করে দেওয়ার কথা।
সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় বিস্তৃত হাকালুকি হাওর। একে সরকারিভাবে ‘প্রতিবেশ সংকটাপন্ন’ ঘোষণা দেওয়া হয় ১৯৯৯ সালে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে এ ঘোষণার পর হাওরের প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের বিশেষ নজরদারির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও নানা প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, হাওরে জলমগ্ন অবস্থা থেকে ভেসে ওঠা জমিতে বোরোর আবাদ চলছে। মাঝখানে কিছু জমিতে কোনো চাষবাস নেই। প্রবেশমুখে কাঁটাতারের বেড়া। ভেতরে জমি খনন করে একদিকে মাটি স্তূপ করে রাখা হয়েছে। দিনে চলে মাটি দিয়ে ইট তৈরির কাজ, পোড়ানো হয় রাতে। ইটের ওপর ইট সাজিয়ে চৌকোণ আকৃতির প্রায় ১৫ ফুট উঁচু একটি চুল্লি বানানো হয়েছে। এই ভাটাটির মালিক মছব্বির। সাত একর জমির ওপর এটি গড়ে তোলা হয়েছে। ফসলি জমি থেকে বিরাট একেকটি গর্ত করে মাটি তোলা হচ্ছে। মাটির স্তূপ থেকে ইট বানিয়ে সারি সারি করে রাখা হচ্ছে। এর পাশেই জ্বালানির জন্য মজুদ করা হয়েছে গাছ ও কাঠ। ভাটায় কর্মরত শ্রমিকেরা জানান, জ্বালানি সংগ্রহ করে রাতে ইট পোড়ানোর কাজ চলে।
ইটভাটায় কর্তব্যরত শ্রমিক ও কারিগরেরা জানান, দুটি ইটভাটায় ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেড় লাখ ইট পোড়ানো হয়েছে। মছব্বিরের ভাটায় তৈরি ইটে ‘এম’ এবং হুমায়ূন কবীরের ভাটার ইটে ‘এইচ-এম’ লেখা থাকে।
হাকালুকিতে ‘ইসিএ ব্যবস্থাপনা’য় অনেকগুলো সমিতি আছে। এর একটি ফেঞ্চুগঞ্জের যুধিষ্ঠিপুর ও বাদেদেউলি গ্রামের বহুমুখী সমবায় সমিতি। এর সদস্য হাওরপাড়ের বাসিন্দারা জানান, ইট তৈরির জন্য মাটি তুলতে ভাটার শ্রমিকেরা আশপাশে কৃষি জমি ভাড়া খুঁজছেন। এতে হাওরে কৃষি জমির প্রকৃতি পরিবর্তনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমদ অভিযোগ করেন, ‘আমরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কাজ করছি। আরেক শ্রেণীর মানুষ হাওরের বুকে ইটভাটা করে পরিবেশ-প্রতিবেশকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
যুবলীগের নেতার দাবি ভিত্তিহীন উল্লেখ করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. আখেরুর রহমান বলেন, ‘ইটভাটা দিতে হলে প্রথমে স্থানীয় কৃষি কার্যালয় থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। আমরা ছাড়পত্র দেওয়ার আগে তদন্ত করে দেখি, যেখানে ইটভাটা হবে সেখানে ধানি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কি না। হাকালুকি হাওর ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়াভুক্ত (ইসিএ)। এখানে ইটভাটার ছাড়পত্র দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’
ফেঞ্চুগঞ্জের ইউএনও মুহাম্মদ লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাকালুকিতে ইটভাটা আছে জানতাম না। হাওরটি ইসিএভুক্ত হওয়ায় এ রকম ইটভাটা করার কোনো সুযোগ নেই। সরেজমিনে তদন্ত করে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হাকালুকির পশ্চিমাংশের বোরো জমিতে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়ায় একটি ইটভাটা গড়ে তুলেছেন যুবলীগের নেতা। এর দক্ষিণে আধা কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে গড়ে উঠেছে আরেকটি। অপর ইটভাটার মালিক হুমায়ূন কবীর ঘিলাছড়ারই বাসিন্দা। মছব্বিরের ব্যবসায়িক বন্ধু হিসেবে এলাকায় তিনি পরিচিত। হুমায়ূন স্বীকার করেন, বন্ধু মছব্বিরের দেখাদেখি তিনিও চার একর জমিতে ইটভাটা করেছেন। অনুমোদন বা ছাড়পত্র মছব্বিরই তাঁকে জোগাড় করে দেওয়ার কথা।
সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় বিস্তৃত হাকালুকি হাওর। একে সরকারিভাবে ‘প্রতিবেশ সংকটাপন্ন’ ঘোষণা দেওয়া হয় ১৯৯৯ সালে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে এ ঘোষণার পর হাওরের প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের বিশেষ নজরদারির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও নানা প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, হাওরে জলমগ্ন অবস্থা থেকে ভেসে ওঠা জমিতে বোরোর আবাদ চলছে। মাঝখানে কিছু জমিতে কোনো চাষবাস নেই। প্রবেশমুখে কাঁটাতারের বেড়া। ভেতরে জমি খনন করে একদিকে মাটি স্তূপ করে রাখা হয়েছে। দিনে চলে মাটি দিয়ে ইট তৈরির কাজ, পোড়ানো হয় রাতে। ইটের ওপর ইট সাজিয়ে চৌকোণ আকৃতির প্রায় ১৫ ফুট উঁচু একটি চুল্লি বানানো হয়েছে। এই ভাটাটির মালিক মছব্বির। সাত একর জমির ওপর এটি গড়ে তোলা হয়েছে। ফসলি জমি থেকে বিরাট একেকটি গর্ত করে মাটি তোলা হচ্ছে। মাটির স্তূপ থেকে ইট বানিয়ে সারি সারি করে রাখা হচ্ছে। এর পাশেই জ্বালানির জন্য মজুদ করা হয়েছে গাছ ও কাঠ। ভাটায় কর্মরত শ্রমিকেরা জানান, জ্বালানি সংগ্রহ করে রাতে ইট পোড়ানোর কাজ চলে।
ইটভাটায় কর্তব্যরত শ্রমিক ও কারিগরেরা জানান, দুটি ইটভাটায় ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেড় লাখ ইট পোড়ানো হয়েছে। মছব্বিরের ভাটায় তৈরি ইটে ‘এম’ এবং হুমায়ূন কবীরের ভাটার ইটে ‘এইচ-এম’ লেখা থাকে।
হাকালুকিতে ‘ইসিএ ব্যবস্থাপনা’য় অনেকগুলো সমিতি আছে। এর একটি ফেঞ্চুগঞ্জের যুধিষ্ঠিপুর ও বাদেদেউলি গ্রামের বহুমুখী সমবায় সমিতি। এর সদস্য হাওরপাড়ের বাসিন্দারা জানান, ইট তৈরির জন্য মাটি তুলতে ভাটার শ্রমিকেরা আশপাশে কৃষি জমি ভাড়া খুঁজছেন। এতে হাওরে কৃষি জমির প্রকৃতি পরিবর্তনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমদ অভিযোগ করেন, ‘আমরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কাজ করছি। আরেক শ্রেণীর মানুষ হাওরের বুকে ইটভাটা করে পরিবেশ-প্রতিবেশকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
No comments