কয়েদি দুই মাস কেবিনে! by একরামুল হক
চট্টগ্রামের আলোচিত জিবরান তায়েবী হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইয়াসিন রহমান দুই মাস ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেবিনে আছেন। চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে তাঁর ‘পিঠ ব্যথা’ লেখা আছে। তবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক গতকাল প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি এখন সুস্থ। এ দুই মাস ইয়াসিনকে দেখেছেন, এমন একাধিক চিকিৎসক প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি প্রথম থেকেই সুস্থ ছিলেন। যেহেতু হাসপাতালে আছেন, তাই
চিকিৎসক হিসেবে ইয়াসিনকে তাঁদের দেখতে হয়। কী ধরনের চিকিৎসার জন্য ইয়াসিনকে কারাগারের বাইরের হাসপাতালে পাঠিয়েছেন, জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ছগীর মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘পিঠের ব্যথার চিকিৎসার জন্য।’ তিনি বলেন, ‘কারা হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার দিয়ে বন্দীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন হলে আমরা মেডিকেলে পাঠিয়ে দিই।’
সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কেবিনে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে ছগীর মিয়া বলেন, ‘কারা আইনে কোনো বন্দীকে কেবিনে রাখার নিয়ম নেই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কারাগারে ১০০ শয্যার হাসপাতাল আছে, যেখানে কোনো কেবিন নেই। কারণ, আইনের চোখে সব বন্দী সমান সুবিধা পাওয়ার অধিকারী। আর সরকারি হাসপাতালে সরকারি খরচে বন্দীরা চিকিৎসা নেন। তাই এখানে বৈষম্যের সুযোগ নেই।
চট্টগ্রামের উপ-মহাকারা পরিদর্শক ফজলুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে কাকে, কোথায় রেখে, কীভাবে চিকিৎসা দেবে তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিষয়। আইন অনুযায়ী আমরা কাউকে কেবিনে রাখার সুপারিশ করি না।’
ইয়াসিন হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান কামাল উদ্দিনের অধীনে চিকিৎসাধীন। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ইয়াসিন ব্যাক পেইন (পিঠের ব্যথা) নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। এখন তিনি সুস্থ। আমরা তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেব।’
সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিকে কেবিনে রাখার জন্য কে সুপারিশ করেছেন, জানতে চাইলে কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি কোনো সুপারিশ করিনি। কেবিন খালি থাকা সাপেক্ষে রোগীদের নামে বরাদ্দ হয়। ইয়াসিনের ক্ষেত্রেও তা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে আমার বিস্তারিত কিছু জানা নেই।’
হাসপাতালের কেবিনে একজন কয়েদির দীর্ঘ অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই কেবিনে দীর্ঘ দিন ধরে কয়েদি রাখা হয়েছে, এটা আমি এই প্রথম শুনলাম। বিষয়টি আমি দেখব।’
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
১৯৯৯ সালের ৯ জুন বিকেলে নগরের দেওয়ানহাট মোড়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ভারতীয় নাগরিক ও শিপিং কোম্পানির পদস্থ কর্মকর্তা জিবরান তায়েবী খুন হন। আদালত সূত্র জানায়, ২০০১ সালের ১২ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এই হত্যা মামলায় ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। একমাত্র পলাতক আসামি ইয়াসিনকে খালাস দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে উচ্চ আদালত ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ ইয়াসিন রহমানকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। ইয়াসিন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী ও কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের ছেলে।
আদালতের নথি ও সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে জানা যায়, প্রেমঘটিত কারণে ইয়াসিন ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে জিবরানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সূত্র জানায়, প্রায় ১২ বছর বিদেশে পলাতক থেকে ইয়াসিন গত ১১ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক এস এম মজিবুর রহমান আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ১৩ অক্টোবর তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ২২ নম্বর কেবিনে আছেন।
গতকাল বুধবার হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে এই প্রতিবেদক ওই কেবিনে গেলে দেখা যায়, বাইরে একজন কারারক্ষী দায়িত্ব পালন করছেন। ভেতরে ইয়াসিন বিছানায় শুয়ে আছেন। সোফায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক। রোগীকে দেখতে আসা চিকিৎসক তাঁর ‘কী অসুবিধা’ জানতে চাইলে ইয়াসিন বললেন, পেটে ব্যথা।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কেবিনে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে ছগীর মিয়া বলেন, ‘কারা আইনে কোনো বন্দীকে কেবিনে রাখার নিয়ম নেই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কারাগারে ১০০ শয্যার হাসপাতাল আছে, যেখানে কোনো কেবিন নেই। কারণ, আইনের চোখে সব বন্দী সমান সুবিধা পাওয়ার অধিকারী। আর সরকারি হাসপাতালে সরকারি খরচে বন্দীরা চিকিৎসা নেন। তাই এখানে বৈষম্যের সুযোগ নেই।
চট্টগ্রামের উপ-মহাকারা পরিদর্শক ফজলুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে কাকে, কোথায় রেখে, কীভাবে চিকিৎসা দেবে তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিষয়। আইন অনুযায়ী আমরা কাউকে কেবিনে রাখার সুপারিশ করি না।’
ইয়াসিন হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান কামাল উদ্দিনের অধীনে চিকিৎসাধীন। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ইয়াসিন ব্যাক পেইন (পিঠের ব্যথা) নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। এখন তিনি সুস্থ। আমরা তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেব।’
সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিকে কেবিনে রাখার জন্য কে সুপারিশ করেছেন, জানতে চাইলে কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি কোনো সুপারিশ করিনি। কেবিন খালি থাকা সাপেক্ষে রোগীদের নামে বরাদ্দ হয়। ইয়াসিনের ক্ষেত্রেও তা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে আমার বিস্তারিত কিছু জানা নেই।’
হাসপাতালের কেবিনে একজন কয়েদির দীর্ঘ অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই কেবিনে দীর্ঘ দিন ধরে কয়েদি রাখা হয়েছে, এটা আমি এই প্রথম শুনলাম। বিষয়টি আমি দেখব।’
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
১৯৯৯ সালের ৯ জুন বিকেলে নগরের দেওয়ানহাট মোড়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ভারতীয় নাগরিক ও শিপিং কোম্পানির পদস্থ কর্মকর্তা জিবরান তায়েবী খুন হন। আদালত সূত্র জানায়, ২০০১ সালের ১২ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এই হত্যা মামলায় ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। একমাত্র পলাতক আসামি ইয়াসিনকে খালাস দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে উচ্চ আদালত ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ ইয়াসিন রহমানকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। ইয়াসিন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী ও কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের ছেলে।
আদালতের নথি ও সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে জানা যায়, প্রেমঘটিত কারণে ইয়াসিন ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে জিবরানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সূত্র জানায়, প্রায় ১২ বছর বিদেশে পলাতক থেকে ইয়াসিন গত ১১ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক এস এম মজিবুর রহমান আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ১৩ অক্টোবর তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ২২ নম্বর কেবিনে আছেন।
গতকাল বুধবার হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে এই প্রতিবেদক ওই কেবিনে গেলে দেখা যায়, বাইরে একজন কারারক্ষী দায়িত্ব পালন করছেন। ভেতরে ইয়াসিন বিছানায় শুয়ে আছেন। সোফায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক। রোগীকে দেখতে আসা চিকিৎসক তাঁর ‘কী অসুবিধা’ জানতে চাইলে ইয়াসিন বললেন, পেটে ব্যথা।
No comments